শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ভার্চুয়াল জগতের মানুষগুলো নিয়ে লেখা

শাহরিনা রহমান অ্যালানা ।। ২৬ডিসেম্বর১২

প্রথম আলো ব্লগের মাধ্যমেই আসলেই ইন্টারনেটে ভার্চুয়াল জগতে লেখালেখি শুরু। সেখানে অনেক ভাল ভাল কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়। যাদেরকে মন থেকে শ্রদ্ধা করি। দারুণ সময় ছিল ব্লগের দিনগুলো।
তা যখন ব্লগে ঢুকি বিভিন্ন প্রসঙ্গে একজনের নাম শুনতাম। প্রিন্সেস অ্যালানা, পুরা নাম শাহরিনা রহমান অ্যালানা। কিছু কারণে সে প্রথম আলো ব্লগ ছেড়ে দিয়েছে। মাত্র অষ্টম শ্রেণীতে পড়াবস্থায় ব্লগে লিখে এক পরিচিত নাম হয়ে উঠে। অদ্ভূত সব সুন্দর লেখা। ব্লগে গিয়ে লেখাগুলো পড়তাম। মনে হতো অনেক বড় কেউ লিখেছে। আগের বিভিন্ন জনের পোস্টে ওর কমেন্ট দেখে ভাবতাম ইশ সে যদি ব্লগিং করত, আমার পোস্টে কমেন্ট করতো!

ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাথে আড্ডা

২৯ ডিসেম্বর :১২
কোথাও গেলে (অপরিচিত যেখানে থাকে) আমি সাধারণত জড়সড় হয়ে থাকি। হুট করে মনের সব কথা বলে ফেলতে পারি না। তবে অন্যদের উচ্ছাস, গল্পগুলো দারুণ উপভোগ করি।
কয়েকজন তরুণ-তরুণী চট্টগ্রামের শিল্পকলায় একত্রিত হয়েছে। ভার্চুয়াল ভাবে তারা পরিচিত হয়েছে পরষ্পরের সাথে। ভার্চুয়াল জগতটা যে শুধু সময় কাটানোর প্লাটফর্ম না এটা প্রমাণ করার জন্যই এ কয়েক তরুণ-তরুণীই যথেষ্ট। অসহায় শীতার্তদের জন্য তারা কাপড় সংগ্রহ করছে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

লাইক (গল্প)

সমস্যাটা ব্যাপক না, তারপরও চোখের লাগার মত। এষা ব্যাপারটা অনেক দিন ধরে খেয়াল করছে। ফেসবুক পেইজের কোন গল্পে কমেন্ট করলেই তাতে লাইক দেয় আনিস নামে একটা আইডি।

কোন গল্প পড়ে দেখা গেলো শুধু দু:খের ইমো দিয়েছে। কিন্তু ওই ছেলে তাতেও লাইক দিয়ে বসে আছে। প্রথমে ভেবেছিল লাইক ভাইরাসে আক্রান্ত ছেলেটা। অনেকের এ সমস্যা আছে। না পড়েই লাইক দিয়ে দেয়। অনেকটা নেশার মত। যেহেতু এ বিষয়টা এখনও চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্তর্ভূক্ত হয় নাই তাই আপাতত এর কোন চিকিৎসা নেই। তবে এষা একটা ব্যাপারে নিশ্চিত যেভাবে লাইক দেওয়া শুরু হয়েছে তাতে এক সময় এটা একটা মানসিক রোগ হিসাবে দেখা হবে।

হ্যাক (গল্প)

তানির প্রচন্ড দাঁত ব্যথা করছে। আঙ্গুল চেপে ধরে আছে দাঁতটায়। যতক্ষণ চেপে ধরে থাকে ততক্ষন একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। কিছুটা ভাল লাগে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার ব্যথা শুরু হয়। উপরের চোয়ালের ডান দিক হতে দুই নম্বর দাঁতটা। মাড়ির দাঁত ব্যাথাও বেশি। ইচ্ছা হচ্ছে হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মেরে দাঁতটাকে ফেলে দিতে। এ দাঁতটা এখন বড় শত্রু মনে হচ্ছে। নিজের শরীরের অংশ হিংস্র শত্রুর মত আচরণ করে ব্যাপারটা ভাবতে খারাপ লাগছে।

বিদায় ফেসবুক (গল্প)

এর আগে পরীক্ষা কিংবা অন্য কোন কাজের কারণে বেশ কয়েকবার ফেসবুক ডিএক্টিভ করা হয়েছে। কিন্তু কখনো ডিলিট করিনি। এবার তাই করতে যাচ্ছি। মন খারাপ। ভার্চুয়াল একটা সুন্দর জগত গড়ে উঠেছিল। বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বেশ ভাল সময় কাটতো। আজ থেকে তা বন্ধ হয়ে যাবে।

আচ্ছা ফেসবুকের থেকে যে বিদায় নেওয়া এ ব্যাপারে কি স্ট্যাটাস দেওয়া যায়? কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম। নাহ এভাবে লোকদেখানো স্ট্যাটাস দিয়ে লাভ নেই। লুকিয়ে বিদায় নিতে হবে। আর বিদায় নেওয়ার কারণটাও বলা যাবে না। আসলে ভার্চুয়াল জগতে কারো অনুপস্থিতি তেমন অনুভব করার সুযোগ পাওয়া যায় না। যে যায় তার জায়গায় অন্যজন কিংবা একাধিক জন এসে উপস্থিত হয়। আর অন্যদেরও বা কি দোষ দিবো। আমার নিজেরই তো অনেক বন্ধু ফেসবুক ছেড়ে চলে গেছে। তাদের কতজনেরই খবরই বা আমি রেখেছি। মাঝে হঠাৎ বা কোন কারণে ওই আইডি চোখে পড়লে ওর ওয়ালে লিখে আসা কেমন আছো। দায়িত্ব বলতে এতটুকুই পালন করেছি। অভাববোধটা কখনো তো সেভাবে অনুভব করি নাই। নতুনদের সাথে আড্ডা দিয়ে সে আগের মতই সময় কেটেছে।

ক্ষমা করা হবে না (গল্প)

ফ্লাক্স থেকে চা নিয়ে খায় সোনিয়া। রাত দুইটা বাজে। চোখে ঘুম আসছে। কিন্তু ওর ইচ্ছা রাত তিনটা পর্যন্ত পড়ে চার ঘন্টা ঘুমাবে। সেজন্য ঘুমটাকে পাত্তা দেয় না। ঘরের সবাই ঘুমে। মনে মনে দোয়া করতে থাকে মা-য়ের ঘুম যেন না ভাঙে। পাশের রুমেই ঘুমিয়েছেন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে বলে দিয়েছেন তাড়াতাড়ি যেন ঘুমিয়ে পড়ে।
: সোনিয়া, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়িস। ঘুম ভাল হলে মাথা ঠান্ডা থাকে। ফাইনাল পরীক্ষা, মাথা ঠিক না থাকলে উল্টা পাল্টা লিখে আসবি। রাত বেশি জাগিস না।

হাবিজাবি গল্প ** (গল্প)

আগে এমন কোন অভিজ্ঞতা নেই। তাই লজ্জা লজ্জা করছে সুমনের। সব কিছু কেমন যেন। খাটের ওপর বসে আছে তিথি। মাথায় ঘোমটা দেওয়া।

বিকালে নিজের অবিবাহিত জীবনের পরিসমাপ্তি টেনেছে। ঠিক টেনেছে বলা যায় না। ওর মা অনেক দিন ধরে বলতেছিল, ঘর খালি খালি লাগে। বউ আনা দরকার। প্রথমে কিছুটা আপত্তি করেছিল বটে। তারপরও কিভাবে যেন ঘটনা ঘটে গেলো। একসময় নিজেকে আবিষ্কার করলো জামাইয়ের সাজে বিয়ের মঞ্চে বসে আছে।

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নামহীন কৈশোর ( গল্প )

ডায়েরীটার দিকে বিরক্ত হয়ে তাকাচ্ছে আনিকা। কাল রাতে ডায়েরী লিখেছিল। নিজের লেখাগুলো পড়ে নিজেরই বিরক্ত লাগছে। আবার পড়ল। মনে হচ্ছে না কথাগুলো নিজে লিখেছে। অন্য কোন মেয়ে যেন লিখেছে। কিন্তু লেখাগুলো যে ওর নিজেরই এটাই সমস্যা। গুটানো অক্ষরে লেখা। ইচ্ছা হচ্ছে ডায়েরীর পাতাটা ছিড়ে ফেলতে। তারপর কুচিকুচি করে ছিড়ে ফেলে দিতে।

ওদের ক্লাসে রুবি কাগজ ছিড়ার ব্যাপারে ওস্তাদ। কাগজ ছিড়তে খুব মজা পায়। ওর কাজই যেন কাগজ ছিড়া। কাগজ ছিড়ে সেগুলো কারো মাথার উপর ছিটিয়ে দিয়ে বলে কি মজা কি মজা তোর বিয়া। এই পর্যন্ত আনিকারও বেশ কয়েকবার বিয়ে দিয়ে দিয়েছে রুবি।

আমারে কেউ জানেনা ( গল্প )

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। বিকালটা যে এত তাড়াতাড়ি অন্ধকারে ঘনিয়ে এলো তা টেরই পায়নি শুভ্রা। এইতো আলো ছিল। পরক্ষণেই অন্ধকার হানা দিল, এরকম মনে হচ্ছে ওর কাছে। অন্ধকার যে খারাপ লাগে তা না। রাতের অন্ধকারের নিস্তবদ্ধতা, তারা ঝলমল মায়াবী রাতটা অনেক পছন্দ ওর। তবে এখন রাতের উপর বিরক্ত লাগছে প্রচন্ডরকমভাবে। আরেকটু পরে আসলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত।

লেকের উপর বসে আছে শুভ্রা। তার সাথে রফিক। রাত চলে আসায় বাসায় ফিরতে হবে তাড়াতাড়ি। বাবা এরি মধ্যে কল দিয়েছেন দুইবার। এই তো পথে বলেছে। অথচ সে এখনও লেকে বসে আছে। ঢাকা শহরে একটা মজা পরিচিত মানুষের দেখা হওয়া ভয় নেই।

রংচটা জীবন( গল্প )

ফ্যানের ভয়ংকর শব্দ। বাতাস আসছে সামান্যই। যে বাতাস আসছে তাতেও কেমন গরম একটা ভাব। গরম না কমিয়ে ফ্যান যেন আরো গরম বাড়াচ্ছে। তারপরও মনে শান্তি। ফ্যান ঘুরছে। কিছুটা ঠান্ডা কল্পনায় হলেও অনুভব করা যায়। সেটাও কম কিসে।

টেবিলের উপর একটা ম্যাগাজিন রাখা। বিদেশী ম্যাগাজিন। বেশ কিছু দৃষ্টিকুটু ছবি আছে। গল্পগুলোও বড়দের। খোরশেদ এবার অনার্স শেষ বর্ষে। যথেষ্ট বড় হয়েছে। তারপরও ওর কাছে মনে হয় বিয়ের আগে এসব গল্প পড়া ঠিক না। কিন্তু মনে হয় ঐ টুকুই। বুদ্ধিটা দিয়েছে মনির। ওরা একটা ইংলিশ কোর্সে ভর্তি হয়েছে। সেখানে একটা কথা-ই বার বার বলা হয়, বেশি বেশি ইংরেজী পড়তে হবে। ইংরেজী পত্রিকা পড়তে হবে।

অসময় ( গল্প )

বিকালটা শেষ হতে চলছে। একটু পরই আস্তে আস্তে আধাঁর নামবে। আধাঁরে ঢেকে যাবে চারপাশ। অর্থি বসে আছে খোলা উঠানে। আশে পাশে কেউ নেই। সবাই ঘরের ভিতর মজা করছে। কিন্তু ঐ মজাতে নিজেকে জড়াতে ইচ্ছা করে না অর্থির।

আজ দুপুরে সবাই ইচ্ছেমত সাঁতার কেটেছে পুকুরে। অর্থিকেও অনেক ডাকা হয়েছে কিন্তু ও যায় নি। অথচ একসময় এই সাঁতার কাটার সুযোগ পাওয়ার জন্যই বারে বারে গ্রামে আসতে চাইত। সে সময় সাঁতারও পারত না। এখন সাঁতার পারে। তারপরও নামতে একটুও ইচ্ছা করে না। ওর চাচাতো ভাই-বোনেরা সাঁতরে পুকুর পার হয়। একজন অন্যজনকে পানি ছুড়ে দেয়। প্রতিযোগিতা করে কে বেশিক্ষণ ডুবে থাকতে পারে।

আতঙ্ক ( গল্প )

বৃহস্পতিবার। দিনটা অন্য দিনের চেয়ে সুন্দর আবিরার। প্রতি সপ্তাহে এই দিনটির অপেক্ষায় থাকে সে। এই দিনে স্কুল লাইব্রেরী থেকে বই নেওয়া যায়। সে বই এক সপ্তাহ রাখা যায়। আবিরা বই পড়তে অনেক পছন্দ করে। তবে সমস্যা একটা। একটার বেশি বই নেওয়া যায় না। একটা বই পড়তে বেশি হলে একদিন লাগে। অনেক বই ই এক বসাতে পড়া হয়ে যায়।

লাইব্রীয়ানের দায়িত্ব পালন করেন শিশির স্যার। আবিরা একদিন স্যারকে বলে বসে, স্যার একটার বেশি বই দেওয়া যায় না?

দুঃখ ( গল্প )

ঝর্ণার পানি গুলো পড়ছে অনেক উপর থেকে। একেবারে স্বচ্ছ সে পানি। পানির পড়ার একটা সুন্দর শব্দ। পানি যেখানে পড়ছে সেখানে মাটি জমে গেছে। পাথরের মত শক্ত সে স্থান। পানি পাহাড়ের পথ ধরে অনেক দূর ভিতরে চলে যায়। রকিবের ইচ্ছা হয় ভিতরে গিয়ে সেসব পানি কতদূর যায় তা দেখার। কিন্তু যে পিচ্ছিল আর ঘন বন তা সম্ভব নয়।

কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়েছে। বনের লতাপাতা গাছগুলো অনেক সবুজতর হয়েছে। পাতায় লেগে আছে বৃষ্টির পরশ। সে পাতায় হাত দিলে পিচ্ছিল একটা অনুভূতি। রবিন পাতায় হাত দিয়ে সে পানি স্পর্শ করছে। আর শাহীন দেখছে দূরের পাহাড়টা। ওর একটা স্বপ্ন। উঁচু পাহাড় জয়ের। তবে বর্ষা কাল এখন। তাই যাওয়া যাবে না।

আবেগে ( বড় গল্প-চলতি )

সকালে আজ একটু দেরিতে উঠল সৌরভ। ঠিক উঠল বলা যায় না। উঠানো হলো বললেই ভাল। ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন ভোরেই ওর বাবা ওকে উঠিয়ে দেয়। এত ভোরে ঘুম থেকে উঠতে একটুও ইচ্ছা করে না। তারপরও উঠে যেতে হয়। এর পর বাবা ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে তা এনে সৌরভের হাতে দেন। তখনও ওর ঘুম পুরাপুরি যায় না। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ও যেন দাঁত ব্রাশ করে। তা দেখে বাবা হাসেন।

বুয়া সকালের নাস্তা বানায়। এত সকালে খেতে চরম বিরক্ত লাগে সৌরভের। বাবা ওকে খাইয়ে দেন নিজ হাতে। একটু পর পর বাধা দিতে চায় সৌরভ। “ আব্বু আর খাবো না, পেট ভরে গেছে।”
“ এত কম খেলে খিদা লেগে যাবেতো। আরেকটু খাও।”

বিমূর্ত স্বপ্ন ( গল্প )

নিদারুণ কষ্ট হচ্ছে। কখনো কখনো কিছু ক্ষেত্রে চরম আফসোস জাগে। ভালর জন্য অন্যকে কিছু শিখিয়ে পরে যদি কষ্ট পেতে হয় তখন আফসোস বহুগুণে বেড়ে যায়। কেন শিখাতে গেল তা ভেবে মাথা খুড়ে মরার উপক্রম হয়। এমনও হয় এক দক্ষ সৈনিক এক তরুণকে অস্ত্র শিক্ষায় পারদর্শী করে তুলল। পরে দেখা গেল যাকে শেখানো হলো তার হাতেই মৃত্যু হলো ঐ দক্ষ সৈনিকের। এই যেন দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা।

নাহ সৌরভের ব্যাপারটা এত কঠিন না। তারপরও ও অনেক আফসোস করছে। বার বার চিন্তা করছে কেন যে শেখাতে গেল। এদিকে বন্ধু সাদিককে ব্যাপারটা খুলে বলেছে। সাদেক কথাটা শুনে এক কথায় উত্তর দিয়েছে, গাধাদের এরকমই হয়।

রুবা ( গল্প )

( বেশ কয়েক বছর আগে গল্পটা লেখা। কেন লিখেছিলাম। কি প্লট নিয়ে লিখেছিলাম ভুলে গিয়েছি। তবে এটা মনে আছে উপন্যাস লিখব মনে করে শুরু করেছিলাম। ফ্রন্টের কিছু সমস্যা। কিছু ঠিক করলাম। দিয়ে দিলাম। পোস্ট। উপন্যাসের নামও জানি না কি ভেবেছিলাম, তবে নায়িকার নামে দিয়ে দিলাম। )

শহীদ মিনারের সামনে এসে রুবাকে থমকে দাঁড়াতে হলো। সামনে শুধু মানুষ আর মানুষ। সামনে এগুনোই দায়। আজকে কি কোন বিশেষ দিন? কই মনে তো পড়ে না। তাহলে এখানে এতো মানুষ কেন। সবাইকে মনে হচ্ছে খুব ব্যস্ত। কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যায় ব্যাপারটা কি ? পুরুষ মানুষ হলে সহজেই জানা যেত। কাউকে বলা যেত- ভাই এখানে কি হয়েছে? এতো মানুষের ভীড় কেন?

এরপরও কথা থাকে ( বড় গল্প-চলতি )

০১
ওরা অনেক কথা বলে। বিশেষ করে আমার বন্ধুরা। আমি বিশ্বাস করি না। বলি সবাই একরকম না। ভালও আছে। নিয়াজ তো ভেংচি কেটে বলেই ফেলে, হুম যখন আর খোঁজ নেবে না তখন বুঝবা। আরে মানুষ নেটে যায় মজা করতে। এভাবে সিরিয়াস ভাবে কেউ নেয় না। তুই এখনও বোকার স্বর্গে বাস করিসতো তাই কিচ্ছু বুঝিস না।

আমি বুঝতে চাই না। বোকার স্বর্গে বাস করে যদি এরকম ভাল মেয়ের সাথে সম্পর্ক করা যায় সেটাই ভাল। ওদের কথাটাকে পাত্তা দেওয়ার কোন মানে হয় না। আমি দিইও না।

বৃষ্টি কখন কান্না থামাবে (বড়গল্প - চলতি)

০১
বৃষ্টি হচ্ছে। বাহিরে প্রচন্ড বৃষ্টি। মধ্যখানে প্রচন্ড বজ্রপাতের শব্দ। শারমিন একা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে আছে ঐ দূর আকাশের দিকে। বৃষ্টিগুলো যেন আকাশকে আড়াল করতে চায়। কিন্তু পারে না। স্বচ্ছ জিনিষ দিয়ে বুঝি কিছু আড়াল করা যায়? আকাশও আড়াল হয় না। আকাশে মেঘ ভেসে চলছে দুরন্ত গতিতে।

শারমিনের চোখে পানি। শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি শুষে নেওয়ার চেষ্টা করে। যতই নেয় লাভ হয় না। আরো বেশি আসে। এক সময় বিরক্ত হয়ে চোখের পানি মোছার চেষ্টাটাই বাদ দেয়। কেউ তো দেখছে না। বৃষ্টি দেখলেই কেন যে চোখের পানি এভাবে ধেয়ে আসে?

অনুতৃপ্ত ভাঙন০১ (বড় গল্প-চলতি)

০১
আজ পূর্ণিমা রাত। সুন্দর চাঁদটা মায়াবী আলো ছড়াচ্ছে চারদিকে। সে আলোয় ভাসতে অনাবিল আনন্দ, অন্যরকম অনুভূতি। আগে পূর্ণিমার রাত যে কখন আসত কখন যেত তার টের পেত না রিয়াদ। তবে যখন থেকে প্রেম করা শুরু করে তখন থেকে প্রতিটি পূর্ণিমার রাতই উপভোগ করে অন্যভাবে। পূর্ণিমার রাত উপভোগ করা শিখিয়েছে তরু। এমন হয়েছে পূর্ণিমা রাতের অপেক্ষায় থাকত।

যেদিন পূর্ণিমার রাত সেদিন রাত জেগে কথা বলত দুজন। তরুই ফোন দিত।

অসহায় জীবন ( গল্প )

ঘরটার একটা অংশ ভাঙা। পিছনের পাক ঘরটা প্রায় সম্পূর্ণটাই। আগে সেখানে রান্না হতো। কিন্তু এখন সে অংশ ভাঙা। ছাদের কিছুটা ঝুলে আছে। ছাদের লোহার সাথে কংক্রিট সিমেন্ট লেগে আছে। যে কোন সময় নিচে পড়তে পারে। সেজন্য সেখানে এখন আর রান্না করা হয় না। পরিত্যক্ত পড়ে আছে সে কক্ষটি। ঠিক করতে হবে। কিন্তু যে ঠিক করবে সেই যে অনেকটা পরিত্যক্ত হয়ে আছে।

ইউনুছ আহমদের বাসা এটা। ফলের ব্যবসা করে। যদিও এখানে যে কোন ব্যবসাই ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও চলার জন্য ব্যবসা করতে হয়। আর কারো হাতে তেমন বেশি টাকা নেই। অনেকে বাকী নিয়ে যায়। সংসার কোন মতে চলে। ইউনুছের বউ ছিদ্দীকা রাগ করে। তুমি মানুষকে এভাবে বাকী দাও কেন? সংসারের যে কি অবস্থা খেয়াল আছে? উত্তরে ইউনুছ কিছু বলে না। শুধু হাসে।

অন্য রকম অপেক্ষা ( গল্প )

অতি চেনা মানুষ যখন অচেনা মানুষের মত আচরণ করে তখন খারাপ লাগে। নিজেকে ছোট মনে হয়। মনের আকাশে জমে কালো মেঘ। যে মেঘ সহজে সরতে চায় না। স্থায়ী ভাবে বসে পড়ার একটা নিরন্তর চেষ্টা করে যায়। কখনোবা মনের একপাশ যুদ্ধ করে যায় সে কালো মেঘ সরাতে। তখন কষ্টটা আরো বাড়ে। বাধা পেয়ে যেন ঐ কালো মেঘ আরো ঝাঁকিয়ে বসতে চায়। বাধা না দিলেই মনে হয় ভাল।

তপু এক প্রাণবন্ত যুবক। বয়স ২১। এবার অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছে। কপাল কুঁচকে আছে। তবে সেটা বিরক্তির না। মনের দুঃখের, স্বরচিত এক হতাশার। যে হতাশা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ওকে। মনের মধ্যে দিয়ে রেখেছে ফালি ফালি কালো মেঘ।

দুঃখী মেয়ে ( গল্প )

০১.
মা-বাবা মরা একটা মেয়ে কতটুকু অসহায় থাকে তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝার কথা না। বুঝেও না। আর মেয়েটি যদি একটু বড় হয় তাহলে তো কথাই নাই। আশ্রয় দিতে সবাই ভয় পায়। চাচা মামা দুই পক্ষই দুই পক্ষের দিকে বাড়িয়ে দেয়। কেউ রাখতে রাজি না। শেষ পর্যন্ত যখন দেখা যায় কেউ রাখছে না তখন বড় মামা যিনি কিনা কেরানি এবং স্বচ্ছল্লতার দিক দিয়ে অন্যদের চেয়ে কম তিনি আশ্রয় দেন আসমাকে। যদিও এটা নিয়ে মামীর অনেক কথা শুনতে হয় মামাকে। - অন্যরা এত বড় লোক, কেউ তো রাখলো না। তুমি কেন আনতে গেলে?

কানের দুল ( গল্প )

তিনতলার বিল্ডিং হবে এখানে। কাজ চলছে। পুরুষ শ্রমিক মহিলা শ্রমিক মিলেমিশে কাজ করছে। বেশির ভাগই পুরুষ শ্রমিক। মহিলা শ্রমিক দুইজন। তাদের একজন ময়না খাতুন। শাড়ীর উপর একটা পুরানো শার্ট পড়া। যেটা অনেকটুকু লম্বা। শার্টে অনেক ময়লা। রঙ বুঝা যায় না। ইট টানছে। বড় রাস্তায় সারি করে ইট রাখা। এদিকে রাস্তা ছোট। গাড়ি ঢুকতে পারে না। তাই বড় রাস্তা থেকে মাথায় করে ইট এনে তা রাখতে হচ্ছে।

টমটম ভ্রমণ

রাত ৯টা বাজবে একটু পর। নামাজ পড়ে এসে কম্পিউটার অন করে বসলাম। যথারীতি আগপিছ না দেখে ব্লগে ঢুকে পড়লাম। নতুন মন্তব্য গুলো দেখছি। এসময় মোবাইল এল। আরে কোথায় তুই চলে আয় তাড়াতাড়ি মালঞ্চের সামনে। হুম মনজুর কল দিয়েছে। ঢাকা ডেন্টালে পড়ছে। অনেক দিন পর বান্দরবান এসেছে। আমরা এক সাথে প্রাইমারী লেবেল হাই স্কুলে পড়েছি।

তা গেলাম। দেখি ফ্রেন্ড সার্কেলের আরো পাঁচজন আছে। দেখলাম হাতে প্যাকেট। প্যান্ট কিনেছে। এরিমধ্যে টমটম যোগাড় করা হয়েছে। সাথে একটা মোটর সাইকেল। বান্দরবানে টমটম এটা অনেক বেশি প্রচলন হয়ে গেছে অতি অল্প সময়ে। টমটম হচ্ছে ব্যাটারী চালিত তিন চাকার গাড়ি। ড্রাইভারকে বিদায় জানিয়ে টমটমের চালকের আসনে এক বন্ধু। সে চালানো শুরু করল। শুরু হলো আমাদের বান্দরবান ভ্রমণ মিশন।

কার কষ্ট বেশি (গল্প)

শান্ত সকাল। কারো সাথে দেখা করার জন্য বিকালটাই কেমন যেন প্রচলিত। বেশির ভাগ দেখাই বিকালে হয়। সকালে তেমন হয় না। তবে আবীর আর লিজা সকালে এসেছে দেখা করতে। একটা কফি শপে বসে আছে ওরা। দুজন মুখোমুখি। সামনে কফির বদলে লাচ্ছি। যদিও কেউ খাওয়া শুরু করে নি।

এই সকাল বেলায় কফি শপে ভীড় নেই। লিজা আর আবীর বসেছে কোণার দিকের এক টেবিলে। অন্য একটি টেবিলে তিন জন বসা। আর বাকী সব গুলোই খালি।

নেকলেস ( গল্প )

-তুমি আমাকে আগের মত ভালবাসো না।
হঠাত জুইয়ের এই কথা শুনে আশ্চর্য হয় তারেক। একটু আগে যার জন্য এত সুন্দর গহনা আনলো সে যদি এই কথা বলে তাহলে খারাপ লাগারই কথা। যেই সেই গহনা না। সাড়ে তিন ভরির নেকলেস। মুক্তা বসানো আছে মাঝখানে মাঝখানে। দেখলেই ধরতে ইচ্ছা করে। দামও অনেক পড়েছে। ব্রিফকেসে দুই লাখের মত ছিল। পরে ড্রাইভারকে পাঠিয়ে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বাকী টাকা এনেছে।

সুন্দর সময় ( গল্প** )

অনেক বৃষ্টি । সাধারণত বৃষ্টি হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকে মেঘ ঘুরাঘুরি করে আকাশে। সূর্যের সাথে মেঘের লড়াই চলে। একসময় বৃষ্টি নামে। কিন্তু কেন যেন তা হয় না। এই সুন্দর ফকফকা আকাশ। মেঘের কোন লক্ষণ নাই। অথচ হঠাৎ মেঘের আগমণ। সাথে সাথে বৃষ্টি। অনেকেই বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচতে গিয়েও পারে নাই। কঠিন সে বৃষ্টি। আমার বৃষ্টিতে ভিজতে ভালই লাগে। তাই আমার সমস্যা নাই। কিন্তু আমার সাথে যে আছে ওর ঠান্ডার সমস্যা। একটু বৃষ্টিতে ভিজলেই ওর ঠান্ডা লেগে যায়। টনসিল ফুলে উঠে। কিছু খেতে পারে না। খেলেই গলা ব্যথা করে। তাই ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও ও বৃষ্টিতে ভিজে না।

জলরঙ্গে আঁকা জলছাপ ( গল্প )

-এই শুনছো?
-হুম।
-হুম কি? বলো জ্বী।
-জ্বী।
-এভাবে বলছো কেন?
কিভাবে বলছি?
এই প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন করবে না। উত্তর দিবে।
-কি উত্তর দিবো?
-আশ্চর্য ব্যাপারতো আবার প্রশ্ন করছো?

অস্পৃশ্য ভাললাগা ( গল্প )

পরীক্ষার হলে এক অন্যরকম ব্যাপার হলো। এই ধরণের অবস্থায় আগে কখনো পড়ি নি। এক সাংঘাতিক অবস্থা। পরীক্ষা নিয়ে চিন্তার চেয়ে আরো বেশি চিন্তা সেখানে গিয়ে বসা। আমার সিট পড়েছে দরজার সাথে। আমার ঠিক পাশে একটা মেয়ে। অন্য কলেজের। ঠিক বরাবর সামনে মেয়ে। আর পিছেও মেয়ে। কোথায় পাশে বন্ধু বসলে সমস্যায় তার সাথে কথা বলে লিখবো তা না হয়ে জড়সড় হয়ে বসে থাকা। কিছু করতে গেলেই কেমন বিব্রত লাগে। আমি বরাবরই বেশি লিখি। হাত ব্যাথা করে। কিন্তু হাত ঝাড়ি না। কি না কি ভাবে এই ভয়ে। একটা মেয়ের কাছ থেকে না হয় এড়িয়ে থাকা যায় তাই বলে তিনটা মেয়ে!!

ঈদের দিন.....২০১১

রাতের বেলা একটু দেরিতেই ঘুমালাম। ঈদের আগের দিন বলে একটু আগেই ঘুমানো ছিল। কিন্তু রোজার মধ্যে রাত জাগার মাসব্যাপী অভ্যাসটা হঠাৎ করে পরিবর্তন করতে না পারায় ঘুম আনার চেষ্টা করেও রাত তিনটার আগের ঘুমাতে পারি নাই।

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

দেখা নাটক

।।গল্প : ০১।।
"শেষ থেকে শুরু" নামে একটা নাটক দেখছি।
মেয়েটি ধরলো তাকে খাওয়াতে হবে পাঁচতারা হোটেলে। ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো, কবে?
: এখন।
: রাতে যাই?
পরে ছেলেটি রাতেই মেয়ে যে দামী রেস্টুরেন্টে খেতে চায় সেখানে খাওয়ায়।
জানা যায়, ছেলেটির হাতে তখন টাকা ছিল না। সে টাকা যোগাড় করতে নিজের মোবাইল বিক্রি করে দিয়েছিল। এজন্য দিনে খাওয়াতে পারেনি!

চলতি পথে : ফেসবুক

গল্প : ০১

কিছুক্ষণ আগে আগ্রাবাদের একটা অভিজাত হোটেলের সামনে একটা মাইক্রোবাস এসে থামলো। ভেতরে একটা মেয়ে ও কয়েকটা ছেলে। তাদের হয়ত প্ল্যান ছিল হোটেলে রুম নিবে। মেয়েটাকে সেখানে নেওয়া হবে।
মেয়েটাকে নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে মাইক্রোবাস থেকে। কিন্তু মেয়েটা নামবে না। জোড়াজোড়ি করা হচ্ছে। মেয়েটা কিছুতেই নামবে না। টানাটানি চলছে। এক বড় ভাই সেটা দেখে মাইক্রোবাসের কাছে এগোলেন। পকেট থেকে মোবাইল বের করলেন। সেটা দেখা মাত্রই মাইক্রোটি একটানে চলে গেলো।

হোয়াটস অ্যাপের গল্প

গল্প : ০১
৩ সেপ্টেম্বর হোয়াটস অ্যাপে নক এলো গ্রামীণ একটা নম্বার থেকে।
- কি অবস্থা?
নাম্বারটা চিনতে পারলাম না। কিন্তু উত্তর তো দেয়াই যায়। উত্তর দিলাম- ভালো, আপনার?

-এত ভদ্র হলেন কবে থেকে?
-কে?
-চিনেন না আপনি আমাকে?

স্ট্যাটাস রোমান্টিকগুলো (আগের)

 সেপ্টেম্বর : ২০১৪।।
০১
-একটা কথা বলি?
- একটা না দশটা বলো। আর ছেলেদের এমন মিউ মিউ গলা আমার পছন্দ না। যা বলবা স্ট্রেট কাট বলে ফেলবে। এত অনুমতির কি আছে।
রিয়াদ ঢোক গিলে। কোন মেয়ের সাথে বাবা-মা বিয়ে দিলো। এইতো পুরাই অন্যরকম। আর কিছু বলার সাহস পায় না। এই মেয়ের সাথে বাকী জীবনটা কাটাতে হবে ভেবে আতঙ্কিত হয় রিয়াদ।
-কি কথা বলছো না কেন? মুখ থেকে কি জোর করে কথা বের করতে হবে নাকি?