বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

হ্যাক (গল্প)

তানির প্রচন্ড দাঁত ব্যথা করছে। আঙ্গুল চেপে ধরে আছে দাঁতটায়। যতক্ষণ চেপে ধরে থাকে ততক্ষন একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। কিছুটা ভাল লাগে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার ব্যথা শুরু হয়। উপরের চোয়ালের ডান দিক হতে দুই নম্বর দাঁতটা। মাড়ির দাঁত ব্যাথাও বেশি। ইচ্ছা হচ্ছে হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মেরে দাঁতটাকে ফেলে দিতে। এ দাঁতটা এখন বড় শত্রু মনে হচ্ছে। নিজের শরীরের অংশ হিংস্র শত্রুর মত আচরণ করে ব্যাপারটা ভাবতে খারাপ লাগছে।


তবে দাঁতটা দুই নাম্বার শুত্রু। এক নাম্বার শত্রু তানভীর। বয়স সাড়ে একুশ কিংবা বাইশ, পড়ে বুয়েটে। খুব বিনয়ী, তবে সমস্যা হচ্ছে বুঝে কম। হাসির কিছু বললে প্রথমবার হাসে না, আবার বলতে হয়। দ্বিতীয় বার বললে হাসিতে ফেটে পড়ে। হাসির আওয়াজটা অনেক সুন্দর। নিশ্চয় হাসার সময় তাকে দেখতেও সুন্দর লাগে। যদিও তানি সামনা সামনি তানভীরকে দেখে নি। তবে ফেসবুকে এবং ফোনে দুই জনের অনেক কথা হয়। বেশির ভাগ কথা তানিই বলে। তানভীর আগ্রহ সহকারে শুনে যায়। মাঝে মাঝে তানি বিরক্ত হয় তানভীরের চুপ থাকা দেখে।

: এই তুমি কথা বলো না কেন! এত চুপ থাকো কেন! সব কথা তো আমিই বলে যাচ্ছি।
: কই বলছি তো। আর তোমার কথা শুনতে ভাল লাগছে। ভাল লাগা এটা থামায় কিভাবে!
: বাহ তুমি তো দেখি মাঝে মাঝে দারুণ কথা বলো। কিন্তু শুধু তোমার ভাল লাগলেই তো হবে না। আমারও ভাল লাগতে হবে। তুমি কথা বলো। তোমার কথা শুনি।

: আমি তো তোমার মত গুছিয়ে কথা বলতে পারি না। তুমি কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলো।
: তোমার গুছিয়ে কথা বলতে হবে না। এম্নেই বলো। আমি শুনি।

অসহায় গলায় তানভীর বলে, কি বলবো! ইশ তুমি তো কি সুন্দর ভাবে কথা বলে যাচ্ছিলে। হঠাৎ করে আমার কথা বলা তুললে কেন!
: হুম শুধু আমিই বলবো। আর আপনি শুনে যাবেন। তা হবে না। আচ্ছা একটা গান গেয়ে শোনাও।
: আমি তো গান গাইতে পারি না। দাড়াও কথা বলবো। মাথায় একটা বুদ্ধি আসছে। আমার এক বন্ধু একটা গল্প লিখছে। খুব সুন্দর হয়েছে। সেটা পড়ে শোনাই তোমাকে?

তানির অবাক হয়। নিজে কথা না বলে বন্ধুর গল্প পড়ে শোনাবে। কি আশ্চর্য বটে। নিজের কথার এতই অভাব।
: লাগবে না, তুমি নিজের গল্প বলো। তোমার বন্ধুর গল্প পড়ে শুনবো। এখন শুধু নিজের কথা বলো।

ঠিক আছে বলছি।
ঠিক আছে বলছি বলে কিছু কথা বলে। আবার থেমে যায়। তানিরই কথা বলতে হয়। তানি মাঝে মাঝে চুপ হয়ে যায়। তানভীরও চুপ থাকে। অনেকক্ষণ এ চুপ থাকা চলে।

তানি নীরবতা ভাঙে। চুপ করে আছো যে, ঘুমিয়ে পড়লে নাকি!
থতমত খেয়ে তানভীর বলে, নাহ তো। জেগেই আছি।
: তাহলে চুপ যে। কি করতেছিলে? কথা তো বলছো না।
: তোমার নি:শ্বাসের শব্দ শুনতেছিলাম। কেমন একটা ছন্দ আছে তোমার নি:শ্বাসের শব্দের উঠা নামায়। গান গেয়ে শোনাও না। তোমার নি:শ্বাসের গান শুনছিলাম মনযোগ সহকারে।
তানি হেসে উঠে। কি সুন্দর ভাবে কথাটা বলল। মন ভাল হয়ে যায়। কিন্তু এত কম কথা বলে কেন!
তানীর এখন এক নম্বার শত্রু তানভীর। ছেলেটা গেল কোথায়। প্রতিদিন রাতে কথা বলতেই হতো। তানী মাঝে মাঝে বিরক্তির অভিনয় করে জিজ্ঞাসা করে, আচ্ছা দিনের বেলায় তো কথা হয়। রাতের বেলায় এত কথা বলার দরকার কি!

শুনে যেন আহত হয় তানভীর। তোমার সাথে কথা না বললে কেন জানি ঘুম আসে না!
তানি হেসে উঠে। ঢংয়ের সুরে টেনে টেনে বলে, তাই!

তানভীর কথাটা শুনে কষ্ট পায়। তুমি মজা করছো! আমি কিন্তু সত্যিই বলছি।
সে তানভীরের মোবাইল অফ। দুই সপ্তাহ আগে একটা হুট করে মেসেজ দিলো কিছুদিন ব্যস্ত আছি। আর কিছু নাই। মেসেজটার পাওয়ার সাথে সাথে কল দিয়েছিল। কিন্তু দেখে মোবাইল অফ। মনে এসেছে মোবাইল চুরি হতে পারে। কিন্তু তাহলেও তো অন্তত একবার জানাবে। ফেসবুকে তানি একটার পর একটা মেসেজ দিয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। রিপ্লাই নেই। আচ্ছা ফেসবুকের আইডি হ্যাক হয়নি তো তানভীরের। কিন্তু ও নিজেই কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ে। পার্স ওয়ার্ড সম্পর্কে তো ভাল জানার কথা।

রাতের বেলায় প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকে তানি। এ বুঝি তানভীরের কল এলো। নাহ কল আসে না। কি হলো! আজবতো। কিসের এত ব্যস্ততা! যে ব্যস্ততার কারণ বলা যাবে না।

ব্যাপারটা বান্ধবী লুনার সাথে শেয়ার করে আরো মেজাজ খারাপ হয়েছে। লুনার এক পরিচিতের নাকি একই অবস্থা হয়েছে। বুয়েটের এক ছেলের সাথে এ্যাফেয়ার ছিল। হঠাৎ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এর পর আর কখনো যোগাযোগ করে নি।
লুনা হড় হড় করে বলে যায়, বুয়েটের ছাত্রতো। ভাব বেশি। অনেক মেয়ে ওদের জন্য পাগল থাকে। ওরা এ সুযোগটা নেয়। দেখ নতুনভাবে কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কে ঝুলে পড়েছে। বুয়েটের ছেলেদের বিশ্বাস করতে নেই।

একথা শুনে তানির ইচ্ছা করছিলো জোরে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিতে লুনার গালে। কিন্তু নিজেকে কোন মতে সামলিয়েছে।

সেদিন লুনার ওপর বিরক্ত লাগলেও এখন মনে হচ্ছে সেরকম ঘটনা হতেও পারে। নাহলে এমনভাবে চুপ হয়ে যাবে কেন! নিজের ওপরও রাগ হচ্ছে ওর। ভার্চুয়াল পরিচয়টাকে এভাবে সিরিয়াস ভাবে কেন নিলো। আর নিলোই যখন তখন বুয়েটের ছেলেকে নেওয়ার কি দরকার ছিল।

দাঁত ব্যাথা বাড়ছে। কিন্তু সেটার চেয়ে বেশি খারাপ লাগছে তানভীরের এড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা দেখে। গত দুই সপ্তাহের কম করে হলেও ৫০ টার ওপর মেসেজ দিয়েছে ফেসবুকে। কিন্তু কোন উত্তর নেই।

এই ছেলেটার জন্য নিজের স্বভাবই পরিবর্তন হয়ে গেছে। কোন ব্যাপার যদি কেউ একবার আপত্তি করত তাহলে সেটা নিয়ে আর কোন কথা বলতো না। অনেক অভিমানী ধরণের। এজন্য মা-বাবা খুব সাবধানে থাকেন। সে তানি আনসার না পাওয়ার পরও ৫০ টার ওপর মেসেজ দিয়ে গেছে শুনলে ওকে যারা চিনে অনেক অবাক হবে।

আসলে মাঝে মাঝে নিজের কাছে নিজেকেই অচেনা লাগে তানির। কারো প্রতি আবেগ কি রকম বদলে দেয়। আগের ঘুমের কুমির ছিল। রাত ১২ টার আগেই ঘুমিয়ে পড়তো। আর এখন ফোন আসবে এ অপেক্ষায় রাত তিনটায় চোখে ঘুমের দেখা পায় না। রাতে ব্যাপারটা ভুলে থাকার জন্য গল্পের বই পড়ে। বেশির ভাগ বই আগের পড়া। তারপরও পড়ে যায়। একটু পর পর মোবাইলের দিকে চোখ যায়। কিন্তু আশা পূরণ হয় না।

দাঁত ব্যথা করায় আজ আর গল্পের বই হাতে নিলো না তানি। মোবাইলে ফেসবুকে ঢুকলো। কয়েক ফ্রেন্ড ওয়ালে পোস্ট করেছে। কিরে হারিয়ে গেলি ক্যান! ফেসবুকে সাড়া শব্দ নেই যে!

রিপন তো সরাসরি বলেই ফেললো, লুকিয়ে বিয়ে করে ফেললে নাকি! দাওয়াত দিলে না কিন্তু। দ্বিতীয় বিয়েতে অবশ্যই দাওয়াত চাই। স্ট্যাটাস শেষে জিহ্বা বের করার ইমো।

অন্য সময় হলে মজা করা হতো। কিন্তু এখন আর ভাল লাগে না। তানি ভাবে, আচ্ছা জীবনটা এমন কেন! একজনের জন্য সব কিছু এভাবে অন্যরকম মনে হয় কেন! আগে ফেসবুকে অন্যদের দেওয়া প্রায় স্ট্যাটাসে লাইক দিতো। কমেন্ট করে মজা করতো। কিন্তু এখন ফেসবুককেই বিরক্ত লাগে। বিভিন্ন পেজের গল্পগুলো কি আগ্রহ নিয়ে পড়ত। আর এখন সেগুলো দেখতেই ইচ্ছা করে না।
তৃতীয় সপ্তাহে যখন তানভীরের কোন মেসেজ কিংবা ফোন নাই তখন তানি সিদ্ধান্ত নেয়, সেও ভুলে যাবে। তানভীর ভুলে যেতে পারলে তার ভুলতে তো সমস্যা নেই। আর ভাল লাগে না। রাগ করে ফেসবুক একাউন্ট ডি একটিভ করে দেয়। আসলে এমন সম্পর্ক ভাল না। সব কিছু কেমন যেন হয়ে গেছে। প্রিয় মা-কেও অনেক সময় বিরক্ত লাগে।

আবার আগের মত হওয়ার চেষ্টা শুরু করে তানি। যখন তানভীরের সাথে পরিচয় ছিল না। কারো ফোনের, মেসেজের অপেক্ষায় থাকতো না সেসব দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা। নিজের মোবাইল নাম্বারটা পরিবর্তন করে। যাতে তানভীর চাইলেও যোগাযোগ করতে না পারে। যে ছেলে কারণ না জানিয়ে কষ্ট দিয়ে এভাবে উদাও হয়ে যেতে পারে। তার যোগাযোগ দরকার নেই। অনেক বেশি অভিমানী হওয়ার চেষ্টা করে তানি। নিজের ভালোবাসা চলে যাবে, যাক। অন্তত নিজেকে তো সে আগের তানি হিসাবে ফিরে পাবে। ঠিক সে আগের তানির। যে দুষ্টামিতে ঘর মাতিয়ে রাখে। এ কয়দিন মা-বাবার সাথে আড্ডা দেওয়া হচ্ছিল না। আবার মা-বাবার সাথে প্রাণ খুলে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয়।

আগের মত হওয়ার চেষ্টায় অনেকটা সফল তানি। তারপরও মাঝে মাঝে মনে পড়ে। বিশেষ করে লুনাকে দেখলে বিষয়টা মাথা চারা দিয়ে উঠে। ব্যাপারটায় লুনা কেমন যেন করুণা চোখে তাকায়। এটা অসহ্য লাগে।

তারপরও ভাল লাগে আগে থেকে সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাওয়ায়। আরো গভীর সম্পর্ক হলে আরো বেশি কষ্ট পেতে হতো।
একমাস পরের ঘটনা,

ক্লাস শেষে লুনা পাশে এসে বসে।
:লুনা, একটা খবর শুনেছিস!
: কি ?
: ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট হ্যাক করেছে বাংলাদেশি এক হ্যাকার। অনেক বড় বড় হ্যাকাররা তা ভাঙতে পারে নি। তবে নতুন এক হ্যাকার এটায় সফল হয়েছে। যদিও তার নাম জানায়নি বাংলাদেশি হ্যাকারদের নিয়ে পেজটি।

খবরটা শুনে ভাল লাগে তানির। ভারতীয় সীমান্তের বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ করে না সরকার। কিন্তু হ্যাকাররা এভাবে হ্যাক করে যে সীমান্তের হত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছে এটা দেখতে ভাল লাগছে। অনেক ভারতীয় ওয়েব সাইট হ্যাক হয়েছে। যখন ফেসবুকে ছিল তখন নিয়মিত দেখতো কয়টা সাইট হ্যাক হয়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন সাইট হ্যাকের লিস্ট দেয়া হতো। আর এত্ত ভাল লাগতো। কিন্তু ফেসবুক ডি এক্টিভ করার পর ওই পেজটা আর দেখা হয় না।

পরের দিন জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রথম পাতায় বড় বড় হরফে লেখা ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাইট হ্যাক, জেনারেলদের নিয়ে জুরুরী মিটিং ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী।

খবরটা পড়ার সময় অনেক ভাল লাগছিল। হ্যাকারদের পেজটা দেখার জন্য অনেকদিন পর ফেসবুক রি এক্টিভ করে। দেখে মেসেজ অপশনে লাল অক্ষরে ১০৫ লেখা। তার মানে নতুন একশোর ওপরে মেসেজ।

পেজটা খুলে দেখে। সেখানে অনেক ভারতীয় ওয়েব সাইটের ঠিকানা যেগুলো হ্যাক হয়েছে। কমেন্টগুলো পড়ে। অনেক মজা লাগে।

হঠাত করে একটা মেসেজ আসে। তানভীরের একাউন্ট থেকে..

তানি,
তোমার মেসেজগুলো পেয়েছি। কিন্তু যোগাযোগ করি নি। জানি তুমি খুব বিরক্ত হয়েছো। আসলে আমি একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। তুমি আমাকে মাঝে মাঝে বলতে আমার দ্বারা কিছু হবে না। এ কথাটা কখনো গায়ে নিই নি। কিন্তু যখন দেখলাম বাংলাদেশি কয়েকজন প্রোগ্রামার ভারতীয় ওয়েব সাইট হ্যাক করে চলছে সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ স্বরুপ। তখন ভাবলাম এইতো সুযোগ চ্যালেঞ্জ গ্রহণের। এবং আমি সফলও হয়েছি। হয়ত সংবাদ পত্রের পাতায় তুমি খবরটা দেখবে। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইট হ্যাক হয়েছে। সেখানে অনেক গোপনীয় সামরিক বিষয় ছিল। সব কিছু উলট পালট করে দেয়া হয়েছে। আমরা তিনজন সেটা করেছি। ভার্চুয়াল এডমিন প্যানেল বানাতে যে কি পরিমাণ কঠিন কাজ জানো না। একাধারে রাত দিন বসে শুধু প্রোগ্রামের পর প্রোগ্রাম লিখতাম। একটুর জন্য ঝামেলা হয়ে গেলে আবার শুরু করতে হতো।

তুমি হয়ত অনেক রাগ করেছো তোমাকে তো বলতে পারতাম। তোমার ফেসবুক মেসেজগুলোর উত্তর দিতে পারতাম। কিন্তু আসলে তোমার সাথে কথা বললে যে কি হয়। কথা শুনেই যেতে ইচ্ছা হয়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এ কাজটা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তোমার সাথে কথা বলবো না। তোমার সাথে কথা বলার লোভেও অন্তত কাজটা তাড়াতাড়ি করে ফেলবো ভেবে যোগাযোগ বন্ধ করেছি। কিন্তু যখন কাজ শেষ হলো দেখি তোমার মোবাইল অফ। ফেসবুক ডি এক্টিভ করে রেখেছো। বিশ্বাস করো এতো খারাপ লাগছে। এত খুশীর সংবাদটা যে আমি প্রথম তোমাকে জানাতে চেয়েছিলাম। পারলাম না। আমার মন খারাপ দেখে আমার সাথে যে দুই জন কাজ করছে তারা খুব অবাক। এমন আনন্দের দিনে আমার মন খারাপ কেন। কিন্তু ওরা তো আর কারণটা জানে না।

এ মেসেজযে লিখছি। জানি না তোমার কাছে পাঠাতে পারবো কিনা। প্লিজ তুমি মোবাইল অন করো কিংবা ফেসবুক এক্টিভ করো। আমি মনে প্রাণে দোয়া করছি। আল্লাহ যেন আমার দোয়া কবুল করেন। যার উদ্দেশ্যে এ মেসেজটা লিখছি সে যেন মেসেজটা পায়।


প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না। আমি অপরাধী। আর কখনো এভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করবো না, কি আমাকে মাফ করবে না? কত্তদিন তোমার কথা শুনি না, প্লিজ বলো না, তুমি যে প্রায় সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে বলো, আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।
আমার শুনতে খুব ইচ্ছা করছে। খুব খুব খুব।

আমার নাম মনে আছে তো?

এতটুকুই মেসেজটা।

মেসেজটা পড়ে কান্না চলে আসে তানির। মোবাইল স্ক্রিণে চোখের পানি এসে পড়ে। ইচ্ছা করছে লুনার কাছে ছুটে যেতে। তানভীরকে ইঙ্গিত করে বুয়েটের ছেলেদের নিয়ে যে কথা বলছিল তা যে ভুল এটা জানিয়ে আসতে। কিন্তু চোখের পানি যে থামছে। আনন্দের কান্না এত মধুর হয় কেন!

# ফেবু লিংক
## ভালোবাসার ডাকপিয়ন পেইজে