ছেলে মানুষের কান্না ঠিক মানায় না। তারপরও আমি কাঁদছি। যতই চেষ্টা করছি
কান্না থামাতে তত বেশি কান্না ভর করছে দু চোখে। ভাগ্যিস রুমে আমি একা। কেউ
দেখার সুযোগ নাই। তারপরও লজ্জা লাগছে নিজের কাছে। কেন কাঁদবো? ও তো ঠিকই
শ্বশুর বাড়ীতে স্বাভাবিক হয়ে জীবন যাপন করবে। তবে আমি কেন কাঁদছি। আমি তো
বলেছিলাম চলো বিয়ে করে ফেলি। ...............................
কিন্তু ও নারাজ। চুরি করে বিয়ে করবে না। বাবা মা- র বিশ্বাস ভাঙতে পারবে না। আচ্ছা ওর তো আস্থাই ছিল না আমার উপর। থাকলে আমাকে বিয়ে করার সাহস পাই নি কেন? বাবা মা তো চলে যাচ্ছে না। আমিও চলে যাচ্ছি না। কিন্তু অন্য কারো সাথে বিয়ে হলে যে আমি আর থাকবো না। সম্পর্ক থেঁতলে পড়বে। কেন কেন? ভালবাসা কি এতই ঠুনকো ছিল একটু রিস্ক নেওয়া গেল না।
এখনকার বিয়ে গেল কেন জানি রাতে হয়। ঝলমল পরিবেশে রাতের বিয়ে। চারদিকে আলোকিত রঙ বেরঙের বাতি জ্বলে। বাসার ছাদ থেকেই দেখা যায় ওদের বাসাটা। পাঁচতলা সম্পূর্ণ বিল্ডিং আলোকজ্জল করা হয়েছে। চারদিকে আলোর বাহার কিন্তু আমার মনে অন্ধকারের কোমল বসবাস। অন্ধকার কোমল মনে হচ্ছে। অবাক হয়েছেন তাই না। বলছি তাহলে কারণ, অন্ধকারকে আমার কেমন জানি সব সময় নিরীহ নিরীহ মনে হয়। হিংস্রতা দেখানোর ক্ষমতা যেন তার নেই। আমিও কি অন্ধকারের মত না। আমি কি পারতাম না বিয়ের মঞ্চে গিয়ে বলতে আমার এত দিনের ভালবাসাকে অস্বীকার করে যুথি তুমি যেতে পারো না। সবাই হতবিহবল হতো। আমাকে জোর করে মঞ্চ থেকে আলাদা জায়গায় নেওয়া হতো । টানা হেঁচড়া চলত। কেউ কেউ পাগল ভাবত। আচ্ছা সে মুহূর্তে যুথি কি ভাবত? কিন্তু কই পারি নাই তো। অন্ধকারের মতই যেন নিরীহ আমি।
যূথি প্রতিদিন আমার সাথে কথা বলে থাকতেই পারত না। আমি কোথাও ঘুরতে গিয়ে কিছুদিন যে থাকবো সে উপায় ছিল না। যুথি বার বার ফোন দিত। তুমি সেখানে এতদিন কি করো? তাড়াতাড়ি এসো। তোমাকে দেখতে ভীষণ ইচ্ছা করছে। আমি ভালবাসার আবেগ সহজেই জড়িয়ে যায়। সবার আপত্তি অগ্রাহ্য করে আমি ঠিকই আমি একা একা চলে আসতাম।
ওরা এখন টিপ্পনি কাটে। দোস্ত ভালবাসা তো অনেক দেখালি। ওর জন্য আমাদের ছেড়ে চলে আসতি। সুন্দর সুন্দর জায়গার সৌন্দর্যের চেয়ে ওর ডাক তোর বেশি ভাল লাগত। এখন কি হলো? অন্য পুরুষের কাছে নিজের সৌন্দর্য বিলাবে। মজার মজার রান্না করে খাওয়াবে। শুনাবে অনেক গল্প।
আমার ইচ্ছা করে ঘুষি মেরে বসি। কিন্তু ওদের কি দোষ? সত্যিই তো। ভালবাসার তো কোন মূল্য হলো না। আমি মুখ বুজে শুনে যায়। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি। আমার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা দেখে ওরা আতঙ্কিত হয়। স্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে।
দোস্ত চিন্তা করিস না। কত মেয়ে আসবে যাবে। তুই যুথির চেয়ে অনেক ভাল মেয়ে পাবি। ধৈর্য্য ধর। যুথির জন্য আফছোস যুথি তোর ভালবাসা বুঝল না। মেয়েরা বোধ হয় এমনই।
ওরা আরো অনেক কিছু বলে। আমি শুনে যাই।
ওদের কেউ এলাকাতেই নাই। ওরা এলাকা ত্যাগ করেছে। এটা একটা প্রতিবাদ। অথচ এলাকায় বিয়ে হলে ওরাই ব্যবস্থা করে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ ফূর্তি করে। কিন্তু ওরা এই অসময়েও বেড়াতে চলে গেছে দল বেঁধে। উদ্দেশ্য বিয়ের অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করা। আমাকেও যাওয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করছিল। কিন্তু আমি রাজি হয় নি। এই কয় দিন বাসাতেই থাকবো। অন্যদের সামনে মুখ গোমড়া হয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় না। তাই বাসাতেই থেকে গিয়েছি।
খাওয়া চলছে। বর এসেছে বেশ কিছুক্ষণ হলো। লোকজনের কোলাহল শুনেই তা বুঝলাম। রাতে চলে যাবে যুথি। অন্য পুরুষের সাথে কাটাবে সুন্দর একটা রাত। কত গল্প হবে। অথচ এই অচেনা ছেলেকে কখনো চিনতই না। আজই পরিচিত হবে। কি তাজ্জব ব্যাপার।
আমার নিজেকে প্রতারক মনে হচ্ছে। কত স্বপ্ন বলা হতো। ও বলতো। আমিও বলতাম। কিন্তু স্বপ্ন গুলো যে সব মিথ্যা হলো। স্বপ্ন গুলো আমাদের চেয়ে বড় প্রতারক।
মাথা ব্যথা করছে। নাপা খেয়েছি। কখন ভাল হয় কে জানে।
রাতে ঘুম আসবে না। তাই ঘুমের ওষুধ এনেছি। আজেবাজে চিন্তা করতে ভাল লাগছে না। জীবনের প্রথম ঘুমের ওষুধ খেলাম।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাই নি। চোখের নিচে আঠালো কিছু শক্ত হয়ে আছে। বুঝলাম চোখের পানি। মুছা হয় নি।
আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল। কিন্তু এই সাত সকালে আম্মু ডাকবেন কেন? আম্মু যুথির ব্যাপারটা কিছু জানেন। সুতরাং এই সাত সকালে ডাকার কথা না। কিন্তু কি হলো আবার?
তোকে ডাকছে? ড্রয়িং রুমে যা।
এই সাত সকালে কে আসল। আশ্চর্য ব্যাপারতো।
চোখ মুছতে মুছতে জিজ্ঞাসা করলাম, কে ডাকছে?
কথায় স্বাভাবিকতা রাখতে চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি না। মা কে বুঝতে দিতে চাই না আমার অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তা করা যে অনেক কষ্টের।
আম্মু ও হেসে হেসে কথা বলছেন। জানি না পরিচয় বলল নাতো।
আম্মুরও মন খারাপ। যুথিকে আম্মুরও পছন্দ ছিল। আর ছেলের কষ্টে মার কষ্ট হবেই।
আমার আর আম্মুর মাঝে চলছে অভিনয়। এই এক কঠিন অভিনয়। কষ্ট লুকানোর অভিনয়। কেউ বুঝুক না বুঝুক দুজনই বুঝছি। আব্বু দেশে থাকলে কি একই অভিনয় করত। জানি না।
মুখ হাত ধুয়ে গেলাম ড্রয়িং রুমে। বিধ্বস্ত চেহারার এক লোক। আগে কখনো দেখি নাই। আমাকে দেখা মাত্র উঠে দাঁড়ালো।
আমি বললাম, সরি আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।
: ভাই আমি হেরে গেলাম আপনার কাছে। অথচ আপনি যে আমার প্রতিযোগী এটাই জানতাম না।
আমি একটু বিরক্ত হলাম।
: আশ্চর্য ব্যাপার। আপনাকে চিনি না জানি না। আপনি আমার প্রতিযোগী হবেন কেন? হেরেই বা যাবেন কেন?
এবার লোকটি থেমে বলল- আমিই যুথির হাসবেন্ড। গতকাল ওর সাথে বিয়ে হয়েছে।
কথাগুলো বলতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো।
আমি অবাক।
পরের পর্বে লেখার মত কিছু কি আছে????
কিন্তু ও নারাজ। চুরি করে বিয়ে করবে না। বাবা মা- র বিশ্বাস ভাঙতে পারবে না। আচ্ছা ওর তো আস্থাই ছিল না আমার উপর। থাকলে আমাকে বিয়ে করার সাহস পাই নি কেন? বাবা মা তো চলে যাচ্ছে না। আমিও চলে যাচ্ছি না। কিন্তু অন্য কারো সাথে বিয়ে হলে যে আমি আর থাকবো না। সম্পর্ক থেঁতলে পড়বে। কেন কেন? ভালবাসা কি এতই ঠুনকো ছিল একটু রিস্ক নেওয়া গেল না।
এখনকার বিয়ে গেল কেন জানি রাতে হয়। ঝলমল পরিবেশে রাতের বিয়ে। চারদিকে আলোকিত রঙ বেরঙের বাতি জ্বলে। বাসার ছাদ থেকেই দেখা যায় ওদের বাসাটা। পাঁচতলা সম্পূর্ণ বিল্ডিং আলোকজ্জল করা হয়েছে। চারদিকে আলোর বাহার কিন্তু আমার মনে অন্ধকারের কোমল বসবাস। অন্ধকার কোমল মনে হচ্ছে। অবাক হয়েছেন তাই না। বলছি তাহলে কারণ, অন্ধকারকে আমার কেমন জানি সব সময় নিরীহ নিরীহ মনে হয়। হিংস্রতা দেখানোর ক্ষমতা যেন তার নেই। আমিও কি অন্ধকারের মত না। আমি কি পারতাম না বিয়ের মঞ্চে গিয়ে বলতে আমার এত দিনের ভালবাসাকে অস্বীকার করে যুথি তুমি যেতে পারো না। সবাই হতবিহবল হতো। আমাকে জোর করে মঞ্চ থেকে আলাদা জায়গায় নেওয়া হতো । টানা হেঁচড়া চলত। কেউ কেউ পাগল ভাবত। আচ্ছা সে মুহূর্তে যুথি কি ভাবত? কিন্তু কই পারি নাই তো। অন্ধকারের মতই যেন নিরীহ আমি।
যূথি প্রতিদিন আমার সাথে কথা বলে থাকতেই পারত না। আমি কোথাও ঘুরতে গিয়ে কিছুদিন যে থাকবো সে উপায় ছিল না। যুথি বার বার ফোন দিত। তুমি সেখানে এতদিন কি করো? তাড়াতাড়ি এসো। তোমাকে দেখতে ভীষণ ইচ্ছা করছে। আমি ভালবাসার আবেগ সহজেই জড়িয়ে যায়। সবার আপত্তি অগ্রাহ্য করে আমি ঠিকই আমি একা একা চলে আসতাম।
ওরা এখন টিপ্পনি কাটে। দোস্ত ভালবাসা তো অনেক দেখালি। ওর জন্য আমাদের ছেড়ে চলে আসতি। সুন্দর সুন্দর জায়গার সৌন্দর্যের চেয়ে ওর ডাক তোর বেশি ভাল লাগত। এখন কি হলো? অন্য পুরুষের কাছে নিজের সৌন্দর্য বিলাবে। মজার মজার রান্না করে খাওয়াবে। শুনাবে অনেক গল্প।
আমার ইচ্ছা করে ঘুষি মেরে বসি। কিন্তু ওদের কি দোষ? সত্যিই তো। ভালবাসার তো কোন মূল্য হলো না। আমি মুখ বুজে শুনে যায়। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করি। আমার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা দেখে ওরা আতঙ্কিত হয়। স্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে।
দোস্ত চিন্তা করিস না। কত মেয়ে আসবে যাবে। তুই যুথির চেয়ে অনেক ভাল মেয়ে পাবি। ধৈর্য্য ধর। যুথির জন্য আফছোস যুথি তোর ভালবাসা বুঝল না। মেয়েরা বোধ হয় এমনই।
ওরা আরো অনেক কিছু বলে। আমি শুনে যাই।
ওদের কেউ এলাকাতেই নাই। ওরা এলাকা ত্যাগ করেছে। এটা একটা প্রতিবাদ। অথচ এলাকায় বিয়ে হলে ওরাই ব্যবস্থা করে। সবচেয়ে বেশি আনন্দ ফূর্তি করে। কিন্তু ওরা এই অসময়েও বেড়াতে চলে গেছে দল বেঁধে। উদ্দেশ্য বিয়ের অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করা। আমাকেও যাওয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করছিল। কিন্তু আমি রাজি হয় নি। এই কয় দিন বাসাতেই থাকবো। অন্যদের সামনে মুখ গোমড়া হয়ে থাকতে ইচ্ছা হয় না। তাই বাসাতেই থেকে গিয়েছি।
খাওয়া চলছে। বর এসেছে বেশ কিছুক্ষণ হলো। লোকজনের কোলাহল শুনেই তা বুঝলাম। রাতে চলে যাবে যুথি। অন্য পুরুষের সাথে কাটাবে সুন্দর একটা রাত। কত গল্প হবে। অথচ এই অচেনা ছেলেকে কখনো চিনতই না। আজই পরিচিত হবে। কি তাজ্জব ব্যাপার।
আমার নিজেকে প্রতারক মনে হচ্ছে। কত স্বপ্ন বলা হতো। ও বলতো। আমিও বলতাম। কিন্তু স্বপ্ন গুলো যে সব মিথ্যা হলো। স্বপ্ন গুলো আমাদের চেয়ে বড় প্রতারক।
মাথা ব্যথা করছে। নাপা খেয়েছি। কখন ভাল হয় কে জানে।
রাতে ঘুম আসবে না। তাই ঘুমের ওষুধ এনেছি। আজেবাজে চিন্তা করতে ভাল লাগছে না। জীবনের প্রথম ঘুমের ওষুধ খেলাম।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাই নি। চোখের নিচে আঠালো কিছু শক্ত হয়ে আছে। বুঝলাম চোখের পানি। মুছা হয় নি।
আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল। কিন্তু এই সাত সকালে আম্মু ডাকবেন কেন? আম্মু যুথির ব্যাপারটা কিছু জানেন। সুতরাং এই সাত সকালে ডাকার কথা না। কিন্তু কি হলো আবার?
তোকে ডাকছে? ড্রয়িং রুমে যা।
এই সাত সকালে কে আসল। আশ্চর্য ব্যাপারতো।
চোখ মুছতে মুছতে জিজ্ঞাসা করলাম, কে ডাকছে?
কথায় স্বাভাবিকতা রাখতে চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি না। মা কে বুঝতে দিতে চাই না আমার অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু তা করা যে অনেক কষ্টের।
আম্মু ও হেসে হেসে কথা বলছেন। জানি না পরিচয় বলল নাতো।
আম্মুরও মন খারাপ। যুথিকে আম্মুরও পছন্দ ছিল। আর ছেলের কষ্টে মার কষ্ট হবেই।
আমার আর আম্মুর মাঝে চলছে অভিনয়। এই এক কঠিন অভিনয়। কষ্ট লুকানোর অভিনয়। কেউ বুঝুক না বুঝুক দুজনই বুঝছি। আব্বু দেশে থাকলে কি একই অভিনয় করত। জানি না।
মুখ হাত ধুয়ে গেলাম ড্রয়িং রুমে। বিধ্বস্ত চেহারার এক লোক। আগে কখনো দেখি নাই। আমাকে দেখা মাত্র উঠে দাঁড়ালো।
আমি বললাম, সরি আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।
: ভাই আমি হেরে গেলাম আপনার কাছে। অথচ আপনি যে আমার প্রতিযোগী এটাই জানতাম না।
আমি একটু বিরক্ত হলাম।
: আশ্চর্য ব্যাপার। আপনাকে চিনি না জানি না। আপনি আমার প্রতিযোগী হবেন কেন? হেরেই বা যাবেন কেন?
এবার লোকটি থেমে বলল- আমিই যুথির হাসবেন্ড। গতকাল ওর সাথে বিয়ে হয়েছে।
কথাগুলো বলতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো।
আমি অবাক।
পরের পর্বে লেখার মত কিছু কি আছে????