বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৫

ইরেজার

নিচে লাফ দিলে কি হয়?
এমন প্রশ্নে শারমিনের দিকে তাকায় ইফতি। হঠাৎ করে একথা আসলো কোথা থেকে তা ওর মাথায় ঢুকে না।
ওরা বসে আছে পাঁচ তলা ওপর একটা রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টের দেয়াল নেই। বড় থাই কাঁচের গ্লাস। কালো রঙ্গের কাচ সরালেই খোলা আকাশ দেখা যায়।নিচে গাড়ি ঘোরা চলছে। ছোট ছোট দেখা যায় সব।


হঠাৎ এ কথা বললে কেন? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় ইফতি।
শারমিন হাসে। হাসিটা কেমন যেন! মনে ভয় ধরিয়ে দেয়। ইফতির ভয় করে। সে তাড়াতাড়ি খোলা জানালার কাচ টেনে দেয়।
: আচ্ছা আমার হাতের লেখা তো যাচ্ছে তাই। কিছু লিখে গেলে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না। তোমার হাতের লেখা তো সুন্দর আছে। তুমি কি আমাকে একটু সাহায্য করবে? কোন প্রেমিকার শেষ ইচ্ছে তার প্রেমিক তাকে সুইসাইড নোট লিখে দিচ্ছে। ব্যাপারটা সেরকম হবে না?
: চুপ করো, থামো তো। তুমি পাগল হয়ে যাচ্ছো।
: ভুল বললে। পাগলরা কখনো সুইসাইডের কথা চিন্তা করে না। কখনই না।
: তুমি থামবে?
: তুমি থামতে বললে অবশ্যই থামবো। কখনও তোমার কথা ফেলেছি! বলো? আমার কিছু পাস্ট আছে, খুব বাজে পাস্ট। সব জানার পরও তুমি আমার সাথে আছো। যেখানে ঘৃণা করার কথা ছিল সেখানে উল্টা ভালোবাসো। তোমার পরিচিতরা আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বাজে ইঙ্গিত করে, তারপরও তুমি সহ্য করো। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তোমাকে মুক্তি দিবো। চির জীবনের জন্য মুক্তি।
ইফতি আর নিজেকে সামলাতে পারে না। জোরে একটা থাপ্পর দিয়ে বসে শারমিনের গালে।
শারমিনের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। সে হাসে! হাসি বিস্তৃত হয়।
সরি, বিশ্বাস করো আমি এমন কিছু করতে চাইনি। সরি! কাতর গলায় অপরাধী ভঙ্গিতে বলে ইফতি। তুমি প্লিজ আর কখনো এসব কথা বলবে না। আগের কথা ভুলে যাও। আগের জীবনতো কেউ বদলাতে পারে না, ভবিষ্যত জীবনটা তো আমরা আমাদের মত গড়ে নিতে পারি।
মাথা নিচু করে শারমিন বলে, অতীত মোছার ইরেজার যে নাই। যত যাই বলো অতীত তো মুছা যায় না।
শারমিনের চিবুক আলতো করে ধরে মুখ ওপরের দিকে তোলে ইফতি। "পাগল মেয়ে, কে বলেছে ইরেজার নেই! আমি ইরেজার হবো। কি, হবে না? ইরেজার হিসেবে আমি কি খুব খারাপ গ্রেডের?"

ফেসবুকে-ইরেজার