শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০১৫

চিঠি (অনুগল্প)

: তুমি এখন আর আমার সাথে কথা বলো না কেন?
: কই! এইযে বলছি।
: গতকাল জন্মদিন গেলো। উইশ পর্যন্ত করলে না। ভেবেছিলাম অন্তত একবার কল দেবে।
: ওহ! এই কথা। আসলে ভয়ে ভয়ে ফোন দিই না।
: কিসের ভয়?
: পত্রিকায় পড়লাম সব ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছে। তবে তোমার জন্মদিন যে একেবারে ভুলে গিয়েছি তা কিন্তু না।

কক্সবাজার থেকে ফেরার সময়

দুপুরে কক্সবাজার থেকে ফিরছিলাম। সোয়া একটার হানিফ পরিবহনে উঠলাম। প্রবেশ পথের দিক দিয়ে যে সিট সেখানে দ্বিতীয় সারির জানালায় পাশে পড়লো আমার সিট। বসলাম। পাশে বয়স্ক একজন।
ড্রাইভারের ঠিক পেছনের সিটে একটি কাপল বসা, কক্সবাজার ঘুরে তারাও ফিরছে। উঠার সময় তাদের সাথে চোখাচোখি হলো। হয়ত নতুন বিয়ে হয়েছে।
ভালই চলছিল সব। একটা সময় গিয়ে দেখি মেয়েটির চিল্লাচিল্লি, সে কি চিল্লানি! হাত থেকে স্মার্টফোনটা ছুড়ে মারলো। আওয়াজ হলো। পাশে বসা ছেলেটি স্মার্ট ফোনের বিভিন্ন অংশ খুজে নিয়ে লাগালো। মেয়েটির চিল্লানি থামে না। গাড়ির শব্দের কারণে কি বলে চিল্লাচ্ছে তাও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে না। তবে খেয়াল করলাম গাড়ির সব যাত্রীর নজর তাদের দিকে। কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। মেয়েটির।

পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে

সকালে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে গেলাম চোখ দেখাতে। হাসপাতালটা অনেক পছন্দের। বেশ ঝকঝকে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। পরিবেশটাও দেখার মত। সার্ভিসও অনেক বেশি ভালো।
১৪ নম্বর কক্ষে দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা করা হচ্ছে। এক মহিলা ডাক্তার (যদিও ওনাকে মেয়ে ডাক্তার বলাটাই বেশি উপযুক্ত) পরীক্ষা করছেন। সুন্দর করে স্কাফ দেয়া। অক্ষরের বক্স আছে। অপজিটে আয়নায় সে অক্ষরের প্রতিফলন হয়। ছোট থেকে অনেক বড় পর্যন্ত অক্ষর সারি আছে। তা দেখে বলতে হয় কত টুকু পর্যন্ত পড়তে পারছে।
এক বয়স্ক লোকের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তাকে উদ্দেশ্যে করে ডাক্তার বললেন, “চাচা, আমার দিকে না। ওই সামনের দিকে তাকান।”
মনে মনে বলি, ডাক্তার এত সুন্দর হলে না তাকিয়ে পারা যায়। চাচার কি দোষ! তাকাবেই তো!
১৪ নম্বর কক্ষের কাজ শেষ। ২৬ নম্বর কক্ষে এলাম। এখানে আবার পরীক্ষা হবে। এটা একটু ভিন্ন ধরণের। একটা যন্ত্রের সামনে চোখ রাখতে হয়। ওই পাশ থেকে ডাক্তার দেখবেন।
যিনি যন্ত্রের বিপরীতে তিনিও মেয়ে ডাক্তার। আন্তরিক ব্যবহার তার। যতটুকু সুন্দর তার চেয়ে অনেক বেশি মায়াবী।

বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

ঝালমুড়ি (অনুগল্প)

রাত দুইটায় আবীরের ঝাল মুড়ি খেতে ইচ্ছা করছে। তমাকে বলতে ইচ্ছা করছে। তবে তমার কষ্ট হবে ভেবে বলছে না।
তমা শুয়ে আছে। আবীর চেয়ারে বসা। একটা ম্যাগাজিন পড়ছে।
-তুমি ঘুমাবে না?
আবীর চোখ তুলে তাকায়। তমা তার দিকে তাকিয়ে আছে। গোলাপী রঙ্গের জামা পড়া। মেয়েটা এত সুন্দর কেন! মাঝে মাঝে পুরা ব্যাপারটা আবীরের কাছে স্বপ্ন মনে হয়। মনে হয় ঘুম ভাঙলে দেখবে তমা আর পাশে নেই।

জন্মদিনে শুভেচ্ছা

২০১৪

০১. মো. আসাদ উল্লাহ :
"খুব কাছের এক বান্ধবীর মুখে তার নাম প্রথম শুনি। প্রেমিকা বা বান্ধবীদের মুখে ছেলেদের নাম শুনলে যা হয় আর কি।
-আরে ধুর ফাউল পুলা
-সব ভাব, মেয়ে পটানোর ফন্দি
-ভালোর মুখোশে একেকটা বজ্জাৎ, খোঁজ নিয়ে দেখো কত মেয়ের সাথে ইয়ে আছে।
মেয়েটা একটা কথা বলে থামিয়ে দিল, সবাইকে নিজের মত মনে করো?
কৌতূহলে তার অয়ালে ঢুকলাম, খুজে পেটে সমস্যা হলনা কারন আমার বান্ধবীর অয়াল জুরে তার শেয়ার করা গল্প।

পোক (অনুগল্প)

রাস্তার পথচারীদের চলাচল কমে গেছে। গাড়ি চলাচলও কম। ফুটপাট ঘেষে কয়েকটি ভ্যানগাড়ি রাখা। সেখানে বসে গল্প করছে দুই বন্ধু সৌরব ও অনিক। অফলাইনে অনলাইনে গল্প।
সৌরব মধুর এক সমস্যায় আছে। একটা মেয়ে তাকে ইদানিং পোক দিচ্ছে। সে ব্যাক করলে ওই মেয়ে আবার দেয়। আবার ব্যাক করলে আবার দেয়। প্রোফাইলে মেয়ের ছবিটা দূর্দান্ত। সারা মুখ জুড়ে মায়া ছড়ানো। লম্বা কালো চুল। দেখলে তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছা করে।

মোবাইল ও মানুষ (অনুগল্প)

-তুমি পঁচা পঁচা পঁচা।
- তুমি বুদ্মিমতী!
-কেন কেন?
- এই যে পঁচা মানুষ চিনতে পারছো। তোমরা মেয়ে মানুষরা বেশিরভাগ সময় বিপদে পড়ো পঁচা মানুষ চিনতে না পারার জন্য।
- তুমি শুধু পঁচা না খারাপ মানুষ। কেমন খারাপ জানো?
- কেমন?

স্বপ্ন (অনুগল্প)

-একটা কথা বলি?
- একটা না দশটা বলো। আর ছেলেদের এমন মিউ মিউ গলা আমার পছন্দ না। যা বলবা স্ট্রেট কাট বলে ফেলবে। এত অনুমতির কি আছে।
রিয়াদ ঢোক গিলে। কোন মেয়ের সাথে বাবা-মা বিয়ে দিলো। এইতো পুরাই অন্যরকম। আর কিছু বলার সাহস পায় না। এই মেয়ের সাথে বাকী জীবনটা কাটাতে হবে ভেবে আতঙ্কিত হয় রিয়াদ।

বিশ্বাসঘাতক (অনুগল্প)

এ পরীক্ষাও খারাপ হলো নীতুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাল বাস চড়ার অনেক শখ ছিল। ইচ্ছে ছিল টিএসসিতে আড্ডা দিবে। ঢাবি নামক রাজ্যটায় সেও একজন হবে।
কেউ যখন জিজ্ঞেস করবে কোথায় ভর্তি হলে খুব খুশী মনে উত্তর দিবে, ঢাবি।
ভাবতেই ভালো লাগতো।

কোটা (অনুগল্প)

লাবিবা মেয়েটা শ্যামলা চেহারার। মুখের মধ্যে অনেক বেশি মায়া ছড়িয়ে আছে। ও যখন হাসে তখন মনে হয় সারা মুখে যেন দুষ্টামি ছড়িয়ে আছে। চোখগুলোও যেন হাসে। দেখে থাকতেই ইচ্ছা হয়। আবীর তো সাথে থাকলে অদ্ভূত সব কাণ্ড করে যেন লাবিবা হাসে।
লাবিবা বলে, তুই এত দুষ্টামি করিস কেন?

ঢাবি

ফরিদ সাহেব ঢাবিতে লেখাপড়া করেছেন। স্কলারশীপ নিয়ে কানাডা যান। সেখানেই চাকরি হয়। মধ্যখানে দেশে এসে বিয়ে করেন।
তার মেয়ে আছে। মেয়ের বর্তমান বয়স নয় বছর। বিদেশে বড় হলেও বাংলা বলতে পারে। বাসাতে মেয়ের সাথে তিনি বাংলাতেই কথা বলেন।

ম্যাডাম

নীরা মানবিক বিভাগে পড়ে। মফস্বলের একটা মহিলা কলেজে। সেখানে হোস্টেলের ব্যাবস্থা আছে। সে হোস্টেলে থাকে।

হোস্টেলের সিস্টেমগুলো কেমন যেন! একবার হোস্টেলের রান্না ঘরে যে মহিলা দায়িত্ব পালন করে তাকে বলেছিল, আন্টি ঝালটা আরেকটু কম দিয়েন।
তা শুনে সে মহিলা এমন একটা ভাব নিলো যাতে মনে হতে পারে অনেক বড় একটা অপরাধের কথা সে বলে ফেলেছে।

ইরেজার

নিচে লাফ দিলে কি হয়?
এমন প্রশ্নে শারমিনের দিকে তাকায় ইফতি। হঠাৎ করে একথা আসলো কোথা থেকে তা ওর মাথায় ঢুকে না।
ওরা বসে আছে পাঁচ তলা ওপর একটা রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টের দেয়াল নেই। বড় থাই কাঁচের গ্লাস। কালো রঙ্গের কাচ সরালেই খোলা আকাশ দেখা যায়।নিচে গাড়ি ঘোরা চলছে। ছোট ছোট দেখা যায় সব।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা

পাঞ্জাবিটা একটু ঢোলা হয়েছে। কালো রঙ্গের পাঞ্জাবি। মৌমিতার পছন্দের রঙ কালো। গত তিন বছর ধরে সজিব কালো রঙ্গের কাপড় কিনে।
টি টেবিলের ওপর রাখা একটি কেক। তার ওপরে ছোট ছোট মোমবাতি রাখা। মোমবাতিগুলো জ্বলছে। সজিব অপেক্ষা করছে। মোমবাতি গুলো যখন নিভে যাবে তখন কেক কাটা হবে।

বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৫

চট্টগ্রামে আড্ডা

১ মে-২০১৩
আজ আড্ডায় জিকু আশরাফ এর একটু বেশিই আক্রমণ হলো কথার দ্বারা। সাড়ে সাত বছর দুই দিনের ব্যাপার নিয়েই বেশি কথা হলো তাকে নিয়ে, জিকুর নাম নীরব ভাই জিতু কেন দিলেন সেটা নিয়ে কথা হলো। এক পর্যায়ে বেচারা জিকু ফকিরকে অর্থ সাহায্য দিয়ে বলল, আমার একটু দোয়া করিয়েন, আর কেউ যেন আক্রমণ না করে।
চা খাওয়া চলল। নোমান ভাই মাঝে মাঝে মুচকি মুচকি হাসছিলেন। এক সময় সবার প্রশ্ন দেখি, Kasafaddauza Noman ভাই এত চুপ কেন।
কথা কম বলার যুক্তিসংগতই উত্তর দিলেন।

চায়ের বিল নোমান ভাইই দিলেন। জানা গেলো তিনি চিটাগং এলে এ জায়গাতেই তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন। আরেকটা ব্যাপার জানালো জিকু ভাই জানালো, যেদিন সাভার দূর্ঘটনা হয়েছে, সেদিনই ঢাকা শহরের ভবন ধসের আশংকায় নাকি চট্টগ্রাম এসে গেছেন নোমান ভাই!

Kolpo Bilashi পুডিং বানিয়ে আনতে গিয়ে আসতে দেরি করে ফেলল। বাসায় পুডিং বানাতে গিয়ে হাত পুড়ালো, ডেসকি পুড়ালো। কিন্তু মনের মত পুডিং বানাতে না পারায় সেগুলো আনলো না। আসার সময় দোকান থেকে বিশাল আকৃতির পুডিং কিনে আনলো। সে পুডিং তৃপ্তি সহকারে সবাই খেলো। এরমধ্যে তৃপ্ত সুপ্ত আপু তার ক্যামেরায় গ্রুপ ছবি তুলে দিলেন।

প্রথম অবস্থান ছিল আমাদের ডাচ বাংলের অপজিটে গ্রামীণের সৌজন্যে দেওয়া পথচারী ছাউনিতে।

প্রথম অবস্থান থেকে লাল খান বাজারের পেছনের বাটালি হিলের উপরে আড্ডা দেয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হলো। কিন্তু কয়েকজনের অনাগ্রহের কারণে তা বাতিল। পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শিল্পকলা ঠিক হলো।

এরমধ্যে নোমান ভাই বিদায় নিলেন। তার বন্ধুরা তার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমার একসাথে থাকতে ইচ্ছা করছে, মজার আড্ডা ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। কিন্তু অফিস শুরু হয়ে গেছে ৫ টা থেকে। আগেরর দিনও দেরি করে গিয়েছি। তাই মন উসখুশ করছিল অফিসে যাওয়ার জন্য। এম্নেতেই এক ঘন্টার ওপর দেরি হয়ে গেছে। তাই মন শক্ত করে জিইসি মোড় থেকে বিদায় নিতে বাসে উঠার প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু ছোট ভাইগুলোর বাধা। তাদের কথা এক দিন দেরি হলে কিছু হবে না। এরমধ্যে হুট করে কল্প তরু এসে আমার হাতের থেকে মোবাইলটা নিয়ে ফেলল। সুন্দর করে হাঁটা দিলো। সবাই দেখি বেশ সমর্থন দিলো এ ঘটনায়। এরমধ্যে আমাদের দল বেঁধে হাটা চলা শিল্পকলার উদ্দেশ্যে। শিল্প কলায় পৌঁছে কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর বিদায় নিয়ে অফিসের দিকে আসলাম।

আড্ডায় অনেক বেশি প্রাণবন্ত দেখা গেছে জিসান বাপ্পি কে। এছাড়া যাদের উপস্থিতিতে আড্ডা প্রাণবন্ত তারা হচ্ছে, জাহিদ, নিলয়, ইমদাদ, পিনাক, রাহী....................

ফেসবুকে লিংক.