আগে একটু অন্যরকম ছিল। চোখাচোখি থেকে পছন্দ হয়ে যেত। একজন অন্য জনের দিকে
লাজুক ভঙ্গিতে তাকাত। আর সেখান থেকেই দুজনের হৃদয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যেত। তা
এখন একটু বদলিয়েছে। মিস্টি গলা শুনে, কথা শুনে এখন পছন্দ হয়ে যায়। রং
নাম্বার থেকে কল এসেছে। কতক্ষণ কথা হলো। তাতেই কেল্লাফতে। প্রেম হয়ে যায়।
ভালোবাসা হয়ে যায়। সেখান থেকে বিয়ে। অথচ যার চেহারা কখনো দেখা হয় নাই।
শুধুমাত্র গলা শুনে দিওয়ানা হয়ে যাওয়া।........
জুয়েলের সাথে ফারিনের পরিচয় ও রং নাম্বার সূত্র ধরে। ভালবাসাবাসি চলছে। তবে সেটা বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে কিনা বলা যাচ্ছে না। হয়ত গড়াবে কিংবা গড়াবে না। সময়ই বলে দেবে। তবে তাদের মধ্যে যে ব্যাপক আবেগ চলছে তা তাদের কথাবার্তা শুনলেই বুঝা যায়।
রাত বারটার দিকে এক বন্ধুকে নাইট কোচে উঠায় দিয়ে রুমে ফিরছিল জুয়েল। বড় রাস্তার মোড়ে আসতেই দেখে কয়েকজনের ছায়া। কিছুক্ষণের মধ্যে ছায়াগুলো আর ছায়া থাকে না। মানুষ হয়। তিনজন। জুয়েলকে ডাক দেয় একজন- ভাই এদিকে আসেন।
জুয়েলের ভয় ভয় করে। এত রাতে অপরিচিত মানুষের ডাক। ছিনতাই কারীটারী না তো। এখন সময় খারাপ শহরের। নিয়মিত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মলম পার্টির দৌড়াত্বের কথা পত্রিকায় আসে। একবার ভাবে পালাবে। ওদের ডাকে সাড়া দেবে না। যদি পালায় ওরা তাড়া করে ধরলে আরো মার বেশি দিতে পারে এটা ভেবে দৌড়ানির চিন্তা বাদ দেয়। ওর বন্ধু রফিককে পিঠে ছোরা মারা হয়েছিল। রফিককেও ছিনতাইকারী ধরেছিল। রফিক ছিনতাইকারী দেখে দৌড় দেয়। আর সেজন্য ছিনতাইকারীরা ওকে ধরে অনেক মার দিয়েছিল। পিঠের অনেক জায়গায় ক্ষত হয়।
এরা ছিনতাইকারী না তো। তবে যে স্বরে ডাকছে তাতে ছিনতাই কারী মনে হয় না। গলার স্বওে ভদ্রতা। এই আরেক সমস্যা। আগে শুধু পেশাগত ছিনতাইকারীরাই ছিনতাই করত। ওদের ভাষাও ছিল একরকম। কথা বললেই বুঝা যেত ওরা ছিনতাই কারী। এখন অনেক শিক্ষিত ভদ্র ছেলেও ছিনতাই করে। কোন কাজের জন্য টাকার প্রয়োজন। ছিনতাই করতে চলে আসে।
আবার ডাক আসে, ভাই আপনার কি কান নেই? আপনাকে ডেকেছি। শুনতে পান না? তাড়াতাড়ি এদিকে আসেন। এবারের কথায় কিছুটা কড়া। এমন ভাবে বলছে যেন কঠিন নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
জুয়েল চিন্তা করে সাথে কি আছে। দামী মোবাইলটি নিয়ে এত রাতে বের হওয়া ঠিক হয় নাই। পকেটে কিছু টাকা হবে, ৮৫ টাকার মত।
জুয়েলের ওদের দিকে যেতে হয় না। ওরা তিনজনই এবার জুয়েলে সামনে এসে দাঁড়ায়। রাস্তায় লোকচলাচল কম। কেউ দেখলে ভাববে বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে। এভাবে জুয়েলকে ঘিরে তিন জনা দাঁড়ায়।
ভাই সাহেব এত রাতে বাহিরে কি করেন? মাইয়া খুঁজেন নাকি? লাগলে কন। বাসায় পাঠাই দিমু।
এবার যে কথা বলছে তার কথায় স্পষ্ট সে পেশাদার ভাবে অপরাধ জগতে আছে। ওর কথা শুনে ভয় ভয় করে জুয়েলের। তার চেয়ে বেশি করে লজ্জা। রাতে মেয়ে খুঁজতে বের হওয়া। কি জঘণ্য কথা।
- আমি আমার এক বন্ধুকে গাড়ীতে উঠায় দেওয়ার জন্য আসছি। তাকে উঠিয়ে দিয়ে রুমে ফিরছি।
ও সিদা পোলা আপনে, মেয়ের ব্যাপাওে কিচ্ছু বোঝেন না। এক্কেকারে সিদা পোলা।
বলার ভঙ্গি দেখে অন্যরা হেসে উঠে। হেসে একজনের গায়ে অন্যজন পড়বে এরকম অবস্থা। জুয়েলের অনেক বেশি ভয় করে। এরা কি নেশা করে এসেছে নাকি? আচরণ দেখে মনে তো হয় নেশা করে এসেছে। কিন্তু কথাবার্তায় তো মনে হয় না নেশায় আছে।
এই তোরা হাসি থামা। ভাইয়ার বাসায় যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাসায় গিয়ে ঘুমাবে। একজন মানুষের ঘুম দেরি করাইস না। ঘুম নষ্ট করা অনেক খারাপ, অনেক খারাপ।
এটা বলেই নিজেই হেসেই উঠে। অন্যরাও হাসে। বিচ্ছরি হাসি। দেখলেই গা জ্বলে যায়। তবে এদিকে অন্ধকার। বিশ্রী হাসিটা দেখতে হচ্ছে না। শব্দটা শুনেই খারাপ লাগছে জুয়েলের।
ওই ভাই আপনার মোবাইলটা দেন। একটা কল করি। প্রেমিকার লগে অনেকদিন কথা কই না। প্রেমিকা অন্যের লগে ফস্টিনস্টি করতাছে।
জুয়েল চুপ থাকে। নড়ে না।
আরে কি হলো। আপনারে না কইছি মোবাইলটা দিতে। দেরি করেন ক্যান? ভয় দেখামু?
জুয়েলটা মোবাইলটা এগিয়ে দেয়।
মোবাইলটা দেখে ওদের মধ্যে লম্বা ছেলেটা বলে, ঝাক্কাস সেট তো। ভাই আপনি তো অনেক দিন ব্যবহার করছেন। আমরা কিছুদিন ব্যবহার করি।
আরেকজন বলে, ভাই মিস্টি খেতে মঞ্চায়। মিস্টি খাওয়ান। ঠিক আছে আপনারে খাওয়াতে হবে না। আমরা নিজেরাই খামু। ট্যাকা দেন।
একজন হাত ঢুকিয়ে দেয় পকেটে। সব পকেট তন্ন তন্ন করে ফেলে। কোন বাড়িতে সার্চ করতে গেলে পুলিশরা যেরকম করে অনেকটা সেরকম।
টাকা কম দেখে বলে, ভাই এত কম ট্যাকা লইয়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন ক্যান?
হঠাৎ একজন মুখে জোরে একটা চড় বসিয়ে দেয়। ফকিরনির পোলা। আরো বেশি টাকা লইয়া হাঁটতে পারস না? এত কম টাকা কেন?
থাপ্পর দিয়েই ওরা চলে যায়।
চোখে অন্ধকার দেখে জুয়েল। মুখ জ্বালা করছে। অনেক কষ্টে বাসায় ফিরে।
অনেক দিন মোবাইল ব্যবহার করা হয় না। মোবাইল হারানোর দুই মাস পর নতুন মোবাইল কিনে। আগের সিমটা রেজি করা না থাকায় নতুন নম্বার নিতে হয়।
অনেকের নাম্বার হারানো গেছে। পরিচিত যাদের নাম্বার আছে তাদেরকে নতুন নাম্বার জানাতেই অনেক টাকার ব্যালেন্স চলে যায়। এত টাকা চলে যাওয়ার চিন্তা যখন করছিল তখন দেখে হাত কেঁপে উঠছে। মোবাইলের ভাইব্রেশন।
নতুন নাম্বার প্রথম কল। বিসমিল্লাহ বলে ধরে জুয়েল।
-হ্যালো।
ঐ প্রান্ত চুপ। বেশ কয়েকবার হ্যালো বলে। কিন্তু ঐ প্রান্ত থেকে কথা শুনা যায় না।
বিরক্ত হয়ে জুয়েল বলে, কথা বলার সাহস না থাকলে কল কেন করেন? ঠিক আছে, রাখছি।
জুয়েল কেটে দেয়।
আবার কল। ঐ একই নাম্বার থেকে। এবার জুয়েলের কথা বলতে হয় না। ঐ প্রান্ত থেকে যেন কথার ফোয়াড়া আসছে।
-আপনি কি বললেন? আমার কথা বলার সাহস নেই না! কয়েকবার হ্যালো করে নিজেকে অনেক সাহসী ভাবেন? সাহসীকতা এত ছোট না যে কয়েকবার হ্যালো বললেই সাহস প্রমাণিহ হেয় যাবে। আমার কথা বলার সাহস নেই। দাঁড়ান আপনাকে দেখাচ্ছি কথা বলার সাহস কাকে বলে?
মেয়ের গলা। উত্তেজিত। কথাগুলো। তারপরও শুনতে ভাল লাগছে জুয়েলের। মিস্টি গলা। প্রতিটা শব্দ কি সুন্দর ভাবে বলছে।
-সরি আপনাকে তো আমি চিনলাম না। আর আপনি চুপ আছে দেখেই না ঐ কথা বললাম।
- চুপ আছি দেখে ভীতু বলতে হবে?
-আরে আমি কি ভীতু বলছি নাকি আপনাকে?
-সাহস নাই বলা মানেই ভীতু।
কথা বলার সাহস নাই কথাটা বোধ হয় অনেক লেগেছে। পুরা দেড় ঘন্টা বলে যায় মেয়েটি। এর পরও হয়ত আরো বলত। কিন্তু কেউ এসেছে সেখানে যাকে দেখে ফোন রেখে দেয়।
নাম হিসাবে জানায় ফাহিন। এবার ইন্টারমিডিয়েট দিয়েছে। ফলাফলের অপেক্ষায় আছে।
আবার রিং। ঐই একই নাম্বার থেকে। নতুন মোবাইলে হাট্রিক কল দিল।
জুয়েল বলে, আপনাকে অভিনন্দন।
মেয়েটা একটু অবাক হয়। “ কেন কেন”
আমি আজই নতুন মোবাইল নিয়েছি। সেখানে রিসেন্ট রিসিভ কললিস্টে প্রথম তিনটাই আপনার কল। আর কারো কল না। অথ্যাৎ আপনি হ্যাট্রিক করেছেন। এজন্য আপনাকে অভিনন্দন।
মেয়েটা হেসে দেয়।
-তাই নাকি? তাহলে একটা রেকর্ড করতে পারলাম।
বলে আবার হাসি।
আরে এই মেয়ের হাসিটাও তো অনেক সুন্দর।
জুয়েলের সাথে ফারিনের পরিচয় ও রং নাম্বার সূত্র ধরে। ভালবাসাবাসি চলছে। তবে সেটা বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে কিনা বলা যাচ্ছে না। হয়ত গড়াবে কিংবা গড়াবে না। সময়ই বলে দেবে। তবে তাদের মধ্যে যে ব্যাপক আবেগ চলছে তা তাদের কথাবার্তা শুনলেই বুঝা যায়।
রাত বারটার দিকে এক বন্ধুকে নাইট কোচে উঠায় দিয়ে রুমে ফিরছিল জুয়েল। বড় রাস্তার মোড়ে আসতেই দেখে কয়েকজনের ছায়া। কিছুক্ষণের মধ্যে ছায়াগুলো আর ছায়া থাকে না। মানুষ হয়। তিনজন। জুয়েলকে ডাক দেয় একজন- ভাই এদিকে আসেন।
জুয়েলের ভয় ভয় করে। এত রাতে অপরিচিত মানুষের ডাক। ছিনতাই কারীটারী না তো। এখন সময় খারাপ শহরের। নিয়মিত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মলম পার্টির দৌড়াত্বের কথা পত্রিকায় আসে। একবার ভাবে পালাবে। ওদের ডাকে সাড়া দেবে না। যদি পালায় ওরা তাড়া করে ধরলে আরো মার বেশি দিতে পারে এটা ভেবে দৌড়ানির চিন্তা বাদ দেয়। ওর বন্ধু রফিককে পিঠে ছোরা মারা হয়েছিল। রফিককেও ছিনতাইকারী ধরেছিল। রফিক ছিনতাইকারী দেখে দৌড় দেয়। আর সেজন্য ছিনতাইকারীরা ওকে ধরে অনেক মার দিয়েছিল। পিঠের অনেক জায়গায় ক্ষত হয়।
এরা ছিনতাইকারী না তো। তবে যে স্বরে ডাকছে তাতে ছিনতাই কারী মনে হয় না। গলার স্বওে ভদ্রতা। এই আরেক সমস্যা। আগে শুধু পেশাগত ছিনতাইকারীরাই ছিনতাই করত। ওদের ভাষাও ছিল একরকম। কথা বললেই বুঝা যেত ওরা ছিনতাই কারী। এখন অনেক শিক্ষিত ভদ্র ছেলেও ছিনতাই করে। কোন কাজের জন্য টাকার প্রয়োজন। ছিনতাই করতে চলে আসে।
আবার ডাক আসে, ভাই আপনার কি কান নেই? আপনাকে ডেকেছি। শুনতে পান না? তাড়াতাড়ি এদিকে আসেন। এবারের কথায় কিছুটা কড়া। এমন ভাবে বলছে যেন কঠিন নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
জুয়েল চিন্তা করে সাথে কি আছে। দামী মোবাইলটি নিয়ে এত রাতে বের হওয়া ঠিক হয় নাই। পকেটে কিছু টাকা হবে, ৮৫ টাকার মত।
জুয়েলের ওদের দিকে যেতে হয় না। ওরা তিনজনই এবার জুয়েলে সামনে এসে দাঁড়ায়। রাস্তায় লোকচলাচল কম। কেউ দেখলে ভাববে বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে। এভাবে জুয়েলকে ঘিরে তিন জনা দাঁড়ায়।
ভাই সাহেব এত রাতে বাহিরে কি করেন? মাইয়া খুঁজেন নাকি? লাগলে কন। বাসায় পাঠাই দিমু।
এবার যে কথা বলছে তার কথায় স্পষ্ট সে পেশাদার ভাবে অপরাধ জগতে আছে। ওর কথা শুনে ভয় ভয় করে জুয়েলের। তার চেয়ে বেশি করে লজ্জা। রাতে মেয়ে খুঁজতে বের হওয়া। কি জঘণ্য কথা।
- আমি আমার এক বন্ধুকে গাড়ীতে উঠায় দেওয়ার জন্য আসছি। তাকে উঠিয়ে দিয়ে রুমে ফিরছি।
ও সিদা পোলা আপনে, মেয়ের ব্যাপাওে কিচ্ছু বোঝেন না। এক্কেকারে সিদা পোলা।
বলার ভঙ্গি দেখে অন্যরা হেসে উঠে। হেসে একজনের গায়ে অন্যজন পড়বে এরকম অবস্থা। জুয়েলের অনেক বেশি ভয় করে। এরা কি নেশা করে এসেছে নাকি? আচরণ দেখে মনে তো হয় নেশা করে এসেছে। কিন্তু কথাবার্তায় তো মনে হয় না নেশায় আছে।
এই তোরা হাসি থামা। ভাইয়ার বাসায় যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাসায় গিয়ে ঘুমাবে। একজন মানুষের ঘুম দেরি করাইস না। ঘুম নষ্ট করা অনেক খারাপ, অনেক খারাপ।
এটা বলেই নিজেই হেসেই উঠে। অন্যরাও হাসে। বিচ্ছরি হাসি। দেখলেই গা জ্বলে যায়। তবে এদিকে অন্ধকার। বিশ্রী হাসিটা দেখতে হচ্ছে না। শব্দটা শুনেই খারাপ লাগছে জুয়েলের।
ওই ভাই আপনার মোবাইলটা দেন। একটা কল করি। প্রেমিকার লগে অনেকদিন কথা কই না। প্রেমিকা অন্যের লগে ফস্টিনস্টি করতাছে।
জুয়েল চুপ থাকে। নড়ে না।
আরে কি হলো। আপনারে না কইছি মোবাইলটা দিতে। দেরি করেন ক্যান? ভয় দেখামু?
জুয়েলটা মোবাইলটা এগিয়ে দেয়।
মোবাইলটা দেখে ওদের মধ্যে লম্বা ছেলেটা বলে, ঝাক্কাস সেট তো। ভাই আপনি তো অনেক দিন ব্যবহার করছেন। আমরা কিছুদিন ব্যবহার করি।
আরেকজন বলে, ভাই মিস্টি খেতে মঞ্চায়। মিস্টি খাওয়ান। ঠিক আছে আপনারে খাওয়াতে হবে না। আমরা নিজেরাই খামু। ট্যাকা দেন।
একজন হাত ঢুকিয়ে দেয় পকেটে। সব পকেট তন্ন তন্ন করে ফেলে। কোন বাড়িতে সার্চ করতে গেলে পুলিশরা যেরকম করে অনেকটা সেরকম।
টাকা কম দেখে বলে, ভাই এত কম ট্যাকা লইয়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন ক্যান?
হঠাৎ একজন মুখে জোরে একটা চড় বসিয়ে দেয়। ফকিরনির পোলা। আরো বেশি টাকা লইয়া হাঁটতে পারস না? এত কম টাকা কেন?
থাপ্পর দিয়েই ওরা চলে যায়।
চোখে অন্ধকার দেখে জুয়েল। মুখ জ্বালা করছে। অনেক কষ্টে বাসায় ফিরে।
অনেক দিন মোবাইল ব্যবহার করা হয় না। মোবাইল হারানোর দুই মাস পর নতুন মোবাইল কিনে। আগের সিমটা রেজি করা না থাকায় নতুন নম্বার নিতে হয়।
অনেকের নাম্বার হারানো গেছে। পরিচিত যাদের নাম্বার আছে তাদেরকে নতুন নাম্বার জানাতেই অনেক টাকার ব্যালেন্স চলে যায়। এত টাকা চলে যাওয়ার চিন্তা যখন করছিল তখন দেখে হাত কেঁপে উঠছে। মোবাইলের ভাইব্রেশন।
নতুন নাম্বার প্রথম কল। বিসমিল্লাহ বলে ধরে জুয়েল।
-হ্যালো।
ঐ প্রান্ত চুপ। বেশ কয়েকবার হ্যালো বলে। কিন্তু ঐ প্রান্ত থেকে কথা শুনা যায় না।
বিরক্ত হয়ে জুয়েল বলে, কথা বলার সাহস না থাকলে কল কেন করেন? ঠিক আছে, রাখছি।
জুয়েল কেটে দেয়।
আবার কল। ঐ একই নাম্বার থেকে। এবার জুয়েলের কথা বলতে হয় না। ঐ প্রান্ত থেকে যেন কথার ফোয়াড়া আসছে।
-আপনি কি বললেন? আমার কথা বলার সাহস নেই না! কয়েকবার হ্যালো করে নিজেকে অনেক সাহসী ভাবেন? সাহসীকতা এত ছোট না যে কয়েকবার হ্যালো বললেই সাহস প্রমাণিহ হেয় যাবে। আমার কথা বলার সাহস নেই। দাঁড়ান আপনাকে দেখাচ্ছি কথা বলার সাহস কাকে বলে?
মেয়ের গলা। উত্তেজিত। কথাগুলো। তারপরও শুনতে ভাল লাগছে জুয়েলের। মিস্টি গলা। প্রতিটা শব্দ কি সুন্দর ভাবে বলছে।
-সরি আপনাকে তো আমি চিনলাম না। আর আপনি চুপ আছে দেখেই না ঐ কথা বললাম।
- চুপ আছি দেখে ভীতু বলতে হবে?
-আরে আমি কি ভীতু বলছি নাকি আপনাকে?
-সাহস নাই বলা মানেই ভীতু।
কথা বলার সাহস নাই কথাটা বোধ হয় অনেক লেগেছে। পুরা দেড় ঘন্টা বলে যায় মেয়েটি। এর পরও হয়ত আরো বলত। কিন্তু কেউ এসেছে সেখানে যাকে দেখে ফোন রেখে দেয়।
নাম হিসাবে জানায় ফাহিন। এবার ইন্টারমিডিয়েট দিয়েছে। ফলাফলের অপেক্ষায় আছে।
আবার রিং। ঐই একই নাম্বার থেকে। নতুন মোবাইলে হাট্রিক কল দিল।
জুয়েল বলে, আপনাকে অভিনন্দন।
মেয়েটা একটু অবাক হয়। “ কেন কেন”
আমি আজই নতুন মোবাইল নিয়েছি। সেখানে রিসেন্ট রিসিভ কললিস্টে প্রথম তিনটাই আপনার কল। আর কারো কল না। অথ্যাৎ আপনি হ্যাট্রিক করেছেন। এজন্য আপনাকে অভিনন্দন।
মেয়েটা হেসে দেয়।
-তাই নাকি? তাহলে একটা রেকর্ড করতে পারলাম।
বলে আবার হাসি।
আরে এই মেয়ের হাসিটাও তো অনেক সুন্দর।