শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

নীরবতা (অনুগল্প)

লামিয়া কাঁদছে। নি:শব্দে কান্না। দুই বার বাথরুমে গিয়ে চোখ পানির ঝাপটা দিয়ে এসেছে। লাভ হয়নি। যখন গালর্স স্কুলে ছিল, পরীক্ষার আগের রাতগুলোতে ঘুম এসে যেতো। তখন বাথরুমে গিয়ে পানির ঝাপটা দিয়ে এসে আবার পড়তে বসতো। সিলেবাস পুরা রিভাইস না দেয়া পর্যন্ত যতই ঘুম আসুক বিছানায় যেত না।
মা এর মধ্যে চা বানিয়ে দিতেন। লামিয়া চা খেতে খেতে নোটগুলো দেখতো। অন্যদিকে তখন মাথায় চুলে তেল দিয়ে হাত বুলিয়ে দিতেন মা। দিনগুলো অন্য রকম ছিল।
এ মুহূর্তে কান্না চাপার চেষ্টা করছে। কিন্তু চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছেই। পাশের মানুষটা শুয়ে ঘুমাচ্ছে। হয়ত বেশিই ক্লান্ত তাই ঘুমটাও বেশি গভীর। কিন্তু লামিয়ার চোখে ঘুম নেই।

কিছু ব্যাপার থাকে বাহিরের কাউকে বলা যায় না। এ মানুষটার সাথে সারা জীবন থাকতে হবে ভাবলেই লামিয়ার কেমন যেন লাগে। তাদের বিয়ে হয়েছে এক মাস। তার খুব কথা বলতে ইচ্ছা করলেও লাভ নেই। কেমন যেন মানুষটা। ঠিক বন্ধুর মত না।
একসময় অনেক বেশি বক বক করতো লামিয়া। কিন্তু এখন নিজেকেই নিজের কাছে অপরিচিত মনে হয়। এত কম কথা বলেছে গত এক সপ্তাহে কয়টা কথা বলেছে তা গুণে বলে দিতে পারবে।

ফোনে মা জিজ্ঞেস করেছিল, কিরে তোর মন খারাপ?
স্বাভাবিক হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে বলেছিল, আরে নাহ।
আগের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে বার বার লামিয়ার। বাসার দিনগুলো থেকে বের হয়ে যদি অন্য কোথাও আর যেতে না হতো।

লামিয়া জানে না এভাবে আর কতটা রাত তার কাঁদতে হবে। তার মনে হয় বেশি চঞ্চল হওয়া ভাল না। চঞ্চলরা যখন এমন পরিস্থিতিতে পড়ে যেখানে চঞ্চলতার ব্যাপারটাই জোর করে প্রতিটি মুহূর্তে আটকে রাখতে হয় তখন তাদের অনেক বেশি কষ্ট হয়, অনেক বেশি কষ্ট।

ফেসবুকে -নীরবতা