জয়া কান্না করছে। সময় না বোঝার কান্না, মানুষ না চেনার কান্না। ব্রেক
আপে সাধারণ কান্নার ঘটনা তেমন দেখা যায় না। জয়া যে কলেজে পড়ে সেখানে তাদের
একটি বন্ধুত্বের সার্কেল আছে। মেয়েদের কলেজ। ব্রেক আপ একটি সাধারণ ঘটনা।
দুইদিন পর পর ব্রেক আপের ঘটনা ঘটছে। সবাই সহজ ভাবেই মেনে নিচ্ছে। এসে
সুন্দর ভাবে বলেও দিচ্ছে ব্রেক আপ হয়েছে। দুই দিন যেতেই আবার গল্প করছে,
নতুন আরেকজনের সাথে কিভাবে জড়ালো।
বন্ধু সার্কেলের মধ্যেও একটু যেন অন্যরকম জয়া। বাবার টাকার অভাব নেই। বাসায় স্বাধীনতার অভাব নেই। স্বাধীনতার অনেক কিছু করেও ফেলেছে। যা আগে করবে ভাবে নি।
সোহেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয়, এর ফোনে অনেক অনেক কথা। এক পর্যায়ে সে সম্পর্ক প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হওয়া। সোহেল তার শহরে আসে। প্রথম দেখার দিন..
জয়ার বান্ধবীর বাসা বনানীতে। বান্ধবীর মা-বাবা বিদেশে গেছে একটা কাজে। সেখানেই প্রথম ঘটনা ঘটে। জয়ার তেমন সমস্যা ছিল না। যার সাথে বিয়ে হবে তার সাথে আগে থেকে ওসব হয়ে গেলে সমস্যা কি এ মনোভাব তার। তাছাড়া তার বান্ধবীরা তো অনেকের সাথে করছে। সেখানে সে তো তা করছে না। বান্ধবীদের চেয়ে নিজেকে ভালো মনে হয়।
শফিক জয়াদের বিল্ডিংয়েই থাকে। অনেকদিন থেকে একই বিল্ডিংয়ে আছে। জয়ার সাথে ভালো বন্ধুত্ব। শফিক টের পেয়ে যায় কিছু।
একদিন আসার পথে জয়াকে থামতে বলে, তুই রিলেশনে গিয়েছিস তাই না?
-হুম। সোহেল অনেক ভালো একটা ছেলে।
-শোন ঘোরে থাকলে সবাইকে ভালো মনে হয়। কিন্তু এমন কিছু করিস না যাতে পরে সমস্যা হয়।
- পরে কোন সমস্যা হবে না।
- দোস্ত শোন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই আজেবাজে ঘটনা ঘটছে। তুই সতর্ক থাকিস।
- আচ্ছা আমাকে নিয়ে তুই এত টেনশিত কেন? আমার জীবন তো আমার সাথে তাই না। সোহেল অনেক বেশি ভালো একটা ছেলে। আর তুই আমার এসব ব্যাপারে আর কখনো বলতে আসবি না। আমার যা ইচ্ছা আমি করবো।
সরি, বলে আর কিছু বলে না শফিক।
দেড় বছর ভালোই ছিল সোহেলের সাথে সম্পর্ক। যতবার জয়াদের শহরে আসে জয়ার সাথে ঘোরাঘুরি হয়, ডেটিং ফিটিং হয়। কিন্তু একটা সময় ব্রেক আপ হয়ে যায়। এরপর নিজেকে কেমন বোঝা মনে হয় জয়ার।
বিকেলে ব্যালকনিতে দাঁড়ানো জয়া। শফিক বাহিরে খেলছে। রাস্তায় ওরা কয়েকজন ক্রিকেট খেলে। ওই ঘটনার পর থেকে শফিক জয়াকে দেখলেই আড়াল হয়ে যায়। যাতে সামনাসামনি না পড়ে।
জয়ার খুব ইচ্ছা করে শফিকের কাছে ক্ষমা চাইতে সেদিনের ঘটনার জন্য। শফিকের কথাই ঠিক হয়েছে।
জয়া জানতো শফিকের তার প্রতি একটা দুর্বলতা ছিল। কিন্তু জয়া মানুষ চিনতে ভুল করেছে, সময় চিনতে ভুল করেছে। এখন আর সেটার মাশুল হবে না। অন্যের ব্যবহৃত জিনিস হয়েছে। ওপর দিয়ে অভিনয় করতে হবে সে ভালো আছে। কিন্তু কখনোই ভালো থাকতে পারবে না।
জয়া সাহস করে একদিন শফিকের মোবাইলে মেসেজ পাঠায়, “মানুষ চেনার জন্য জন্য কোন মিটার থাকতো তবে অনেক ভালো হতো। তুই আগে কেমনে না দেখেই চিনেছিলি? সেদিনের ঘটনার জন্য সরি, সরি।”
রাতে মেসেজের উত্তর আসে : “কাউকে চিনতে মিটার লাগে না, নিজের ভালোর জন্য নিজেকেই সতর্ক থাকতে হয়। মোহে, লোভে, কৌতুহলে গা ভাসাতে হয় না। সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে সস্তা হয়ে যাওয়াটা কিছুটা অন্যায় বটে। তারপরও তোর জন্য শুভ কামনা থাকলো।”
এরপর থেকে আবার দুইজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। শফিক সাপোর্ট দেয় জয়াকে।
সময় গড়াতে থাকে। একটা সময় শফিকের শুভ কামনা কাজে লাগে। শফিকের সাথেই জয়ার বিয়ে হয়।
কিন্তু জয়ার অপরাধবোধটা থেকে যায়। নিজেকে অন্যের কাছে বিলিয়ে দেয়ার অপরাধবোধটা। যখন শফিকের সাথে সুন্দর সময় হয় তখনই তার মাথায় ওই কুৎসিত দৃশ্যগুলো এসে যায়! জয়া মুক্তি চায়। কিন্তু কিভাবে মুক্তি আসবে বুঝে না।
ফেসবুকে : অপরাধবোধ
বন্ধু সার্কেলের মধ্যেও একটু যেন অন্যরকম জয়া। বাবার টাকার অভাব নেই। বাসায় স্বাধীনতার অভাব নেই। স্বাধীনতার অনেক কিছু করেও ফেলেছে। যা আগে করবে ভাবে নি।
সোহেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয়, এর ফোনে অনেক অনেক কথা। এক পর্যায়ে সে সম্পর্ক প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হওয়া। সোহেল তার শহরে আসে। প্রথম দেখার দিন..
জয়ার বান্ধবীর বাসা বনানীতে। বান্ধবীর মা-বাবা বিদেশে গেছে একটা কাজে। সেখানেই প্রথম ঘটনা ঘটে। জয়ার তেমন সমস্যা ছিল না। যার সাথে বিয়ে হবে তার সাথে আগে থেকে ওসব হয়ে গেলে সমস্যা কি এ মনোভাব তার। তাছাড়া তার বান্ধবীরা তো অনেকের সাথে করছে। সেখানে সে তো তা করছে না। বান্ধবীদের চেয়ে নিজেকে ভালো মনে হয়।
শফিক জয়াদের বিল্ডিংয়েই থাকে। অনেকদিন থেকে একই বিল্ডিংয়ে আছে। জয়ার সাথে ভালো বন্ধুত্ব। শফিক টের পেয়ে যায় কিছু।
একদিন আসার পথে জয়াকে থামতে বলে, তুই রিলেশনে গিয়েছিস তাই না?
-হুম। সোহেল অনেক ভালো একটা ছেলে।
-শোন ঘোরে থাকলে সবাইকে ভালো মনে হয়। কিন্তু এমন কিছু করিস না যাতে পরে সমস্যা হয়।
- পরে কোন সমস্যা হবে না।
- দোস্ত শোন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই আজেবাজে ঘটনা ঘটছে। তুই সতর্ক থাকিস।
- আচ্ছা আমাকে নিয়ে তুই এত টেনশিত কেন? আমার জীবন তো আমার সাথে তাই না। সোহেল অনেক বেশি ভালো একটা ছেলে। আর তুই আমার এসব ব্যাপারে আর কখনো বলতে আসবি না। আমার যা ইচ্ছা আমি করবো।
সরি, বলে আর কিছু বলে না শফিক।
দেড় বছর ভালোই ছিল সোহেলের সাথে সম্পর্ক। যতবার জয়াদের শহরে আসে জয়ার সাথে ঘোরাঘুরি হয়, ডেটিং ফিটিং হয়। কিন্তু একটা সময় ব্রেক আপ হয়ে যায়। এরপর নিজেকে কেমন বোঝা মনে হয় জয়ার।
বিকেলে ব্যালকনিতে দাঁড়ানো জয়া। শফিক বাহিরে খেলছে। রাস্তায় ওরা কয়েকজন ক্রিকেট খেলে। ওই ঘটনার পর থেকে শফিক জয়াকে দেখলেই আড়াল হয়ে যায়। যাতে সামনাসামনি না পড়ে।
জয়ার খুব ইচ্ছা করে শফিকের কাছে ক্ষমা চাইতে সেদিনের ঘটনার জন্য। শফিকের কথাই ঠিক হয়েছে।
জয়া জানতো শফিকের তার প্রতি একটা দুর্বলতা ছিল। কিন্তু জয়া মানুষ চিনতে ভুল করেছে, সময় চিনতে ভুল করেছে। এখন আর সেটার মাশুল হবে না। অন্যের ব্যবহৃত জিনিস হয়েছে। ওপর দিয়ে অভিনয় করতে হবে সে ভালো আছে। কিন্তু কখনোই ভালো থাকতে পারবে না।
জয়া সাহস করে একদিন শফিকের মোবাইলে মেসেজ পাঠায়, “মানুষ চেনার জন্য জন্য কোন মিটার থাকতো তবে অনেক ভালো হতো। তুই আগে কেমনে না দেখেই চিনেছিলি? সেদিনের ঘটনার জন্য সরি, সরি।”
রাতে মেসেজের উত্তর আসে : “কাউকে চিনতে মিটার লাগে না, নিজের ভালোর জন্য নিজেকেই সতর্ক থাকতে হয়। মোহে, লোভে, কৌতুহলে গা ভাসাতে হয় না। সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে সস্তা হয়ে যাওয়াটা কিছুটা অন্যায় বটে। তারপরও তোর জন্য শুভ কামনা থাকলো।”
এরপর থেকে আবার দুইজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। শফিক সাপোর্ট দেয় জয়াকে।
সময় গড়াতে থাকে। একটা সময় শফিকের শুভ কামনা কাজে লাগে। শফিকের সাথেই জয়ার বিয়ে হয়।
কিন্তু জয়ার অপরাধবোধটা থেকে যায়। নিজেকে অন্যের কাছে বিলিয়ে দেয়ার অপরাধবোধটা। যখন শফিকের সাথে সুন্দর সময় হয় তখনই তার মাথায় ওই কুৎসিত দৃশ্যগুলো এসে যায়! জয়া মুক্তি চায়। কিন্তু কিভাবে মুক্তি আসবে বুঝে না।
ফেসবুকে : অপরাধবোধ