সুজন শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল এবার একটা প্রেম করবে। বন্ধুদের
টিপ্পনি আর ভালো লাগে না। ও যে কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখে না এ ব্যাপারটা
নিয়ে প্রায় সময়ই বন্ধুরা জ্বালাতন করে। সন্দেহজনক অস্বস্তিকর কথাও বলে।
সবচেয়ে বেশি বলে মেহেদী। মেহেদী এরই মধ্যে এগার জন মেয়ের সাথে প্রেম করেছে।
তার মধ্যে আবার সাত জনের অলরেডি বিয়ে হয়ে গেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে
প্রত্যেকটা মেয়ের বিয়েতেই ও গেছে। একা যায় নি। সব বন্ধুকে নিয়ে প্রাক্তন
প্রেমিকার দাওয়াত খায় ও।.......
বিকালে সবাই আড্ডায় বসেছে ব্রিজের উপর। মেহেদী সুজনকে ডাকল। অন্যদের দিকে তাকিয়ে বলল- দোস্ত, তোরা মাইন্ড করিস না, সুজনের সাথে আমার একটু কাজ আছে। তাই আমরা বাজারের দিকে যাচ্ছি।
মনির বলে, ও লতুর সাথে কি কাজ? ওরে কাজে নিলে কাজটাই নষ্ট হবে। তুই একা যা।
সুজন আর মেহেদী হাটতে থাকে।
: দোস্ত আমরা যে মেয়ের ব্যাপারে তোরে ক্ষেপায় তুই কি মাইন্ড করিস?
সুজন উত্তর দেয়, না। মাইন্ড করব ক্যান। তোরা সবাই করস। আমি করি না। এজন্য বলতেই পারিস।
: দোস্ত সত্যি করে বল, আমরা তোকে এত পঁচায় তারপরও তোর খারাপ লাগে না?
: আচ্ছা মেহেদী, তোর হয়ছেটা কি বলতো। মন খারাপ?
এসময় উপর থেকে কাক মল ত্যাগ করে। সাদা সে মল পড়ে সুজনের মাথায়। মেহেদী খালি হাতেই সে নোংরা মল পরিষ্কার করে দেয়।
তোকে একজনের কাছে নিয়ে যাব এখন। তবে কাউকে বলবি না।
: কার কাছে?
উত্তর দেয় না মেহেদী। একটা রিকসা ডাকে। রিকসাতে উঠে বসে। রিকসা যে বাসার সামনে থামে সেটা আধা-পাকা বিল্ডিং। গেটে শ্যামা বলে ডাক দেয় মেহেদী। কিছুক্ষণের মধ্যে এক মেয়ে এসে গেট খুলে দেয়। অল্প বয়স্ক মেয়ে। মেহেদী ঢুকে পড়ে। সুজন ইতস্তত করে।
: ভাই, আপনি বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভিতরে আসুন। দরজার পর্দা ধরে মেয়েটি বলে।
মানুষের গলা এত সুন্দর হয়? সুজন এর আগে এত মিষ্টি গলা কখনো শুনে নি। আবার শুনার জন্য সে দাঁড়িয়েই থাকে। ভাবটা এরকম যেন কিছুই শুনেনি।
: আরে, বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি? আসুন। সমস্যা নেই। মেয়েটার গলায় এবার বিরক্তি প্রকাশ পায়।
তবে গলার মিষ্টি স্বর এতটুকু কম মনে হয় না।
সুজন ভিতরে ঢুকে। মেহেদী বড় সোফাটায় বসেছে।
মেয়েটা ভিতরে যায়।
মেয়েটা কেমন, জানতে চায় মেহেদী।
: এত সুন্দর মেয়ে আমাদের মফস্বলে আছে এটা আমি জানতামই না। তোর সাথে পরিচয় কেমনে?
ঃ এই মেয়ে আমাকে পছন্দ করে। অন্য মেয়েদের কথা তোদের বলছি। শুধু এই একটি মেয়ের কথা তোদের বলিনি। এই মেয়ে কতটুকু ভাল তুই কল্পনা করতে পারবি না। একদিন বলছিলাম আমার মাথা ব্যথা। এ কথাটা শুনে সে সেদিন আর সারারাত ঘুমায়নি। রাতে একটার পর একটা মেসেজ দিয়েছে। অথচ আমি তখন নাক ডেকে ঘুমাচ্ছি। সারারাত আমার ভাল কামনা করে ৫৪ টা মেসেজ দিয়েছি।
: এইরকম মেয়ে থাকতে তারপরও তুই অন্য মেয়ের সাথে টাংকি মারস ক্যান?
: আসলে আমি কোন মেয়েকেই বিশ্বাস করতে পারি না। দোস্ত তোকে একটা কথা বলব, হাত ধরে বল কাউকে বলবি না। তোরা জানিস আমার মা ছোট কালে মারা গেছে। আসলে তা ঠিক না। আমরা তখন অন্য এলাকায় থাকতাম। আমার বয়স যখন এক বছর। সে সময় মা আমাকে ফেলে কার সাথে পালিয়ে গেছেন। যে মা-কে বিশ্বাস করে না সে কি কোন মেয়েকে বিশ্বাস করতে পারে? তবে তোকে এতটুকু বলতে পারি এতগুলো মেয়ের সাথে প্রেম করলেও কোন মেয়ের অমোচনীয় ক্ষতি আমি করি নাই।
মেহেদীর কথা শুনে সুজনের খারাপ লাগে। জীবনে এতবড় দুঃখ লুকিয়ে ও কিভাবে সবার সাথে এত আনন্দ-ফূর্তি করে।
এতটুকু স্বান্তনা দিতে পারে না সুজন। বন্ধুকে ভাষার মাধ্যমে স্বান্তনা দেওয়া অনেক কঠিন।
মেহেদীর চোখে পানি।
: দোস্ত এ কথাটি আমি এ এলাকার কাউকে বলিনি। কেউ জানে না। সবাই জানে মা মারা গেছে। শুধু তোকেই বললাম। তবে বলায় একটু ভালও লাগছে। তোকে যে কারণে এনেছি। আজ শ্যামাকে আমি আগের ১১ টা প্রেমের কথা বলব। ওর সাথে সম্পর্ক নষ্ট হলে আমার অনেক কষ্ট লাগবে। এজন্যই তোকে সাথে এনেছি।
ঃ কি দরকার বলার। সুজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ও শুনলে মনে কষ্ট পাবে। তোকে আপন করে নিতে পারবে না।
: তুই কি আমাকে শিশু মনে করিস। এত গুলো মেয়ের সাথে প্রেম করলাম। আর এ সহজ কথাটা বুঝব না। ১১জন মেয়ের সাথে প্রেম করছি জানলে ও আমাকে যত ভালবাসতো তারচেয়ে বেশি ঘৃণা করবে। থাপ্পর মেরে বসতে পারে।
: আমার মতে, না বলাই উচিত। এখন থেকে আর অন্য কোন মেয়ের দিকে না সম্পর্ক রাখলেই হলো।
: এই প্রথম কোন মেয়েকে আমি বিশ্বাস করলাম। তার কাছে এতবড় কথা আমি লুকাতে পারবো না।
সুজন বুঝল মেহেদীকে বাধা দিলে হবে না। সে বলবেই।
: আচ্ছা মেয়েটা গেছে কই? অনেকক্ষণ ধরে আসছে না।
একটা গল্পের বই আনতে গেছে। তিনটে বাড়ীর পরই ওর বান্ধবীর বাসা। আমিই আনতে বললাম। ওই বইয়ে ওর একটা চমৎকার কথা আছে। তোকে পড়ে শুনাবো। বুঝবি মেয়েটা কেমন।
শ্যামা ঢুকে। তবে হাতে বই নেই।
সুজন প্রস্তুত হয় কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার।
ঃ বই আনছো? তাড়াতাড়ি দাও।
শ্যামা এবার যে কথাটি বলে তার জন্য ওরা কেউ প্রস্তুত ছিল না। ওর চোখে পানি টল টল করছে। ওরা বুঝতে পারে না কি হয়েছে। মেহেদী হতাশ হয়। আজও জীবনের কাহিনীটা বলা যাবে না দেখে। অনেক আগে থেকে বলবে বলবে ভাবছিল। কিন্তু পারেনি। আজ সুজনকেও সাথে এনেছে বলে ফেলবে এটা ভেবে। কিন্তু এরকম মন খারাপের মধ্যে কিভাবে বলা যায়?
ওড়নার আচল দিয়ে শ্যামা চোখ চেপে ধরে। চোখের পানি দেখাতে চায় না ও।
: আচ্ছা, আপনার মনে এত দুঃখ আমাকে আগে বলেননি কেন? আপনার জীবনে এত কঠিন ঘটনা ঘটেছে অথচ আপনি আমাকে একটুও বলেননি। আমি কি খারাপ মেয়ে। আপনাদের সব কথা আমি ঐরুম থেকে শুনেছি। আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন আর নাই করেন আমি সারাজীবন শুধু আপনাকেই বিশ্বাস করে যাবো।
কথাটা বলে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় শ্যামা।
বিকালে সবাই আড্ডায় বসেছে ব্রিজের উপর। মেহেদী সুজনকে ডাকল। অন্যদের দিকে তাকিয়ে বলল- দোস্ত, তোরা মাইন্ড করিস না, সুজনের সাথে আমার একটু কাজ আছে। তাই আমরা বাজারের দিকে যাচ্ছি।
মনির বলে, ও লতুর সাথে কি কাজ? ওরে কাজে নিলে কাজটাই নষ্ট হবে। তুই একা যা।
সুজন আর মেহেদী হাটতে থাকে।
: দোস্ত আমরা যে মেয়ের ব্যাপারে তোরে ক্ষেপায় তুই কি মাইন্ড করিস?
সুজন উত্তর দেয়, না। মাইন্ড করব ক্যান। তোরা সবাই করস। আমি করি না। এজন্য বলতেই পারিস।
: দোস্ত সত্যি করে বল, আমরা তোকে এত পঁচায় তারপরও তোর খারাপ লাগে না?
: আচ্ছা মেহেদী, তোর হয়ছেটা কি বলতো। মন খারাপ?
এসময় উপর থেকে কাক মল ত্যাগ করে। সাদা সে মল পড়ে সুজনের মাথায়। মেহেদী খালি হাতেই সে নোংরা মল পরিষ্কার করে দেয়।
তোকে একজনের কাছে নিয়ে যাব এখন। তবে কাউকে বলবি না।
: কার কাছে?
উত্তর দেয় না মেহেদী। একটা রিকসা ডাকে। রিকসাতে উঠে বসে। রিকসা যে বাসার সামনে থামে সেটা আধা-পাকা বিল্ডিং। গেটে শ্যামা বলে ডাক দেয় মেহেদী। কিছুক্ষণের মধ্যে এক মেয়ে এসে গেট খুলে দেয়। অল্প বয়স্ক মেয়ে। মেহেদী ঢুকে পড়ে। সুজন ইতস্তত করে।
: ভাই, আপনি বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভিতরে আসুন। দরজার পর্দা ধরে মেয়েটি বলে।
মানুষের গলা এত সুন্দর হয়? সুজন এর আগে এত মিষ্টি গলা কখনো শুনে নি। আবার শুনার জন্য সে দাঁড়িয়েই থাকে। ভাবটা এরকম যেন কিছুই শুনেনি।
: আরে, বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকবেন নাকি? আসুন। সমস্যা নেই। মেয়েটার গলায় এবার বিরক্তি প্রকাশ পায়।
তবে গলার মিষ্টি স্বর এতটুকু কম মনে হয় না।
সুজন ভিতরে ঢুকে। মেহেদী বড় সোফাটায় বসেছে।
মেয়েটা ভিতরে যায়।
মেয়েটা কেমন, জানতে চায় মেহেদী।
: এত সুন্দর মেয়ে আমাদের মফস্বলে আছে এটা আমি জানতামই না। তোর সাথে পরিচয় কেমনে?
ঃ এই মেয়ে আমাকে পছন্দ করে। অন্য মেয়েদের কথা তোদের বলছি। শুধু এই একটি মেয়ের কথা তোদের বলিনি। এই মেয়ে কতটুকু ভাল তুই কল্পনা করতে পারবি না। একদিন বলছিলাম আমার মাথা ব্যথা। এ কথাটা শুনে সে সেদিন আর সারারাত ঘুমায়নি। রাতে একটার পর একটা মেসেজ দিয়েছে। অথচ আমি তখন নাক ডেকে ঘুমাচ্ছি। সারারাত আমার ভাল কামনা করে ৫৪ টা মেসেজ দিয়েছি।
: এইরকম মেয়ে থাকতে তারপরও তুই অন্য মেয়ের সাথে টাংকি মারস ক্যান?
: আসলে আমি কোন মেয়েকেই বিশ্বাস করতে পারি না। দোস্ত তোকে একটা কথা বলব, হাত ধরে বল কাউকে বলবি না। তোরা জানিস আমার মা ছোট কালে মারা গেছে। আসলে তা ঠিক না। আমরা তখন অন্য এলাকায় থাকতাম। আমার বয়স যখন এক বছর। সে সময় মা আমাকে ফেলে কার সাথে পালিয়ে গেছেন। যে মা-কে বিশ্বাস করে না সে কি কোন মেয়েকে বিশ্বাস করতে পারে? তবে তোকে এতটুকু বলতে পারি এতগুলো মেয়ের সাথে প্রেম করলেও কোন মেয়ের অমোচনীয় ক্ষতি আমি করি নাই।
মেহেদীর কথা শুনে সুজনের খারাপ লাগে। জীবনে এতবড় দুঃখ লুকিয়ে ও কিভাবে সবার সাথে এত আনন্দ-ফূর্তি করে।
এতটুকু স্বান্তনা দিতে পারে না সুজন। বন্ধুকে ভাষার মাধ্যমে স্বান্তনা দেওয়া অনেক কঠিন।
মেহেদীর চোখে পানি।
: দোস্ত এ কথাটি আমি এ এলাকার কাউকে বলিনি। কেউ জানে না। সবাই জানে মা মারা গেছে। শুধু তোকেই বললাম। তবে বলায় একটু ভালও লাগছে। তোকে যে কারণে এনেছি। আজ শ্যামাকে আমি আগের ১১ টা প্রেমের কথা বলব। ওর সাথে সম্পর্ক নষ্ট হলে আমার অনেক কষ্ট লাগবে। এজন্যই তোকে সাথে এনেছি।
ঃ কি দরকার বলার। সুজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। ও শুনলে মনে কষ্ট পাবে। তোকে আপন করে নিতে পারবে না।
: তুই কি আমাকে শিশু মনে করিস। এত গুলো মেয়ের সাথে প্রেম করলাম। আর এ সহজ কথাটা বুঝব না। ১১জন মেয়ের সাথে প্রেম করছি জানলে ও আমাকে যত ভালবাসতো তারচেয়ে বেশি ঘৃণা করবে। থাপ্পর মেরে বসতে পারে।
: আমার মতে, না বলাই উচিত। এখন থেকে আর অন্য কোন মেয়ের দিকে না সম্পর্ক রাখলেই হলো।
: এই প্রথম কোন মেয়েকে আমি বিশ্বাস করলাম। তার কাছে এতবড় কথা আমি লুকাতে পারবো না।
সুজন বুঝল মেহেদীকে বাধা দিলে হবে না। সে বলবেই।
: আচ্ছা মেয়েটা গেছে কই? অনেকক্ষণ ধরে আসছে না।
একটা গল্পের বই আনতে গেছে। তিনটে বাড়ীর পরই ওর বান্ধবীর বাসা। আমিই আনতে বললাম। ওই বইয়ে ওর একটা চমৎকার কথা আছে। তোকে পড়ে শুনাবো। বুঝবি মেয়েটা কেমন।
শ্যামা ঢুকে। তবে হাতে বই নেই।
সুজন প্রস্তুত হয় কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার।
ঃ বই আনছো? তাড়াতাড়ি দাও।
শ্যামা এবার যে কথাটি বলে তার জন্য ওরা কেউ প্রস্তুত ছিল না। ওর চোখে পানি টল টল করছে। ওরা বুঝতে পারে না কি হয়েছে। মেহেদী হতাশ হয়। আজও জীবনের কাহিনীটা বলা যাবে না দেখে। অনেক আগে থেকে বলবে বলবে ভাবছিল। কিন্তু পারেনি। আজ সুজনকেও সাথে এনেছে বলে ফেলবে এটা ভেবে। কিন্তু এরকম মন খারাপের মধ্যে কিভাবে বলা যায়?
ওড়নার আচল দিয়ে শ্যামা চোখ চেপে ধরে। চোখের পানি দেখাতে চায় না ও।
: আচ্ছা, আপনার মনে এত দুঃখ আমাকে আগে বলেননি কেন? আপনার জীবনে এত কঠিন ঘটনা ঘটেছে অথচ আপনি আমাকে একটুও বলেননি। আমি কি খারাপ মেয়ে। আপনাদের সব কথা আমি ঐরুম থেকে শুনেছি। আপনি আমাকে বিশ্বাস করেন আর নাই করেন আমি সারাজীবন শুধু আপনাকেই বিশ্বাস করে যাবো।
কথাটা বলে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় শ্যামা।