বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫

আড়ি (অনুগল্প)

: আপনার মোবাইলটা একটু দেবেন?
: আমার মোবাইল দিয়ে তুমি কি করবে?
: একটা কথা লিখে আমার মোবাইলে পাঠাবো। আপনি তো কখনও পাঠাবেন না। তাই আমিই পাঠাই।
: তুমি পাঠালে সেটা তো আমার কথা হবে না।
: সান্ত্বনাতো অন্তত পাবো। আমার যখনই মন খারাপ হবে ওই মেসেজটি দেখবো। মন ভালো হবে।

একথা বলতে গিয়ে রিয়ার মন খারাপ হয়। একটা মানুষকে কতটুকু ভালোবাসলে মানুষটা ভালোবাসার মূল্য দিবে তা জানতে খুব ইচ্ছে হয় ওর। আর কত ভালোবাসা অনুভব করলে বুঝবে। প্রতিদিন এতবার মন থেকে ডাকে তারপরও শুনে না।
: তোমাকে তো মোবাইল দেয়া যাবে না।
: জানতাম আপনি দেবেন না। পৃথিবীতে কেউ কেউ এমন থাকে যাদের অনুভূতির কোন মূল্য থাকে না। আমিও তেমন একজন। ভাগ্যে যা আছে তাইতো মেনে নিতে হবে। আমি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। সমস্যা নেই।
: আরে তা হবে কেন? আচ্ছা নাও। আর তোমাকে মেসেজ লিখতে হবে না। ড্রাফটে যাও সেখানেই পাবে।

রিয়া মেসেজ বক্সের ড্রাফটে যায়। সেখানে অনেকগুলো মেসেজ। ওপরে তারই নাম্বার। তাকে উদ্দেশ্য করে লেখাগুলো সব। রিয়া হাসছে। তার কান্নাও পাচ্ছে। এ ছেলেটাওতো তাকে অনেক বেশি ভালোবাসে। কিন্তু মেসেজগুলো একটাও যে পাঠায়নি।

: আপনি একটা পঁচা মানুষ। আমাকে অযথা এতদিন কষ্ট দিয়েছেন। আমি আপনার সাথে আর কথা বলবো না। আড়ি দেবো, আজীবনের আড়ি। কই হাত দেন।
ফরহাদ ইতস্তত করে।
: আরে কি হলো। হাত বের করেনতো। আড়ি দেবো তো। নাকি আড়ি দেয়ার ইচ্ছে নেই?
একটা পর্যায়ে নিজেই ফরহাদের হাতটা টেনে নেয় রিয়া। আড়ি দেয়।
আর হাসতে হাসতে বলে, এটা কিন্তু আড়ি না। আপনার হাত ধরার জন্যই আমি আড়ির কথা বলছি। নাহলে কি হাত ধরতে দিতেন?

ফরহাদ হাসছে। রিয়া সেদিকে তাকিয়ে আছে। তার মনে হচ্ছে চারদিকে এত আনন্দ!! তাদের পাশ দিয়ে একটা পুরান ইঞ্জিনের একটা ট্রাক গেলো রাস্তা কাপিয়ে। এ মুহূর্তে সে ট্রাকের গর্জনকেও ভালো লাগছে রিয়ার।

ফেসবুকে : আড়ি