শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

দগ্ধ (অনুগল্প)

তাদের সম্পর্কের শুরুর গল্পটা পরিচিত কোন গল্পকারের বর্ণনার মত। বৃষ্টি পড়ছিল। মেয়েটির ছাতা ছিল না। ছেলেটি ছাতা নিয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টির মধ্যেই যখন মেয়েটি বের হচ্ছিলো ছেলেটি ডাক দিয়ে হাতে ছাতা ধরিয়ে দেয়। অনেকটা জোর করে ধরিয়ে দেয় বলা যায়। একই কলেজে পড়ে অথচ কখনো কথা হয়নি আগে।
পরদিনই ছাতা ফেরত দেয় মেয়েটি। এর পর দুইজনের মধ্যে কথা বার্তা। আলাপন। একটা সময় ভাল লাগা। এরপর একজন আরেকজনের সাথে সারা জীবন থাকার স্বপ্ন দেখা।


কিন্তু হঠাৎ করে দূর্ঘটনাটা ঘটে। রান্না করতে গিয়ে অসাবধান বশত আগুন লেগে যায় মেয়েটার কাপড়ে। আগুন নেভাতে নেভাতে অনেক খানি সময় চলে যায়। এতে পুড়ে যায় শরীরের বড় একটা অংশ। হাতের উপরের দিকেও পুড়ে। হাসপাতালে টানা এক মাস থাকার পর বাসায় ফিরে মেয়েটি। সারা শরীরে পুড়া দাগ। সারা জীবনই বইতে হবে এ দাগ।

মেয়েটি সিদ্ধান্ত নেয় ছেলেটির সাথে আর যোগাযোগ করবে না। কি দরকার এমন পোড়া একটা শরীরের সাথে এমন সুন্দর একটা ছেলের জীবন জোড়া লাগানো।
কিন্তু ছেলেটি অটল। মেয়েটি অনেক কথা বোঝায়। ছেলেটি বুঝতে চায় না। ছেলেটির এক কথা আমারও তো এরকম হতে পারতো। কিংবা দূর্ঘটনায় পড়ে হাত পা হারিয়ে বসতে পারতাম। তখন কি তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে? তোমার তো হাত পা সব আছে।
তুমি যে তোমার পোড়া দাগের কারণের আমাকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছো, এড়িয়ে গেলে আমার পুরা মনই তো পুড়ে যাবে তখন? প্রশ্ন করে ছেলেটি।
মেয়েটি উত্তর দেয় না। কি উত্তর দেবে। তার চোখ বেয়ে পানি পড়ে। সে পানি গুলো লুকায় না। ছেলেটি নিষ্পলক হয়ে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে।
পৃথিবীর অনেক বেশি সুন্দর একটা দৃশ্য!

ফেসবুকে : দগ্ধ