সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫

ওয়ালপেপার (অনুগল্প)

কলমের কালি শেষ। অথচ আর একটা সিগনেচার দিলেই কাজ শেষ হয়ে যেত। আবেদন পত্রের শেষের সিগনেচারটা। এমনই হয়! দেখা গেলো কোন কাগজ তখনি ফটোকপি দরকার। দোকানে গেলাম। কাজ চলছে পুরোদমে। ফটোকপি করার জন্য দোকানদারের হাতে দিই। ওই মুহূর্তে বিদ্যুত চলে যায়।
আমি পৌছার এক মিনিট আগে বাস ছেড়ে দেয়। প্রতিদিন লেইট করে। আমি যেদিন যাই সেদিনই শুধু একেবারে জাস্ট টাইমে গাড়ি ছেড়ে যায়।

শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৫

"রক্ত ও সম্পর্ক : একটি গল্প" (গল্প)

নাফিসের চাকরিটা হঠাৎ করে পাওয়া। বড় অঙ্কের বেতন। এ অল্প বয়সে এত টাকা কি করবে তা নিয়ে মাঝে মাঝে ধাধায় পড়ে যায় সে। তার একটা বন্ধু সার্কেল আছে। কিছু হলেই ট্রিট চায়।

ট্রিট দিতে নাফিসের কোন আপত্তি নেই। দেয়াই হয়। তাতে কিছু টাকা কমে। হাতে এতগুলো টাকা থাকলে অস্বস্তি হয়। কমলেই ভালো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ট্রিট যখন দেয় নিজেকে ওর গাভী মনে হয়। ছোটখাটো কিছু হলেই ট্রিট দেয়ার আব্দার ধরে। আর প্রতিবারই তার কাছে নিজেকে গাভী মনে হয়। যেন তার কাজই এটা। ট্রিট দেয়া।
যদিও ওপর দিয়ে মুখে হাসি রেখেই সে অংশ নেয়। ইতোমধ্যে কয়েকটা মেয়েও খুব সঙ্গ চাচ্ছে। তাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে চেক ইন দেয়। নীলা, ফারিয়া, নাইমা এদের সাথে বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছে। যে কেউ দেখলে ভাববে ওদের মধ্যে অনেক বেশি ভালো বন্ধুত্ব।

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

এলার্ম ঘড়ি (অণুগল্প)

: আচ্ছা, আপনি আমাকে এত ঘন ঘন ফোন দেন কেন? ফেসবুকে বসতে না বসতে নক দেন।
: বিরক্ত? ঠিক আছে বিরক্ত হলে আর দিবো না।
: নাতো। আমি কি সেটা বলেছি নাকি?
: প্রশ্ন করলে যে!
: ফোন দিয়ে কথা বলেন না। বেশির ভাগ সময়ই আমার কথা বলতে হয়। আমিই বকবক করি।

দুই টাকা ও এক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তার গল্প (চারপাশ)

জাতীয় পরিচয় পত্রে কিছু সংশোধনী প্রয়োজন। নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, সোনালী ব্যাংকে ২৫৩ টাকা জমা দিতে হবে।
বুধবার সাড়ে তিনটার দিকে গেলাম আগ্রাবাদ সোনালী ব্যাংকে। ১২ নম্বর কাউন্টারে এ বিষয়ে টাকা জমা নেয়া। বিশাল পরিসর নিয়ে ব্যাংক। অন্য কাউন্টারে ভীড় থাকলেও ওই কাউন্টারে তেমন ভীড় নেই। যিনি ভেতরে আছেন তিনি খুব বিরক্ত।

বস্তা ভরা ভালোবাসা (অনুগল্প)

তাদের মধ্যে ছোট খাটো ঝগড়া প্রায় সময় হয়। ঝগড়া করা মেয়েটির শখ। ছেলেটি আগে ঝগড়া করতে পারতো না। এখন সেও কিছুটা শিখে নিয়েছে।
তার ওপর দুইদিন আগে একটা অনলাইন নিউজে ঝগড়া করার ১০১ টা টিপস লেখাটা পড়েছে। সেটা পড়ার পর ছেলেটির আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে।
আজকের ঝগড়াটা পিকচার নিয়ে। মেয়েটিই শুরু করল।
: তুমি আমার হলুদ রঙ্গের শাড়ি পড়া ছবিটায় লাইক দাও নি কেন?

টিভি কেনার গল্প (শৈশব)


রম্য :

১. রস আলো :প্র.আ  ২. প্যাচাল ৩.  রকমারি রম্য : বা-প্র  ৪.   ৫.

ম্যাগাজিন




তখন ছোট। আমাদের বাসা আর নানা-নানুর বাসা পাশাপাশি। নানুর বাসায় বিটিভিতে রাত আটটার সংবাদ খুব মনযোগ দিয়ে দেখতাম। না খবরগুলো না। খেলার খবর। সেটা দেখার জন্যই বসে থাকতাম। যদি হুট করে খেলার খবর চলে যায়! তাই পুরাটা সময় বসে থাকা। খেলার খবর পাওয়ার ওইটাই ছিল ভরসা। সপ্তাহে একদিন মঙ্গলবার বিটিভিতে রাতে নাটক হতো। রাত আটটার সংবাদের পর।

অনুরোধ (গল্প)*

তমার সাথে আমার ডিভোর্স হয়ে যাচ্ছে। কাগজপত্র অনেকটাই রেডি। দুই জনে স্বাক্ষরের পর তার কাজ শেষ। দেড় বছরের সম্পর্ক কাগজে কলমে শেষ হচ্ছে। আমার কেমন লাগছে, তা দেখাচ্ছি না। উপর দিয়ে একটা ফূর্তির ভাব ধরে রেখেছি। তমা আগে থেকে কিছুটা গম্ভীর প্রকৃতির। খুব কাছের কারো সাথে সে অনেক চঞ্চল। আবার দূরের কারো সাথে সে পুরাই অন্যরকম। একটা গাম্ভীর্য নিয়ে থাকে। কিছু বললে হাসি মুখে উত্তর দেয়। তাও মাপা হাসি। অতটুকু। নিজে আগ বাড়িয়ে কিছু বলে না।

বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৫

শব্দহীন হাসি (অনুগল্প)

: কিছু মেয়েকে সুন্দর হওয়ার জন্য অনেক সাজতে হয়। অনেক সময় ব্যয় করে তবে ঘর থেকে বেরোতে হয়। আর কিছু মেয়ে এম্নেতেই অনেক সুন্দর। তাদের সাধারণ চেহারাটাই অসাধারণ!
: তো?
: এই মুহূর্তে আমি তেমন একজন অসাধারণ মেয়ের সাথে কথা বলছি।
: এসব কথাগুলো এখন থাক।

বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫

আড়ি (অনুগল্প)

: আপনার মোবাইলটা একটু দেবেন?
: আমার মোবাইল দিয়ে তুমি কি করবে?
: একটা কথা লিখে আমার মোবাইলে পাঠাবো। আপনি তো কখনও পাঠাবেন না। তাই আমিই পাঠাই।
: তুমি পাঠালে সেটা তো আমার কথা হবে না।
: সান্ত্বনাতো অন্তত পাবো। আমার যখনই মন খারাপ হবে ওই মেসেজটি দেখবো। মন ভালো হবে।

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫

বিয়ের দাওয়াত (অনুগল্প)

পৃথিবীতে যত ধরণের প্রেম আছে ক্লাসমেট প্রেমটাই সম্ভবত সবচেয়ে জটিল। দুই জনই বেশি বোঝে। কেউ কারো থেকে কম বুঝতে রাজি না।
রফিক আর নীরার সম্পর্ককে এখন আর প্রেম বলা যাবে কিনা সন্দেহ আছে। কেননা নীরা ইদানিং প্রায় সময় বলছে, তার জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই বিয়ে।
রফিক কিছু বলে না। বলার স্পেসটুকু তার নেই।

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৫

চার মাস পর (অনু গল্প)

হেলাল আর আফসানা অফিসের একই ডেস্কে কাজ করে। দুইজনের মাঝখানে শুধু একটা হাফ পার্টিশন। আফসানা মেয়েটা সুন্দর। হেলাল কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেছে। বেশি লাভ হয় নি। মাপা মাপা কথা বলে। সুন্দর হওয়ার গর্ব হয়ত কিংবা তার আচরণই এমন।
হেলাল ডেস্কে এলেই হেসে বলে, হাই আফসানা, কেমন আছেন?
আফসানা গম্ভীর মুখে বলল, ভালো।

সময় (অনুগল্প)

: আপনার গল্প কি শেষ?
: নাতো। গল্প কি এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়? গল্পের ডাল আছে, পালা আছে, শাখা আছে, প্রশাখা আছে।
: তাহলে চুপ হয়ে গেলেন যে?
: নিস্তব্ধটাও কিন্তু এক ধরণের গল্প।
: এটা আবার কেমন?
: এটাতে একটু সমস্যা আছে। অন্যের রুলটাও নিজেকে বানিয়ে নিতে হয়। কল্পনায় সেগুলো ভেসে উঠে।

জোড়া চাঁদ (অনু গল্প)

:একটু বের হতে পারবে?
: মাত্র ঘরে ফিরলাম। সারদিন অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। এখন আবার বাহিরে কেন?
: আজ চাঁদটা না অনেক সুন্দর। একা একা ব্যালকনিতে দাড়িয়ে দেখছি। তুমিও প্লিজ একটু বের হও না। চাঁদটা দেখো।
: আমি জোড়া চাঁদ দেখি। একটা চাঁদ দেখি না।
: জোড়া চাঁদ কিভাবে হয়! চাঁদ তো একটাই উঠে। কি যে আবোল টাবোল কথা বলো।
: সরি এখন একটা চাঁদ দেখার জন্য বের হতে বলো নাতো। একটু ফ্রেশ ট্রেশ হবো। খাবো।
: আচ্ছা।

এলার্ম ঘড়ি (অনুগল্প)

: আচ্ছা, আপনি আমাকে এত ঘন ঘন ফোন দেন কেন? ফেসবুকে বসতে না বসতে নক দেন।
: বিরক্ত? ঠিক আছে বিরক্ত হলে আর দিবো না।
: নাতো। আমি কি সেটা বলেছি নাকি?
: প্রশ্ন করলে যে!
: ফোন দিয়ে কথা বলেন না। বেশির ভাগ সময়ই আমার কথা বলতে হয়। আমিই বকবক করি।

শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৫

মিথি আজ খুশী : গল্প


ডায়েরীর পাতা প্রায় শেষ পর্যায়ে। নতুন আরেকটি ডায়েরী নিতে হবে। মিথি ডায়েরীর পাতাগুলো উল্টায়। প্রতিদিন সে বাবাকে চিঠি লিখে। এটাকে ঠিক চিঠি বলা যায় না। কেননা লেখাগুলো ডায়েরীতেই থেকে যায়। পোস্ট করা হয় না। তবে যেহেতু লেখাগুলো বাবার উদ্দেশ্যেই লেখা হয় তাই চিঠি হিসেবেই দেখে। লেখার ওপর শিরোনাম দেয়। চিঠিতে সাধারণত শিরোনাম দেয়া হয় না।

শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৫

বইয়ের কাছে ফিরি (স্মৃতিচারণ)

বই দিবে, বই। হরেক রকম বই দরকার আমার। দিতে পারবে ? সেটা কালজয়ী হোক কিংবা অখ্যাত কোন লেখকের প্রথম বই হোক কোন আপত্তি নেই। তারপরও আমার বই চাই। এটা এখনকার যুগে হয়ত অস্বাভাবিক শোনাচ্ছে । তবে আজ থেকে ৮/১০ বছর আগের তরুণ-তরুণীদের মনো চাহিদা ছিল এটিই।

কলেজে ৭ অক্টোবর-১০ (দিনপঞ্জি)

বৃষ্টিতে সকালটা অনেক মায়াবী লাগছিল। ঝুম ঝুম একাধারে বৃষ্টি। অদ্ভূত সুন্দর। এরকম বৃষ্টির দিনে কাথামুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকার অন্যরকম মজা।

সকালে ক্লাস আসে। পার্সেন্টিক কম। তাই অনিচ্ছাস্বত্বেও বের হলাম প্যান্টের নিচের দিকটা গুটিয়ে। আহাদ যেতে চাচ্ছিলো না। আরেকটু ঘুমাবে। জোর করে ওকে রাজি করালাম।

হৈমন্তী : স্মৃতিচারণ

আমার খালাতো ভাই যে কিনা এবার এস এস সি দেবে। ঢাকায় থাকে। তো ঢাকায় গেলে ওর সাথে খুব গল্প চলে। কাকে ভাল লাগল, ওর বন্ধুরা কার কার সাথে ইয়ে ইয়ে করে সব ঘটনা আমাকে বলা চায়। গল্প শুনতে শুনতে রাতের অন্ধকার দিনের আলোয় দূর হয়ে যায়। এত বড় রাতটা যে গল্পের মাঝে কিভাবে কেটে যায় তা টের পাওয়া যায় না।

স্মৃতিচারণ : একটি চড়ুই

সময় অনেক দ্রুত যায় তাই না! কত সময় চলে গেল। অথচ মনে হচ্ছে এইতো সেদিন ছোটকাল পার করে এলাম। আমার কথার মধ্যে জড়তা তা নিয়ে কত জন হাসাহাসি করত!!! তখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। বাসার পাশেই কাঁঠাল গাছ। কাঁঠাল গাছটি অনেক স্লিম। জায়গার অভাবেই হয়ত সে নিজেকে ঐভাবে গড়ে নিয়েছে। তবে অনেক কাঁঠাল ধরত। কেউ আবার মুখ লাগানোর চেষ্টা করবেন না। অযথা শ্রম নষ্ট। কারণ মুখ লাগিয়ে লাভ নেই। ৩ বছর আগে প্রিয় কাঁঠাল গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।

অনুভূতি : চশমা

যারা আমার মত অর্ধ অন্ধ তারা বুঝে চশমার প্রয়োজনীয়তা কি! ভাল চোখওয়ালা কারো পক্ষে চশমার এত প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। অষ্টম শ্রেণীতে পড়বার সময় চোখ দেখাতে গিয়েছিলাম। সমস্যা পিছনের সিটে বসলে ব্ল্যাক বোর্ডের লেখা কম দেখি। আমি মনে করতাম সবাই আমার মত কম দেখে!! এই ভুল ধারণার কারণে ডাক্তার দেখাতে দেরি হয়ে গিয়েছিল।

ভ্রমণ : পাহাড়ে প্রথম পর্ব

সময়গুলো ছিল অসাধারণ। জীবনের শ্রেষ্ঠ্য সময়। অনেক দুর্গম এলাকায় গিয়েছি। দেখেছি অনেক ধরণের দুর্লভ জীবন ধারা, সংষ্কৃতি। প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক ভাবে এত সুন্দর তা উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম শক্ত ভাবে। নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, অর্থ, যাতায়াত কোন কিছুর চিন্তা করতে হয় নাই। সব করা হয়েছে সামরিক, বেসামরিক প্রসাশন থেকে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে আর্মির গাড়ী, হেলিকপ্টার। সব সময় ছিল সামরিক প্রহরা। 

শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৫

অভিমান (অনুগল্প)

নতুন বিয়ে হলো। মেয়েটার মন খারাপ। মন খারাপের বড় কারণ বাসায় বড় একটা সময় তাকে একা থাকতে হয়। ছেলেটি বেজায় ব্যস্ত।
রাতে ফ্রেশ হওয়ার পর ছেলেটি বারান্দায় বসে। বাহির থেকে খেয়ে এসেছে।
মেয়েটি একসাথে খাবে বলে অপেক্ষা করছিল। যখন শুনলো বাহির থেকে খেয়ে এসেছে তখন বলল, ভালই হয়েছে তুমি বাহির থেকে খেয়ে এসেছো। আমার ক্ষুধা লাগছিল। তাই আগে আগে খেয়ে নিয়েছি আজ।

শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হিট স্ট্রোক (অনুগল্প)

মেয়ের বিয়ে দেয়া যে কত কষ্টের তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন আলতাফ মিয়া। ছেলে পক্ষের চাহিদার শেষ নেই। আজ এটাতো কাল ওইটা। অথচ এখনও বিয়েই হয়নি। তারপরও তিনি সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ ছেলে ভালো। এ সময়টাতে ভালো ছেলে খুঁজে পাওয়াটা বেশ কঠিন।

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

জাকিয়া আপু (অনুগল্প)

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একটা ছেলে গুগলের সিইও হয়েছে। বাংলাদেশি একজন হিসেবে সিইও হওয়ার খবরটা যতবেশি বিশ্ব মিডিয়ায় সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে ছেলেটির ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে। বিবিসি নিউজ তো শিরোনাম করে দিয়েছে : “পথ শিশু থেকে গুগলের সর্বোচ্চ পদ।”

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

দগ্ধ (অনুগল্প)

তাদের সম্পর্কের শুরুর গল্পটা পরিচিত কোন গল্পকারের বর্ণনার মত। বৃষ্টি পড়ছিল। মেয়েটির ছাতা ছিল না। ছেলেটি ছাতা নিয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির মধ্যেই যখন মেয়েটি বের হচ্ছিলো ছেলেটি ডাক দিয়ে হাতে ছাতা ধরিয়ে দেয়। অনেকটা জোর করে ধরিয়ে দেয় বলা যায়। একই কলেজে পড়ে অথচ কখনো কথা হয়নি আগে।
পরদিনই ছাতা ফেরত দেয় মেয়েটি। এর পর দুইজনের মধ্যে কথা বার্তা। আলাপন। একটা সময় ভাল লাগা। এরপর একজন আরেকজনের সাথে সারা জীবন থাকার স্বপ্ন দেখা।

দৃশ্য (অনুগল্প)

শেষ পর্যন্ত হিসাব মিললো না। মেলার কথাও না। নিজ দেশের দুইজনের মধ্যেই যেখানে শুভ পরিণতির দিকে যায় না সেখানে দুই দেশের।
এরপরও জুলিয়া সর্বশেষ চেষ্টা করেছে। ওই দেশে কয়েকটা ভাষা শিক্ষার কোর্স থাকলেও বাংলা ভাষা শিক্ষার কোর্স কোন প্রতিষ্ঠানে নেই। কি আর করা। আরিফকে চমকায় দিতে হবে। দেড়শ কিলোমিটার দূরে লইয়াঞ্জ শহরে কিছু বাংলাদেশি থাকে। সেখানে একটা কমিউনিটি গড়ে উঠেছে। একটা বড় বাজারও আছে যেখানে বাংলাদেশি প্রায় সব কিছু পাওয়া যায়। ওইসব দোকানে সাধারণ ওই দেশের নাগরিকরা কাজ করে না। এটা একটা সম্মানের ওপর আঘাত বটে। কিন্তু জুলিয়া ওইসবের ধার ধারেনি। তাকে বাংলা শিখতেই হবে। সেখানে একটা দোকানে সেলসগার্লের কাজ নিলো। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে এতটুকু পথ নিজে ড্রাইভ করে চলে যেতো।

বোকা (অনুগল্প)

চুমকি হাসছে। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে হাসছে। তাদের ঘরটা পুরানো ধরণের। ব্যালকনির আকৃতি বিশাল। উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে তাদের বাসা। সামনে দিয়ে রাস্তা বয়ে গেছে। ভারী গাড়ি চলে না এ রাস্তায়। তবে প্রতিদিন ইউ এন ও আঙ্কেলের বিকট শব্দে চলা পুরান দিনের সরকারি জিপ গাড়িটা যখন যায় তখন পুরা কমপ্লেক্সে খবর হয়ে যায়।
একটা ছেলে সাইকেল চালিয়ে সামনে এগিয়ে যায় আবার পেছনে আসে। আবার যায় আবার আসে।
সেটা দেখেই চুমকি হাসছে। ছেলেটাকে দেখে মনে হবে সে খুব মনযোগ দিয়ে সাইকেল চালাচ্ছে। কিন্তু ছেলেটা যে তার দৃষ্টি পেতেই এভাবে যাওয়া আসা করছে তা বুঝতে পারে। মেয়েদের একটা আলাদা দৃষ্টি থাকে। ওই দৃষ্টি দিয়ে তারা বুঝে যায় কে তাদের ফলো করছে।

বালিকা ও কান্না (অনুগল্প)

পাশে পাহাড়, রাস্তাগুলো একে বেঁকে গেছে। সুন্দর পিচঢালা রাস্তা। গাড়ি চলাচল কম। মাঝে মাঝে ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে দু একটা গাড়ি চলছে। কখনোবা শোনা যায় রিকসার টুং টাং বেল। বালক-বালিকা হাঁটছে। বালিকা বালকের হাত ধরে আছে। তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। আজ আকাশে চাঁদ নেই। দূরের পাহাড়টার ওপর চাঁদটা যখন মায়াবী আলো ছড়ায় তখন অন্যরকম লাগে। আজ মায়াবী আলো নেই।
: আচ্ছা চাঁদ প্রতিদিন থাকলে কি সমস্যা?

খবর (অনুগল্প)

নিজেকে দুই দিন ধরে বেশ সুখী মনে হচ্ছে ছিদ্দিক সাহেবের। তবে কি যেন করা হচ্ছে না, করা হচ্ছে না এ ধরণের একটা অস্বস্তি কাজ করছে। গত দুই দিন আগে ভোরে পত্রিকার হকার যখন পত্রিকা দিয়ে চলে যাচ্ছিলো, তখন ডাক দিলেন হকারকে।
: কাল থেকে এ বাসায় আর পত্রিকা দেবে না।
হকার একটু অবাক হয়।
: স্যার, সমস্যা নেই। অন্য কোন হকারকে বলার দরকার নেই। আমি কাল থেকে আরো ভোরে পত্রিকা দিয়ে যাবো।

পত্রিকা (অনুগল্প)

মুঠো শক্ত হয়ে আসে নিয়াজের। কপালের রগগুলো টন টন করে। চোখ কিছুটা লাল হয়ে আসে। তার মনে হয় এখুনি ছুটে যেতে।
পত্রিকার শিরোনামটার ওপর তার ক্রুব্ধ দৃষ্টি। তেমন গুরুত্বপূণ ভাবে ছাপা হয়নি। ভেতরের পাতায় ৬ষ্ঠ কলামে ছোট্ট করে লেখা। এক কলামেই শিরোনাম। বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত।
নিয়াজের পানির পিপাসা লাগে। পানির বোতলটা থেকে পানি পান করতে থাকে। কিন্তু পানির পিপাসা যে মিঠে না। ওর মনে হয় ওই খুনীদের প্রতিশোধ নিতে না পারলে মিটবে না এ পিপাসা!

মুক্তি (অনুগল্প)

রুবিনা বারান্দায় বসে আছে। যখন ওর সময় কাটে না তখন বারান্দায় চলে আসে। রাস্তায় লোক চলাচল কমে গেছে। মাঝে মাঝে এলাকার গার্ড বাশি বাজাতে বাজাতে হেঁটে যায়। এদিক ওদিক টর্চের আলো ফেলে মানুষ ভেবে। পরে দেখা যায় আলো ফেলছে কুকুরের ওপর।
বারান্দার ছাদের দিকে তাকায় রুবিনা। এটা একটা নতুন সমস্যা হয়েছে। ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকা। অনেকক্ষণ ধরে ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়, মাথাটা একটু ঘুরে উঠে, পৃথিবীকে উল্টা মনে হয়। বারান্দায় ফ্যান ঝুলানো হয় না। তারপরও ফ্যান ঝুলানোর রিং দেয়া আছে। আচ্ছা সবাই তো দরজা বন্ধ করে ফাঁস খায়। বারান্দায় রিংয়ে ঝুলে ফাঁস খেলে নিশ্চয় ব্যতিক্রম হবে। সারাজীবনের জন্য একবার মৃত্যু হবে সেখানে ব্যতিক্রম করা যেতেই পারে।

স্বার্থপর (অনুগল্প)

: হাসো কেন?
: হাসতে ইচ্ছা হচ্ছে তাই!
: আমি কি খুব হাস্যকর কথা বলেছি?
: নাহ, তা বলো নি।
তাহলে দয়া করে তোমার ওই বিশ্রী হাসিটা থামাও।
: আচ্ছা থামালাম। এ হাসির জন্যই একসময় তুমি আবেগী হয়ে পড়েছিলে আমার প্রতি।
: সেটাই তো জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
ভুল বলে জানতাম বিধায়ইতো আমি এগিয়ে যাইনি।
: মানে?
: মানে কিছু না। তোমাদের পাশের বিল্ডিং ছেড়ে চলে গেলাম।

অনুভব (অনুগল্প)

নীরা ও অনিক ব্যালকনিতে বসে আছে। ওদের ব্যালকনিটা বড়। সবুজ লাইট জ্বলছে। অন্য রঙ্গের আলো মুখে পড়লে চেনা মানুষটিকেও অচেনা মনে হয়। নীরার কাছে অনিককে অচেনা মনে হচ্ছে।
অনিকের মুখ গম্ভীর। কান্না আটকানোর চেষ্টা যেন। এত কম রান করার পরও বলতেছিল জিতবে। কিন্তু পরে যখন হারলো তখন আর কিছু বলল না।
নীরা কি বলবে ভেবে পায় না। বাংলাদেশ হারায় তারও খারাপ লাগছে। কিন্তু হার জিত তো বাস্তবতা। হারলে এভাবে মুষড়ে পড়তে হবে! কিছু বলতে ইচ্ছা করে।
: শুনো।
অনিক কিছু বলে না।

বিশ্বাস (অনুগল্প)

: আচ্ছা তুমি কি আমাকে সত্যিই ভালবাসো?
ঘুমের ঘোর তখনও কাটে নি। রুনার মোবাইলের রিংয়েই ঘুম ভাঙল। সুন্দর ঘুম নষ্ট করে মোবাইল ধরবো না ভেবেছিলাম। কিন্তু সে সাহস করতে পারি নি। মোবাইল না ধরলে ও কঠিন কাণ্ড করে বসে।কখনো যদি রিসিভ করতে না পারি পরে হাজারো প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়।তার ওপর উত্তর যদি ওর মনমত না হয় তাহলে যোগাযোগ বন্ধ। শুধু যে আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে তা নয়। ওর মোবাইলটিই অফ করে রাখে কয়েকদিন। কি যে পাগল মেয়ে।
আমার চুপ থাকা দেখে বলে উঠে, এই কি হয়েছে? উত্তর দিচ্ছো না কেন?
আমি আগের প্রশ্নটি শুনি নাই ভান করে বলি, কি উত্তর দিবো?

ইচ্ছে (অনুগল্প)

: তুমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যাবে।
: কেন! আমার তো সকালে কোন কাজ নেই। তাছাড়া এ শীতের সকালে মায়াবী কম্বলের পরশ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করে না।
: তুমি ঘুমাও আর আমাকে সকালেই ক্লাস করতে যেতে হয়। শীতের তীব্রতায় দাঁতের সাথে দাঁত লেগে যায়। গায়ের শালটা আরো জড়িয়ে নিই। তারপরও শীত কমে না। রিকসা চালককে বলি ধীরে ধীরে চালাতে। রিকসা অলা বিরক্ত হয়ে গতি কমায়।
: এককাজ করি, শীতের এক সকালে দুইজনে রিকসা করে ঘুরতে বের হই।
: তোমার না কম্বলের মায়ার পরশ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করে না?

পাথর (অনুগল্প)

: আচ্ছা আপনার সমস্যাটা কি?
: কেন, কি হয়েছে?
: প্রশ্নের উত্তরে ডাবল প্রশ্ন করলেন কেন?
: এখনও তো তুমি প্রশ্ন করলে।
: আমি তো একটা প্রশ্ন করছিলাম, আর আপনি উত্তর তো দিলেনই না। বরং দুইটা প্রশ্ন করে বসলেন।
: আচ্ছা আর প্রশ্ন করবো না। আমি এখন শুধু শিক্ষার্থী। যে রাগী শিক্ষকের ভয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রশ্ন করে না।

প্রতিজ্ঞা (অনুগল্প)

: একটা ছাতা দিতে পারবে?
: কেন. তোমার ছাতা কি হয়েছে?
: সেদিন অফিসে যাওয়ার সময় বৃষ্টি ছিল, ছাতা নিয়ে গেলাম। আসার সময় দেখি বৃষ্টি নাই। তাই ছাতাটা আর আনি নাই।
: বেশ ভাল কাজ করেছো। এখন এ বৃষ্টিতে অফিসে যাবে কিভাবে!
: এজন্যইতো তোমার ছাতাটা খুঁজলাম।
: আমি যে ছাতা ব্যবহার করি তাতো তুমি ব্যবহার পারবে না তো। ছাতায় একপাড়ে ফুলের নকশা আছে। লেডিস ছাতা এটি। তুমি ব্যবহার করছো এ দৃশ্য অন্যরা দেখলে হাসাহাসি করবে। পরিচিত কেউ দেখলে ছবি তুলে ফেসবুকেও আপলোড দিয়ে দিতে পারে।

রহস্যময় হাসি (অনুগল্প)

রত্নার সাথে ফাহাদের দেখা সাড়ে তিন বছর পর। সর্বশেষ দেখা হয়েছিল বিষন্ন এক সন্ধ্যায়। বাসায় ঝামেলার পর বের হয়েছিল রত্না। যারা চটপটে ধরণের থাকে সব সময় তারা যখন টেনশনে থাকে তখন তাদের অচেনা লাগে। রত্নাকেও অচেনা মনে হচ্ছিলো
এসেই বলে, আজ রাতে আমাকে দেখতে আসবে। চলো আমরা পালিয়ে যায়।
: দেখতে আসলেই তো বিয়ে হবে না।
: বাসার পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে আজ রাতেই আকদ। চলো না আমরা পালিয়ে যায়। আমি আর ঘরে ফিরে যাবো না।
: শুনো মাথা গরম করো না। নিজেই চলতে পারি না, সেখানে তোমাকে নিয়ে এখন কিভাবে সম্ভব! এসব কাজে দায়িত্ববান হতে হয়। নিজের একটা চাকরি হলে হয়ে যেত।
: তোমাকে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। আমিও টিউশনি করবো। দেখো আমাদের তেমন সমস্যা হবে না।

পেট্রোলবোমা ও ভালোবাসা (অনুগল্প)

গাড়িটা বলতে গেলে পুরাটাই খালি। মিজান তৃতীয় যাত্রী। জানালার পাশে বসলো। জানালার কাঁচ নেই। হয়ত ভেঙ্গে গেছে। তাই পুরা কাঁচটাই ফেলে দেয়া হয়েছে। এখন বেশিরভাগ গাড়িতেই কাঁচ ভাঙ্গা থাকে। গাড়ির মালিকরা সে কাঁচ ঠিক করতে আগ্রহী থাকেন না। লাভ কি আন্দোলনকারীরা আবার ভাঙবে।
অনিকের হাতে শিমের বিচি ভাজার ছোট ঠোঙ্গা। সেখান থেকে একটা একটা করে শিমের নিচ্ছে আর চিবোচ্ছে, অল্প বয়সী হেল্পার ছেলেটা যাত্রী ডাকছে, মার্কেট, মার্কেট, মার্কেট। পাঁচ টাকা বাড়তি ভাড়া।

কল্পনা (অনুগল্প)

ইদানিং আমি লোডশেডিংয়ের অপেক্ষা করি। নাহ দিনের বেলায় না, রাতের বেলা। বিশেষ করে রাত দশটার পর। কখন লোডশেডিং হবে। চারদিক অন্ধকার হয়ে যাবে। গরম তীব্রতা আরো বেশি বোঝা যাবে।
পাশের বিল্ডিংয়ে থাকে মেয়েটি। মাঝে মাঝে সকাল বেলায় দেখি। কাধে ভারী ব্যাগ নিয়ে কলেজে ব্যস্ত ভঙ্গিতে কলেজে যায়। লম্বা চুল বেণী করা থাকে। খুব যত্ন করে স্কাফ দেয়। সম্ভবত এগুলোকে হিজাবের স্কার্ফ বলে। অনেক পবিত্র লাগে মুখটি।
কখনো কথা হয়নি। তবে রাতে বিদ্যুত চলে গেলে মেয়েটি বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠে। আমি তো রাতের বড় একটা সময় ছাদে কাটাই। ছাদে এলে মেয়েটি তার ছোট ভাইয়ের সাথে গল্প করে। কি গল্প বোঝা যায় না। তবে মাঝে মাঝেই তাদের হাসির শব্দ শোনা যায়। অনেক সুন্দর মনে হয় হাসিটি।

ফেসবুক (অনুগল্প)

রাস্তার পথচারীদের চলাচল কমে গেছে। গাড়ি চলাচলও কম। ফুটপাট ঘেষে কয়েকটি ভ্যানগাড়ি রাখা। সেখানে বসে গল্প করছে দুই বন্ধু সৌরব ও অনিক। অফলাইনে অনলাইনে গল্প।
সৌরব মধুর এক সমস্যায় আছে। একটা মেয়ে তাকে ইদানিং পোক দিচ্ছে। সে ব্যাক করলে ওই মেয়ে আবার দেয়। আবার ব্যাক করলে আবার দেয়। প্রোফাইলে মেয়ের ছবিটা দূর্দান্ত। সারা মুখ জুড়ে মায়া ছড়ানো। লম্বা কালো চুল। দেখলে তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করে।
সৌরভ ঘটনাটা শেয়ার করে অনিকের সাথে।
-বুঝছিস, একটা মেয়ে আমাকে প্রতিদিন পোক করে। ব্যাপারটা আনন্দের।
- তুই কি ওই পোক পেয়ে খুব খুশী।

অপরাধবোধ (অনুগল্প)

জয়া কান্না করছে। সময় না বোঝার কান্না, মানুষ না চেনার কান্না। ব্রেক আপে সাধারণ কান্নার ঘটনা তেমন দেখা যায় না। জয়া যে কলেজে পড়ে সেখানে তাদের একটি বন্ধুত্বের সার্কেল আছে। মেয়েদের কলেজ। ব্রেক আপ একটি সাধারণ ঘটনা। দুইদিন পর পর ব্রেক আপের ঘটনা ঘটছে। সবাই সহজ ভাবেই মেনে নিচ্ছে। এসে সুন্দর ভাবে বলেও দিচ্ছে ব্রেক আপ হয়েছে। দুই দিন যেতেই আবার গল্প করছে, নতুন আরেকজনের সাথে কিভাবে জড়ালো।
বন্ধু সার্কেলের মধ্যেও একটু যেন অন্যরকম জয়া। বাবার টাকার অভাব নেই। বাসায় স্বাধীনতার অভাব নেই। স্বাধীনতার অনেক কিছু করেও ফেলেছে। যা আগে করবে ভাবে নি।

মৃত্যু (অনুগল্প)

ফুটপাথে ছেলেটি দাঁড়িয়েছিল। সন্ধ্যার আঁধারটা ভারী হচ্ছিলো। নিয়ন আলোর বদলে এখন সাদা এনার্জি বালভ ল্যাম্পপোস্টগুলোতে। হালকা আলোয় কিছুটা অন্ধকার দূর হয়। ছেলেটি উদাস মনে হাঁটতে থাকে। তার সামনে রিকসায় এক জুটি চলে যাচ্ছে। নতুন ভালোবাসা সম্ভবত। মেয়েটি ছেলেটির হাত ধরে আছে। ছেলেটি কেমন যেন লজ্জা পাচ্ছে।
তারও ভালোবাসার মানুষ ছিল। এখন আর নেই। প্রিয় মানুষটির নাম ছিল তমা। ইন্টার পাস হতেই ডাক্তার ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় তাকে। ক্লাসমেটকে বিয়ে করার বড় দু:সাহস ছিল না ছেলেটির। অন্যদের ভালোবাসার ব্যাপারগুলো যখন দেখে বুকের এক পাশটা ব্যথা করে। আফসোসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। যা চাওয়া হয় তা সব সময় পাওয়া যায় না। দুইজনই তো চেয়েছিল। তারপরও বাস্তবতার কারণে পাওয়া হয়নি। তমার জন্য ভালই হয়েছে। নিশ্চিত জীবন পেয়েছে। একটা ডাক্তারের অনেক ইনকাম। 

সাঁতার (অনুগল্প)

: কান্না করছো কেন?
: কান্না করতে কোন ট্যাক্স দিতে হয় না। তাই কাঁদছি।
: হাসতেও তো ট্যাক্স দিতে হয় না। হাসি কি দোষ করলো?
: হাসি দোষ করেছে তা কি আমি বলেছি নাকি। কারো কারো কাছে কান্নাটাই বড় আপন। কান্নার মাধ্যমে মনের কষ্টগুলো ওয়াশ করে দিতে পারি।
: মনের কষ্ট তো সবারই কম বেশি আছে। এখন সবাই যদি তা ওয়াশ করতে শুরু করে তাহলে তো দেশে গ্রীষ্মকালেও বন্যা হয়ে যাবে। তখন দেখা যাবে প্রাইভেট নৌকা কিনতে হচ্ছে। একদিকে ভালই হতো। গাড়ি কেনার তো টাকা হতো না। নৌকার দাম কম আছে। সে নৌকা কিনে আমরা দুইজনে মিলে ঘুরতে পারতাম। আচ্ছা তুমি সাঁতার পারো?

অভিমানী (অনুগল্প)

সেদিন বেশ অবাক হয়েছিলাম। এ পিচ্ছি মেয়ে ভালোবাসবে আমায়! আরে এর মুখ দেখলে কি মায়া লাগে। মনে হয় এখুনি বুঝি চোখ ভাসিয়ে দেবে অভিমানে।
অভিমানের ওপর পৃথিবীতে পিএইডি পাওয়ার কোন প্রতিষ্ঠান থাকলে এ মেয়ে অতি সফলতার সাথে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করতো।
ছয়টা বছর পর। আগের সম্পর্ক বদলে গেছে। আগে যা ছিল আড়ালে এখন তা উম্মুক্ত। সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত।
তবে অভিমান এতটুকু কমেনি।

নীরবতা (অনুগল্প)

লামিয়া কাঁদছে। নি:শব্দে কান্না। দুই বার বাথরুমে গিয়ে চোখ পানির ঝাপটা দিয়ে এসেছে। লাভ হয়নি। যখন গালর্স স্কুলে ছিল, পরীক্ষার আগের রাতগুলোতে ঘুম এসে যেতো। তখন বাথরুমে গিয়ে পানির ঝাপটা দিয়ে এসে আবার পড়তে বসতো। সিলেবাস পুরা রিভাইস না দেয়া পর্যন্ত যতই ঘুম আসুক বিছানায় যেত না।
মা এর মধ্যে চা বানিয়ে দিতেন। লামিয়া চা খেতে খেতে নোটগুলো দেখতো। অন্যদিকে তখন মাথায় চুলে তেল দিয়ে হাত বুলিয়ে দিতেন মা। দিনগুলো অন্য রকম ছিল।
এ মুহূর্তে কান্না চাপার চেষ্টা করছে। কিন্তু চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছেই। পাশের মানুষটা শুয়ে ঘুমাচ্ছে। হয়ত বেশিই ক্লান্ত তাই ঘুমটাও বেশি গভীর। কিন্তু লামিয়ার চোখে ঘুম নেই।

ঝালমুড়ি (অনুগল্প)

রাত দুইটায় আবীরের ঝাল মুড়ি খেতে ইচ্ছা করছে। তমাকে বলতে ইচ্ছা করছে। তবে তমার কষ্ট হবে ভেবে বলছে না।
তমা শুয়ে আছে। আবীর চেয়ারে বসা। একটা ম্যাগাজিন পড়ছে।
-তুমি ঘুমাবে না?
আবীর চোখ তুলে তাকায়। তমা তার দিকে তাকিয়ে আছে। গোলাপী রঙ্গের জামা পড়া। মেয়েটা এত সুন্দর কেন! মাঝে মাঝে পুরা ব্যাপারটা আবীরের কাছে স্বপ্ন মনে হয়। মনে হয় ঘুম ভাঙলে দেখবে তমা আর পাশে নেই।
-কিছু বলছো না যে! না ঘুমালে বলো।
- আরেকটু পড়ে ঘুমাবো।

ভুল (অনুগল্প)

আর রাত জাগতে হয় না মাসুদের। তৃষার ফোনের অপেক্ষায় থাকতে হয় না। অপেক্ষায় থাকলেও তৃষা আর ফোন দেবে না। এক সময় অতি কাছের জন সামাজিক ভাবে এত দূরত্বের হয়ে গেছে যে ফোন পর্যন্ত দেয়ার কথা ভাবে না।
মাসুদ রাত জাগতে চায় না। আগের স্মৃতি গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে। ঘুমের ওষুধেও ইদানিং কাজ করছে না। একটা চিরস্থায়ী ঘুম হয়ে গেলে ভাল হতো।
শেষ পর্যন্ত ফ্যামিলি যেখানে বলেছে সেখানেই যেতে রাজি হয়েছে তৃষা। ডাক্তার এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে! এতগুলো স্মৃতিকে কি অবলীলায় পেছনে ফেলে গেছে।
তৃষার শেষ কথাগুলো ছিলো, "অপরাধী হিসেবেই আছি। জানি স্বার্থপর ভাবছো আমায়। আমাকে সেটা ভেবে যদি কিছুটা হলেও ভাল থাকো তবে আমি অনেক ভাল থাকবো। সত্যি বলছি অনেক ভাল থাকবো।"

রিলেশন (অনুগল্প)

ফারিয়ার জগতটা ছোট। সে ফেসবুকে এসে অন্যদের স্ট্যাটাসগুলো পড়ে, লাইক দেয়। কয়েকটি গল্পের পেইজ বুকমার্ক করে রেখেছে। সেগুলোর কোন গল্পই মিস করে না। গল্প ভাল হলেও পড়ে. খারাপ হলেও পড়ে। পড়ার ব্যাপারটা অভ্যাস হয়ে গেছে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই কমেন্ট করে।
ক্লাশ এইট নাইনে পড়ার সময় বই থেকে গল্প পড়ত। হুমায়ূনের গল্পের বই না পড়লে ঘুমই আসতো না। এজন্য মায়ের সাথে রাতে ঝামেলা হতো।
: ফারিয়া, তুমি এখনও লাইট জ্বালিয়ে রেখেছো কেন? তোমার বাবা টের পেলে রাগারাগি করবেন।

সেক্রিফাইস (অনুগল্প)

তাহাদের দুইজনের মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক। চমৎকার বোঝা পড়া। ন্যাকামি ব্যাপারটা কখনো দেখিনি।
মেয়েটি লেখা লেখি করে, ছেলেটিও লেখালেখি করে। একবার একটা ম্যাগাজিনে দুইজনই লেখা জমা দিলো। ছেলেটির লেখা প্রকাশ পেলো। মেয়েটির লেখা ছাপানো হয়নি।
মেয়েটির অনেক মন খারাপ হয়। লেখালেখির ব্যাপারে অল্পতেই আপসেট হওয়ার অস্বাভাবিক গুণ আছে মেয়েটির!

মনবোমা (অনুগল্প)

রাফিদ ও তার বন্ধুরা সেন্টমার্টিন যাবে। কত কত পরিকল্পনা। স্বাধীন হলে কিছু স্বাধীনের অপব্যবহারও হতে দেখা যায়।
আট বন্ধু মিলে যাবে। সেখানে কিছু ব্যাপার ঠিক করা হয়েছে। যা শহরের কেউ জানবে না। গোপন থাকবে। তবে রাফিদের ব্যাপারগুলো খুব অপছন্দ। সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্ধুদের ওইসব কাজের সময় সে আলাদা থাকবে। নীপা এসব পছন্দ করে না।
কিভাবে যেন নীপা ব্যাপারটা অনুমান করে নিলো। তারা যেদিন যাবে তার আগের দিন ফোন।

শিক্ষা (অনুগল্প)

মিমের বয়স সাড়ে দশ। তার মন খারাপ। ক্লাসে একটা বাজে ব্যাপার হয়ে গেছে। বাবার সাথে শেয়ার করা দরকার। কিন্তু শেয়ার করলে বাবার মন অনেক খারাপ হবে। তাই ঠিক সাহস পাচ্ছে না।
মিমের সবচেয়ে ভাল বন্ধু তার বাবা। ভাল বন্ধুর মন খারাপ করতে হয় না।
মা পড়ার জন্য ধমক দেন। মিমের যখন পড়তে ভাল লাগে না তখনও মায়ের ভয়ে পড়তে হয়। না পড়লে মা ভয়ানক রাগ করেন। বাবা কখনো রাগ করেন না। মাঝে মাঝে তো পড়ানোর ভান করে বাবা বিভিন্ন বিষয়ে গল্প করে।

সবুজবাতি (অনুগল্প)

-তোমার ওয়ালটা একটু খুলে দিবে?
-কেন?
-আগে দাও না। খোলার পর বলবো।
- নাহ, কোন দুষ্টামির দরকার নেই। তুমি দুষ্টামি করো, অন্যরা মনে করে তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড।
- মনে করলে সমস্যা কি?
- সমস্যা কি মানে! তুমি একজন বিবাহিত নারী। বিবাহিত নারী অন্য জনের গার্লফ্রেন্ড হয় কিভাবে।
-এখানে একটু ভুল হয়ে গেছে। সময়গত ভুল। তোমার সাথে তো বিয়ের পর পরিচয় হয়েছে। বিয়ের আগে পরিচয় হলে তোমারই বউ হতাম।

ছেলেমানুষি (অনুগল্প)

: আজকে বাজার করতে যেতে পারবো না।
: এটা তো নতুন কিছু না। বাজারে যেতে বললেই নতুন নতুন অজুহাত দেখাও। তোমাকে তো জোর করে বাজারে পাঠাতে হয়। তো আজকের অজুহাত কি?
: আজকের অজুহাতটা অনেক শক্তিশালী। আজকে কোন মতেই আমাকে বাজারে পাঠাতে পারবে না। ফরিদকে পাঠায় দাও।
: আরে, অজুহাতটা কি শুনি।
: বিকেলে বাংলাদেশের খেলা আছে।

দূরপ্রবাস (অনুগল্প)

ইদানিং রাতে ঘুম হচ্ছে না জুয়েলের। দেশে আসার পর থেকে এ সমস্যা। ঘুমাতে গেলে বিভিন্ন চিন্তায় আর ঘুম আসে না। অথচ যখন বিদেশে ছিল তখন সারাদিনের কাজের পর রাত আসার অপেক্ষা করতো। বিছানায় যেতেই ঘুমে হারিয়ে যাওয়া। এজন্য তো তন্বী বেশ বিরক্ত ছিল।
তন্বী অপেক্ষায় থাকতো ওই সময়টার জন্য। ফ্রি হওয়ার পর চ্যাটে কথা বলবে। কিন্তু জুয়েলের ঘুম চলে আসায় কথা বেশি দূর নিতে পারতো না। জুয়েল ঘুমিয়ে পড়তো। তবে এ নিয়ে কখনো অনুযোগ ছিল না তন্বীর। কোন ব্যাপারেই অনুযোগ নেই এ মেয়েটার। যখন শুনলো দেশে আসবে জুয়েল তখন বেশ খুশী হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৫

সারপ্রাইজডে : ২০১৩

সুন্দর এবং সারপ্রাইজড দিন পেতে হলে ভাগ্যবান হতে হয়। আজ সকালে লালখান বাজারে নেমে আবিষ্কার করলাম আমি ভাগ্যবানদের একজন। পনের জনের একটা দল আমাকে উইশ করতে সে আগে থেকে অপেক্ষা করে আছে। পরিকল্পনা করেছে অতি গোপনীয়তার সাথে যাতে কোনক্রমেই আমি জানতে না পারি। এজন্য তারা একদিন আগে শিল্পকলায় যুক্ত হয়ে মিটিংও করেছে। বৃষ্টি হলে কোন স্থানে হবে তাও ভেবে রেখেছে। আমাকে সারপ্রাইজড দিতে চায়।

শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০১৫

চিঠি (অনুগল্প)

: তুমি এখন আর আমার সাথে কথা বলো না কেন?
: কই! এইযে বলছি।
: গতকাল জন্মদিন গেলো। উইশ পর্যন্ত করলে না। ভেবেছিলাম অন্তত একবার কল দেবে।
: ওহ! এই কথা। আসলে ভয়ে ভয়ে ফোন দিই না।
: কিসের ভয়?
: পত্রিকায় পড়লাম সব ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছে। তবে তোমার জন্মদিন যে একেবারে ভুলে গিয়েছি তা কিন্তু না।

কক্সবাজার থেকে ফেরার সময়

দুপুরে কক্সবাজার থেকে ফিরছিলাম। সোয়া একটার হানিফ পরিবহনে উঠলাম। প্রবেশ পথের দিক দিয়ে যে সিট সেখানে দ্বিতীয় সারির জানালায় পাশে পড়লো আমার সিট। বসলাম। পাশে বয়স্ক একজন।
ড্রাইভারের ঠিক পেছনের সিটে একটি কাপল বসা, কক্সবাজার ঘুরে তারাও ফিরছে। উঠার সময় তাদের সাথে চোখাচোখি হলো। হয়ত নতুন বিয়ে হয়েছে।
ভালই চলছিল সব। একটা সময় গিয়ে দেখি মেয়েটির চিল্লাচিল্লি, সে কি চিল্লানি! হাত থেকে স্মার্টফোনটা ছুড়ে মারলো। আওয়াজ হলো। পাশে বসা ছেলেটি স্মার্ট ফোনের বিভিন্ন অংশ খুজে নিয়ে লাগালো। মেয়েটির চিল্লানি থামে না। গাড়ির শব্দের কারণে কি বলে চিল্লাচ্ছে তাও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে না। তবে খেয়াল করলাম গাড়ির সব যাত্রীর নজর তাদের দিকে। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। মেয়েটির।

পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে

সকালে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে গেলাম চোখ দেখাতে। হাসপাতালটা অনেক পছন্দের। বেশ ঝকঝকে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পরিবেশটাও দেখার মত। সার্ভিসও অনেক বেশি ভালো।
১৪ নম্বর কক্ষে দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করা হচ্ছে। এক মহিলা ডাক্তার (যদিও ওনাকে মেয়ে ডাক্তার বলাটাই বেশি উপযুক্ত) পরীক্ষা করছেন। সুন্দর করে স্কাফ দেয়া। অক্ষরের বক্স আছে। অপজিটে আয়নায় সে অক্ষরের প্রতিফলন হয়। ছোট থেকে অনেক বড় পর্যন্ত অক্ষর সারি আছে। তা দেখে বলতে হয় কত টুকু পর্যন্ত পড়তে পারছে।
এক বয়স্ক লোকের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তাকে উদ্দেশ্যে করে ডাক্তার বললেন, “চাচা, আমার দিকে না। ওই সামনের দিকে তাকান।”
মনে মনে বলি, ডাক্তার এত সুন্দর হলে না তাকিয়ে পারা যায়। চাচার কি দোষ! তাকাবেই তো!
১৪ নম্বর কক্ষের কাজ শেষ। ২৬ নম্বর কক্ষে এলাম। এখানে আবার পরীক্ষা হবে। এটা একটু ভিন্ন ধরণের। একটা যন্ত্রের সামনে চোখ রাখতে হয়। ওই পাশ থেকে ডাক্তার দেখবেন।
যিনি যন্ত্রের বিপরীতে তিনিও মেয়ে ডাক্তার। আন্তরিক ব্যবহার তার। যতটুকু সুন্দর তার চেয়ে অনেক বেশি মায়াবী।

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

ঝালমুড়ি (অনুগল্প)

রাত দুইটায় আবীরের ঝাল মুড়ি খেতে ইচ্ছা করছে। তমাকে বলতে ইচ্ছা করছে। তবে তমার কষ্ট হবে ভেবে বলছে না।
তমা শুয়ে আছে। আবীর চেয়ারে বসা। একটা ম্যাগাজিন পড়ছে।
-তুমি ঘুমাবে না?
আবীর চোখ তুলে তাকায়। তমা তার দিকে তাকিয়ে আছে। গোলাপী রঙ্গের জামা পড়া। মেয়েটা এত সুন্দর কেন! মাঝে মাঝে পুরা ব্যাপারটা আবীরের কাছে স্বপ্ন মনে হয়। মনে হয় ঘুম ভাঙলে দেখবে তমা আর পাশে নেই।

জন্মদিনে শুভেচ্ছা

২০১৪

০১. মো. আসাদ উল্লাহ :
"খুব কাছের এক বান্ধবীর মুখে তার নাম প্রথম শুনি। প্রেমিকা বা বান্ধবীদের মুখে ছেলেদের নাম শুনলে যা হয় আর কি।
-আরে ধুর ফাউল পুলা
-সব ভাব, মেয়ে পটানোর ফন্দি
-ভালোর মুখোশে একেকটা বজ্জাৎ, খোঁজ নিয়ে দেখো কত মেয়ের সাথে ইয়ে আছে।
মেয়েটা একটা কথা বলে থামিয়ে দিল, সবাইকে নিজের মত মনে করো?
কৌতূহলে তার অয়ালে ঢুকলাম, খুজে পেটে সমস্যা হলনা কারন আমার বান্ধবীর অয়াল জুরে তার শেয়ার করা গল্প।

পোক (অনুগল্প)

রাস্তার পথচারীদের চলাচল কমে গেছে। গাড়ি চলাচলও কম। ফুটপাট ঘেষে কয়েকটি ভ্যানগাড়ি রাখা। সেখানে বসে গল্প করছে দুই বন্ধু সৌরব ও অনিক। অফলাইনে অনলাইনে গল্প।
সৌরব মধুর এক সমস্যায় আছে। একটা মেয়ে তাকে ইদানিং পোক দিচ্ছে। সে ব্যাক করলে ওই মেয়ে আবার দেয়। আবার ব্যাক করলে আবার দেয়। প্রোফাইলে মেয়ের ছবিটা দূর্দান্ত। সারা মুখ জুড়ে মায়া ছড়ানো। লম্বা কালো চুল। দেখলে তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করে।

মোবাইল ও মানুষ (অনুগল্প)

-তুমি পঁচা পঁচা পঁচা।
- তুমি বুদ্মিমতী!
-কেন কেন?
- এই যে পঁচা মানুষ চিনতে পারছো। তোমরা মেয়ে মানুষরা বেশিরভাগ সময় বিপদে পড়ো পঁচা মানুষ চিনতে না পারার জন্য।
- তুমি শুধু পঁচা না খারাপ মানুষ। কেমন খারাপ জানো?
- কেমন?

স্বপ্ন (অনুগল্প)

-একটা কথা বলি?
- একটা না দশটা বলো। আর ছেলেদের এমন মিউ মিউ গলা আমার পছন্দ না। যা বলবা স্ট্রেট কাট বলে ফেলবে। এত অনুমতির কি আছে।
রিয়াদ ঢোক গিলে। কোন মেয়ের সাথে বাবা-মা বিয়ে দিলো। এইতো পুরাই অন্যরকম। আর কিছু বলার সাহস পায় না। এই মেয়ের সাথে বাকী জীবনটা কাটাতে হবে ভেবে আতঙ্কিত হয় রিয়াদ।

বিশ্বাসঘাতক (অনুগল্প)

এ পরীক্ষাও খারাপ হলো নীতুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল বাস চড়ার অনেক শখ ছিল। ইচ্ছে ছিল টিএসসিতে আড্ডা দিবে। ঢাবি নামক রাজ্যটায় সেও একজন হবে।
কেউ যখন জিজ্ঞেস করবে কোথায় ভর্তি হলে খুব খুশী মনে উত্তর দিবে, ঢাবি।
ভাবতেই ভালো লাগতো।

কোটা (অনুগল্প)

লাবিবা মেয়েটা শ্যামলা চেহারার। মুখের মধ্যে অনেক বেশি মায়া ছড়িয়ে আছে। ও যখন হাসে তখন মনে হয় সারা মুখে যেন দুষ্টামি ছড়িয়ে আছে। চোখগুলোও যেন হাসে। দেখে থাকতেই ইচ্ছা হয়। আবীর তো সাথে থাকলে অদ্ভূত সব কাণ্ড করে যেন লাবিবা হাসে।
লাবিবা বলে, তুই এত দুষ্টামি করিস কেন?

ঢাবি

ফরিদ সাহেব ঢাবিতে লেখাপড়া করেছেন। স্কলারশীপ নিয়ে কানাডা যান। সেখানেই চাকরি হয়। মধ্যখানে দেশে এসে বিয়ে করেন।
তার মেয়ে আছে। মেয়ের বর্তমান বয়স নয় বছর। বিদেশে বড় হলেও বাংলা বলতে পারে। বাসাতে মেয়ের সাথে তিনি বাংলাতেই কথা বলেন।

ম্যাডাম

নীরা মানবিক বিভাগে পড়ে। মফস্বলের একটা মহিলা কলেজে। সেখানে হোস্টেলের ব্যাবস্থা আছে। সে হোস্টেলে থাকে।

হোস্টেলের সিস্টেমগুলো কেমন যেন! একবার হোস্টেলের রান্না ঘরে যে মহিলা দায়িত্ব পালন করে তাকে বলেছিল, আন্টি ঝালটা আরেকটু কম দিয়েন।
তা শুনে সে মহিলা এমন একটা ভাব নিলো যাতে মনে হতে পারে অনেক বড় একটা অপরাধের কথা সে বলে ফেলেছে।

ইরেজার

নিচে লাফ দিলে কি হয়?
এমন প্রশ্নে শারমিনের দিকে তাকায় ইফতি। হঠাৎ করে একথা আসলো কোথা থেকে তা ওর মাথায় ঢুকে না।
ওরা বসে আছে পাঁচ তলা ওপর একটা রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টের দেয়াল নেই। বড় থাই কাঁচের গ্লাস। কালো রঙ্গের কাচ সরালেই খোলা আকাশ দেখা যায়।নিচে গাড়ি ঘোরা চলছে। ছোট ছোট দেখা যায় সব।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা

পাঞ্জাবিটা একটু ঢোলা হয়েছে। কালো রঙ্গের পাঞ্জাবি। মৌমিতার পছন্দের রঙ কালো। গত তিন বছর ধরে সজিব কালো রঙ্গের কাপড় কিনে।
টি টেবিলের ওপর রাখা একটি কেক। তার ওপরে ছোট ছোট মোমবাতি রাখা। মোমবাতিগুলো জ্বলছে। সজিব অপেক্ষা করছে। মোমবাতি গুলো যখন নিভে যাবে তখন কেক কাটা হবে।

বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৫

চট্টগ্রামে আড্ডা

১ মে-২০১৩
আজ আড্ডায় জিকু আশরাফ এর একটু বেশিই আক্রমণ হলো কথার দ্বারা। সাড়ে সাত বছর দুই দিনের ব্যাপার নিয়েই বেশি কথা হলো তাকে নিয়ে, জিকুর নাম নীরব ভাই জিতু কেন দিলেন সেটা নিয়ে কথা হলো। এক পর্যায়ে বেচারা জিকু ফকিরকে অর্থ সাহায্য দিয়ে বলল, আমার একটু দোয়া করিয়েন, আর কেউ যেন আক্রমণ না করে।
চা খাওয়া চলল। নোমান ভাই মাঝে মাঝে মুচকি মুচকি হাসছিলেন। এক সময় সবার প্রশ্ন দেখি, Kasafaddauza Noman ভাই এত চুপ কেন।
কথা কম বলার যুক্তিসংগতই উত্তর দিলেন।

চায়ের বিল নোমান ভাইই দিলেন। জানা গেলো তিনি চিটাগং এলে এ জায়গাতেই তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন। আরেকটা ব্যাপার জানালো জিকু ভাই জানালো, যেদিন সাভার দূর্ঘটনা হয়েছে, সেদিনই ঢাকা শহরের ভবন ধসের আশংকায় নাকি চট্টগ্রাম এসে গেছেন নোমান ভাই!

Kolpo Bilashi পুডিং বানিয়ে আনতে গিয়ে আসতে দেরি করে ফেলল। বাসায় পুডিং বানাতে গিয়ে হাত পুড়ালো, ডেসকি পুড়ালো। কিন্তু মনের মত পুডিং বানাতে না পারায় সেগুলো আনলো না। আসার সময় দোকান থেকে বিশাল আকৃতির পুডিং কিনে আনলো। সে পুডিং তৃপ্তি সহকারে সবাই খেলো। এরমধ্যে তৃপ্ত সুপ্ত আপু তার ক্যামেরায় গ্রুপ ছবি তুলে দিলেন।

প্রথম অবস্থান ছিল আমাদের ডাচ বাংলের অপজিটে গ্রামীণের সৌজন্যে দেওয়া পথচারী ছাউনিতে।

প্রথম অবস্থান থেকে লাল খান বাজারের পেছনের বাটালি হিলের উপরে আড্ডা দেয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হলো। কিন্তু কয়েকজনের অনাগ্রহের কারণে তা বাতিল। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শিল্পকলা ঠিক হলো।

এরমধ্যে নোমান ভাই বিদায় নিলেন। তার বন্ধুরা তার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমার একসাথে থাকতে ইচ্ছা করছে, মজার আড্ডা ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। কিন্তু অফিস শুরু হয়ে গেছে ৫ টা থেকে। আগেরর দিনও দেরি করে গিয়েছি। তাই মন উসখুশ করছিল অফিসে যাওয়ার জন্য। এম্নেতেই এক ঘন্টার ওপর দেরি হয়ে গেছে। তাই মন শক্ত করে জিইসি মোড় থেকে বিদায় নিতে বাসে উঠার প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু ছোট ভাইগুলোর বাধা। তাদের কথা এক দিন দেরি হলে কিছু হবে না। এরমধ্যে হুট করে কল্প তরু এসে আমার হাতের থেকে মোবাইলটা নিয়ে ফেলল। সুন্দর করে হাঁটা দিলো। সবাই দেখি বেশ সমর্থন দিলো এ ঘটনায়। এরমধ্যে আমাদের দল বেঁধে হাটা চলা শিল্পকলার উদ্দেশ্যে। শিল্প কলায় পৌঁছে কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর বিদায় নিয়ে অফিসের দিকে আসলাম।

আড্ডায় অনেক বেশি প্রাণবন্ত দেখা গেছে জিসান বাপ্পি কে। এছাড়া যাদের উপস্থিতিতে আড্ডা প্রাণবন্ত তারা হচ্ছে, জাহিদ, নিলয়, ইমদাদ, পিনাক, রাহী....................

ফেসবুকে লিংক.

বৃহস্পতিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

উইন্ডোজ এক্সপি

## অপ্রয়োজনীয় ফাইল সমূহ ডিলিট করতে ##

উইন্ডোজ এর অপ্রয়োজনীয় ফাইল ডিলিট করা::
run→eventvwr→select application, system, ……, microsoft office sessions →action→clear all events→no
run→ prefetch→ ok→ ctrl+A →shift+delete
run→%temp%→ok→ select all→shift+delete

শুক্রবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৫

ভার্চুয়ালে প্রিয় মানুষগুলো..

দুইটা ভিন্ন জগত। একটা অপরটির বিকল্প না। তারপরও অপর জগত বিষয়ে বন্ধুদের কাছ থেকে হারমেশাই টিপ্পনি খেতে হয়। ব্লগ, ফেসবুক তথা অন্তর্জালে আমার একটি আলাদা জগত হয়ে উঠেছে। সেখানে পেয়েছি অনেক প্রিয় মানুষ। ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব বলে ওই জগতের বন্ধুত্বের ব্যাপারটিকে কেউ কেউ তুচ্ছার্থ করে। এ জিনিসটায় ভীষণ খারাপ লাগে। ভার্চুয়ালে ফেক নিক থাকে এটা যেমন সত্য তেমন অনেক ভাল বন্ধুও জুটে যায় এ জগতে।