( বেশ কয়েক বছর আগে গল্পটা লেখা। কেন লিখেছিলাম। কি প্লট নিয়ে লিখেছিলাম ভুলে গিয়েছি। তবে এটা মনে আছে উপন্যাস লিখব মনে করে শুরু করেছিলাম। ফ্রন্টের কিছু সমস্যা। কিছু ঠিক করলাম। দিয়ে দিলাম। পোস্ট। উপন্যাসের নামও জানি না কি ভেবেছিলাম, তবে নায়িকার নামে দিয়ে দিলাম। )
শহীদ মিনারের সামনে এসে রুবাকে থমকে দাঁড়াতে হলো। সামনে শুধু মানুষ আর মানুষ। সামনে এগুনোই দায়। আজকে কি কোন বিশেষ দিন? কই মনে তো পড়ে না। তাহলে এখানে এতো মানুষ কেন। সবাইকে মনে হচ্ছে খুব ব্যস্ত। কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যায় ব্যাপারটা কি ? পুরুষ মানুষ হলে সহজেই জানা যেত। কাউকে বলা যেত- ভাই এখানে কি হয়েছে? এতো মানুষের ভীড় কেন?
কিন্তু সে মেয়ে। যাকে জিজ্ঞেস করা হবে সে কিছুক্ষণ তাকে পর্যবেক্ষণ করবে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত একবার দেখে নেবে। এই দেখে নেওয়ার সময়টুকু রুবার কাছে চরম অসহ্য লাগে। মনে হয় যে, অনন্তকাল ধরে সে দাঁড়িয়ে আছে জাদুঘরের কোন সামগ্রীর মতো। তাই সচরাচর কোন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে রুবা কিছু জানতে চায় না।
রুবা এসেছে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। ঐখানে তার এক দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়কে ভর্তি করা হয়েছে। আত্মীয়ের অসুস্থতা গুরুতর পর্যায়ে। যে কোন সময় চলে যেতে পারে এ অবস্থা। আত্মীয়টি সর্ম্পকে রুবার মামা হয়। রুবা যখন ছোট ছিল তখন এ মামাই ছিল খেলার সঙ্গী। মামাটার সাথে খুব ভাব ছিল তার। ঐ বয়সে মামা ছাড়া কিছুই বুঝত না সে। অনেক বছর পর আজ সে মামার সাথে আবার দেখা হবে।
এক সময় মামার সাথে সারা গ্রাম ঘুরতো। দুপুর সময়টা রুবার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিল। তখন এই মামার সাথে পুকুরে যেত। মামা তাকে সাঁতার শিখানোর চেষ্টা করতেন। “এই রুবু, মাথাটা উঁচু করে রাখ। হাত পা নাড়া। দেখবি অটোমেটিকভাবে সাঁতার শিখে ফেলেছিস।” রুবা চেষ্টা করতো । কিন্তু মাথাটাকে কোন মতেই উঁচু করে রাখতে পারতো না। তা ডুবে যেত। মামা নিজের দুহাতের উপর রেখে রুবাকে ভাসিয়ে রাখতো। প্রথম দিকে অবশ্য ভয়ই পেত ও। এই বুঝি ডুবে যাবে। প্রায় সময় দেখা যেত মামা জোর করে সাঁতার শিখানোর চেষ্টা করছে। আর রুবা হাত পা নেড়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতো। এজন্য রুবা পা নাড়ানো শুরু করতো। মামাকে আক্রমণ করে বসতো। পুকুরেতো ঠিকমতো পারতো না। ওঠার পর কিল ঘুসি শুরু হতো। মামা হেসে হেসে সে কিল ঘুসি সহ্য করতেন।
সে সময় বাসায় ছোট বাচ্চাদের চা দেওয়া ছিল চরম নিষেধ। বড়রা সকাল বিকাল চা খেলেও ছোটরা পেত না। তাদেরকে দেওয়া হতো গরুর দুধ। আর এটা ছোটদের কাছে কম বেশি খুব অপছন্দ ছিল। অপছন্দের হলে কি হবে। অভিভাবকরা জোর করে খাইয়ে দিতেন। না খেলে নিস্তার নেই। তখন রুবার মনে হতো ইশ্ যাদের গরু নাই তারা কতই না সুখী। রুবাদের ৫টা গরু ছিল। তখন শুনেছে শবে বরাতের রাতে দোআ করলে আল্লাহ কবুল করেন। সে শবেবরাতের রাতে একটা দোআই করতো । “হে আল্লাহ আমাদের গরু গুলোকে তোমার রহমতের হাত দিয়ে মেরে ফেলো।”
একবার মামাকে যেয়ে বলল-মামা তোমার তো অনেক শক্তি। আমাকে একটা কাজ করে দেবে।
: আমার অনেক শক্তি তোকে কে বলল?
: কেন তুমি কত বড় বড় গাছ হাটে নিয়ে যাও। অন্য কেউতো তা পারে না।
: আর তাতেই তোর ধারণা হলো আমি শক্তিমান পুরুষ।
: নয়তো কি?
: আচ্ছা বাদ দে। তোর জন্য কি কাজ করতে হবে তাই বল।
:আমাদের গরু গুলো মেরে ফেলতে হবে।
: একি কথা। নিজেদের গরু মারতে যাবি কেন?
:না মেরে কি করবো। শুধু দুধ দেয়। আর সেগুলোর একটা বড় অংশ খেতে হয় আমাকে। আমাকে চা দেয় না। চা এতো খেতে ইচ্ছা হয়। অথচ বলে- তুমি ছোট মানুষ। দুধ খাও। চা খেলে কালো হয়ে যাবে। আচ্ছা আম্মুওতো চা খান। কই তিনিতো কালো হন না। আমি জানিতো আমাকে না দেওয়ার জন্যই এসব কথা বলে।
মামা সশব্দে হেসে উঠে বলেন-তোর কি চা খেতে বেশি ইচ্ছা করছে।
: হ্যা করছে।
মামা একটা চায়ের দোকানে নিয়ে যান। গিয়ে বলেন- কাদের , ভালো করে একটা চা বানাতো। এ মেয়ে চা খাবে। এ মেয়ে অনেক বড় হবে। ভাল চা বানায়। তোর চায়ের কথা মনে রাখবে।
শহীদ মিনারের সামনে এসে রুবাকে থমকে দাঁড়াতে হলো। সামনে শুধু মানুষ আর মানুষ। সামনে এগুনোই দায়। আজকে কি কোন বিশেষ দিন? কই মনে তো পড়ে না। তাহলে এখানে এতো মানুষ কেন। সবাইকে মনে হচ্ছে খুব ব্যস্ত। কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানা যায় ব্যাপারটা কি ? পুরুষ মানুষ হলে সহজেই জানা যেত। কাউকে বলা যেত- ভাই এখানে কি হয়েছে? এতো মানুষের ভীড় কেন?
কিন্তু সে মেয়ে। যাকে জিজ্ঞেস করা হবে সে কিছুক্ষণ তাকে পর্যবেক্ষণ করবে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত একবার দেখে নেবে। এই দেখে নেওয়ার সময়টুকু রুবার কাছে চরম অসহ্য লাগে। মনে হয় যে, অনন্তকাল ধরে সে দাঁড়িয়ে আছে জাদুঘরের কোন সামগ্রীর মতো। তাই সচরাচর কোন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে রুবা কিছু জানতে চায় না।
রুবা এসেছে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। ঐখানে তার এক দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়কে ভর্তি করা হয়েছে। আত্মীয়ের অসুস্থতা গুরুতর পর্যায়ে। যে কোন সময় চলে যেতে পারে এ অবস্থা। আত্মীয়টি সর্ম্পকে রুবার মামা হয়। রুবা যখন ছোট ছিল তখন এ মামাই ছিল খেলার সঙ্গী। মামাটার সাথে খুব ভাব ছিল তার। ঐ বয়সে মামা ছাড়া কিছুই বুঝত না সে। অনেক বছর পর আজ সে মামার সাথে আবার দেখা হবে।
এক সময় মামার সাথে সারা গ্রাম ঘুরতো। দুপুর সময়টা রুবার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিল। তখন এই মামার সাথে পুকুরে যেত। মামা তাকে সাঁতার শিখানোর চেষ্টা করতেন। “এই রুবু, মাথাটা উঁচু করে রাখ। হাত পা নাড়া। দেখবি অটোমেটিকভাবে সাঁতার শিখে ফেলেছিস।” রুবা চেষ্টা করতো । কিন্তু মাথাটাকে কোন মতেই উঁচু করে রাখতে পারতো না। তা ডুবে যেত। মামা নিজের দুহাতের উপর রেখে রুবাকে ভাসিয়ে রাখতো। প্রথম দিকে অবশ্য ভয়ই পেত ও। এই বুঝি ডুবে যাবে। প্রায় সময় দেখা যেত মামা জোর করে সাঁতার শিখানোর চেষ্টা করছে। আর রুবা হাত পা নেড়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতো। এজন্য রুবা পা নাড়ানো শুরু করতো। মামাকে আক্রমণ করে বসতো। পুকুরেতো ঠিকমতো পারতো না। ওঠার পর কিল ঘুসি শুরু হতো। মামা হেসে হেসে সে কিল ঘুসি সহ্য করতেন।
সে সময় বাসায় ছোট বাচ্চাদের চা দেওয়া ছিল চরম নিষেধ। বড়রা সকাল বিকাল চা খেলেও ছোটরা পেত না। তাদেরকে দেওয়া হতো গরুর দুধ। আর এটা ছোটদের কাছে কম বেশি খুব অপছন্দ ছিল। অপছন্দের হলে কি হবে। অভিভাবকরা জোর করে খাইয়ে দিতেন। না খেলে নিস্তার নেই। তখন রুবার মনে হতো ইশ্ যাদের গরু নাই তারা কতই না সুখী। রুবাদের ৫টা গরু ছিল। তখন শুনেছে শবে বরাতের রাতে দোআ করলে আল্লাহ কবুল করেন। সে শবেবরাতের রাতে একটা দোআই করতো । “হে আল্লাহ আমাদের গরু গুলোকে তোমার রহমতের হাত দিয়ে মেরে ফেলো।”
একবার মামাকে যেয়ে বলল-মামা তোমার তো অনেক শক্তি। আমাকে একটা কাজ করে দেবে।
: আমার অনেক শক্তি তোকে কে বলল?
: কেন তুমি কত বড় বড় গাছ হাটে নিয়ে যাও। অন্য কেউতো তা পারে না।
: আর তাতেই তোর ধারণা হলো আমি শক্তিমান পুরুষ।
: নয়তো কি?
: আচ্ছা বাদ দে। তোর জন্য কি কাজ করতে হবে তাই বল।
:আমাদের গরু গুলো মেরে ফেলতে হবে।
: একি কথা। নিজেদের গরু মারতে যাবি কেন?
:না মেরে কি করবো। শুধু দুধ দেয়। আর সেগুলোর একটা বড় অংশ খেতে হয় আমাকে। আমাকে চা দেয় না। চা এতো খেতে ইচ্ছা হয়। অথচ বলে- তুমি ছোট মানুষ। দুধ খাও। চা খেলে কালো হয়ে যাবে। আচ্ছা আম্মুওতো চা খান। কই তিনিতো কালো হন না। আমি জানিতো আমাকে না দেওয়ার জন্যই এসব কথা বলে।
মামা সশব্দে হেসে উঠে বলেন-তোর কি চা খেতে বেশি ইচ্ছা করছে।
: হ্যা করছে।
মামা একটা চায়ের দোকানে নিয়ে যান। গিয়ে বলেন- কাদের , ভালো করে একটা চা বানাতো। এ মেয়ে চা খাবে। এ মেয়ে অনেক বড় হবে। ভাল চা বানায়। তোর চায়ের কথা মনে রাখবে।