বিকালটা শেষ হতে চলছে। একটু পরই আস্তে আস্তে আধাঁর নামবে। আধাঁরে ঢেকে যাবে চারপাশ। অর্থি বসে আছে খোলা উঠানে। আশে পাশে কেউ নেই। সবাই ঘরের ভিতর মজা করছে। কিন্তু ঐ মজাতে নিজেকে জড়াতে ইচ্ছা করে না অর্থির।
আজ দুপুরে সবাই ইচ্ছেমত সাঁতার কেটেছে পুকুরে। অর্থিকেও অনেক ডাকা হয়েছে কিন্তু ও যায় নি। অথচ একসময় এই সাঁতার কাটার সুযোগ পাওয়ার জন্যই বারে বারে গ্রামে আসতে চাইত। সে সময় সাঁতারও পারত না। এখন সাঁতার পারে। তারপরও নামতে একটুও ইচ্ছা করে না। ওর চাচাতো ভাই-বোনেরা সাঁতরে পুকুর পার হয়। একজন অন্যজনকে পানি ছুড়ে দেয়। প্রতিযোগিতা করে কে বেশিক্ষণ ডুবে থাকতে পারে।
কিন্তু অর্থি কিছু করে না। দুপুরটা পুকুর পাড়ে বসে ছিল। বিষন্ন মনে নিজের জীবন নিয়েই চিন্তা করছিল। ওর কাজিন শামীম বার বার ডাকছিল, কিরে অর্থি কি হলো? মন খারাপ? এভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেন? পুকুরে নাম দেখবি ভাল লাগছে। দেখি তুই কেমন পানি মারতে পারিস?
অর্থি কিছু বলে নি। শুধু একটা হাসি দিয়েছিল। যে হাসির মানে হলো তোমরা মজা কর আমি দেখছি।
এই শামীম অনেক পছন্দ করত অর্থিকে। গ্রামে আসলেই শুধু অর্থির আশে পাশে থাকত। দেখা যেত অনেক মেয়ের সাথে অর্থি মজা করছে। সেসময় আশে পাশে ঘুর ঘুর করত শামীম। অর্থির বিরক্ত লাগত। মেয়েদের মাঝে একটা ছেলে এভাবে ঘুর ঘুর করবে কেন? একবার বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে ফেলে, শামীম ভাই তুমি এভাবে মেয়েদের মাঝে ঘুর ঘুর করো কেন? লোকে খারাপ বলবে তো।
-আমি মেয়েদের মাঝে মাঝে ঘুর ঘুর করি তোকে কে বলল। তুই আছিস এজন্যই ছিলাম।
-আমি থাকলেই আমার পিছে ঘুর ঘুর করতে হবে কেন?
-আমার ভাল লাগে। আর তুই তো সব সময় এখানে থাকিস না। মাঝে মাঝে আসিস। তখন অনেক ভাল লাগে। তোরা আসবি এই খবর যখন থেকে দেওয়া হয় তখন থেকে আমি অপেক্ষায় থাকি কখন আসবি।
-এগুলো ভাল না। বুঝছো?
-কেন, ভাল না কেন?
শামীমের সরলতা ভাল লাগে অর্থির। কিন্তু এই ভাল লাগা ব্যাপারটা অনুভব করা অসম্ভব। এরিমধ্যে এক ক্লাসমেটের সাথে রাত জেগে আড্ডা হয়। সাগর নাম। ওর সাথে স্বপ্ন বুনে এক সুন্দর জীবনের। দুজনে মিলে অনেক গল্প করে। সুন্দর এক জুটি হবে। সবাই দেখে দোয়া করবে। অন্যদের ঈর্ষা হবে এরকম এক জুটি। সাগরের সাথে কথায় কথায় রাত পার হয়ে যায়। সেখানে অন্য কারো স্থান নেই। কি সুন্দর ভাবে কথা বলে, এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত যদিও গ্রামে আসলে সমস্যা। নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।
-তোমারে বুঝায় বলতে পারবো না। নিজে নিজে বুঝে নিও।
-বুঝিয়ে বল, আমি নিজে নিজে বুঝতে পারবো না।
-আরে কি মুসিবত? বললাম তো আমি বুঝাতে পারব না। তুমি আর পিছে পিছে ঘুর ঘুর করবা না। এটাই হলো কথা। করলে খবর আছে।
হুমকি কাজ হয় না। শামীম ঠিকই ঘুর ঘুর করে। অর্থির কখন কি লাগবে সেটা জানার জন্য সীমাহীন আগ্রহ। অর্থি একবার একজনকে বলল, ইশ গাছে উঠে যদি নিজ হাতে পেড়ে আম খেতে পারতাম তাহলে কি না মজা হতো।
এটা শুনে ফেলে শামীম।
দুইদিনের মধ্যে বিশাল একটা মই বানিয়ে ফেলে, সেটা গাছের সাথে ঠেকে দিয়ে অর্থিকে ডাক দেয়।
এত বড় মই দেখে আশ্চর্য হয় অর্থি।
-মই কি জন্য? তুমি তো গাছে এম্নেই উঠতে পারো। আবার মই লাগিয়েছো কেন?
-তোর জন্য। তুই না নিলুকে বলতেছিলি ইশ যদি গাছে উঠে আম খেতে পারতাম। এজন্য বানিয়ে ফেললাম।
বলেই বিশ্বজয়ের হাসি হাসে শামীম। এখন তুই সহজেই গাছে উঠতে পারবি। নিজ হাতে আম পেড়ে খেতে পারবি।
-হা বলছি। তাই বলে তোমাকে মই বানাতে তো বলি নাই। যত্তসব।
অর্থি চলে যায়। আর সেদিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে শামীম। এরপরও যতদিন ছিল ঠিকই আশ পাশে ঘুরাঘু্রি করত শামীম।
পরের বার আসার সময় অর্থি ওর মা-কে বলেছিল, মা শামীম ভাই শুধু আমার আশে পাশে ঘুর ঘুর করে। বিরক্ত লাগে। ওকে মানা করে দিবে।
- ঠিক আছে। আমি বলে দিবো।
মা কি বলছিলো কে জানে এর পর শামীমকে আশে পাশে দেখা যেত না। এমনকি অর্থিরা যেদিন গ্রামে আসত সেদিন থেকে উধাও হয়ে যেত শামীম। জিজ্ঞেস করলে বলত, আলুতলীতে কাজ আছে কখনো বা বলত একটু নোয়াচর যেতে হবে। ঐদিকে একটা কাজ আছে। সারা বছরই গ্রামে থাকত। ঐ অর্থিরা আসবে শুনলে বাহিরে কাজ পড়ত।
আসলে মাঝে মাঝে খুঁজত শামীম ভাইকে। কিন্তু দেখা যেত না। একটু অবশ্য খারাপ লাগত। তারপরও সেভাবে অনুভব করত না।
এর কয়েক বছর পর শামীম ভাই বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে আর পালায় না। শামীম ভাইয়ের বউ লতা। চিকন ফর্সা মুখ। অনেক ভাল লাগে। শামীম ভাইয়ের সাথে ওনার বউ ও পুকুরে আছে। শামীম ভাই বউয়ের মুখে এক ঝটকা পানি মেরে ডুব মেরে অন্যদিকে চলে যান। বউ আর পানি ছুড়ে দিতে পারে না। যখুনি মারতে যায় তখনই ডুব দেন শামীম ভাই। দূরে গিয়ে ডুব থেকে মাথা বের করে বলেন, পারে না পারে না। ভাবী ছুটে যায়। শামীম ভাই তখন অন্যদিকে ছুটেন। কি সুন্দর লাগে।
এগুলো দেখে অর্থির মনে অজান্তে একটা আফছোস বয়ে যায়। কি সুন্দর জুটি।
সাগর একটা ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর হিসাবে যোগদান করেছে। পত্রিকায় সাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাপা হয়েছে। দুই শিক্ষার্থী অভিযোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে, সাগর নাকি যৌন হয়রানি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শিক্ষার্থীরা মানব বন্ধন করছে। প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তদন্তের রিপোর্ট দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পত্রিকায় সংবাদটা দেখার পর অর্থির মাথা ঘুরায়। মনে হয় পড়ে যাবে। একটু ধাতস্থ হয়ে সাগরকে ফোন করে, সাগর পত্রিকায় এগুলো কি দেখছি?
-ওহ, আরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।
হেসে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে সাগর।
অর্থি আর কিছু বলে না। ফোন অফ করে রেখে দেয়। ষড়যন্ত্র হলে এভাবে নির্লজ্জ্বের মত হাসছে কেন?
কিচ্ছু ভাল লাগে না অর্থির। গ্রামে এসেছে মন একটু অন্যদিকে ঘুরাতে। কিন্তু বার বার এ ব্যাপারটাই মনে ভর করছে।
রাত নেমেছে। ঝিঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। কিছু জোনাকী তার বাতি জ্বালিয়ে অন্ধকার কিছুটা আলো করার চেষ্টা করছে।
শামীম ভাইয়ের গলা শোনা যায়। রাতে উঠানে একা একা কি করছিস? মশা কামড়াবে তো। ঘরে আয়। তোর ভাবী তোর জন্য পুডিং রেঁধেছে। খেতে আয়।
অর্থি নড়ে না। যেন কথা শুনতে পায় নি। ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ে। সাগরটা ঐ কাজ করতে গেল কেন? একটু বিবেক কি ওকে আটকাতে পারে নি? নিজের প্রতিও ঘৃণা হয়। সাগর করেছে বিশ্রী কাজটা। কিন্তু নিজের প্রতি নিজের এত ঘৃণা হচ্ছে কেন? বুঝতে পারে না অর্থি। কষ্ট গুলো বড় অসময়ে আসে।
আজ দুপুরে সবাই ইচ্ছেমত সাঁতার কেটেছে পুকুরে। অর্থিকেও অনেক ডাকা হয়েছে কিন্তু ও যায় নি। অথচ একসময় এই সাঁতার কাটার সুযোগ পাওয়ার জন্যই বারে বারে গ্রামে আসতে চাইত। সে সময় সাঁতারও পারত না। এখন সাঁতার পারে। তারপরও নামতে একটুও ইচ্ছা করে না। ওর চাচাতো ভাই-বোনেরা সাঁতরে পুকুর পার হয়। একজন অন্যজনকে পানি ছুড়ে দেয়। প্রতিযোগিতা করে কে বেশিক্ষণ ডুবে থাকতে পারে।
কিন্তু অর্থি কিছু করে না। দুপুরটা পুকুর পাড়ে বসে ছিল। বিষন্ন মনে নিজের জীবন নিয়েই চিন্তা করছিল। ওর কাজিন শামীম বার বার ডাকছিল, কিরে অর্থি কি হলো? মন খারাপ? এভাবে চুপচাপ বসে আছিস কেন? পুকুরে নাম দেখবি ভাল লাগছে। দেখি তুই কেমন পানি মারতে পারিস?
অর্থি কিছু বলে নি। শুধু একটা হাসি দিয়েছিল। যে হাসির মানে হলো তোমরা মজা কর আমি দেখছি।
এই শামীম অনেক পছন্দ করত অর্থিকে। গ্রামে আসলেই শুধু অর্থির আশে পাশে থাকত। দেখা যেত অনেক মেয়ের সাথে অর্থি মজা করছে। সেসময় আশে পাশে ঘুর ঘুর করত শামীম। অর্থির বিরক্ত লাগত। মেয়েদের মাঝে একটা ছেলে এভাবে ঘুর ঘুর করবে কেন? একবার বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে ফেলে, শামীম ভাই তুমি এভাবে মেয়েদের মাঝে ঘুর ঘুর করো কেন? লোকে খারাপ বলবে তো।
-আমি মেয়েদের মাঝে মাঝে ঘুর ঘুর করি তোকে কে বলল। তুই আছিস এজন্যই ছিলাম।
-আমি থাকলেই আমার পিছে ঘুর ঘুর করতে হবে কেন?
-আমার ভাল লাগে। আর তুই তো সব সময় এখানে থাকিস না। মাঝে মাঝে আসিস। তখন অনেক ভাল লাগে। তোরা আসবি এই খবর যখন থেকে দেওয়া হয় তখন থেকে আমি অপেক্ষায় থাকি কখন আসবি।
-এগুলো ভাল না। বুঝছো?
-কেন, ভাল না কেন?
শামীমের সরলতা ভাল লাগে অর্থির। কিন্তু এই ভাল লাগা ব্যাপারটা অনুভব করা অসম্ভব। এরিমধ্যে এক ক্লাসমেটের সাথে রাত জেগে আড্ডা হয়। সাগর নাম। ওর সাথে স্বপ্ন বুনে এক সুন্দর জীবনের। দুজনে মিলে অনেক গল্প করে। সুন্দর এক জুটি হবে। সবাই দেখে দোয়া করবে। অন্যদের ঈর্ষা হবে এরকম এক জুটি। সাগরের সাথে কথায় কথায় রাত পার হয়ে যায়। সেখানে অন্য কারো স্থান নেই। কি সুন্দর ভাবে কথা বলে, এক উজ্জ্বল ভবিষ্যত যদিও গ্রামে আসলে সমস্যা। নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না।
-তোমারে বুঝায় বলতে পারবো না। নিজে নিজে বুঝে নিও।
-বুঝিয়ে বল, আমি নিজে নিজে বুঝতে পারবো না।
-আরে কি মুসিবত? বললাম তো আমি বুঝাতে পারব না। তুমি আর পিছে পিছে ঘুর ঘুর করবা না। এটাই হলো কথা। করলে খবর আছে।
হুমকি কাজ হয় না। শামীম ঠিকই ঘুর ঘুর করে। অর্থির কখন কি লাগবে সেটা জানার জন্য সীমাহীন আগ্রহ। অর্থি একবার একজনকে বলল, ইশ গাছে উঠে যদি নিজ হাতে পেড়ে আম খেতে পারতাম তাহলে কি না মজা হতো।
এটা শুনে ফেলে শামীম।
দুইদিনের মধ্যে বিশাল একটা মই বানিয়ে ফেলে, সেটা গাছের সাথে ঠেকে দিয়ে অর্থিকে ডাক দেয়।
এত বড় মই দেখে আশ্চর্য হয় অর্থি।
-মই কি জন্য? তুমি তো গাছে এম্নেই উঠতে পারো। আবার মই লাগিয়েছো কেন?
-তোর জন্য। তুই না নিলুকে বলতেছিলি ইশ যদি গাছে উঠে আম খেতে পারতাম। এজন্য বানিয়ে ফেললাম।
বলেই বিশ্বজয়ের হাসি হাসে শামীম। এখন তুই সহজেই গাছে উঠতে পারবি। নিজ হাতে আম পেড়ে খেতে পারবি।
-হা বলছি। তাই বলে তোমাকে মই বানাতে তো বলি নাই। যত্তসব।
অর্থি চলে যায়। আর সেদিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে শামীম। এরপরও যতদিন ছিল ঠিকই আশ পাশে ঘুরাঘু্রি করত শামীম।
পরের বার আসার সময় অর্থি ওর মা-কে বলেছিল, মা শামীম ভাই শুধু আমার আশে পাশে ঘুর ঘুর করে। বিরক্ত লাগে। ওকে মানা করে দিবে।
- ঠিক আছে। আমি বলে দিবো।
মা কি বলছিলো কে জানে এর পর শামীমকে আশে পাশে দেখা যেত না। এমনকি অর্থিরা যেদিন গ্রামে আসত সেদিন থেকে উধাও হয়ে যেত শামীম। জিজ্ঞেস করলে বলত, আলুতলীতে কাজ আছে কখনো বা বলত একটু নোয়াচর যেতে হবে। ঐদিকে একটা কাজ আছে। সারা বছরই গ্রামে থাকত। ঐ অর্থিরা আসবে শুনলে বাহিরে কাজ পড়ত।
আসলে মাঝে মাঝে খুঁজত শামীম ভাইকে। কিন্তু দেখা যেত না। একটু অবশ্য খারাপ লাগত। তারপরও সেভাবে অনুভব করত না।
এর কয়েক বছর পর শামীম ভাই বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে আর পালায় না। শামীম ভাইয়ের বউ লতা। চিকন ফর্সা মুখ। অনেক ভাল লাগে। শামীম ভাইয়ের সাথে ওনার বউ ও পুকুরে আছে। শামীম ভাই বউয়ের মুখে এক ঝটকা পানি মেরে ডুব মেরে অন্যদিকে চলে যান। বউ আর পানি ছুড়ে দিতে পারে না। যখুনি মারতে যায় তখনই ডুব দেন শামীম ভাই। দূরে গিয়ে ডুব থেকে মাথা বের করে বলেন, পারে না পারে না। ভাবী ছুটে যায়। শামীম ভাই তখন অন্যদিকে ছুটেন। কি সুন্দর লাগে।
এগুলো দেখে অর্থির মনে অজান্তে একটা আফছোস বয়ে যায়। কি সুন্দর জুটি।
সাগর একটা ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর হিসাবে যোগদান করেছে। পত্রিকায় সাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাপা হয়েছে। দুই শিক্ষার্থী অভিযোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে, সাগর নাকি যৌন হয়রানি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শিক্ষার্থীরা মানব বন্ধন করছে। প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে তদন্তের রিপোর্ট দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পত্রিকায় সংবাদটা দেখার পর অর্থির মাথা ঘুরায়। মনে হয় পড়ে যাবে। একটু ধাতস্থ হয়ে সাগরকে ফোন করে, সাগর পত্রিকায় এগুলো কি দেখছি?
-ওহ, আরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।
হেসে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে সাগর।
অর্থি আর কিছু বলে না। ফোন অফ করে রেখে দেয়। ষড়যন্ত্র হলে এভাবে নির্লজ্জ্বের মত হাসছে কেন?
কিচ্ছু ভাল লাগে না অর্থির। গ্রামে এসেছে মন একটু অন্যদিকে ঘুরাতে। কিন্তু বার বার এ ব্যাপারটাই মনে ভর করছে।
রাত নেমেছে। ঝিঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। কিছু জোনাকী তার বাতি জ্বালিয়ে অন্ধকার কিছুটা আলো করার চেষ্টা করছে।
শামীম ভাইয়ের গলা শোনা যায়। রাতে উঠানে একা একা কি করছিস? মশা কামড়াবে তো। ঘরে আয়। তোর ভাবী তোর জন্য পুডিং রেঁধেছে। খেতে আয়।
অর্থি নড়ে না। যেন কথা শুনতে পায় নি। ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ে। সাগরটা ঐ কাজ করতে গেল কেন? একটু বিবেক কি ওকে আটকাতে পারে নি? নিজের প্রতিও ঘৃণা হয়। সাগর করেছে বিশ্রী কাজটা। কিন্তু নিজের প্রতি নিজের এত ঘৃণা হচ্ছে কেন? বুঝতে পারে না অর্থি। কষ্ট গুলো বড় অসময়ে আসে।