ফারিয়ার জগতটা ছোট। সে ফেসবুকে এসে অন্যদের স্ট্যাটাসগুলো পড়ে, লাইক
দেয়। কয়েকটি গল্পের পেইজ বুকমার্ক করে রেখেছে। সেগুলোর কোন গল্পই মিস করে
না। গল্প ভাল হলেও পড়ে. খারাপ হলেও পড়ে। পড়ার ব্যাপারটা অভ্যাস হয়ে গেছে।
তবে খুব কম ক্ষেত্রেই কমেন্ট করে।
ক্লাশ এইট নাইনে পড়ার সময় বই থেকে গল্প পড়ত। হুমায়ূনের গল্পের বই না পড়লে ঘুমই আসতো না। এজন্য মায়ের সাথে রাতে ঝামেলা হতো।
: ফারিয়া, তুমি এখনও লাইট জ্বালিয়ে রেখেছো কেন? তোমার বাবা টের পেলে রাগারাগি করবেন।
: এইতো মা, এখুনি অফ কলে দিচ্ছি।
কিছুক্ষণ মা আবার তাড়া দেন।
ফারিয়ার বাবা মোজাম্মেল সাহেব বেশ রাগী। অনিয়ম দেখতে পারেন না। তার ধারণামতে রাত জাগবে পুলিশ, নাইট শিফটের ডাক্তাররা। রাত ঘুমানোর জন্য। একটা মানুষ অযথা রাত জাগবে কেন. সেতো চোর না। তার কাছে এ ব্যাপারটাই ঘোরতর অন্যায়।
মায়ের বারংবার তাড়ায় লাইট বন্ধ করে দিতে হয়।
মোবাইল দিয়ে গল্প পড়লে সে সমস্যা নেই। লাইট বন্ধ থাকলেও মোবাইলের আলোতে পড়া যায় অনায়াসে। তবে মোবাইলের চেয়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা বই গুলো পড়তে মজা। যদি বইয়েও মোবাইলের মত লাইট থাকতো!
ফেসবুকে ফারিয়ার এক্টিভিটি দেখে অনেক তার আইডিটাকে ফেইক মনে করে। চ্যাটে খুব সতর্কভাবে কথা বলে কেউ কেউ। বিষয়গুলো দেখে বেশ মজা লাগে।
তবে বিশাল সমস্যা হয়ে গেছে। কিভাবে কিভাবে যেন এক ফেসবুক পরিচিত ব্যক্তির প্রেমে পড়ে গেছে। ফেসবুকে তারা সেলেব্রেটি হিসাবে পরিচিত। তার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড প্রায়ই ক্ষেপায় মিসেস সেলিব্রেটি বলে।
: ওই থাপ্পড় খাবি। এ নামে আমাকে ডাকবি না।
: কেন সত্য বললে সমস্যাটা কোথায়? আমি কি মিথ্যা কিছু বলে ডাকছি?
: তোকে এত সত্যবাদী হতে হবে না। আমার মমতাময়ী মা এবং রাগী বাবা আমার একটা নাম রেখেছেন। অন্য কোন নাম হওয়ার শখ নেই। তুই আর কখনো ওই নামে ডাকবি না।
: আচ্ছা বাবা রাগবো না। তবে যখন তোকে রাগাতে ইচ্ছা হবে তখন কিন্তু ডাকবো এই বলেই দৌড় দেয় দিয়া।
সে যে একাই প্রেমে পড়ছে তা না। ছেলেটিও পড়ছে। ওই ছেলেটির প্রতি দুর্বলতা আবিষ্কার করে কয়েকদিন ছেলেটি ফেসবুকে না আসায়। কিছু না বলে হাওয়া এর কোন মানে হয়। বলে যেতেও তো পারতো। ফেসবুকে ঢুকেই দেখতো ছেলেটি আসছে কিনা। নাহ আসেনি। যত হতাশ হতো তত আবিষ্কার করত ছেলেটির প্রতি নিজের দুর্বলতা।
এগারদিন পর অনলাইনে আসে ছেলেটি।
: এতদিন আসেন নি যে! ব্যস্ত ছিলেন?
: মোবাইলে পানি জমেছিল। ডিসপেলে ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। মেকানিক ব্যাটা তা ঠিক করতে এতদিন সময় নিলো।
: পানি জমলো কিভাবে! বৃষ্টিতে ভিজিছিলেন?
: নাহ, চুমু খাইতে খাইতে মোবাইলটার এ অবস্থা হয়েছে।
: বলেন কি? এসব করে বেড়ান, না?
: হা হা হা
: হাসতেছেন যে!
: নিজে করলে নাহয় সান্ত্বনা দেয়া যেত। রুমমেট রিমন। সে ছাদে গিয়ে কথা বলে। তার মোবাইলে চার্জ শেষ হলে সুন্দর করে আমার মোবাইলে ওর সিমটা ভরে নিয়ে যায়।
: চাইলেই দিয়ে দেন।
: হুম। আমার জন্য একদিকে ভালই হয়। হাতে মোবাইল থাকলে ঘুম আসে না। মোবাইল নিয়ে গেলে আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। আমি তো অপেক্ষায় থাকি ওর মোবাইলে চার্জ শেষ হবে, মোবাইল নিতে আসবে।
এক সময় উভয়ের মধ্যে সম্পর্কটা ভালোবাসায় রুপ নেয়।
বাংলা কমিউনিটিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা একটা ব্যাপার অবাধে বিশ্বাস করেন। সেলিব্রেটি লোক যদি ডট লিখেন তাতেও লাইক দিতে হবে।
ছেলেটি তার রিলেশনের ব্যাপারটা প্রকাশ করে দিলো। আর যায় কোথায় সমানে আলোচনা, খুনসুটি, লাইকের বন্যা।
ফারিয়া আবিষ্কার করলো তার আইডিতে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টের বন্যা। নিজের জগতটাকে বড় করতে চায় না ফারিয়া। নিজের জগতটা নিয়েই থাকতে চায়। সে কোন রিকুয়েস্টই এক্সেপ্ট করলো না। এর মধ্যে তার একটা পরিচয় হয়ে গেলো ভাব ওয়ালা পাবলিক। এসব দেখ ফারিয়া হাসে। ও হাসলে ওর মুখে টোল পড়ে। সাথে কেউ থাকলে মুগ্ধ হয়ে তাকায়। এখন রুমে সে একা। আয়নায় নিজের হাসি নিজেই দেখে। একবার ভাবে এমন প্রশ্ন হলে কেমন হতো, এ হাসিটির জন্য কয়টি লাইক! এটা ভাবতেই আরো জোরে হেসে দেয় ফারিয়া।
ফারিয়ার মা ফারিয়ার রুমে ঢুকতে গিয়ে দৃশ্যটা দেখে থমকে দাঁড়ায়। তার মেয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছে নাকি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একা একা হাসছে কেন!
ফেসবুকে - রিলেশন
ক্লাশ এইট নাইনে পড়ার সময় বই থেকে গল্প পড়ত। হুমায়ূনের গল্পের বই না পড়লে ঘুমই আসতো না। এজন্য মায়ের সাথে রাতে ঝামেলা হতো।
: ফারিয়া, তুমি এখনও লাইট জ্বালিয়ে রেখেছো কেন? তোমার বাবা টের পেলে রাগারাগি করবেন।
: এইতো মা, এখুনি অফ কলে দিচ্ছি।
কিছুক্ষণ মা আবার তাড়া দেন।
ফারিয়ার বাবা মোজাম্মেল সাহেব বেশ রাগী। অনিয়ম দেখতে পারেন না। তার ধারণামতে রাত জাগবে পুলিশ, নাইট শিফটের ডাক্তাররা। রাত ঘুমানোর জন্য। একটা মানুষ অযথা রাত জাগবে কেন. সেতো চোর না। তার কাছে এ ব্যাপারটাই ঘোরতর অন্যায়।
মায়ের বারংবার তাড়ায় লাইট বন্ধ করে দিতে হয়।
মোবাইল দিয়ে গল্প পড়লে সে সমস্যা নেই। লাইট বন্ধ থাকলেও মোবাইলের আলোতে পড়া যায় অনায়াসে। তবে মোবাইলের চেয়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা বই গুলো পড়তে মজা। যদি বইয়েও মোবাইলের মত লাইট থাকতো!
ফেসবুকে ফারিয়ার এক্টিভিটি দেখে অনেক তার আইডিটাকে ফেইক মনে করে। চ্যাটে খুব সতর্কভাবে কথা বলে কেউ কেউ। বিষয়গুলো দেখে বেশ মজা লাগে।
তবে বিশাল সমস্যা হয়ে গেছে। কিভাবে কিভাবে যেন এক ফেসবুক পরিচিত ব্যক্তির প্রেমে পড়ে গেছে। ফেসবুকে তারা সেলেব্রেটি হিসাবে পরিচিত। তার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড প্রায়ই ক্ষেপায় মিসেস সেলিব্রেটি বলে।
: ওই থাপ্পড় খাবি। এ নামে আমাকে ডাকবি না।
: কেন সত্য বললে সমস্যাটা কোথায়? আমি কি মিথ্যা কিছু বলে ডাকছি?
: তোকে এত সত্যবাদী হতে হবে না। আমার মমতাময়ী মা এবং রাগী বাবা আমার একটা নাম রেখেছেন। অন্য কোন নাম হওয়ার শখ নেই। তুই আর কখনো ওই নামে ডাকবি না।
: আচ্ছা বাবা রাগবো না। তবে যখন তোকে রাগাতে ইচ্ছা হবে তখন কিন্তু ডাকবো এই বলেই দৌড় দেয় দিয়া।
সে যে একাই প্রেমে পড়ছে তা না। ছেলেটিও পড়ছে। ওই ছেলেটির প্রতি দুর্বলতা আবিষ্কার করে কয়েকদিন ছেলেটি ফেসবুকে না আসায়। কিছু না বলে হাওয়া এর কোন মানে হয়। বলে যেতেও তো পারতো। ফেসবুকে ঢুকেই দেখতো ছেলেটি আসছে কিনা। নাহ আসেনি। যত হতাশ হতো তত আবিষ্কার করত ছেলেটির প্রতি নিজের দুর্বলতা।
এগারদিন পর অনলাইনে আসে ছেলেটি।
: এতদিন আসেন নি যে! ব্যস্ত ছিলেন?
: মোবাইলে পানি জমেছিল। ডিসপেলে ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। মেকানিক ব্যাটা তা ঠিক করতে এতদিন সময় নিলো।
: পানি জমলো কিভাবে! বৃষ্টিতে ভিজিছিলেন?
: নাহ, চুমু খাইতে খাইতে মোবাইলটার এ অবস্থা হয়েছে।
: বলেন কি? এসব করে বেড়ান, না?
: হা হা হা
: হাসতেছেন যে!
: নিজে করলে নাহয় সান্ত্বনা দেয়া যেত। রুমমেট রিমন। সে ছাদে গিয়ে কথা বলে। তার মোবাইলে চার্জ শেষ হলে সুন্দর করে আমার মোবাইলে ওর সিমটা ভরে নিয়ে যায়।
: চাইলেই দিয়ে দেন।
: হুম। আমার জন্য একদিকে ভালই হয়। হাতে মোবাইল থাকলে ঘুম আসে না। মোবাইল নিয়ে গেলে আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। আমি তো অপেক্ষায় থাকি ওর মোবাইলে চার্জ শেষ হবে, মোবাইল নিতে আসবে।
এক সময় উভয়ের মধ্যে সম্পর্কটা ভালোবাসায় রুপ নেয়।
বাংলা কমিউনিটিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা একটা ব্যাপার অবাধে বিশ্বাস করেন। সেলিব্রেটি লোক যদি ডট লিখেন তাতেও লাইক দিতে হবে।
ছেলেটি তার রিলেশনের ব্যাপারটা প্রকাশ করে দিলো। আর যায় কোথায় সমানে আলোচনা, খুনসুটি, লাইকের বন্যা।
ফারিয়া আবিষ্কার করলো তার আইডিতে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টের বন্যা। নিজের জগতটাকে বড় করতে চায় না ফারিয়া। নিজের জগতটা নিয়েই থাকতে চায়। সে কোন রিকুয়েস্টই এক্সেপ্ট করলো না। এর মধ্যে তার একটা পরিচয় হয়ে গেলো ভাব ওয়ালা পাবলিক। এসব দেখ ফারিয়া হাসে। ও হাসলে ওর মুখে টোল পড়ে। সাথে কেউ থাকলে মুগ্ধ হয়ে তাকায়। এখন রুমে সে একা। আয়নায় নিজের হাসি নিজেই দেখে। একবার ভাবে এমন প্রশ্ন হলে কেমন হতো, এ হাসিটির জন্য কয়টি লাইক! এটা ভাবতেই আরো জোরে হেসে দেয় ফারিয়া।
ফারিয়ার মা ফারিয়ার রুমে ঢুকতে গিয়ে দৃশ্যটা দেখে থমকে দাঁড়ায়। তার মেয়ে পাগল হয়ে যাচ্ছে নাকি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একা একা হাসছে কেন!
ফেসবুকে - রিলেশন