যাত্রা পথে :১
মোবাইলের এলার্মেই
ঘুম ভাঙলো।
এরিমধ্যে
মুরুব্বী জামান ভাইয়ের কল আসল। প্রথমেই গুড মর্নিং জানালেন। উঠছি নাকি জিজ্ঞাসা
করলেন।
বললাম,
জ্বী
উঠে গেছি। তখন বললেন , জিয়া না উঠলে উঠায় দেন,
ও
সহজে উঠতে চায় না।
আমি
বললাম, ঠিক আছে উঠায় দিচ্ছি। জিয়া ভাই অন্য রুমে ঘুমাচ্ছেন। ওনার রুমের দরজার সামনে
গিয়ে কিছুক্ষণ ডাকলাম। না কাজ হলো না। কিছুক্ষণ পর দেখলাম নিজে নিজে উঠলেন। এরই মধ্যে জিয়া
ভাইয়ের ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে আসল।
জিয়া
ভাই তিন তলায় থাকেন। সুন্দর ছিম ছাম বাসা। চারদিকে রুচিশীলতার চমকপ্রদ প্রকাশ। প্রতিটি রুমে
শৌখিনতার পরিচয় স্পষ্ট।
ঢাকার
আকাশে তখনো শীত।
গাড়ীর
ভিতর দেখি দুজন লোক। বয়স্ক টাইপের। চিন্তা করছিলাম এরাও ব্লগার নাকি?
জিয়া
ভাই বললেন, ঢাকা থেকে বাবুর্চি নিয়ে যাচ্ছি। ঐখানে ভাল না পাওয়া
গেলে....।
মনে
মনে লজ্জা পেলাম, বাবুর্চি ব্যাটাদের আমি ব্লগার মনে করে বসে আছি। কি গাধা আমি !!!!
বলে
রাখা ভাল আমার বেশ ভূষায় ঢিলামীর এবং আচরণে বোকামীর চূড়ান্ত প্রকাশ থাকে। এজন্য ভয় পাচ্ছিলাম
কে কিভাবে নেয়।
সাথে
সাথে একটা উত্তেজনা যাদের সাথে এত দিন ব্লগে কথা বলতাম তাদের সামনা
সামনি দেখব।
কি
মজা কি মজা।
মাইক্রোবাস তিনটা
চলে এসেছে।
ছায়াবাজী
ভাইয়ের সাথে পরিচিত হলাম। বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো। কেউ কাউকে আগে দেখি নাই। তাই চিনতে সমস্যা। সবাই এসে প্রথমে
জিয়া ভাইকে খুঁজছে।
কিন্তু
জিয়া ভাইকে চিনবে কি করে। এসময় একটা ভাল বুদ্ধি পাওয়া গেল। জিয়া ভাইয়ের মোবাইলটা অস্বাভাবিক বড়। জিয়া ভাইকে কেউ খুঁজতে
আসলেই বলা হলো যার হাতে সবচেয়ে বড় মোবাইল তিনিই আমাদের জিয়া ভাই। খুব
কাজ দিল এই হিন্টস।
জিয়া
ভাইকে খুঁজে নিতে আর কোন সমস্যা হলো না। নীল সাধু ভাই এসে সবার
সাথে কোলাকুলি করলেন। শুরুর দিকটা সবচেয়ে মাতায় রেখেছেন সারোয়ার ভাই। অনেক ফানি ম্যান উনি।
এসময়
দেখি দূরে লেখক আনিসুল হক দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবছেন। তার সাথে কথা বলতে আমরা গেলাম। কিছু কথা হলো। উনি বললেন উনি ব্লগে
ঢুকার নিয়ম ঠিক জানেন না, এজন্য ব্লগে ঢুকা হয় না। ওনাকে মাইক্রো বাসের সামনে নিয়ে এসে
সবাই মিলে ছবি তুললাম।
কারিম
ভাই ফল পানি ভাগ করে তিন গাড়ীতে পাঠাচ্ছেন। আমার হাতে দিলেন,
আমি
ও ধ্রুবো ভাই বিভিন্ন গাড়ীতে উঠায় দিলাম।
আমাদের
মাইক্রোটাতে সামনের সিটে জিয়া ভাই বসছিলেন। তবে গাড়ী ছাড়ার আগে তিনি নেমে
গিয়ে নীল সাধু ভাইদের গাড়ীতে গিয়ে উঠলেন। জিয়া ভাইয়ের জায়গায় বসলেন ব্লগার
মহসিন ভাই।
মহসিন
ভাই, নোমান ভাই, কবিতা ভাই, কারিম ভাই,
কবির
ভাই, জেড সৈকত ভাই, গল্পকার শামীম ভাই,
ই-মন
ভাই ও বই পাগল নিয়ে হলুদ রঙের কাছাকাছি গাড়িটির যাত্রা শুরু করলো। গাড়ীর যাত্রার সাথে
সাথে শুরু হলো কথার যাত্রা। শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি, খেলাধূলা, নারী সব বিষয়ে তুমুল আলোচনা।
কারিম
ভাই মজার তথ্য শুনালেন। এক ব্লগারের বিয়েতে গিয়েছেন তিনি। এর আগে ঐ ব্লগারের সাথে অনেক
মেয়েকে ঘুরতে দেখেছেন। নতুন নতুন। বিয়েতে গিয়ে তিনি অবাক। বউ এক্কেবারে নতুন। আগে কখনো দেখেন নি এই
মেয়েকে।
মনে
করছিলেন আগের মেয়েগুলোর কোন একটার সাথে হয়ত বিয়ে হচ্ছে। শুনে সবাই হাসতে
হাসতে শেষ।
যমুনা
ভবন ভাঙা নিয়ে তর্ক হলো। কেউ বলল ঠিক আছে। আবার কেউ বলল ভীষণ অপচয় এটা। কারিম ভাই এরই মধ্যে
হিসাবে বসে গেছেন প্রতি বর্গফুট হিসাব করলে কত টাকা লস হচ্ছে এইটাতে
তা নিয়ে।
বহুক্ষণ
চেষ্টা করেও হিসাব বের হলো না।
কথার
ফাঁড়িতে পড়ে এরই মধ্যে একজন ব্লগার জানালেন তার মামা জামায়াতের নেতা। এজন্য
মামার সাথে ঝামেলা হয়। তা শুনে তাকে পচানোর চেষ্টা শুরু হলো...................
শামিম
ভাই জানালেন তিনি ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে এম বিএ করতে যাচ্ছেন। তাহা শুনে
কারিম ভাই হট হয়ে গেলেন। ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে এম বি এ করার কোন মানে
হয়।
এটা
যে কত নিম্ন মানের তা বুঝানোর জন্য অনেক যুক্তি উপস্থাপন করলেন কারিম ভাই। প্রতি উত্তরে ইহা যে
কত উচু মানের তাহা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেন শামীম ভাই। সবচেয়ে বড় যুক্তি দিলেন ভর্তি পরীক্ষায়
অংশ নিয়ে তিনি টিকেছেন। এক ঘন্টায় ২০০ টা বৃত্ত ভরাট করেছেন। শুদ্ধ হোক ভুল হোক এতগুলো বৃত্ত
ভরাট করার দক্ষতা দেখাতে পারায় তাকে টিকানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করলেন।
রাজনীতি
বিষয়ে তর্কটা বেশী চলল। গাড়ীতে পুরা যাত্রা পথেই সব্বোর্চ গতিতে এসি চলছে। তবে এসির এই ঠান্ডাও
পারে নি তর্কের উত্তাপ সামান্যতম কমাতে।
ই-মন
ভাই চুপচাপ ছিলেন আলোচনায়। তিনি মোবাইলে কথা বলছিলেন। হঠাৎ বললেন,
তাকে
চলে যেতে হচ্ছে।
আমরা
হতবাক।
কিছুই
না বলে বললেন পরে জানাবেন। নেমে গেলেন তিনি। মন খারাপ হলো সবার। পরে জানা গেল তাহার শ্বাশুড়ী অসুস্থ
বিধায় তাহাকে ফিরে যেতে হয়েছে। কারিম ভাইয়ের আফসোছ কি দরকার ছিল বিয়েটা করার!!!!!!
কতগুলো
মানুষ গোসল করছিল।
এসময়
আমি নোমান ভাইকে বললাম, নোমান ভাই ছবি নেন। তা দেখে কারিম ভাই
বললেন, পোলাপাইন নষ্ট হইয়া গেছে। গোসলের ছবি তুলতে কয়। নোমান
ভাই আমার সমর্থনে এগিয়ে আসেন। বলেন এটা গোসলের দৃশ্য না, এটা একটা শিল্প। মাঝে মাঝে ক্যামেরা
বিষয়ে টিপস দিয়ে যাচ্ছিলেন নোমান ভাই। আমার কবিতা ভাই সব আলোচনায় নিজের অবস্থান
তুলে ধরছিলেন।
এসময়
আমি ভয়াবহ এক তথ্য প্রদান করি। ভোটার লিস্টে কাজ করতে গিয়ে অনেক দুর্গম এলাকা বোডিং
পাড়ায় গিয়েছিলাম।
সেখানে
ওরা কাপড় ছাড়া থাকে। ১৬/১৭ বছরের .................
................।
তবে
ঐখানে ইহায় স্বাভাবিক লাগে। ইহা শুনে দেখলাম সবচেয়ে বেশি উচ্ছাসিত
আমাদের শামীম ভাই।
জিজ্ঞাসা
করে বসলেন, সামনের বার ভোটার লিস্ট কখন হবে কন। সামনের বার আমিও যামু।
আমি
বললাম ঐখানে যেতে ৬ ঘন্টা উচু উচু পাহাড় পার হতে হয়েছে। না তাতে তিনি সামান্যতম নিরুৎসাহিত
হন নাই।
৬
ঘন্টা ক্যান দরকার হলে দুই দিন পাহাড় পার হমু। তারপরও যামু।...... 

কোন
ব্লগার কেমন এ বিষয়ে কথা উঠল। এ বিষয়ে সৈকত নিজের অভিজ্ঞতা পেশ করলেন। কোন
ব্লগারকে কার কেমন লাগে তা সবাই জানালেন। অনেক গোপন তথ্য সমৃদ্ধ হলো জীবন। কারিম ভাই,
মহসিন
ভাই, নোমান ভাই, শামীম ভাই অনেক আগে থেকে ব্লগিং করে। তাদের কিছু কথায়
আশ্চর্য হলে বললেন এখনো তো নতুন। সময় হোক বুঝতে পারবেন।
এক
হোটেলের সামনে গাড়ী থামানো হলো। সকালের নাস্তার আয়োজন। আমরা অন্য গাড়ীর ব্লগারদের জানালাম,
আমাদের
গাড়ীতে হুরুস্থুল পিটাপিটি চলছে। একজনকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করার
ভান করলেন।
বিশেষ
করে রাফেল ভাই আর ধ্রুবো ভাই। তাহাদের অভিনয় এত সুন্দর ছিল যে শামীম
ভাই, আমি, কারিম ভাই বিভ্রান্ত হয়ে বাড়ায় বুড়ায় আরো নানা
কথা যোগ করলাম।
দেখলাম
আমরা যা বলি তাই বিশ্বাস করে বসে। কি মুসিবত!!!!! 
এর
মধ্যে সারোয়ার ভাই চাঁদাবাজের ভূমিকায় নামলেন। কারিম ভাই একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলেন। মেয়েদের জন্য হাফ করা
হউক।
পরে
টাকাগুলো জমা রাখা হলো শামীম ভাইয়ের কাছে। গাড়ীতে উঠার পর শামীম ভাই নতুন
পরিকল্পনা।
টাকা
গুলো নিয়ে কক্সবাজার চলে গেলে কেমন হয়?
+++++++++++++++
যাত্রা পথে : ০২
পোস্টে শামীম ভাই
মন্তব্য করেছিলেন, ঐ গাড়িতে একটা বান্দর ছিল, শামীম নামের। প্রমাণ লেখনিতেই। সব জায়গায় শামিম। প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ
করছি শামীম ভাইয়ের কাছে।
ব্লগার
শামীম ভাই প্রাথমিক পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে দিলেন। টোকেনের টাকা গুলো নিয়ে তিনি
কক্সবাজার আনন্দ করতে যাবেন। দেখি গাড়ির সবাই বিষয়টি খুব সিরিয়াস ভাবে নিয়েছে। অন্তত সবার কথায় তা-ই
মনে হলো।
কেউ
বলছে আপনার নিখোঁজ সংবাদ নিয়ে ব্লগে পোস্ট চলে আসবে। একে ধরিয়ে দিন এই
টাইপের!!! কেউ বলল, ব্লগে আর কখনো ঢুকতে পারবেন না। কিংবা এরকম পোস্টও আসতে পারে,
এই প্রতারক
ব্লগারকে চিনে রাখুন। শামীম ভাই সহ ব্লগারদের কাছ থেকে নির্মম পরিণতির কথা শুনে
একটু ভয় পেলেন।
চাঁদার
টাকা নিয়ে কিছু করার কথা আর বললেন না।
গাড়ি
জোর গতিতে এগোচ্ছে।
তিনটি
গাড়ির সামনেই ঝুলছে ব্যানার। এদিকে আমি ব্যাপক উৎসাহে অপেক্ষা করছি যমুনা সেতু
দেখব বলে।
এই
সেতু সম্পর্কে অনেক শুনেছি। এই সেতুর ফাটল সম্পর্কে জেনে মর্মাহত হয়েছি। সে সেতু দেখতে পারবো বলে
আমি অনেকটা উত্তেজিত মনে মনে। যদিও প্রকাশ করছি না। কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই সেতুর
উপর উঠার পর আমি হতাশ হয়ে গেলাম। মুখ দিয়ে শুধু আফছোস আর আফছোস। আফছোস একটা ভয়ানক
সংক্রামক ব্যাধি।
গাড়ির
সহ ব্লগারদের চেহারায়াও দেখি আফছোস। যদিও একজন ব্লগার বলতে চেষ্টা করলেন,
এই
নদী যদি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকত তবে আমরাও পানি আটকায় দিতাম। তবে তার কথাটা যুক্তি
হিসাবে কোন মতেই নিতে পারলাম না। দুর্ভাগা যমুনা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছি। এই কি দেখলাম? (দুর্ভাগা
যমুনা) । সত্যিই অনেক অনেক মন খারাপ হলো নদীর অবস্থা দেখে। না দেখায় ভাল ছিল। এখনও ঐ মুমূর্ষ
নদীটির দুঃস্বপ্ন দেখি।
যমুনা
ব্রিজ পার হতেই গাড়ি থামানোর নির্দেশ। এক পুলিশ অফিসার উকি দিলেন। জানালা খোলা হল। জিজ্ঞেস করলেন কই
যাচ্ছেন।
আমার
কবিতা ভাই বললেন, পাহাড়পুর। প্রথম আলো ব্লগের পক্ষ থেকে। সামনে ব্যানার আছে দেখেন। পুলিশ প্রথম
আলো নামটা শোনার পর চেহারায় হাসি নিয়ে আসলেন। বললেন ঠিক আছে। যান। আমার কবিতা ভাই
ধন্যবাদ দিলেন পুলিশকে। তবে আমি ধন্যবাদ দিলাম প্রথম আলোকে। নাম শুনেই ছেড়ে দিলেন
আমাদের।
কি
ক্ষমতা এই নামটার মাঝে।
নিষাদ
ভাই একটু চুপচাপ থাকেন। সবাই কথা বলছেন তিনি একাধারে চুপ থাকবেন এটা কি
হয়? এবার তিনি শুরু করলেন কথা বলা। উনি বক্তা। আর আমরা শ্রোতা। সিলেটী দুটো খানার নাম বলে
তিনি উত্তেজিত করার চেষ্টা করলেন সিলেটী ব্লগারদের। আমাদের গাড়িতে সিলেটী
ব্লগার ছিলেন, জেড এইচ সৈকত ভাই আর কাবির য়াহমদ ভাই। ভাতের প্লেটে তরকারির
সাথে দই নিয়ে খাওয়া, সাত খড়ি এই ধরণের খানা নিয়ে বললেন। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। সৈকত ভাই আর কাবির
ভাইকে রাগানো।
সৈকত
ভাই আর কাবির ভাইয়ের সে খানা দুইটি নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণের চেষ্টা
দেখে মনে হলো নিষাদ ভাই সফল। ওনাদের যথেষ্ট উত্তেজিত করে ফেলেছেন। কাবির ভাইকে বার বার নিষাদ
ভাইকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন, ভাই আপনার বাড়ি কই বলেন? কবিতা ভাই বললেন,
বরিশাল
মনে হয়।
নিষাদ
ভাইও মাথা নাড়েন।
কাবির
ভাই বলেন বরিশালের হলে এসব কথা জানতেন না। নিশ্চয় সিলেটের আশেপাশের কোন জায়গার। জানা গেল সিলেটের আশে
পাশে জেলা গুলো সাথে মোটামুটি খানা গত ঐতিহ্য নিয়ে ঠাট্টা মশকরা চলেই। মাঝে
কিছু ঝামেলা আছে।
সৈকত
ভাই একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন। সিলেটের মানুষেরা অনেক অনেক অনেক বেশি অতিথিপরায়ন। আর সেখানে হয়ত বেশি
বড়লোক, নয়ত বেশী গরীব লোক আছে। মধ্যবিত্ত নেই সিলেটে!!!!!
মেইন
রাস্তা থেকে বিভিন্ন রাস্তা ঢুকে যাচ্ছিলো। ভিতরের রাস্তাগুলো কোথায় কোথায়
গেছে সেগুলো বলে নিষাদ ভাই আমাদের কৌতুহল মিটাচ্ছিলেন। এসব এলাকা সম্পর্কে দেখলাম
নিষাদ ভাইয়ের ভালই জানাশোনা আছে।
গাড়িতে
কথার বিষয়ের শেষ নেই। এই বিষয়ে কথার শেষ না হতেই অন্য বিষয় আরম্ভ হয়। আমার কবিতা ওনার দেখা
একটা বিষয়ের কথা বললেন, কোন মেয়ের নামের আইডি নতুন এসেছি এ জাতীয়
পোস্ট দিলে সেখানে নাকি সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এই জিনিষটা দেখতে কবিতা
ভাইয়ের ভাল লাগে না তা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিলেন। আমরা যারা নতুন দের
স্বাগতম জানাই তারা একটু বিব্রত বোধ করলাম কবিতা ভাইয়ের কথায়। 

গাড়ি
চলছে তো চলছে।
কিন্তু
আমাদের গন্তব্য দেখা যাচ্ছে না। কাবির ভাই একটু বিরক্ত। এত বেশি গাড়ি চড়তে
হচ্ছে বলে।
কিছুক্ষণ
পর দেখলাম আমাদের সামনের গাড়িটা একটাপ্রাইভেটকারের সামনে দাঁড়ালো। দেখলাম ঐ গাড়ি থেকে
বেশ কয়েকজন নেমে পড়েছেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করছে। বুঝতে দেরি হলো না,
ইনিই
আমাদের মুরুব্বী ওরফে জামান ভাই। আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে আগে চলে এসেছেন।
আমাদের
গাড়ি বহরের সাথে আরেকটি গাড়ি যুক্ত হলো। মোট চারটি গাড়ি। জামান ভাইয়ের গাড়ি সহ।
কিছুক্ষণের
মধ্যে আমরা পৌছলাম আমাদের প্রথম গন্তব্য মহাস্থানগড়। ঐতিহাসিক এক স্থানে। নামার পরই আমাদের
জন্য এত উষ্ণ অভ্যর্থনা থাকবে কেউ হয়ত কল্পনা করে নি। মুরুব্বীনি নিজ হাতে
সবাইকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানালেন। মুরুব্বীনি কে নিয়ে আমাদের সানোয়ার ভাই আর সৈকত ভাই
এরি মধ্যে জান পরাণ আবেগের পোস্ট দিয়ে ফেলছেন। আমিও অস্বীকার করব না তা। আসলে অনেক সুন্দর
মহিলা মুরুব্বীনি। সৈকত
ভাই না হয় বয়সের দোষে পোস্ট দিয়ে ফেলছেন, কিন্তু আমাদের সারোয়ার ভাই কেন
কবিতা লিখতে যাবেন এই মানবীকে নিয়ে, 
সানোয়ার ভাই তো অলরেডি বিবাহিত। এমন কি ওনার বউ ও এই পিকনিকের সম্মানিত
সদস্য।
দুই
মেয়েকে সঙ্গি করে।
অভ্যর্থনা
পর্বে জামান ভাই কে কোনটা তা বলার চেষ্টা করছেন। বেশির ভাগই মিলে যাচ্ছে। আমাকে দেখলামে এক
সেকেন্ডে চিনতে পারলেন। ধন্যবাদ জামান ভাই।
ভিআইপি
গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হলো সবাইকে। সেখানে সবাই বসলেন। আড্ডা শুরুর প্রস্তুতি। এদিকে জুমাবার। জুমার নামাজ। আমার কবিতা ভাই,
সারোয়ার
ভাই, হান্নান ভাই, ছায়াবাজি ভাই আমরা ছুটলাম নামাজের জন্য মসজিদের খোঁজে। কিন্তু
দেখি আমরা যেতে যেতে দেখি নামাজ শেষ। হুজুর ব্যস্ত মিলাদ মাহফিল পড়াতে। আনা হয়েছে বিশাল
ডেকছিতে খিচুরি।
সেগুলোর
ঘ্রাণ উঠতেছে।
আমরা
নিজেরা জামাত করার উদ্যেগ নিলাম। কিন্তু ইমাম হবে কে?
সারোয়ার
ভাই কিছুক্ষণ জোরাজুরি করলেন আমাকে ইমামতি করার জন্য। আমি সে প্রস্তাব পেয়ে
হতবাক।
। জোর করে সারোয়ার ভাইকে ইমামতিতে দাড় করায় দিলাম। সুন্দর ভাবে নামাজ
পড়া শেষ হলো।
এদিকে
আমরা ফিরে দেখি ফটোশেশন শেষ পর্যায়ে। প্রথম আলোর বগুড়ার রিপোর্টার এসেছে। সবাই একসাথে ছবি
তুলছে।
দূরে
এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে সারোয়ার ভাইয়ের বউ ও মেয়েরা। তা দেখে সারোয়ার ভাইয়ের বাঁধ ভাঙা নীরব
আনন্দ।
তার
বউ তাকে ছাড়া ছবি তুলছে না, ব্যাপারটাই যে তিনি বিমোহিত তা প্রকাশ
করতে ভুললেন না। সবাই
মিলে যোগ দিলাম ফটোসেশন পর্বে।
দুপুর
বেলায় গল্প হচ্ছে।
মুরুব্বীনির
সাথে।
বললাম
জিয়া ভাই তো, ঢাকা থেকে বাবুর্চি এনেছেন। তা শুনে মুরুব্বীনি বললেন জিয়া ভাই অনেক
গুছানো।
অনেক
বড় আয়োজন করবেন। নিজের স্বামীর ধৈয্য কম জানালেন। আমি বললাম,
কেন
এত্ত বড় আয়োজন করেছেন, এত দূরে বসে এত বড় এরেঞ্জমেন্ট এটা তো
অনেক বিশাল কর্মযজ্ঞ। অনেক ধৈর্য্য ছাড়া সম্ভব না। তখন মুরুব্বীনি বললেন,
এই
একটা ব্যাপারে ওর এত ধৈর্য্য দেখলাম। মুরুব্বীনি স্বীকার করলেন এই ব্যাপারে
নিজ স্বামীর ( মুরুব্বী জামান ভাই) ধৈর্য্য দেখে তিনি বিস্মিত। ( অফ দ্যা রেকর্ডের কথাগুলো
প্রকাশ করে দিলাম)
আমার
স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই
ভাতির ব্লগাররা।
চড়ুইভাতি
নিয়ে পূর্বের পোস্টগুলো-----
++++++++++++++++
মহাস্থানগড় দর্শন (অনাবিল খুশির ফোয়ারা)
যাত্রাপথে ০২ পোস্টে সৈকত ভাই মন্তব্য করলেন, `যত দোষ নন্দ ঘোষ। আমি কি পোস্ট দিলাম তা খুটিয়ে খুটিয়ে..। অথচ উনি কত ডেটিং.........ভাল লাগল
লেখাটা। লেখাটা আগাগোড়া আমার বিষয়ে নানা বর্ণনা থাকায়
স্পেশাল ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ।"
সৈকত ভাই বিরক্ত হলে দুঃখিত।
নতুন পর্বে স্বাগতম।
ফটোসেশন শেষ। সবাই আবার ঢুকে পড়লেন ভি আইপি রেস্ট হাউসে। এবার খাওয়ার পালা। ঢুকার মুখেই কোয়ালিটি বিরিয়ানী হাউসের পক্ষ থেকে চাকচিক্য ব্যানারের মাধ্যমে আমাদের স্বাগতম জানানো হলো। ভিআইপি রেস্ট হাউসটা দেখার মত। বাহিরে ফুলের সমারোহ। রঙ বেরঙের ফুলগুলো সারি করে ফুটে আছে। কোথাও বা আছে গোল হয়ে। ফুল গুলির দিকে দেখলেই চোখ জড়িয়ে যায়। অনেকে ফুল গুলোকে সঙ্গী করে ছবি তুলছেন।
খাওয়া শুরু হলো। কোয়ালিটি বিরায়ানী হাউসের বিরায়ানীর প্যাকেট। ঝাল বিরিয়ানী। জামান ভাই জানালেন বগুড়ার সবচেয়ে নাম করা বিরায়ানী এটা। খাওয়ার সময় একটু আদুরে নির্যাতনই চলল। এত বুঝি খাওয়া যায়। একটু ঝাল তবে সুন্দর ঘ্রাণের বিরায়ানী খেতে ভালই লাগছিল। সাথে বাড়তি প্যাকেটে মুরগীর গোস্ত, ডিম। প্যাকেটের বিরায়ানীর আধিক্য দেখে খেতে কষ্ট হলো। এত গুলো বুঝি খাওয়া সম্ভব? কিন্তু রেখে দিলে কে কি মনে করে এই ভেবে কষ্ট করে হলেও পেটকে বিশাল একটা ড্রাম বানিয়ে খেয়ে ফেললাম। পরে দেখি ডিমটাই খানা হয় নি। সেটা খাওয়ার আর শক্তি পেলাম না। সেটা আড়ালেই রেখে দিলাম।
পেট ফুলে ফুটবল হয়ে আছে তাতে কি? বগুড়ার মিষ্টি দই জিবছাড়া কোন ভাবেই করা যাবে না। আমি আর কাবির ভাই একটা পাত্র থেকে দুইজনে মজা করে খাচ্ছিলাম দই। বগুড়ার দইয়ের স্বাদ সত্যিই অসাধারণ। এত্ত মজার যে খেলে আরো খেতে ইচ্ছা করে। মজা করেই খাচ্ছিলাম। এসময় কারিম ভাইয়ের সাহসী পদার্পণ। আমার হাত থেকে দইয়ের পাত্রটি নিয়ে ফেললেন। আমাকে বললেন, আপনি তো অনেক খেয়েছেন। এবার আমি খাই। কারিম ভাইয়ের খানা শুরু হওয়ার আগেই ক্লিক ক্লিক শব্দ। ক্যামেরায় উঠছে সব ছবি। কারিম ভাই দেখি হেভী খুশী। নিজেকে খাদক হিসাবে দেখা যাবে বলে। কারিম ভাইয়ের দই খাওয়ার আওয়াজের চেয়ে ক্যামেরার আওয়াজই বেশি শুনা যেতে লাগল।
মধ্যখানে জামান ভাই বার বার বলতে লাগলেন , কারো কিছু লাগলে বলিয়েন। অন্য প্যাকেট খুলে সেখান থেকে দেওয়া হবে। তা শুনে আমি মনে মনে হাসি। এতগুলো খাওয়ার পর আরো লাগবে বুঝি!!!
ভাত বেশি হয়ে গেছে তা নিয়ে আলোচনা বসল এবার। মুরুব্বীনি বললেন, আমি ভাত আরো কম দিতে বলেছিলাম। কিন্তু শুনে নাই। এর মধ্যে এক ব্লগার বলে উঠলেন, কম দিলে তখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলত। বলত কম খাওয়ানোর জন্য কম দেওয়া হয়েছে। বেশি দিয়েছে ভালই হয়েছে। তা শুনে মুরুব্বীনি সুন্দর একটা হাসি দিলেন।
এদিকে দেখা গেল সারোয়ার ভাই পেট পুরে খাওয়ার পরও বাড়তি একটা প্যাকেট নিয়ে ঘুরছেন। মনে মনে ইচ্ছা কোন ফটোগ্রাফার তাহার এই অবস্থা ক্যাচ করে কিনা।
।
সারোয়ার ভাইকে
বাড়তি প্যাকেট নেওয়ার কারণ সম্পর্কে ধরার আগেই সারোয়ার ভাই হড় হড় করে বলতে লাগলেন, আমার মেয়ে খায়নি। ওর জন্য এই প্যাকেট। চোরের মনে পুলিশ পুলিশ। প্রতিটি ক্ষেত্রে সারোয়ার ভাই অনেক মজা করেছেন। সবাই অনেক মজা পেয়েছেন।
খাওয়ার পর্ব শেষে এবার সবাই ছুটল মহাস্থানগড় দেখার উদ্দেশ্যে। লাখ লাখ ইটের গাথুনিতে মহাস্থানগড়। কিছু সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়। সবাই উঠল। উঠার দৃশ্যগুলো ক্যামেরা বন্দী হতে লাগল। জামান ভাইকে ঘিরে ধরলেন সবাই। জামান ভাই বলছেন পাহাড়পুরের ইতিহাস। আশ্চর্য রকমের সুন্দর ভরাট গলায় বলছেন। ওনার কথার জাদুতে সবাই মুগ্ধ। জামান ভাই জানালেন, এরকম ২০/২১ কিলোমিটার দেওয়াল আছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে মাটি ভরাট করায় এটা ক্রমে নিচু হয়ে যাচ্ছে। পাশে একটা নদী ছিল। সে নদীর যাতায়াতের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এখানে এটা করা হয়েছে। পাশে নদীর কথা বললেও পাশের অবস্থা দেখে ভাবতে কষ্ট হয় এখানে নদী আছে। সত্যিই কি নদী ছিল। হারিয়ে যাওয়া নদীর খাতায় নাম লিখিয়েছে এই অভিমানী নদীটিও। বাংলাদেশের সব নদীর কি শেষ পরিণতি ঐরকমই। প্রভু রক্ষা কর। রক্ষা কর।
জামান ভাই জানালেন, বর্তমানে বগুড়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খারাপ এলাকা এইটা। আতঙ্কের এলাকা এটা। এখানে রাজা পরশুরাম থাকতেন। রাজা পরশুরাম ইতিহাসে স্মরণীয় ছিলেন একটা ঘৃণিত কারণে। নিজের মাকে নিজে বধ করেছেন তিনি। পৃথিবীতে একমাত্র রাজা পরশুরামই এই ঘৃণিত কাজটি করেছেন। রাজা পরশুরাম ছিলেন অনেকটা অপ্রতিরোধ্য। তার সাথে অন্য রাজারা আক্রমণ করে পারত না। এটার একটা কারণ ছিল।
কারণ হিসাবে জামান ভাই বললেন, এটার ভিতরে একটা কুয়া ছিল। কোন সৈনিক নিহত হলে তাকে সেখানে ফেলা হতো। কুয়ায় ফেললেই মৃত সৈনিকটি জীবিত হয়ে যেত। এজন্যই রাজা পরশুরামের সাথে কেউ পারত না। রাজা পরশুরাম যখন একেবারে অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাচ্ছিলেন তখন সুদূর আরব থেকে এই এলাকায় এক দরবেশ এলেন, মাহিসওয়ার । (তিনি মাছের পিঠে করে এসেছিলেন বলে তার নাম হলো মাহিসওয়ার।) আল্লাহ তাকে বললেন, (দর্শন পেলেন ) তিনি যদি যে কোনো মাংসের টুকরা ওই কুপে ফেলেন তবে ওই কুপের শক্তি আর থাকবে না, এ জন্য হয়তো কেনো কাকের ঠোটে করে একটি মাংসের টুকরা ওই কুপে ফেলা হলো। এতে ঐ কূপের শক্তি নষ্ট হলো।
পরশুরাম হারা শুরু করলেন।
মুরুব্বী বললেন, যেখানে অনাচার বেড়ে গেছে সেখানে কাউকে না কাউকে পাঠানো হয়েছে। এজন্যই এখানে বিহারের পাশে মসজিদ হয়েছে, মাজার হয়েছে। বাবরী মসজিদের উদাহরণ টানলেন মুরুব্বী। বললেন রাম মন্দিরের সাথে বাবরি মসজিদের কারণ ঐটাই।
সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছে। ঐ কুপ দেখার জন্য ইচ্ছা জাগল। আমি আগ্রহ প্রকাশ করলাম মুরুব্বীর কাছে। সাথে সাথে মুরুব্বী রাজি। আরো অনেকে রাজি হলো। ওরাও যাবে। জানানো হলো কূপ অনেক দূরে। অনেকটুকু হাঁটতে হবে। তারপরও আমরা রাজি। যত হাঁটার দরকার হোক হাঁটব। তারপরও কূপটা দেখব। কূপ দেখার উদ্দেশ্যে শুরু হলো যাত্রা। ঐ শুরুই। এরই মাঝে বাধ সাধলেন জিয়া ভাই। জিয়া ভাইয়ের ঐখানে যে বিশাল চমক প্রদ আয়োজন বাকী রয়ে গেছে। ঐ কূপ দেখে আসতে আসতে দেরি হয়ে যাবে। তাই ঐখানে যাওয়া যাবে না। আফছোস নিয়ে ফিরলাম।
ইটের দেয়াল গুলো দেখানোর সময় মুরুব্বী বলছিলেন, ঐ সময় এখানে এমন মাটি ছিল যা সিমেন্টের কাজ করত। যদিও এখন আর নেই। কবিতা ভাই প্রশ্ন রাখলেন, এত বেশি রুম রাখার কারণ কি? ছোট ছোট অনেক রুম। এক একজন এক এক যুক্তি দেখালো। কিন্তু সঠিক তথ্য জানা গেল না।
মসৃণ ছোট ছোট লাখো ইটের কোনটাতে ইংরেজী অক্ষরে লেখা। মনে প্রশ্ন জাগল ঐসময় কি বৌদ্ধরা ইংরেজী জানতেন? কেউ কেউ বলল ইটগুলো পরে লাগানো হয়েছে, কিন্তু ইটগুলো দেখে বর্তমান সময়ের মনে হয় না। অতি মসৃণ ছোট সম আকৃতির আধাপোড়া অথচ শক্ত ইট। ইট গুলোর ইংরেজী লেখা বিষয়ে কারো কি জানা আছে? এই প্রশ্নটার উত্তর পেলে ভাল লাগত।
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
সৈকত ভাই বিরক্ত হলে দুঃখিত।
নতুন পর্বে স্বাগতম।
ফটোসেশন শেষ। সবাই আবার ঢুকে পড়লেন ভি আইপি রেস্ট হাউসে। এবার খাওয়ার পালা। ঢুকার মুখেই কোয়ালিটি বিরিয়ানী হাউসের পক্ষ থেকে চাকচিক্য ব্যানারের মাধ্যমে আমাদের স্বাগতম জানানো হলো। ভিআইপি রেস্ট হাউসটা দেখার মত। বাহিরে ফুলের সমারোহ। রঙ বেরঙের ফুলগুলো সারি করে ফুটে আছে। কোথাও বা আছে গোল হয়ে। ফুল গুলির দিকে দেখলেই চোখ জড়িয়ে যায়। অনেকে ফুল গুলোকে সঙ্গী করে ছবি তুলছেন।
খাওয়া শুরু হলো। কোয়ালিটি বিরায়ানী হাউসের বিরায়ানীর প্যাকেট। ঝাল বিরিয়ানী। জামান ভাই জানালেন বগুড়ার সবচেয়ে নাম করা বিরায়ানী এটা। খাওয়ার সময় একটু আদুরে নির্যাতনই চলল। এত বুঝি খাওয়া যায়। একটু ঝাল তবে সুন্দর ঘ্রাণের বিরায়ানী খেতে ভালই লাগছিল। সাথে বাড়তি প্যাকেটে মুরগীর গোস্ত, ডিম। প্যাকেটের বিরায়ানীর আধিক্য দেখে খেতে কষ্ট হলো। এত গুলো বুঝি খাওয়া সম্ভব? কিন্তু রেখে দিলে কে কি মনে করে এই ভেবে কষ্ট করে হলেও পেটকে বিশাল একটা ড্রাম বানিয়ে খেয়ে ফেললাম। পরে দেখি ডিমটাই খানা হয় নি। সেটা খাওয়ার আর শক্তি পেলাম না। সেটা আড়ালেই রেখে দিলাম।
পেট ফুলে ফুটবল হয়ে আছে তাতে কি? বগুড়ার মিষ্টি দই জিবছাড়া কোন ভাবেই করা যাবে না। আমি আর কাবির ভাই একটা পাত্র থেকে দুইজনে মজা করে খাচ্ছিলাম দই। বগুড়ার দইয়ের স্বাদ সত্যিই অসাধারণ। এত্ত মজার যে খেলে আরো খেতে ইচ্ছা করে। মজা করেই খাচ্ছিলাম। এসময় কারিম ভাইয়ের সাহসী পদার্পণ। আমার হাত থেকে দইয়ের পাত্রটি নিয়ে ফেললেন। আমাকে বললেন, আপনি তো অনেক খেয়েছেন। এবার আমি খাই। কারিম ভাইয়ের খানা শুরু হওয়ার আগেই ক্লিক ক্লিক শব্দ। ক্যামেরায় উঠছে সব ছবি। কারিম ভাই দেখি হেভী খুশী। নিজেকে খাদক হিসাবে দেখা যাবে বলে। কারিম ভাইয়ের দই খাওয়ার আওয়াজের চেয়ে ক্যামেরার আওয়াজই বেশি শুনা যেতে লাগল।
মধ্যখানে জামান ভাই বার বার বলতে লাগলেন , কারো কিছু লাগলে বলিয়েন। অন্য প্যাকেট খুলে সেখান থেকে দেওয়া হবে। তা শুনে আমি মনে মনে হাসি। এতগুলো খাওয়ার পর আরো লাগবে বুঝি!!!
ভাত বেশি হয়ে গেছে তা নিয়ে আলোচনা বসল এবার। মুরুব্বীনি বললেন, আমি ভাত আরো কম দিতে বলেছিলাম। কিন্তু শুনে নাই। এর মধ্যে এক ব্লগার বলে উঠলেন, কম দিলে তখন বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলত। বলত কম খাওয়ানোর জন্য কম দেওয়া হয়েছে। বেশি দিয়েছে ভালই হয়েছে। তা শুনে মুরুব্বীনি সুন্দর একটা হাসি দিলেন।
এদিকে দেখা গেল সারোয়ার ভাই পেট পুরে খাওয়ার পরও বাড়তি একটা প্যাকেট নিয়ে ঘুরছেন। মনে মনে ইচ্ছা কোন ফটোগ্রাফার তাহার এই অবস্থা ক্যাচ করে কিনা।


খাওয়ার পর্ব শেষে এবার সবাই ছুটল মহাস্থানগড় দেখার উদ্দেশ্যে। লাখ লাখ ইটের গাথুনিতে মহাস্থানগড়। কিছু সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়। সবাই উঠল। উঠার দৃশ্যগুলো ক্যামেরা বন্দী হতে লাগল। জামান ভাইকে ঘিরে ধরলেন সবাই। জামান ভাই বলছেন পাহাড়পুরের ইতিহাস। আশ্চর্য রকমের সুন্দর ভরাট গলায় বলছেন। ওনার কথার জাদুতে সবাই মুগ্ধ। জামান ভাই জানালেন, এরকম ২০/২১ কিলোমিটার দেওয়াল আছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে মাটি ভরাট করায় এটা ক্রমে নিচু হয়ে যাচ্ছে। পাশে একটা নদী ছিল। সে নদীর যাতায়াতের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এখানে এটা করা হয়েছে। পাশে নদীর কথা বললেও পাশের অবস্থা দেখে ভাবতে কষ্ট হয় এখানে নদী আছে। সত্যিই কি নদী ছিল। হারিয়ে যাওয়া নদীর খাতায় নাম লিখিয়েছে এই অভিমানী নদীটিও। বাংলাদেশের সব নদীর কি শেষ পরিণতি ঐরকমই। প্রভু রক্ষা কর। রক্ষা কর।
জামান ভাই জানালেন, বর্তমানে বগুড়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর খারাপ এলাকা এইটা। আতঙ্কের এলাকা এটা। এখানে রাজা পরশুরাম থাকতেন। রাজা পরশুরাম ইতিহাসে স্মরণীয় ছিলেন একটা ঘৃণিত কারণে। নিজের মাকে নিজে বধ করেছেন তিনি। পৃথিবীতে একমাত্র রাজা পরশুরামই এই ঘৃণিত কাজটি করেছেন। রাজা পরশুরাম ছিলেন অনেকটা অপ্রতিরোধ্য। তার সাথে অন্য রাজারা আক্রমণ করে পারত না। এটার একটা কারণ ছিল।
কারণ হিসাবে জামান ভাই বললেন, এটার ভিতরে একটা কুয়া ছিল। কোন সৈনিক নিহত হলে তাকে সেখানে ফেলা হতো। কুয়ায় ফেললেই মৃত সৈনিকটি জীবিত হয়ে যেত। এজন্যই রাজা পরশুরামের সাথে কেউ পারত না। রাজা পরশুরাম যখন একেবারে অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাচ্ছিলেন তখন সুদূর আরব থেকে এই এলাকায় এক দরবেশ এলেন, মাহিসওয়ার । (তিনি মাছের পিঠে করে এসেছিলেন বলে তার নাম হলো মাহিসওয়ার।) আল্লাহ তাকে বললেন, (দর্শন পেলেন ) তিনি যদি যে কোনো মাংসের টুকরা ওই কুপে ফেলেন তবে ওই কুপের শক্তি আর থাকবে না, এ জন্য হয়তো কেনো কাকের ঠোটে করে একটি মাংসের টুকরা ওই কুপে ফেলা হলো। এতে ঐ কূপের শক্তি নষ্ট হলো।
পরশুরাম হারা শুরু করলেন।
মুরুব্বী বললেন, যেখানে অনাচার বেড়ে গেছে সেখানে কাউকে না কাউকে পাঠানো হয়েছে। এজন্যই এখানে বিহারের পাশে মসজিদ হয়েছে, মাজার হয়েছে। বাবরী মসজিদের উদাহরণ টানলেন মুরুব্বী। বললেন রাম মন্দিরের সাথে বাবরি মসজিদের কারণ ঐটাই।
সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছে। ঐ কুপ দেখার জন্য ইচ্ছা জাগল। আমি আগ্রহ প্রকাশ করলাম মুরুব্বীর কাছে। সাথে সাথে মুরুব্বী রাজি। আরো অনেকে রাজি হলো। ওরাও যাবে। জানানো হলো কূপ অনেক দূরে। অনেকটুকু হাঁটতে হবে। তারপরও আমরা রাজি। যত হাঁটার দরকার হোক হাঁটব। তারপরও কূপটা দেখব। কূপ দেখার উদ্দেশ্যে শুরু হলো যাত্রা। ঐ শুরুই। এরই মাঝে বাধ সাধলেন জিয়া ভাই। জিয়া ভাইয়ের ঐখানে যে বিশাল চমক প্রদ আয়োজন বাকী রয়ে গেছে। ঐ কূপ দেখে আসতে আসতে দেরি হয়ে যাবে। তাই ঐখানে যাওয়া যাবে না। আফছোস নিয়ে ফিরলাম।
ইটের দেয়াল গুলো দেখানোর সময় মুরুব্বী বলছিলেন, ঐ সময় এখানে এমন মাটি ছিল যা সিমেন্টের কাজ করত। যদিও এখন আর নেই। কবিতা ভাই প্রশ্ন রাখলেন, এত বেশি রুম রাখার কারণ কি? ছোট ছোট অনেক রুম। এক একজন এক এক যুক্তি দেখালো। কিন্তু সঠিক তথ্য জানা গেল না।
মসৃণ ছোট ছোট লাখো ইটের কোনটাতে ইংরেজী অক্ষরে লেখা। মনে প্রশ্ন জাগল ঐসময় কি বৌদ্ধরা ইংরেজী জানতেন? কেউ কেউ বলল ইটগুলো পরে লাগানো হয়েছে, কিন্তু ইটগুলো দেখে বর্তমান সময়ের মনে হয় না। অতি মসৃণ ছোট সম আকৃতির আধাপোড়া অথচ শক্ত ইট। ইট গুলোর ইংরেজী লেখা বিষয়ে কারো কি জানা আছে? এই প্রশ্নটার উত্তর পেলে ভাল লাগত।
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
+++++++++++++
জয়পুরহাট (সুন্দর মুহূর্ত)
মহাস্থানগড় থেকে
নামতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু সময়ের কাছে মানুষ বড় অসহায়। সবাই সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগলেন। আমিও তাদের অনুসরণ করতে বাধ্য হলাম। গাড়িতে উঠছে সবাই।
রেস্ট হাউজের ঠিক পাশে আরো কিছু পুরানো স্থাপনা আছে। সেখানে ঢুকলাম। তবে ফ্রিতে ঢুকার সুযোগ নেই এখানে। টিকেট কাটতে হয়। দুই টাকা প্রতিজন। আমরা চারজন ঢুকলাম। দিলাম দশ টাকা। দুই টাকা ফেরত পাওয়ার কথা, কিন্তু নেওয়া হয় নাই। সামনের বার গেলে নিতে হবে।
এখানে অনেক উচু উচু দেওয়াল। সবাই বিস্মিত। এখানেও সে একই বিতর্ক। ইটগুলো নতুন না পুরানো? ইট গুলো নতুন হিসাবে ধরে নেওয়ার শুধু
একটাই যুক্তি আছে। ইটে ইংরেজী লেখা। না হলে নতুন ভাবার আর কোন কারণ নেই। আগের ইটই মনে হয়। ঐ আমলে ইংরেজী জানবে কোত্থেকে?? !! ?? অল্প কিছু সময় প্রদর্শন শেষে বের হয়ে পড়লাম।
ঠিক হলো যে যে গাড়িতে ছিল সে গাড়িতেই উঠবে। উঠলাম আমরা। আমাদের গাড়ীতে স্থানীয় একজন উঠলেন। অন্য গাড়ির প্রস্তুতির অপেক্ষায় গাড়ি কিছুক্ষণ দাঁড়াল। এরপর শুরু হলো নতুন যাত্রা। গন্তব্য জিয়া রায়হান ভাইয়ের বাড়ি। যা জয়পুরহাটে।
গাড়ি মেইন রাস্তায় আর উঠে নাই। ভিতরে রাস্তা দিয়েই চলতে লাগল। দুদিকে সুন্দর দৃশ্যগুলো দেখছিলাম। মাঝে মাঝে কিছু বাজার পার হচ্ছিলো। একটা সিনেমা হলের সামনে রঙ্গীন পোস্টার দেখতেই দুজন ব্লগারের প্রস্তাব রাখলেন, চলেন ছবি দেখি গা।

গাড়িতে কথা সমান তালে চলছিল। হঠাৎ দেখি রাস্তা ছেড়ে গাড়ি গর্তে নেমে যাচ্ছে। একটু ভয় ভয় লাগছিল। মাটির নেমে যাওয়া রাস্তায় গাড়িও নেমে গেল। জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখি অদূরে ব্রিজ হচ্ছে। একটা মৃত খাল না নদী বুঝলাম না, সেটা পার হলো গাড়ি। কোন পানি নেই। কি দরকার ব্রিজের? ( হয়ত শুধু বর্ষা কালের জন্য) সেটা পার হয়ে গাড়ি আবার উপরে উঠে পিচঢালা রাস্তায় যোগ দিল।
এভাবে পার হতে দেখে আমি একটা বিষয় শেয়ার করলাম। ভোটার লিস্টে যখন কাজ করছি আলীকদমে। তখন সেখানে একটা সেন্টার ছিল নদীর ঐ পারে। নদীতে পানি। হাটু সম পানির চেয়েও বেশি। আমরা যেতাম আর্মির গাড়ি করে। গাড়ি ঐ পানির উপর দিয়েই চলে যেত। দুই পাশে পানি উড়ছে দেখতে ভালোই লাগত। পানির উপর দিয়ে যখন গাড়ি যেত খুব মজা পেতাম। তবে সমস্যা হলো একদিন। ড্রাইভারের সাথে এক আনসার সদস্যের ঝামেলার কারণে ড্রাইভার একদিন মাঝনদীতে ইচ্ছা করেই ব্রেক কষে বসলেন। গাড়ী আর স্ট্যাট নেয় না। আমরা নেমে প্যান্ট গুটিয়ে পার হলাম। পরে সবাই ঠেলাঠেলি করে গাড়িটা ঐপাড়ে উঠালো। এ বিষয়ে একটা কথা না বললেই নয়, প্রধান মন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্টের কাছে তদবিরের জন্য সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হচ্ছে ড্রাইভার।

। ড্রাইভারদের অনেক
অঘোষিত সম্মান। 
আমরা যাচ্ছি জিয়া রায়হান ভাইদের বাসায়। নিরিবিলি পিচঢালা রাজপথ। দুই পাশে গাছের শান্তির ছায়া। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে দিগন্ত জোড়া আলুর ক্ষেত। অনেক জায়গায় দেখলাম সদ্য তোলা আলুর অসংখ্য বস্তা। কেউ কেউ আলু নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলেন। এসময় মজা লাগল কাবির য়াহমদ ভাইয়ের কথা। তিনি প্রয়াত সাইফুর রহমানের একটা বাণী বললেন। " আমাদের বেশি বেশি পটেটো আর আলু খাইতে হবে, অথচ ওরা কয় শুধু নুডলস খাও নুডলস খাও।” সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় এ কথাটি শুনে সবাই মজা পেয়েছিল। হাসির জোরে যেন কাঁপছিল গাড়িটি। যদি গাড়ি চলন্ত থাকায় বুঝা যায় নি।
রাস্তার পর রাস্তা শেষ হয়, কিন্তু দেখা যায় না গন্তব্য। কাবির ভাই সবচেয়ে বেশি বিরক্ত। হাত পা নেড়ে মাঝে মাঝে নিজের ক্লান্তি দূর করার অনবদ্য চেষ্টা কিছুক্ষণ পর পর করতে লাগলেন। সামনে বসা স্থানীয় লোকটিকে বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ভাই আর কতদূর?
অবশেষে পৌছলাম। একটা বাড়ির সামনে থামল গাড়ি। গেট দিয়ে ঢুকে পড়লাম সবাই। সুন্দর সাজানো বাড়ি। বাড়ি না ঠিক। ডাক বাংলো বলায় সই। দুতলার রুচিশীল মস্তবড় বাড়ি। সামনে রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে লন। সেখানে আছে দোলনা। এক পাশে হরিণের খাঁচা। সবাই প্রথমে ছুটল হরিণের দিকে। হরিণগুলো দেখে মনে হলো তারা মহা চিন্তিত এতগুলো মানুষ দেখে। ভয়ে কিছু হরিণ আড়াল হলো। যাদের চিন্তা হওয়ার কথা এত মানুষ দেখে তারা দেখি মহা খুশি। জিয়া ভাইয়ের বাবা থেকে জানা গেল হরিণগুলো পালার জন্য সরকারের অনুমতি আছে। এজন্য নিয়মিত ট্যাক্স দিতে হয়। কিছুদিন আগে একটা হরিণ মারা যায়। এই কারণে ঐ হরিণের পোস্ট মর্টেম করতে হয়েছিল। পরে পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট ঢাকায় পাঠায়তে হয়েছিল।
ঘরে ঢুকার মুখে করিডরে পাখির মেলা। দেশ বিদেশী অনেক গুলো পাখি। কয়েকটি পাখি কথা বলতে পারে। যেন ঘরে ঢুকার মুখে অভিবাদন জানাতেই পাখিগুলো আছে!! সুন্দর সুন্দর পাখি গুলো দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। ভাল লাগে তাদের মিষ্টি স্বর।
কেউ কেউ এরিমধ্যে দোলনায় চড়তে লাগল। কিছুক্ষণ পর জিয়া ভাইয়ের পিছু পিছু সবাই ছুটল পুকুর পাড়ের দিকে। পুকুর পাড়ের পাশে এলাহি সুন্দর স্থাপনা। সবাই বসতে পারার জন্য উপরেই সিড়ি। ছাউনি দিয়ে রাখা বসার জায়গা। অনেকে একসাথে বসতে পারে। ছবির কল্যাণে অনেকেরই বাসাটা অতি পরিচিত হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সাথেই রয়েছে একটা রুম। সাথে এটাচড বাথরুম। সবাই বসেছি। গল্প চলছে। চলছে ছবি তোলা। একটু পর পর ক্লিক ক্লিক। ছবির দিকে মনযোগ দিতে যাওয়ায় আড্ডায় সমস্যা হচ্ছে।
তা দেখে জামান ভাই বললেন, ছবি দেখি আমাদের প্রাণখোলা আড্ডায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ছবি তোলা বাদ দাও এখন। প্রাণখুলে কথা বলতে চাই সবাই।
জিয়া ভাইয়ের মেয়ে খেয়ালীর জ্বর। তারপরও আমাদের সাথে যোগ দিল। খেয়ালীর মা আসলেন। উনি বললেন আপনাদের নিকগুলো আমার খুব চেনা। বললেই বুঝতে পারব। সবাই প্রথম আলো ব্লগের নিক গুলো বলল। জামান ভাই জিয়া রায়হান ভাবীকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় বললেন, এই আমার শৈশব কালের বাল্য বন্ধ। যদিও বয়সে ছোট। ভাবীও সম্মতি জানালেন। হেসে দিলেন।
জিয়া রায়হান ভাবীকে ভাল লাগল। অনেক মিশুক। তিনি গল্প করতে লাগলেন তুলা ভাবীর সাথে।
এরি মধ্যে আসলেন জিয়া রায়হান ভাইয়ার বাবা। সবার সাথে মোসাফাহ করলেন। পরিচিত হলেন।
রেস্ট হাউজের ঠিক পাশে আরো কিছু পুরানো স্থাপনা আছে। সেখানে ঢুকলাম। তবে ফ্রিতে ঢুকার সুযোগ নেই এখানে। টিকেট কাটতে হয়। দুই টাকা প্রতিজন। আমরা চারজন ঢুকলাম। দিলাম দশ টাকা। দুই টাকা ফেরত পাওয়ার কথা, কিন্তু নেওয়া হয় নাই। সামনের বার গেলে নিতে হবে।


ঠিক হলো যে যে গাড়িতে ছিল সে গাড়িতেই উঠবে। উঠলাম আমরা। আমাদের গাড়ীতে স্থানীয় একজন উঠলেন। অন্য গাড়ির প্রস্তুতির অপেক্ষায় গাড়ি কিছুক্ষণ দাঁড়াল। এরপর শুরু হলো নতুন যাত্রা। গন্তব্য জিয়া রায়হান ভাইয়ের বাড়ি। যা জয়পুরহাটে।
গাড়ি মেইন রাস্তায় আর উঠে নাই। ভিতরে রাস্তা দিয়েই চলতে লাগল। দুদিকে সুন্দর দৃশ্যগুলো দেখছিলাম। মাঝে মাঝে কিছু বাজার পার হচ্ছিলো। একটা সিনেমা হলের সামনে রঙ্গীন পোস্টার দেখতেই দুজন ব্লগারের প্রস্তাব রাখলেন, চলেন ছবি দেখি গা।


গাড়িতে কথা সমান তালে চলছিল। হঠাৎ দেখি রাস্তা ছেড়ে গাড়ি গর্তে নেমে যাচ্ছে। একটু ভয় ভয় লাগছিল। মাটির নেমে যাওয়া রাস্তায় গাড়িও নেমে গেল। জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখি অদূরে ব্রিজ হচ্ছে। একটা মৃত খাল না নদী বুঝলাম না, সেটা পার হলো গাড়ি। কোন পানি নেই। কি দরকার ব্রিজের? ( হয়ত শুধু বর্ষা কালের জন্য) সেটা পার হয়ে গাড়ি আবার উপরে উঠে পিচঢালা রাস্তায় যোগ দিল।
এভাবে পার হতে দেখে আমি একটা বিষয় শেয়ার করলাম। ভোটার লিস্টে যখন কাজ করছি আলীকদমে। তখন সেখানে একটা সেন্টার ছিল নদীর ঐ পারে। নদীতে পানি। হাটু সম পানির চেয়েও বেশি। আমরা যেতাম আর্মির গাড়ি করে। গাড়ি ঐ পানির উপর দিয়েই চলে যেত। দুই পাশে পানি উড়ছে দেখতে ভালোই লাগত। পানির উপর দিয়ে যখন গাড়ি যেত খুব মজা পেতাম। তবে সমস্যা হলো একদিন। ড্রাইভারের সাথে এক আনসার সদস্যের ঝামেলার কারণে ড্রাইভার একদিন মাঝনদীতে ইচ্ছা করেই ব্রেক কষে বসলেন। গাড়ী আর স্ট্যাট নেয় না। আমরা নেমে প্যান্ট গুটিয়ে পার হলাম। পরে সবাই ঠেলাঠেলি করে গাড়িটা ঐপাড়ে উঠালো। এ বিষয়ে একটা কথা না বললেই নয়, প্রধান মন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্টের কাছে তদবিরের জন্য সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হচ্ছে ড্রাইভার।




আমরা যাচ্ছি জিয়া রায়হান ভাইদের বাসায়। নিরিবিলি পিচঢালা রাজপথ। দুই পাশে গাছের শান্তির ছায়া। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে দিগন্ত জোড়া আলুর ক্ষেত। অনেক জায়গায় দেখলাম সদ্য তোলা আলুর অসংখ্য বস্তা। কেউ কেউ আলু নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলেন। এসময় মজা লাগল কাবির য়াহমদ ভাইয়ের কথা। তিনি প্রয়াত সাইফুর রহমানের একটা বাণী বললেন। " আমাদের বেশি বেশি পটেটো আর আলু খাইতে হবে, অথচ ওরা কয় শুধু নুডলস খাও নুডলস খাও।” সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় এ কথাটি শুনে সবাই মজা পেয়েছিল। হাসির জোরে যেন কাঁপছিল গাড়িটি। যদি গাড়ি চলন্ত থাকায় বুঝা যায় নি।
রাস্তার পর রাস্তা শেষ হয়, কিন্তু দেখা যায় না গন্তব্য। কাবির ভাই সবচেয়ে বেশি বিরক্ত। হাত পা নেড়ে মাঝে মাঝে নিজের ক্লান্তি দূর করার অনবদ্য চেষ্টা কিছুক্ষণ পর পর করতে লাগলেন। সামনে বসা স্থানীয় লোকটিকে বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ভাই আর কতদূর?
অবশেষে পৌছলাম। একটা বাড়ির সামনে থামল গাড়ি। গেট দিয়ে ঢুকে পড়লাম সবাই। সুন্দর সাজানো বাড়ি। বাড়ি না ঠিক। ডাক বাংলো বলায় সই। দুতলার রুচিশীল মস্তবড় বাড়ি। সামনে রাস্তা। রাস্তার দুই পাশে লন। সেখানে আছে দোলনা। এক পাশে হরিণের খাঁচা। সবাই প্রথমে ছুটল হরিণের দিকে। হরিণগুলো দেখে মনে হলো তারা মহা চিন্তিত এতগুলো মানুষ দেখে। ভয়ে কিছু হরিণ আড়াল হলো। যাদের চিন্তা হওয়ার কথা এত মানুষ দেখে তারা দেখি মহা খুশি। জিয়া ভাইয়ের বাবা থেকে জানা গেল হরিণগুলো পালার জন্য সরকারের অনুমতি আছে। এজন্য নিয়মিত ট্যাক্স দিতে হয়। কিছুদিন আগে একটা হরিণ মারা যায়। এই কারণে ঐ হরিণের পোস্ট মর্টেম করতে হয়েছিল। পরে পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট ঢাকায় পাঠায়তে হয়েছিল।
ঘরে ঢুকার মুখে করিডরে পাখির মেলা। দেশ বিদেশী অনেক গুলো পাখি। কয়েকটি পাখি কথা বলতে পারে। যেন ঘরে ঢুকার মুখে অভিবাদন জানাতেই পাখিগুলো আছে!! সুন্দর সুন্দর পাখি গুলো দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। ভাল লাগে তাদের মিষ্টি স্বর।
কেউ কেউ এরিমধ্যে দোলনায় চড়তে লাগল। কিছুক্ষণ পর জিয়া ভাইয়ের পিছু পিছু সবাই ছুটল পুকুর পাড়ের দিকে। পুকুর পাড়ের পাশে এলাহি সুন্দর স্থাপনা। সবাই বসতে পারার জন্য উপরেই সিড়ি। ছাউনি দিয়ে রাখা বসার জায়গা। অনেকে একসাথে বসতে পারে। ছবির কল্যাণে অনেকেরই বাসাটা অতি পরিচিত হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সাথেই রয়েছে একটা রুম। সাথে এটাচড বাথরুম। সবাই বসেছি। গল্প চলছে। চলছে ছবি তোলা। একটু পর পর ক্লিক ক্লিক। ছবির দিকে মনযোগ দিতে যাওয়ায় আড্ডায় সমস্যা হচ্ছে।
তা দেখে জামান ভাই বললেন, ছবি দেখি আমাদের প্রাণখোলা আড্ডায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ছবি তোলা বাদ দাও এখন। প্রাণখুলে কথা বলতে চাই সবাই।
জিয়া ভাইয়ের মেয়ে খেয়ালীর জ্বর। তারপরও আমাদের সাথে যোগ দিল। খেয়ালীর মা আসলেন। উনি বললেন আপনাদের নিকগুলো আমার খুব চেনা। বললেই বুঝতে পারব। সবাই প্রথম আলো ব্লগের নিক গুলো বলল। জামান ভাই জিয়া রায়হান ভাবীকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় বললেন, এই আমার শৈশব কালের বাল্য বন্ধ। যদিও বয়সে ছোট। ভাবীও সম্মতি জানালেন। হেসে দিলেন।
জিয়া রায়হান ভাবীকে ভাল লাগল। অনেক মিশুক। তিনি গল্প করতে লাগলেন তুলা ভাবীর সাথে।
এরি মধ্যে আসলেন জিয়া রায়হান ভাইয়ার বাবা। সবার সাথে মোসাফাহ করলেন। পরিচিত হলেন।
+++++++++++++++++++++++++
++++++++++++++++++
১৯ তারিখ রাতের বেলা, চড়ুইভাতি পাহাড়পুর
রাতে প্রথম আলো
ব্লগারদের মেধার চরম বিষ্ফোরণ শুরু হলো।
রাত বাড়ে সাথে বাড়ে প্রতিভার ছড়াছড়ি।
কার্ড খেলা দিয়ে শুরু রাত ১২ টার দিকে। সেটা দিয়েই শুরু। ভাগ ভাগ হয়ে খেলা। দেখা গেল মেয়েরাও অংশ গ্রহণ করে ফেলছে কার্ড খেলায়।
এর মধ্যে এক কোণে ব্যস্ত জামান ভাই, জিয়া ভাই পুরষ্কার বিতরণের পরিকল্পনা নিয়ে। পুরষ্কার পর্যাপ্ত । কিন্তু কোন কোন পুরষ্কার কাকে দেওয়া হবে এটা আলোচনার বিষয়।
সবার আকর্ষণ ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে। জামান ভাই চরম আগ্রহে নিলেন আম্পায়ারের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে জিয়া ভাইয়ের মৃদু আপত্তি।
: তুমি ক্রিকেট বুঝো তো?ইহা শুনিয়া জামান ভাই আকাশ থেকে পড়লেন। আমার বাবা জাতীয় দলের আম্পায়ার ছিল। আর তুমি বলছো আমি আম্পায়িরিং বুঝি না।
আমার কবিতা ভাই এর আগে গাড়ীতে ঘোষণা করছিলেন তিনি স্কুল থাকাকালীন ক্যাপ্টেন ছিলেন তাহাদের ক্রিকেট টিমের। সুতরাং তাহাকে এক দলের ক্যাপ্টেন হিসাবে মেনে নেওয়া হলো। (পূর্ব অভিজ্ঞতা বলে কথা!! ) অন্য পক্ষের ক্যাপ্টেন হলেন জিয়া ভাই। যদিও তা ঘোষিত না, বুঝা গেল খেলোয়ার নিয়ে জিয়া ভাই আর আমারকবিতা ভাই টানাটানি করছে।
তাহাদের টানাটানি চরম উত্তেজনা দেখে মনে হলো আইপি এল এর নিলাম ও ফেল করবে।!!!
আজ পাহাড়পুর দুই দলের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ। উভয় দলে ৭ জন করে।
তবে একই সাথে নতুন একটা বিষয় জানা গেল। যারা ক্রিকেট খেলে তারা জ্ঞান অর্জনের পথে এগিয়ে যায়!!!!
বিজয়ী দলের প্রত্যেক সদস্যকে পুরষ্কার হিসাবে দেওয়া হবে মূল্যবান বই।
অন্যান্য পুরষ্কারও ঠিক হয়ে গেল। শিশুদের সংখ্যার চেয়ে পুরষ্কারের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে!!!!!
ক্রীড়াক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হলো তুখোড় চৌকষ যদিও যাত্রাপথে নীরব ছিলেন এমন একজনকে। সে আমাদের নিষাদ ভাই ওরফে নোমান ভাই। তিনি খুব উত্তেজিত এই বিষয়ে। এত বড় একটা বিষয়ে জীবনে প্রথম দায়িত্ব পেয়েছেন সেজন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়ার সাথে সাথে বসে গেলেন ল্যাপটপে। মহা হুরস্থুল গতিতে নিজের একাউন্টে পোস্ট লিখে প্রকাশ করে দিলেন ব্লগে। সবাইকে জানিয়ে দিলেন এই বিশাল দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি। সর্বশেষ খবর, তাহার পা মাটিতে পড়ছে না, তিনি ছাদে হাটাহাটি করছেন!!!!!
রাত গভীরতার সাথে আড্ডাও যেন নব নব উদ্যম ফিরে পাচ্ছিলো। এরই মাঝে একজনের পোস্টে আড্ডার কথা শুনে এক ব্লগার ভাই মন্তব্য করলেন ঘুমানোর জায়গা না থাকাতেই নাকি আমরা আড্ডা দিচ্ছি। এটা শুনে আমরা মহা উত্তেজিত। বিশাল হলঘরে ১০ টি তোষক বিছিয়ে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরও যদি এটা শুনতে হয়!! সাথে সাথে পাশা ভাই ছবি তুললেন আমাদের বর্তমান অবস্থার চিত্র। ঐ মন্তব্যের জবাব দেয়া হলো ঐ ছবি দিয়ে।
সবার রুচি একরকম না। ভিন্ন মানুষের ভিন্ন রুচি। এটা বুঝা গেল যখন ৭ টি মোবাইল থেকে ৭ রকমের গান আসছিলো। কেউ রবীন্দ্র সংগীত, কেউ হিন্দী, কেউ জেমস, কেউবা কবিতা।
এরই মাঝে শামীম ভাই শুরু করলেন স্বরচিত পুথি পাঠ। স্ব উল্লাসে সবাই উৎসাহ দিল। ব্লগ চড়ুইভাতি নিয়ে পুথি।
ছায়াবাজি শুনালেন সুন্দর একটা কবিতা আবৃত্তি।
এরই মাঝে একজন ব্যস্ত সবার অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য। তিনি সবার সামনে ডায়েরীটি দিচ্ছেন এবং কিছু লিখে দিতে বলছেন। আমাকেও লিখতে বলা হলো। কিন্তু আমার হাতের লিখা চরম বাজে বিধায় কিছু লিখার সাহস হলো না। এরমধ্যে কয়েকজনকে দেখলাম হেভী মুড নিয়ে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। জীবনের প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার সময়টুকু স্মরণীয় করে রাখতে চান হয়ত। !!!
কারিম ভাই মহা টেনশনে। ঘুমানোর সময় তার সিটটি ফ্রিজের পাশে পড়বে তো। ( আমাদেরকে যে বিশাল রুমে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে সেখানে একটা ডিপ ফ্রিজ আছে বড় ) কারিম ভাইয়ের আশা রাতে খিদা লাগলে ফ্রিজ থেকে কিছু বের করে খেতে পারবেন!!!!!
এদিকে রাত বাড়ে। সকাল থেকে আরো বেশি প্রোগাম। সেজন্য কিছুক্ষণ ঘুমানো দরকার বটে। বেশির ভাগ ব্লগারই রাত ৩ টার দিকে ঘুম আনার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ ব্যর্থ। পাশের জনের নাক ডাকানোর প্রবল শব্দে ঘুম হারানোর জোগাড়।
একজন পরামর্শ দেন, ভাই নাক ডাকতেছে যে তার ঘুম ভাঙায় দেন, ওর আবার ঘুম আসতে আসতে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি।
সকাল বেলায় হান্নান ভাই মজার জিনিষ শুনান। রাতে যারা নাক ডাকছে তাদের নাক ডাকা রেকডিং করেছেন তিনি। সকাল বেলায় উচু ভলিয়মে সেটা ছেড়ে দেন। সবাই হাসতে হাসতে শেষ।
এরই মাঝে জিয়া ভাই ডাকতে আসেন, খেজুরের রস দেওয়া হয়েছে তাড়াতাড়ি খেতে যান, সাথে গরম গরম ভাপা পিঠা। জিয়া ভাইদের বাসার সামনে সুবিশাল লন, আছে দোলনা।
বাসায় ঢুকার মুখেই অনেকগুলো পাখি চোখে পড়বে। দেশ বিদেশী অনেক পাখি। লনের এক পাশে হরিণের খাঁচা। সেখানে মায়াবী দুইটি হরিণের দুরন্ত হাটাচলা আর আমাদের তা মুগ্ধ হয়ে দেখা।
উপর থেকে দেখলাম নিচে সবাই খেজুরের রস খাচ্ছে, তাই লোভ সামলাতে না পেরে পোস্ট লেখা বাদ দিয়ে আমিও নামলাম।
আজকের প্রোগামগুলো- ১. খেজুরেরর রস ভাপা দিয়ে প্রথম সকালের নাস্তা। পরে আরো ব্যাপক নাস্তার আয়োজন।
২. জিয়া ভাইদের পুকুরের মাছ দেখা। বিশাল বিশাল সাইজের মাছ। মাশ আল্লাহ। আশা করি এ বিষয়ে পোস্ট আসবে। জেড এইচ সৈকত ভাই আর হান্নান ভাই মাছের সাথে মডেল হয়েছেন।
৩. পাহাড়পুর গমন।
৪. পাহাড়পুর ঘুরে দেখা।
৫. ব্লগারদের নিয়ে ক্রিকেট খেলা। এই খেলায় মুরব্বী জামান ভাইয়ের সুদক্ষ আম্প্যায়িং এর কারণে খেলা বেশ মজা হয়েছে। হুমকিতে পড়ে তিনি ৪ টি আউট ঘোষণা করেও পরে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, বলে রাখা ভাল আজ এই ম্যাচের সর্বোচ্চ রান নিয়েছি আমি তথা বই পাগল।
৬ শিশুদের বল পাসিং।
৭. মহিলাদের বল পাসিং।
৮. হাড়ি ভাঙা
৯. হাউজিং, (জীবনের প্রথম হাউজিং খেলায় অংশ নিয়ে ২য় স্থান অধিকার করি আমি তথা বই পাগল।
.................. সর্বশেষে ঢাকায় ফিরা।
আজ ২০.০২.১০ সকাল বেলায় এই পোস্টির অধিকাংশ রেডি করা হলেও বিভিন্ন ঝামেলার কারণে দেওয়া গেল না। নিরাপদে ঢাকায় পৌছার পর এখন দিলাম।
রাত বাড়ে সাথে বাড়ে প্রতিভার ছড়াছড়ি।
কার্ড খেলা দিয়ে শুরু রাত ১২ টার দিকে। সেটা দিয়েই শুরু। ভাগ ভাগ হয়ে খেলা। দেখা গেল মেয়েরাও অংশ গ্রহণ করে ফেলছে কার্ড খেলায়।
এর মধ্যে এক কোণে ব্যস্ত জামান ভাই, জিয়া ভাই পুরষ্কার বিতরণের পরিকল্পনা নিয়ে। পুরষ্কার পর্যাপ্ত । কিন্তু কোন কোন পুরষ্কার কাকে দেওয়া হবে এটা আলোচনার বিষয়।
সবার আকর্ষণ ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে। জামান ভাই চরম আগ্রহে নিলেন আম্পায়ারের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে জিয়া ভাইয়ের মৃদু আপত্তি।
: তুমি ক্রিকেট বুঝো তো?ইহা শুনিয়া জামান ভাই আকাশ থেকে পড়লেন। আমার বাবা জাতীয় দলের আম্পায়ার ছিল। আর তুমি বলছো আমি আম্পায়িরিং বুঝি না।
আমার কবিতা ভাই এর আগে গাড়ীতে ঘোষণা করছিলেন তিনি স্কুল থাকাকালীন ক্যাপ্টেন ছিলেন তাহাদের ক্রিকেট টিমের। সুতরাং তাহাকে এক দলের ক্যাপ্টেন হিসাবে মেনে নেওয়া হলো। (পূর্ব অভিজ্ঞতা বলে কথা!! ) অন্য পক্ষের ক্যাপ্টেন হলেন জিয়া ভাই। যদিও তা ঘোষিত না, বুঝা গেল খেলোয়ার নিয়ে জিয়া ভাই আর আমারকবিতা ভাই টানাটানি করছে।
তাহাদের টানাটানি চরম উত্তেজনা দেখে মনে হলো আইপি এল এর নিলাম ও ফেল করবে।!!!
আজ পাহাড়পুর দুই দলের মধ্যে প্রীতি ম্যাচ। উভয় দলে ৭ জন করে।
তবে একই সাথে নতুন একটা বিষয় জানা গেল। যারা ক্রিকেট খেলে তারা জ্ঞান অর্জনের পথে এগিয়ে যায়!!!!
বিজয়ী দলের প্রত্যেক সদস্যকে পুরষ্কার হিসাবে দেওয়া হবে মূল্যবান বই।
অন্যান্য পুরষ্কারও ঠিক হয়ে গেল। শিশুদের সংখ্যার চেয়ে পুরষ্কারের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেছে!!!!!
ক্রীড়াক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হলো তুখোড় চৌকষ যদিও যাত্রাপথে নীরব ছিলেন এমন একজনকে। সে আমাদের নিষাদ ভাই ওরফে নোমান ভাই। তিনি খুব উত্তেজিত এই বিষয়ে। এত বড় একটা বিষয়ে জীবনে প্রথম দায়িত্ব পেয়েছেন সেজন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়ার সাথে সাথে বসে গেলেন ল্যাপটপে। মহা হুরস্থুল গতিতে নিজের একাউন্টে পোস্ট লিখে প্রকাশ করে দিলেন ব্লগে। সবাইকে জানিয়ে দিলেন এই বিশাল দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি। সর্বশেষ খবর, তাহার পা মাটিতে পড়ছে না, তিনি ছাদে হাটাহাটি করছেন!!!!!

রাত গভীরতার সাথে আড্ডাও যেন নব নব উদ্যম ফিরে পাচ্ছিলো। এরই মাঝে একজনের পোস্টে আড্ডার কথা শুনে এক ব্লগার ভাই মন্তব্য করলেন ঘুমানোর জায়গা না থাকাতেই নাকি আমরা আড্ডা দিচ্ছি। এটা শুনে আমরা মহা উত্তেজিত। বিশাল হলঘরে ১০ টি তোষক বিছিয়ে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরও যদি এটা শুনতে হয়!! সাথে সাথে পাশা ভাই ছবি তুললেন আমাদের বর্তমান অবস্থার চিত্র। ঐ মন্তব্যের জবাব দেয়া হলো ঐ ছবি দিয়ে।
সবার রুচি একরকম না। ভিন্ন মানুষের ভিন্ন রুচি। এটা বুঝা গেল যখন ৭ টি মোবাইল থেকে ৭ রকমের গান আসছিলো। কেউ রবীন্দ্র সংগীত, কেউ হিন্দী, কেউ জেমস, কেউবা কবিতা।
এরই মাঝে শামীম ভাই শুরু করলেন স্বরচিত পুথি পাঠ। স্ব উল্লাসে সবাই উৎসাহ দিল। ব্লগ চড়ুইভাতি নিয়ে পুথি।
ছায়াবাজি শুনালেন সুন্দর একটা কবিতা আবৃত্তি।
এরই মাঝে একজন ব্যস্ত সবার অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য। তিনি সবার সামনে ডায়েরীটি দিচ্ছেন এবং কিছু লিখে দিতে বলছেন। আমাকেও লিখতে বলা হলো। কিন্তু আমার হাতের লিখা চরম বাজে বিধায় কিছু লিখার সাহস হলো না। এরমধ্যে কয়েকজনকে দেখলাম হেভী মুড নিয়ে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। জীবনের প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার সময়টুকু স্মরণীয় করে রাখতে চান হয়ত। !!!
কারিম ভাই মহা টেনশনে। ঘুমানোর সময় তার সিটটি ফ্রিজের পাশে পড়বে তো। ( আমাদেরকে যে বিশাল রুমে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে সেখানে একটা ডিপ ফ্রিজ আছে বড় ) কারিম ভাইয়ের আশা রাতে খিদা লাগলে ফ্রিজ থেকে কিছু বের করে খেতে পারবেন!!!!!
এদিকে রাত বাড়ে। সকাল থেকে আরো বেশি প্রোগাম। সেজন্য কিছুক্ষণ ঘুমানো দরকার বটে। বেশির ভাগ ব্লগারই রাত ৩ টার দিকে ঘুম আনার চেষ্টা করেন। তবে কেউ কেউ ব্যর্থ। পাশের জনের নাক ডাকানোর প্রবল শব্দে ঘুম হারানোর জোগাড়।
একজন পরামর্শ দেন, ভাই নাক ডাকতেছে যে তার ঘুম ভাঙায় দেন, ওর আবার ঘুম আসতে আসতে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি।
সকাল বেলায় হান্নান ভাই মজার জিনিষ শুনান। রাতে যারা নাক ডাকছে তাদের নাক ডাকা রেকডিং করেছেন তিনি। সকাল বেলায় উচু ভলিয়মে সেটা ছেড়ে দেন। সবাই হাসতে হাসতে শেষ।
এরই মাঝে জিয়া ভাই ডাকতে আসেন, খেজুরের রস দেওয়া হয়েছে তাড়াতাড়ি খেতে যান, সাথে গরম গরম ভাপা পিঠা। জিয়া ভাইদের বাসার সামনে সুবিশাল লন, আছে দোলনা।
বাসায় ঢুকার মুখেই অনেকগুলো পাখি চোখে পড়বে। দেশ বিদেশী অনেক পাখি। লনের এক পাশে হরিণের খাঁচা। সেখানে মায়াবী দুইটি হরিণের দুরন্ত হাটাচলা আর আমাদের তা মুগ্ধ হয়ে দেখা।
উপর থেকে দেখলাম নিচে সবাই খেজুরের রস খাচ্ছে, তাই লোভ সামলাতে না পেরে পোস্ট লেখা বাদ দিয়ে আমিও নামলাম।
আজকের প্রোগামগুলো- ১. খেজুরেরর রস ভাপা দিয়ে প্রথম সকালের নাস্তা। পরে আরো ব্যাপক নাস্তার আয়োজন।
২. জিয়া ভাইদের পুকুরের মাছ দেখা। বিশাল বিশাল সাইজের মাছ। মাশ আল্লাহ। আশা করি এ বিষয়ে পোস্ট আসবে। জেড এইচ সৈকত ভাই আর হান্নান ভাই মাছের সাথে মডেল হয়েছেন।

৩. পাহাড়পুর গমন।
৪. পাহাড়পুর ঘুরে দেখা।
৫. ব্লগারদের নিয়ে ক্রিকেট খেলা। এই খেলায় মুরব্বী জামান ভাইয়ের সুদক্ষ আম্প্যায়িং এর কারণে খেলা বেশ মজা হয়েছে। হুমকিতে পড়ে তিনি ৪ টি আউট ঘোষণা করেও পরে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, বলে রাখা ভাল আজ এই ম্যাচের সর্বোচ্চ রান নিয়েছি আমি তথা বই পাগল।
৬ শিশুদের বল পাসিং।
৭. মহিলাদের বল পাসিং।
৮. হাড়ি ভাঙা
৯. হাউজিং, (জীবনের প্রথম হাউজিং খেলায় অংশ নিয়ে ২য় স্থান অধিকার করি আমি তথা বই পাগল।
.................. সর্বশেষে ঢাকায় ফিরা।
আজ ২০.০২.১০ সকাল বেলায় এই পোস্টির অধিকাংশ রেডি করা হলেও বিভিন্ন ঝামেলার কারণে দেওয়া গেল না। নিরাপদে ঢাকায় পৌছার পর এখন দিলাম।
++++++++++++++++++++++++++
জিয়া রায়হান ভাইয়ের বাড়ি ০১ (যেন আনন্দের পুণ্যভূমি!!)
জয়পুরহাট (সুন্দর মুহূর্ত ) পোস্টে লোপা আপা মন্তব্য করেছেন....
বই পাগল,
সবাই খেয়াল না করলেও আমি একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে, আপনার বিগত পোস্ট্ গুলোর সাথে একটা ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আপনি পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেকটা পোস্টই গোছানো। আমি অন্য কারো পোস্ট চড়ুইভাতি নিয়ে এমন আর দেখিনি। আমার মনে হচ্ছে আপনি এটি দিয়ে একটা গল্পের বই সাজানোর ফন্দি আটছেন ? মন্দ হবেনা। তবে আরেকটু পরিমার্জন করতে হবে। ভাল থাকুন।
ধন্যবাদ লোপা আপু। কৃতজ্ঞতা।
সবাইকে স্বাগতম নতুন পর্বে.....
পুকুর পাড়ে গল্প চলছে। সবাই আলোড়িত আনন্দে উত্তপ্ত। কথার মধ্যেই বোঝা গেল সেসব। হঠাৎ মুরুব্বী জামান ভাই ঘোষণা করলেন জামা কাপড় খুলে এ মুহূর্তে কে কে ছোট্ট কাপড় পড়ে নামতে প্রস্তুত পুকুরে? কিছু না ভেবেই শামীম ভাই সবার আগে হাত তুলে বসলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে হাতের সংখ্যা বাড়ল। সবাই ছুটল কাপড় আনার জন্য। যেভাবে ছুটছিল মনে হচ্ছিলো বেশ প্রতিযোগিতা হবে। পুকুর ভর্তি হয়ে যাবে সাঁতারুতে। আমার একটু ঠান্ডার সমস্যা আছে। এ পড়ন্ত বিকাল বেলায় পানিতে নামলে নিশ্চিত ঠান্ডা লাগবে। পরে সামনের আনন্দ গুলো মিস হবে। আগামীর আনন্দের জন্য সাঁতারের আনন্দ কুরবান করে দিলাম। যদিও খারাপ লাগছিল।
কারিম ভাই, আমার কবিতা ভাই ছোট প্যান্ট পড়ে এলেন। কারিম ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রতিযোগিতায় অংশ নিবেন নাকি? উনি উত্তরে বললেন, নাহ না, সাঁতার দিবো না। ( উনি সাঁতার জানে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।) বললাম, তাইলে হাফপ্যান্ট পড়লেন যে। কারিম ভাই বললেন, সবাইকে দেখানোর জন্য। প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরকম একটা ভাব রাখবো। যদিও নামবো না। কবিতা ভাই ও দেখি একই কাজ করলেন। তাদের ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হলো তারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান না নিয়ে ঘরে ফিরবেন না।
যত উৎসাহ নিয়ে যাত্রা শুরু হবে ভাবা হয়েছিল কাজের সময় দেখা গেল এত উৎসাহ নেই। মাত্র চারজন প্রতিযোগী!!
সৈকত ভাই,
হান্নান ভাই, নীরব পথিক ভাই আর শামিম ভাই। শুরু হয়ে গেল প্রতিযোগিতা। হুরুস্থুল উত্তেজনা। সবাইকে ফেলে প্রথম পাড়ে আসলেন সৈকত ভাই, পরে আব্দুল হান্নান। হান্নান ভাইকে দেখলে মনে হয় চুপচাপ। কিন্তু অনেক বেশী কৌতুহলী, চঞ্চল, মজার মানুষ। ভয়াবহ কান্ড হলো
নীরব পথিকের। তাহার পরিধেয় একমাত্র বস্ত্রটি বার বার গা ছাড়া হয়ে
যাচ্ছিলো। তা সামলাবেন না সাঁতার কাটবেন এই ঝামেলায় তিনি পিছ পড়ে গেলেন। নোমান ভাই অসতর্ক মুহূর্তের ছবিগুলো ক্যামেরা বন্দী করে ফেললেন।
সাঁতার শেষ। এরপর পুকুর পাড় মেয়েদের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হলো। ওরা সাঁতার কাটবে।
ঘোষণা এলো সকল পুরুষ ব্লগাররা যেন নিজ নিজ দায়িত্বে পুকুরের আশ পাশ এলাকা ছেড়ে দেয়। ঘোষণার সাথে সাথে আমরা চলে এলাম।
সবাই ঘরের সামনে যে লন আছে সেখানে বসলাম। অনেকগুলো চেয়ার দেওয়া আছে। সেখানে বসলাম গোল হয়ে। নিচে সবুজ ঘাস। ঘাসের উপর পা রাখার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ। আমাদের মধ্যমণি জামান ভাই। তিনি গল্প বলছেন। সবাই তন্ময় হয়ে শুনছেন। ছবি দেখতে চাইলে দুটি ছবি চড়ুইভাতি । কথা ছিল সুজন ভাই ও আমাদের সাথে যোগ দেবেন। কিন্তু তিনি হঠাৎ জানালেন অসুস্থ। তাকে দেখতে ছুটে গেলেন জামান ভাই। যদিও ঠিকানা জানেন না। এদিকে ফোন দিয়ে দেখেন সুজন ভাইয়ের ফোন বন্ধ। পড়লেন মহামুসিবতে। জামান ভাইয়ের হাতে তখন দই, ফল। এদিকে জানেনও না কোন ঠিকানা। জিয়া ভাইকে ফোন করে জানতে চাইলেন এ বিষয়ে। জিয়া ভাই কিছু জানাতে পারলেন না। ফোন করলেন মাহমুদ ভায়ের কাছে। অনেকক্ষণ পর তিনিও কিছু জানাতে পারলেন না। বিপদের উপর বিপদ। অনেক মেধা খাটিয়ে গোয়েন্দাগিরির মত কাজ করে সবশেষে সফল হলেন জামান ভাই। দেখা পেলেন সুজন ভাইয়ের। জামান ভাই বললেন তিনি সুজন ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ তার প্রথম পোস্টে সুজন ভাইয়ের সুন্দর মন্তব্যের জন্য।এই ফাঁকে বলে রাখি আমিও সুজন ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্লগ জীবনে আমার প্রথম পোস্টের প্রথম মন্তব্যদাতা সুজন ভাই।
সুজন ভাইয়ের সাথে সৈকত ভাইয়ের মোবাইলে কথা হয় মাঝে মাঝে। যাত্রা পথে সৈকত ভাই বেশ কয়েকবার ফোন করলেন সুজন ভাইয়ের কাছে। কিন্তু প্রতিবারই বন্ধ পেয়েছেন । আমাদের ফাঁকি দিতে সুজন ভাই মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলেন ঐ ২ দিন।
যাতে কেউ ওনাকে বিরক্ত না করতে পারে। রহস্যময়ী সুজন ভাই রহস্যময়ীই রয়ে গেলেন।
জামান ভাইয়ের বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর। তাই মজা পাচ্ছিলাম। ভালো লেখকরা যেমন পাঠকদের বাধ্য করেন শেষ পর্যন্ত পড়তে। জামান ভাইয়ের ব্যাপারটাও তেমন। উনার বলার ভঙ্গি দেখে প্রতি মুহূর্তে জানতে ইচ্ছা হয় এরপর কি হয়?
এদিকে এরই মধ্যে বিকালের নাস্তার ডাক আসে। আহামরি আয়োজন। অনেক রকমের ফল। অনেক রকমের পিঠা। যতগুলো দেওয়া হয়েছে তাতে আমাদের সংখ্যার চেয়ে আরো তিনগুণ বেশি মানুষ খেতে পারবে। আপেল, কমলা, কাল সুস্বাদু আঙ্গুর, বরই সব ছিল। যার যা ইচ্ছা তা নিয়ে শুধু খাওয়া।
বাহিরে আসতেই দেখি অন্যরকম আয়োজন। লনের একপাশে বারবিকিউ করার জন্য ব্যবস্থা আছে। সেখানে বসে আছেন মামুন ভাই। মুরগীর গোস্ত বারবিকিউ করছেন। জিয়া ভাই আমাদের সাথে মামুন ভাইকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মামুন কামাল জুটি প্রায় ১৩ বছর নামকরা জুটি ছিল হকি খেলায়। এটা আমাদের সে মামুন ভাই। ৫ বছর ছিলেন অধিনায়ক। এখন জাতীয় হকি নির্বাচক কমিটির সম্মানিত সদস্য।
গোশতের বারবিকিউ বানানো চলছেই। সবাইকে দেওয়া হচ্ছে। রাতের অন্ধকার তখন ভর করেছে। শীত করছে একটু একটু। খোলা আকাশের নীচে সবাই বসে আছে। দেখছে বারবিকিউ করার অপরুপ সুন্দর দৃশ্য। যার যতটুকু ইচ্ছা খাওয়া হচ্ছে। এদিকে জিয়া ভাই হুমকি দিয়ে গেছেন। রাতেও খেতে হবে। ঠিক মত যদি আমরা না খাই তবে ওনার বাবা ওনাকে ঘর থেকে বের করে দেবেন।
চা আসল। অনেক কাপ। মুগ্ধ হয়ে গরম গরম চা খেলো সবাই। সাথে চলছিল আড্ডা। যার যত কাপ ইচ্ছে ধোঁয়া উঠা গরম চা খাচ্ছে।
গোশতের পর করা হলো কোরাল মাছের বারবিকিউ। খোলা আকাশের নিচে তারা ভরা রাতে হালকা শীতে তখন গরম গরম গোশতের আর মাছের বারবিকিউ খাওয়া চলছিল। সে সুন্দর অনুভূতি কথা দিয়ে প্রকাশ সম্ভব না। অপরিসীম আনন্দের সে তৃপ্তি। ভাষা এখানে আনন্দের কাছে অসহায়।
অন্যরকম সুন্দর পরিবেশ। এর মধ্যে জিয়া ভাই পোস্ট দিতে বললেন। নিলাম রাফেল ভাইয়ের ল্যাপটপ। জলন্ত মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি শিরোনামে একটা পোস্ট দিলাম।
মামুন ভাই দীর্ঘ চার ঘন্টা বারবিকিউ বানিয়েছেন।
ধন্যবাদ মামুন ভাইকে।
এরিমধ্যে খবর পেলাম কবিরনি ভাই, পাশা ভাই, হলিহক ভাই, হাফিজ ভাই আসছেন আমাদের সাথে যোগ দিতে....
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
বই পাগল,
সবাই খেয়াল না করলেও আমি একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে, আপনার বিগত পোস্ট্ গুলোর সাথে একটা ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই আপনি পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যেকটা পোস্টই গোছানো। আমি অন্য কারো পোস্ট চড়ুইভাতি নিয়ে এমন আর দেখিনি। আমার মনে হচ্ছে আপনি এটি দিয়ে একটা গল্পের বই সাজানোর ফন্দি আটছেন ? মন্দ হবেনা। তবে আরেকটু পরিমার্জন করতে হবে। ভাল থাকুন।
ধন্যবাদ লোপা আপু। কৃতজ্ঞতা।
সবাইকে স্বাগতম নতুন পর্বে.....
পুকুর পাড়ে গল্প চলছে। সবাই আলোড়িত আনন্দে উত্তপ্ত। কথার মধ্যেই বোঝা গেল সেসব। হঠাৎ মুরুব্বী জামান ভাই ঘোষণা করলেন জামা কাপড় খুলে এ মুহূর্তে কে কে ছোট্ট কাপড় পড়ে নামতে প্রস্তুত পুকুরে? কিছু না ভেবেই শামীম ভাই সবার আগে হাত তুলে বসলেন। অল্পক্ষণের মধ্যে হাতের সংখ্যা বাড়ল। সবাই ছুটল কাপড় আনার জন্য। যেভাবে ছুটছিল মনে হচ্ছিলো বেশ প্রতিযোগিতা হবে। পুকুর ভর্তি হয়ে যাবে সাঁতারুতে। আমার একটু ঠান্ডার সমস্যা আছে। এ পড়ন্ত বিকাল বেলায় পানিতে নামলে নিশ্চিত ঠান্ডা লাগবে। পরে সামনের আনন্দ গুলো মিস হবে। আগামীর আনন্দের জন্য সাঁতারের আনন্দ কুরবান করে দিলাম। যদিও খারাপ লাগছিল।
কারিম ভাই, আমার কবিতা ভাই ছোট প্যান্ট পড়ে এলেন। কারিম ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রতিযোগিতায় অংশ নিবেন নাকি? উনি উত্তরে বললেন, নাহ না, সাঁতার দিবো না। ( উনি সাঁতার জানে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।) বললাম, তাইলে হাফপ্যান্ট পড়লেন যে। কারিম ভাই বললেন, সবাইকে দেখানোর জন্য। প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরকম একটা ভাব রাখবো। যদিও নামবো না। কবিতা ভাই ও দেখি একই কাজ করলেন। তাদের ভাব ভঙ্গি দেখে মনে হলো তারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান না নিয়ে ঘরে ফিরবেন না।
যত উৎসাহ নিয়ে যাত্রা শুরু হবে ভাবা হয়েছিল কাজের সময় দেখা গেল এত উৎসাহ নেই। মাত্র চারজন প্রতিযোগী!!


সাঁতার শেষ। এরপর পুকুর পাড় মেয়েদের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হলো। ওরা সাঁতার কাটবে।
ঘোষণা এলো সকল পুরুষ ব্লগাররা যেন নিজ নিজ দায়িত্বে পুকুরের আশ পাশ এলাকা ছেড়ে দেয়। ঘোষণার সাথে সাথে আমরা চলে এলাম।
সবাই ঘরের সামনে যে লন আছে সেখানে বসলাম। অনেকগুলো চেয়ার দেওয়া আছে। সেখানে বসলাম গোল হয়ে। নিচে সবুজ ঘাস। ঘাসের উপর পা রাখার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ। আমাদের মধ্যমণি জামান ভাই। তিনি গল্প বলছেন। সবাই তন্ময় হয়ে শুনছেন। ছবি দেখতে চাইলে দুটি ছবি চড়ুইভাতি । কথা ছিল সুজন ভাই ও আমাদের সাথে যোগ দেবেন। কিন্তু তিনি হঠাৎ জানালেন অসুস্থ। তাকে দেখতে ছুটে গেলেন জামান ভাই। যদিও ঠিকানা জানেন না। এদিকে ফোন দিয়ে দেখেন সুজন ভাইয়ের ফোন বন্ধ। পড়লেন মহামুসিবতে। জামান ভাইয়ের হাতে তখন দই, ফল। এদিকে জানেনও না কোন ঠিকানা। জিয়া ভাইকে ফোন করে জানতে চাইলেন এ বিষয়ে। জিয়া ভাই কিছু জানাতে পারলেন না। ফোন করলেন মাহমুদ ভায়ের কাছে। অনেকক্ষণ পর তিনিও কিছু জানাতে পারলেন না। বিপদের উপর বিপদ। অনেক মেধা খাটিয়ে গোয়েন্দাগিরির মত কাজ করে সবশেষে সফল হলেন জামান ভাই। দেখা পেলেন সুজন ভাইয়ের। জামান ভাই বললেন তিনি সুজন ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ তার প্রথম পোস্টে সুজন ভাইয়ের সুন্দর মন্তব্যের জন্য।এই ফাঁকে বলে রাখি আমিও সুজন ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্লগ জীবনে আমার প্রথম পোস্টের প্রথম মন্তব্যদাতা সুজন ভাই।
সুজন ভাইয়ের সাথে সৈকত ভাইয়ের মোবাইলে কথা হয় মাঝে মাঝে। যাত্রা পথে সৈকত ভাই বেশ কয়েকবার ফোন করলেন সুজন ভাইয়ের কাছে। কিন্তু প্রতিবারই বন্ধ পেয়েছেন । আমাদের ফাঁকি দিতে সুজন ভাই মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলেন ঐ ২ দিন।


জামান ভাইয়ের বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর। তাই মজা পাচ্ছিলাম। ভালো লেখকরা যেমন পাঠকদের বাধ্য করেন শেষ পর্যন্ত পড়তে। জামান ভাইয়ের ব্যাপারটাও তেমন। উনার বলার ভঙ্গি দেখে প্রতি মুহূর্তে জানতে ইচ্ছা হয় এরপর কি হয়?
এদিকে এরই মধ্যে বিকালের নাস্তার ডাক আসে। আহামরি আয়োজন। অনেক রকমের ফল। অনেক রকমের পিঠা। যতগুলো দেওয়া হয়েছে তাতে আমাদের সংখ্যার চেয়ে আরো তিনগুণ বেশি মানুষ খেতে পারবে। আপেল, কমলা, কাল সুস্বাদু আঙ্গুর, বরই সব ছিল। যার যা ইচ্ছা তা নিয়ে শুধু খাওয়া।
বাহিরে আসতেই দেখি অন্যরকম আয়োজন। লনের একপাশে বারবিকিউ করার জন্য ব্যবস্থা আছে। সেখানে বসে আছেন মামুন ভাই। মুরগীর গোস্ত বারবিকিউ করছেন। জিয়া ভাই আমাদের সাথে মামুন ভাইকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মামুন কামাল জুটি প্রায় ১৩ বছর নামকরা জুটি ছিল হকি খেলায়। এটা আমাদের সে মামুন ভাই। ৫ বছর ছিলেন অধিনায়ক। এখন জাতীয় হকি নির্বাচক কমিটির সম্মানিত সদস্য।
গোশতের বারবিকিউ বানানো চলছেই। সবাইকে দেওয়া হচ্ছে। রাতের অন্ধকার তখন ভর করেছে। শীত করছে একটু একটু। খোলা আকাশের নীচে সবাই বসে আছে। দেখছে বারবিকিউ করার অপরুপ সুন্দর দৃশ্য। যার যতটুকু ইচ্ছা খাওয়া হচ্ছে। এদিকে জিয়া ভাই হুমকি দিয়ে গেছেন। রাতেও খেতে হবে। ঠিক মত যদি আমরা না খাই তবে ওনার বাবা ওনাকে ঘর থেকে বের করে দেবেন।
চা আসল। অনেক কাপ। মুগ্ধ হয়ে গরম গরম চা খেলো সবাই। সাথে চলছিল আড্ডা। যার যত কাপ ইচ্ছে ধোঁয়া উঠা গরম চা খাচ্ছে।
গোশতের পর করা হলো কোরাল মাছের বারবিকিউ। খোলা আকাশের নিচে তারা ভরা রাতে হালকা শীতে তখন গরম গরম গোশতের আর মাছের বারবিকিউ খাওয়া চলছিল। সে সুন্দর অনুভূতি কথা দিয়ে প্রকাশ সম্ভব না। অপরিসীম আনন্দের সে তৃপ্তি। ভাষা এখানে আনন্দের কাছে অসহায়।
অন্যরকম সুন্দর পরিবেশ। এর মধ্যে জিয়া ভাই পোস্ট দিতে বললেন। নিলাম রাফেল ভাইয়ের ল্যাপটপ। জলন্ত মাছ নিয়ে কাড়াকাড়ি শিরোনামে একটা পোস্ট দিলাম।
মামুন ভাই দীর্ঘ চার ঘন্টা বারবিকিউ বানিয়েছেন।
ধন্যবাদ মামুন ভাইকে।
এরিমধ্যে খবর পেলাম কবিরনি ভাই, পাশা ভাই, হলিহক ভাই, হাফিজ ভাই আসছেন আমাদের সাথে যোগ দিতে....
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
+++++++++++++++++++++++++++++++
জিয়া রায়হান ভাইদের বাড়ি ০২ (আনন্দ প্রতিটি কোণায়)
রাত একটু একটু গাঢ় হচ্ছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে শীতও বাড়ছে কিঞ্চিত হারে। জামান ভাই বলেছিলেন শীত নাই। সে বলাটা ঠিক ছিল না বলেই অনেকের মনে হলো। একটু একটু শীত করতে লাগল সবার। এ ব্যাপারে জামান
ভাইকে
অনুযোগও করতে লাগল
কেউ কেউ। জামান ভাই যুক্তি দেখালেন পুকুর পাড়
বিধায় একটু শীত লাগছে। রুমে শীত নাই।
এদিকে দেখা গেল খোলা আকাশের নীচে দুটা ল্যাপটপের মনিটরের আলো জ্বলছে। একটাতে সৈকত ভাই টাইপ করছেন। তাকে সাহায্য করছেন নীরব পথিক ভাই, হান্নান ভাই, কাজলা দিদি ভাই। সৈকত ভাই দোলনা চড়ে চড়ে কাজ করছেন। অন্য ল্যাপটপে টাইপিং চালাচ্ছে বই পাগল। তাকে সাহায্য করছে জামান ভাই, ছায়াবাজি ভাই, রাফেল ভাই, কাবির য়াহমদ ভাই। নেটওয়ার্কের দুর্বলতার কারণে সহজে পোস্ট দেওয়া যাচ্ছিলো না। দুই গ্রুপের মধ্য একটা স্নায়ু যুদ্ধ। কার আগে কে পোস্ট দিতে পারে। সঙ্গীরা তাল দিচ্ছেন তাড়াতাড়ি দেন, তাড়াতাড়ি দেন। ব্যাপক উত্তেজনা দুই গ্রুপের মধ্যে। পরিশেষে দেখা দুই গ্রুপই সফল। সামান্য সময়ের ব্যবধানে দুই ল্যাপটপ থেকে পোস্ট চলে এসেছে আলো ব্লগে। সেদিন আলো ব্লগে যারা ছিলেন তারা মনে হয় অনেক বিরক্ত হয়েছেন। একটার পর একটা চড়–ই ভাতি নিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
আমরা তখনও বাড়ির সামনে। বারবিকিউ খাচ্ছি আর বানানো দেখছি। এদিকে গানের আওয়াজ ভেসে আসছে। পুকুর পাড়ে আয়োজন করা হয়েছে মিনি কনসার্টের। পেশাদার লোক আনা হয়েছে। আনা হয়েছে বড় বড় দুইটা স্পীকার, মাইক্রো ফোন আরও প্রয়োজনীয় সকল বাদ্য যন্ত্র। দুই ছোট ভাই গান গাচ্ছে সুন্দর ভাবেই। এরি মধ্যে আমাদের সাথে যোগ দিলেন হালি হক ভাই। উনি এসে দেখি মহা আনন্দিত। পরিচয় হলেন আমাদের সাথে। বললেন পাসওয়ার্ড সমস্যার কারণে অনেক দিন আসা হয় নি ব্লগে। এখানে এতজনকে দেখে অনেক ভাল লাগছে। নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করব।
পুকুর পাড়, ঠান্ডা নির্মল হাওয়া, প্রিয় সব মানুষ, তারা ভরা আকাশ, রাতের একটা আধো রহস্য ভাব সব মিলিয়ে কনসার্টে গান শুনতে অন্যরকম আনন্দ । এই আনন্দও ভাষার কাছে পরাস্থ। শুধু অনুভবেই তা অনুভব করা যায়।
পুকুর পাড়ে ছুটলাম। গান শুনার জন্য। দেখি এরি মধ্যে হাউস ফুল। অনেকে এসেছে। জিয়া রায়হান ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরাও যোগ দিলেন দর্শক হিসাবে। সবচেয়ে বেশি শীত কাবু করেছে নিষাদ ভাইকে। উনার মাথায় গরম টুপি, গলায় গামছা পেচানো, গায়ে মোটা সুয়েটার। নিচের দিককার সিঁড়ির উপর দুই পা তোলে উনি আয়েশে গান উপভোগ করছেন। আরো যে দুইজনকে শীত কাবু করেছে বলে মনে হলো তারা হচ্ছেন, ধ্রুবো এবং বই পাগল। তাহাদেরকেও সুয়েটার গায়ে দিতে দেখা গেছে।
গান শুনাচ্ছেন একুশের টিভির এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচিত মুখ শিশু মেয়ে শিল্পী। মায়াবী গলা। গান শুনতে ভালই লাগছে। এরি মধ্যে চলছে আড্ডাও। নোমান ভাই তার ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিগুলো দেখাচ্ছেন। সাঁতার প্রতিযোগিতার অসতর্ক মুহূর্তের তোলা ছবি। সবাই দেখে বলল, ব্ল্যাক মেইল করা যাবে এগুলো দিয়া।
। দুর্লভ দুর্লভ
ছবিগুলো দেখে সবাই মজা পাচ্ছে।
জামান ভাই জানালেন কবিরনি ভাই আসছেন। কবিরনি ভাই আরেক ঝামেলায় আছেন। ঢাকা থেকে বগুড়া পর্যন্ত যাত্রাপথে গাড়ির গানের ঝাটকায় তিনি জয়দেবপুর আর জয়পুরহাট মিলায় ফেলছেন। বগুড়ায় এসে তিনি খুঁজছেন গাজীপুরের জয়দেবপুর। দেখে সেখানে যাওয়ার কোন গাড়ি বগুড়া শহরে নেই। এবং যাহাদের তিনি জিজ্ঞেস করছেন তাহারা অসহায় চোখে একজনের চোখে অন্যজন তাকানো ছাড়া কোন সাহায্যই করিতে পারিল না।
এরি মধ্যে এসে পৌছলেন পাশা ভাই এবং হাফিজ ভাই। পাশা ভাই অনেক মজার মানুষ। অনেক মজা করেন।
গান চলছে আর শিল্পীদের পিছনে নীরব পথিক ব্যস্ত মন্তব্যের উত্তর প্রদানে। একটা জিনিষ দেখে অবাক হলাম। নীরব পথিক ভার্চুয়াল কি বোর্ডে টাইপ করেন। মাউস দিয়ে প্রত্যেকটি অক্ষর টিপে চলেন। উনার টাইপ করার দৃশ্য দেখতে ভাল লাগে। তবে নীরব পথিকের একটু বিচার আছে। আমার টাইপিং দেখে তিনি বললেন এত জোরে লিখে কেমনে? তাহার এই কথা মুখ লেগে গেছে। এখন টাইপ করতে গিয়ে মনে হচ্ছে স্প্রিড আগের চেয়ে কমে গেছে।
গল্প করছিলাম কারিম ভাই, জামান ভাই, কবিতা ভাই, হলি ভাই, ছায়াবাজি ভাই সহ আরো কিছু ব্লগার গোল হয়ে। হঠাৎ দেখি সবার চিল্লানি। কাহিনী কি? ঘুরে দেখে দেখি অঘটন ঘটে গেল। আমাদের সারোয়ার ভাই নাচা শুরু করেছেন। তবে একা না। সঙ্গী নিয়ে। সঙ্গী হচ্ছেন মুরুব্বীনি। অল্প সময়ের নাচটি ধারণ করে ফেললেন ছায়াবাজি ভাই।
এক ফাঁকে আমি আর আমার কবিতা ভাই রুমে এলাম মিনি কনসার্ট ছেড়ে। নামাজ পড়ার জন্য। কবিতা ভাইয়ের ছেলে বাবার প্রতি খুব যত্নশীল। মাঝে মাঝে ফোন করে খবর নিচ্ছিলো বাবা নামাজ পড়ছোতো, ঠিক মত খাচ্ছো তো। কবিতা ভাই জানালেন, আসার সময় তার ছোট ছেলে নাকি কম্বল নিয়ে তার পিছে পিছে ছুটছিল। বাবার শীত লাগবে ভেবে।
এশারের নামাজ পড়তে এসে দেখি টাইলসের বিশাল হলরুমে তোষক বিছানো হচ্ছে সারিবদ্ধভাবে। দেওয়া হচ্ছে বালিশ। সেগুলো তদারকি করছেন জিয়া ভাইয়ের বোন। প্রথমে জিয়া ভাইয়ের মা এসে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন কিভাবে বিছাতে হবে।
গান পরিবেশন করলেন ব্লগারদের পক্ষ থেকে রাতের পাখি। জামান ভাইও মাইক্রোফোন হাতে নিলেন।
অনেকক্ষণ গানের পর বন্ধ হলো। সবাই ফিরে এলো ঘরে।
ডাক এলো রাতের খাবারের। টেবিল ভর্তি খানা। বড় বড় চিংড়ি ভাজি আলোকিত করে আছে টেবিলটি। খাসির গোশত, মুরগীর গোশত, ডাল, নদীর মাছ সব ছিল। জিয়া রায়হান ভাইয়ের মা তদারকি করছিলেন খানা। তিনি বলছিলেন মাছ নিতে। মাছের তরকারি ভাল হয়েছে।
খাওয়ার শেষে সবাই রুমে ফিরে এলো। শুরু হলো জমজমাট আড্ডা। কবিরনি ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলাম। এরিমধ্যে জিয়া ভাই কয়েকটা প্যাকেট নিয়ে আসলেন। কার্ডের প্যাকেট দিলেন খেলতে। ভাগ হয়ে খেলতে বসে গেল অনেকে। কবিরনি ভাইদের গ্রুপে একজন কম। আমাকে খেলব নাকি জিজ্ঞেস করলেন, রনি ভাই। আমি যে পারিই না। খেলার তো প্রশ্নই আসে না। শেষ পর্যন্ত মেয়ে ব্লগার সঙ্গী হলেন রনি ভাইদের গ্রুপে।
জিয়া ভাই আরেক লোভনীয় প্যাকেট দিলেন। ধূমপায়ীদের জন্য। বেশ কয়েক জন ব্লগার দেখলাম খুশীতে আত্মহারা। তারা পড়িমরি হয়ে ছুটলেন ছাদে। রাতে আরো অনেক মজা হয়েছে, কিছু আছে ১৯ তারিখ রাতের বেলা, চড়ুইভাতি পাহাড়পুর এই পোস্টে।
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
এদিকে দেখা গেল খোলা আকাশের নীচে দুটা ল্যাপটপের মনিটরের আলো জ্বলছে। একটাতে সৈকত ভাই টাইপ করছেন। তাকে সাহায্য করছেন নীরব পথিক ভাই, হান্নান ভাই, কাজলা দিদি ভাই। সৈকত ভাই দোলনা চড়ে চড়ে কাজ করছেন। অন্য ল্যাপটপে টাইপিং চালাচ্ছে বই পাগল। তাকে সাহায্য করছে জামান ভাই, ছায়াবাজি ভাই, রাফেল ভাই, কাবির য়াহমদ ভাই। নেটওয়ার্কের দুর্বলতার কারণে সহজে পোস্ট দেওয়া যাচ্ছিলো না। দুই গ্রুপের মধ্য একটা স্নায়ু যুদ্ধ। কার আগে কে পোস্ট দিতে পারে। সঙ্গীরা তাল দিচ্ছেন তাড়াতাড়ি দেন, তাড়াতাড়ি দেন। ব্যাপক উত্তেজনা দুই গ্রুপের মধ্যে। পরিশেষে দেখা দুই গ্রুপই সফল। সামান্য সময়ের ব্যবধানে দুই ল্যাপটপ থেকে পোস্ট চলে এসেছে আলো ব্লগে। সেদিন আলো ব্লগে যারা ছিলেন তারা মনে হয় অনেক বিরক্ত হয়েছেন। একটার পর একটা চড়–ই ভাতি নিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
আমরা তখনও বাড়ির সামনে। বারবিকিউ খাচ্ছি আর বানানো দেখছি। এদিকে গানের আওয়াজ ভেসে আসছে। পুকুর পাড়ে আয়োজন করা হয়েছে মিনি কনসার্টের। পেশাদার লোক আনা হয়েছে। আনা হয়েছে বড় বড় দুইটা স্পীকার, মাইক্রো ফোন আরও প্রয়োজনীয় সকল বাদ্য যন্ত্র। দুই ছোট ভাই গান গাচ্ছে সুন্দর ভাবেই। এরি মধ্যে আমাদের সাথে যোগ দিলেন হালি হক ভাই। উনি এসে দেখি মহা আনন্দিত। পরিচয় হলেন আমাদের সাথে। বললেন পাসওয়ার্ড সমস্যার কারণে অনেক দিন আসা হয় নি ব্লগে। এখানে এতজনকে দেখে অনেক ভাল লাগছে। নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করব।
পুকুর পাড়, ঠান্ডা নির্মল হাওয়া, প্রিয় সব মানুষ, তারা ভরা আকাশ, রাতের একটা আধো রহস্য ভাব সব মিলিয়ে কনসার্টে গান শুনতে অন্যরকম আনন্দ । এই আনন্দও ভাষার কাছে পরাস্থ। শুধু অনুভবেই তা অনুভব করা যায়।
পুকুর পাড়ে ছুটলাম। গান শুনার জন্য। দেখি এরি মধ্যে হাউস ফুল। অনেকে এসেছে। জিয়া রায়হান ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরাও যোগ দিলেন দর্শক হিসাবে। সবচেয়ে বেশি শীত কাবু করেছে নিষাদ ভাইকে। উনার মাথায় গরম টুপি, গলায় গামছা পেচানো, গায়ে মোটা সুয়েটার। নিচের দিককার সিঁড়ির উপর দুই পা তোলে উনি আয়েশে গান উপভোগ করছেন। আরো যে দুইজনকে শীত কাবু করেছে বলে মনে হলো তারা হচ্ছেন, ধ্রুবো এবং বই পাগল। তাহাদেরকেও সুয়েটার গায়ে দিতে দেখা গেছে।
গান শুনাচ্ছেন একুশের টিভির এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচিত মুখ শিশু মেয়ে শিল্পী। মায়াবী গলা। গান শুনতে ভালই লাগছে। এরি মধ্যে চলছে আড্ডাও। নোমান ভাই তার ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিগুলো দেখাচ্ছেন। সাঁতার প্রতিযোগিতার অসতর্ক মুহূর্তের তোলা ছবি। সবাই দেখে বলল, ব্ল্যাক মেইল করা যাবে এগুলো দিয়া।


জামান ভাই জানালেন কবিরনি ভাই আসছেন। কবিরনি ভাই আরেক ঝামেলায় আছেন। ঢাকা থেকে বগুড়া পর্যন্ত যাত্রাপথে গাড়ির গানের ঝাটকায় তিনি জয়দেবপুর আর জয়পুরহাট মিলায় ফেলছেন। বগুড়ায় এসে তিনি খুঁজছেন গাজীপুরের জয়দেবপুর। দেখে সেখানে যাওয়ার কোন গাড়ি বগুড়া শহরে নেই। এবং যাহাদের তিনি জিজ্ঞেস করছেন তাহারা অসহায় চোখে একজনের চোখে অন্যজন তাকানো ছাড়া কোন সাহায্যই করিতে পারিল না।
এরি মধ্যে এসে পৌছলেন পাশা ভাই এবং হাফিজ ভাই। পাশা ভাই অনেক মজার মানুষ। অনেক মজা করেন।
গান চলছে আর শিল্পীদের পিছনে নীরব পথিক ব্যস্ত মন্তব্যের উত্তর প্রদানে। একটা জিনিষ দেখে অবাক হলাম। নীরব পথিক ভার্চুয়াল কি বোর্ডে টাইপ করেন। মাউস দিয়ে প্রত্যেকটি অক্ষর টিপে চলেন। উনার টাইপ করার দৃশ্য দেখতে ভাল লাগে। তবে নীরব পথিকের একটু বিচার আছে। আমার টাইপিং দেখে তিনি বললেন এত জোরে লিখে কেমনে? তাহার এই কথা মুখ লেগে গেছে। এখন টাইপ করতে গিয়ে মনে হচ্ছে স্প্রিড আগের চেয়ে কমে গেছে।
গল্প করছিলাম কারিম ভাই, জামান ভাই, কবিতা ভাই, হলি ভাই, ছায়াবাজি ভাই সহ আরো কিছু ব্লগার গোল হয়ে। হঠাৎ দেখি সবার চিল্লানি। কাহিনী কি? ঘুরে দেখে দেখি অঘটন ঘটে গেল। আমাদের সারোয়ার ভাই নাচা শুরু করেছেন। তবে একা না। সঙ্গী নিয়ে। সঙ্গী হচ্ছেন মুরুব্বীনি। অল্প সময়ের নাচটি ধারণ করে ফেললেন ছায়াবাজি ভাই।
এক ফাঁকে আমি আর আমার কবিতা ভাই রুমে এলাম মিনি কনসার্ট ছেড়ে। নামাজ পড়ার জন্য। কবিতা ভাইয়ের ছেলে বাবার প্রতি খুব যত্নশীল। মাঝে মাঝে ফোন করে খবর নিচ্ছিলো বাবা নামাজ পড়ছোতো, ঠিক মত খাচ্ছো তো। কবিতা ভাই জানালেন, আসার সময় তার ছোট ছেলে নাকি কম্বল নিয়ে তার পিছে পিছে ছুটছিল। বাবার শীত লাগবে ভেবে।
এশারের নামাজ পড়তে এসে দেখি টাইলসের বিশাল হলরুমে তোষক বিছানো হচ্ছে সারিবদ্ধভাবে। দেওয়া হচ্ছে বালিশ। সেগুলো তদারকি করছেন জিয়া ভাইয়ের বোন। প্রথমে জিয়া ভাইয়ের মা এসে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন কিভাবে বিছাতে হবে।
গান পরিবেশন করলেন ব্লগারদের পক্ষ থেকে রাতের পাখি। জামান ভাইও মাইক্রোফোন হাতে নিলেন।
অনেকক্ষণ গানের পর বন্ধ হলো। সবাই ফিরে এলো ঘরে।
ডাক এলো রাতের খাবারের। টেবিল ভর্তি খানা। বড় বড় চিংড়ি ভাজি আলোকিত করে আছে টেবিলটি। খাসির গোশত, মুরগীর গোশত, ডাল, নদীর মাছ সব ছিল। জিয়া রায়হান ভাইয়ের মা তদারকি করছিলেন খানা। তিনি বলছিলেন মাছ নিতে। মাছের তরকারি ভাল হয়েছে।
খাওয়ার শেষে সবাই রুমে ফিরে এলো। শুরু হলো জমজমাট আড্ডা। কবিরনি ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলাম। এরিমধ্যে জিয়া ভাই কয়েকটা প্যাকেট নিয়ে আসলেন। কার্ডের প্যাকেট দিলেন খেলতে। ভাগ হয়ে খেলতে বসে গেল অনেকে। কবিরনি ভাইদের গ্রুপে একজন কম। আমাকে খেলব নাকি জিজ্ঞেস করলেন, রনি ভাই। আমি যে পারিই না। খেলার তো প্রশ্নই আসে না। শেষ পর্যন্ত মেয়ে ব্লগার সঙ্গী হলেন রনি ভাইদের গ্রুপে।
জিয়া ভাই আরেক লোভনীয় প্যাকেট দিলেন। ধূমপায়ীদের জন্য। বেশ কয়েক জন ব্লগার দেখলাম খুশীতে আত্মহারা। তারা পড়িমরি হয়ে ছুটলেন ছাদে। রাতে আরো অনেক মজা হয়েছে, কিছু আছে ১৯ তারিখ রাতের বেলা, চড়ুইভাতি পাহাড়পুর এই পোস্টে।
আমার স্মৃতি শক্তি আমার সাথে প্রায়ই সময় কানামাছি খেলতে পছন্দ করে। কোন ভুল হলে শুধরায় দিবেন আশা করি চড়ুই ভাতির ব্লগাররা।
+++++++++++++++++++++++++++++++
চড়ুই ভাতি পাহাড়পুরখেলায় উদ্বেলিত ব্লগাররা প্রারম্ভিক পর্ব!!!
পাহাড়পুর চড়ুই
ভাতিতে যেসব ব্লগাররা গিয়েছেন তারা নিশ্চিত বলবেন জীবনে আনন্দের মাইলফলক এটি। ছিলাম এত আনন্দে এত আন্তরিকতায় তা শব্দ,
ছবি দ্বারা ঠিক
বুঝানো দুঃসাধ্য। তারপরও স্মৃতি প্রতারণা করে। তাই স্মৃতিকে শিক্ষায় রাখার জন্য এ বিষয়ে লিখেছি। পোস্টও দিয়েছি অনেক গুলো তবে শেষ করতে পারি নাই। মধ্য খানে নরসিংদীতে ব্লগ পিকনিক দেখে সে
পিকনিকে
আনন্দ পাবার
অভিপ্রায়ে বন্ধ রেখেছিলাম চড়–ই ভাতির পোস্ট। আজ সকালে দেখলাম সাইদ ভাইয়ের পোস্ট। সেখানে দেখা যাচ্ছে পোস্টের পতন ঘটছে।
অন্যদিকে কাল সাজেদুন নাহার আপার পোস্টে দেখি বই পাগলের পোস্টের অত্যাচারে অনেকের ঘুম হারাম।
।
অনেক পোস্ট দিয়ে
রাখে বই পাগল। এতগুলোতে মন্তব্য করা সত্যি কষ্টকর। সাইদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করছেন। ভালা হইচে টেকনিক
প্রয়োগ করবেন। এবং এরি মধ্যে তিনি তা শুরু করেছেন। কারা বেশি শক্তিশালী, বিবাহিত না অবিবাহিত-রা পোস্টে তিনি ভুলে সে কৌশল প্রয়োগ করতে ভুলে যান। মনে পড়ার সাথে সাথে আরেকটা মন্তব্য করেন, ভালা হইচে। এবং জানায় দিলেন
এটাই তার আসল মন্তব্য। পরবর্তী পোস্টে আর তিনি ভুল করেন নি। চোখ বন্ধ করে লিখে দেন, ভালা হইচে।

ছেলেবেলা ভাইও একই কাজ করতে গিয়েছিলেন। তবে তিনি এর পর আরেকটি মন্তব্যে আতঙ্কের কথা বলেছেন। অনুরোধ করেছেন ........... এই ইস্যুতে একটা ব্লগ কনফারেন্স করা দরকার। ভালোই হয়েছে। সর্বশেষ খবর হচ্ছে, ছেলেবেলা ভাই উভয় পক্ষে লিংক রাখছেন সমান্তালে।

আজ সকাল ৯.১৬ মিনিটে আবার বসলাম সে সুন্দর দিনের স্মৃতিগুলো রচনায়। দেখি কতটুকু এগিয়ে যাওয়া যায়। এইটুকু যখন লিখছি তখন দেখি টিট শুরু হলো। বিদ্যুৎ নেই। ইউপি এসেরও অদ্ভুত সমস্যা। অনেক কষ্টে এক মিনিটের মত ব্যাক আপ দেয়। মাঝে মাঝে তাও দেয় না।
১০.০৬ এর দিকে আবার আলোকিত। বসলাম আবার লিখতে। বিদ্যুত এসেছে।
মাইক্রোবাসসহ আমরা তখন পাড়ি দিচ্ছি। সরি মাইক্রোবাসকে সাথে নিই নাই। মাইক্রোবাসের পেটে বসে আমরা গল্প করছি। তুমুল আড্ডা চলন্ত আছে চলন্ত গাড়িতে। গাড়ীর গতির চেয়ে আড্ডার গতি অনেক বেশি সচল। আড্ডার অনেক কথাই ভুলে গিয়েছি স্মৃতি শক্তির দুর্বলতায় তবে সে সময়গুলো যে অনেক মজায় কেটেছে তা মনে আছে ব্যাপক ভাবে।
গাড়ি পাহাড়পুর গিয়ে পৌঁছল। নামলাম সবাই। সুন্দর পরিবেশ। এরিমধ্যে সেখানে প্যান্ডেল টানানো হয়েছে। চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে দেখি একটা মাইকেরও ব্যবস্থা আছে। সুন্দর তো। ছবির মত সাজানো সব ব্যবস্থা। মুগ্ধতায় মুগ্ধতায় সবাই আবেশিত।
বাবুর্চিরা ব্যস্ত রান্না বান্নায়। খানার কথা বলতে গেলে আরো দুইটা পোস্ট হয়ে যাবে। সেদিকে এখন যাচ্ছি না। দুইটা খাসী আনা হয়েছে। খাসীগুলো ব্যস্ত কাঁঠাল পাতা খেতে। তখন ব্লগে কাঁঠাল পাতার একটা জনপ্রিয়তা ছিল। নীরব পথিক ভাই কিছু ছবি তুললেন ছাগলরা কাঁঠাল পাতা খাচ্ছে সে দৃশ্যের।
এর পর জবেহ করা হলো খাসী দুইটা। আমরা দল বেঁধে ঢুকলাম পাহাড়পুর। বিশাল এলাকা। পুরাটুকু হাঁটা দুঃসাধ্য। সেখানে এত বড় স্থাপনা কিভাবে তৈরি হয়েছিল মাথায় ঢুকে না। যতটুকু পারা যায় ততটুকু দেখব।
ভাল লাগছে। পাহাড়পুরে অনেক খাপ। একটার উপর আরেকটা খাপ। উঠতে একটু কষ্ট করতেই হয়। তা উঠে গেলাম । এসময় এক ব্লগার আপু নিচে ছিলেন। তিনি বললেন, ধরতে পারবেন, উঠব। নাকি লজ্জা পাচ্ছেন। উঠার সময় হাত বাড়ায় দিলেন।
ঘুরছি। সরোয়ার ভাইয়ের পরিবার মহা উত্তেজিত। সবার মাঝেই উত্তেজনা ভর করছে।
তা ঘুরা শেষে এলাম গাড়ী যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে। কিন্তু অনেকেই নাই। জিয়া ভাই ব্যবস্থপনার দেখভাল করছেন। বলা হয়েছে ক্রিকেট ম্যাচ হবে। সেটা নিয়ে অনেকের মাঝে উৎসাহ দেখা গেল।
বিশাল এক বাকসো করে ক্রিকেট সরঞ্জাম নিয়ে আসা হলো। সেখানে প্যাড, স্ট্যাম্প, ব্যাট, হেলমেট, গ্রাফস, গার্ড, ডিউস বল সব আছে। কিন্তু আমরা এম্নেই ক্রিকেট খেলি না। তার উপর এখন যদি এগুলো দিয়ে খেলি তাহলে তো অনেকে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে ঢাকায় যাওয়া যাবে না। এদিকে পাহাড় পুরের আশে পাশে এমন কোন দোকান নেই যেখানে বল পাওয়া যাবে। অনেক দূর বাজারে যেতে হবে।
চিত্র০১- সবাই একসাথে, দুই আম্প্যায়ার সহ।
দূর হলে সমস্যা কি। মোটর সাইকেলে লোক পাঠানো হলো বল আর ট্যাপের জন্য। এদিকে নেমে পড়লাম প্রাকটিসে ব্যাট হাতে। বল দিচ্ছে আর ক্যাচ দিচ্ছি।
চিত্র০২- আমাদের দল।
আমরা যারা প্র্যাকসি করছি তাদের পরিশ্রম হয়ত খেয়াল করলেন রাতের পাখি আর রুবিনা আপা। তারা সকলকে কুলফি আইসক্রীম এনে দিলেন। এক হাতে ব্যাট দিয়ে খেলছি অন্য হাতে কুলফি আইসক্রিম। দেখার মত ব্যাপার। যথেষ্ট মজা লাগছিল।
বল আনা হলো। কিন্তু এই বলটাও ভারী। টেপ লাগানো যাবে না। উপরে টেনিসের বলের মত আবরণ ঠিক আছে। কিন্তু ভিতরে পাথর জাতীয় কিছু আছে। তাই ভারী।

চিত্র ০৩- প্রতিপক্ষ দল।
আবার পাঠানো হলো। এরিমধ্যে চলছে মহাসমারোহে চলছে প্রস্তুতি। বই পাগল একটু বেশি উত্তেজিত। বেশি আবেগ প্রবণ হয়ে গেছে খেলাটা নিয়ে। তাকে অনেক বেশি সিরিয়াস দেখা যাচ্ছে। যদিও খেলার খ ও জানে কিনা সন্দেহ। কিন্তু নাম রক্ষা বলে কথা। কেননা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে দল জিতবে সে দলের প্রত্যেককে দেয়া হবে বই। এই এক অসাধারণ সুযোগ। বই পাগল বইয়ের পিছনে ছুটবে না তা কি হয়?
চার ছয় স্ট্যাম্প বসানোর কাজে লেগে গেছেন অনেকে। দীর্ঘ অনেক দিন পর খেলায় নামছে বলে কথা। খেলাটা আন্তর্জাতিক মানেরই হবে। কমেন্ট্রিতে তখন সরোয়ার ভাই। মজার মজার কথা বলে সবাইকে হাসাচ্ছেন।
এদিকে বল এলো। তবে আগের রকমই। টেপ পড়ানোর মতো বল পুরা বাজার খুঁজেও পাওয়া যায় নি। আমাদের টিমে কারিম ভাই। কিন্তু হঠাৎ দেখি তিনি নাই। কাহিনী কি? মাইকে তখন সরোয়ার ভাইয়ের কন্ঠস্বরের সাথে শোনা যাচ্ছে কারিম ভাইয়ের ক্ষুদ্র কন্ঠ। কারিম ভাই কি খেলা বাদ দিয়ে কমেন্ট্রিতে চলে গেল নাকি? ভয় লাগল। কান খাড়া করে বুঝার চেষ্টার করলাম কারিম ভাই কি বলছেন? কারিম ভাই সরোয়ার ভাইকে বলছে, ভাই আমি আহত হইছি। প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়েছি। সবাইকে জানায় দেন। মধ্যখানে নিজের হাতের ব্যথা সত্য প্রমাণ করার জন্য উহু উহু ও করলেন কয়েকবার। মাইকে শোনা গেল।
তা আমাদের খেলা শুরু হলো দুই দলের খেলোয়াড়দের সম্মিলিত ফটোসেশনের পর। সবার গাঁয়ে একই গেঞ্জি। দুই দলের সাধারণত আলাদা থাকে। আলাদা খেলছে সত্য কিন্তু সবাই একই আশ্রয়ে আছে তা বুঝার জন্যই কি একই গেঞ্জি সবার কাছে?
এদিকে সরোয়ার ভাই মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন, স্কোর লেখার জন্য আব্দুল হান্নান ভাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একটু পরেই ঘোষণা আসল, হান্নান ভাই যেন আঞ্চলিকতায় প্রভাবিত হয়ে দুর্নীতি না করতে পারেন সেজন্য অন্য অঞ্চলের আরেক জন পাঠানো হলো।
মেইন আম্পায়ের দায়িত্বে মুরুব্বী। কঠিন ভাবে দাঁড়ালেন। মনে হচ্ছে অনেক সিরিয়াস আম্পায়ার। কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত আম্পায়ারিং করবেন। সিরিয়াস মুড। দেখলেই ভয় করে।
কিন্তু মুরুব্বী ভাইয়ের আম্পায়ারিত্ব খেলাটার বিনোদন বাড়িয়ে দিয়েছে আরো কয়েক গুণ।

ছবি ০৪- উত্তেজনা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে।
আউটের জন্য আবেদন করলেই আউট দিয়ে দেন আঙ্গুল উঁচিয়ে। আবার প্রতিপক্ষ যখন এসে প্রতিবাদ শুরু করে তখন আউট বাতিল করে দেন। এরকম ঘটনা কয়েকবার ঘটল।
আমরা টসে জিতলাম। ব্যাট পাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার কবিতা ভাই কেন যেন বোলিং নিলেন আগে। তো খেলা চলছে।
কবির য়াহমদ ভাই সম্ভবত। আউটের আবেদন। এবং সাথে আঙুল উচিয়ে আউট ঘোষণা। স্ট্যাম্পে বল লাগিয়ে দিল উইকেট কিপার নীরব ভাই। তা জিয়া ভাই এগিয়ে আসেন। কেননা তিনি ব্যাটিং দলের অধিনায়ক। এটা আউট না। কেন? খেলার মধ্যেও যুক্তি দেখালেন ব্যাটসম্যান মনে করছেন এলবি ডব্লিউ আউট দিয়েছে। সে তাই আর যায় নাই। কিন্তু এলবি ডব্লিউ খেলায় নেই। সুতরাং এটা আউট হবে না। আম্প্যায়ার সাথে সাথে ঘোষণা দিয়ে দিলেন নট আউট।
খেলা পর্ব এখনো শেষ হয় নাই। ম্যাচের ফলাফল পর্যন্ত এগোবে।
এগারোটার আগ মূহুর্তে লেখাটি শেষ হয়। পোস্ট দিতে যাবো ঠিক এই সময় বিদ্যুত উদাও। দুইঘন্টার বেশি সময় পরে বিদ্যু এলো।
ছবি গুলো নিষাদ ভাইয়ের পোস্ট থেকে নেওয়া। ওনার পোস্টে আরো অনেক ছবি আছে এই খেলার।
অন্যদিকে কাল সাজেদুন নাহার আপার পোস্টে দেখি বই পাগলের পোস্টের অত্যাচারে অনেকের ঘুম হারাম।


ছেলেবেলা ভাইও একই কাজ করতে গিয়েছিলেন। তবে তিনি এর পর আরেকটি মন্তব্যে আতঙ্কের কথা বলেছেন। অনুরোধ করেছেন ........... এই ইস্যুতে একটা ব্লগ কনফারেন্স করা দরকার। ভালোই হয়েছে। সর্বশেষ খবর হচ্ছে, ছেলেবেলা ভাই উভয় পক্ষে লিংক রাখছেন সমান্তালে।


আজ সকাল ৯.১৬ মিনিটে আবার বসলাম সে সুন্দর দিনের স্মৃতিগুলো রচনায়। দেখি কতটুকু এগিয়ে যাওয়া যায়। এইটুকু যখন লিখছি তখন দেখি টিট শুরু হলো। বিদ্যুৎ নেই। ইউপি এসেরও অদ্ভুত সমস্যা। অনেক কষ্টে এক মিনিটের মত ব্যাক আপ দেয়। মাঝে মাঝে তাও দেয় না।
১০.০৬ এর দিকে আবার আলোকিত। বসলাম আবার লিখতে। বিদ্যুত এসেছে।
মাইক্রোবাসসহ আমরা তখন পাড়ি দিচ্ছি। সরি মাইক্রোবাসকে সাথে নিই নাই। মাইক্রোবাসের পেটে বসে আমরা গল্প করছি। তুমুল আড্ডা চলন্ত আছে চলন্ত গাড়িতে। গাড়ীর গতির চেয়ে আড্ডার গতি অনেক বেশি সচল। আড্ডার অনেক কথাই ভুলে গিয়েছি স্মৃতি শক্তির দুর্বলতায় তবে সে সময়গুলো যে অনেক মজায় কেটেছে তা মনে আছে ব্যাপক ভাবে।
গাড়ি পাহাড়পুর গিয়ে পৌঁছল। নামলাম সবাই। সুন্দর পরিবেশ। এরিমধ্যে সেখানে প্যান্ডেল টানানো হয়েছে। চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে দেখি একটা মাইকেরও ব্যবস্থা আছে। সুন্দর তো। ছবির মত সাজানো সব ব্যবস্থা। মুগ্ধতায় মুগ্ধতায় সবাই আবেশিত।
বাবুর্চিরা ব্যস্ত রান্না বান্নায়। খানার কথা বলতে গেলে আরো দুইটা পোস্ট হয়ে যাবে। সেদিকে এখন যাচ্ছি না। দুইটা খাসী আনা হয়েছে। খাসীগুলো ব্যস্ত কাঁঠাল পাতা খেতে। তখন ব্লগে কাঁঠাল পাতার একটা জনপ্রিয়তা ছিল। নীরব পথিক ভাই কিছু ছবি তুললেন ছাগলরা কাঁঠাল পাতা খাচ্ছে সে দৃশ্যের।
এর পর জবেহ করা হলো খাসী দুইটা। আমরা দল বেঁধে ঢুকলাম পাহাড়পুর। বিশাল এলাকা। পুরাটুকু হাঁটা দুঃসাধ্য। সেখানে এত বড় স্থাপনা কিভাবে তৈরি হয়েছিল মাথায় ঢুকে না। যতটুকু পারা যায় ততটুকু দেখব।
ভাল লাগছে। পাহাড়পুরে অনেক খাপ। একটার উপর আরেকটা খাপ। উঠতে একটু কষ্ট করতেই হয়। তা উঠে গেলাম । এসময় এক ব্লগার আপু নিচে ছিলেন। তিনি বললেন, ধরতে পারবেন, উঠব। নাকি লজ্জা পাচ্ছেন। উঠার সময় হাত বাড়ায় দিলেন।
ঘুরছি। সরোয়ার ভাইয়ের পরিবার মহা উত্তেজিত। সবার মাঝেই উত্তেজনা ভর করছে।
তা ঘুরা শেষে এলাম গাড়ী যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে। কিন্তু অনেকেই নাই। জিয়া ভাই ব্যবস্থপনার দেখভাল করছেন। বলা হয়েছে ক্রিকেট ম্যাচ হবে। সেটা নিয়ে অনেকের মাঝে উৎসাহ দেখা গেল।
বিশাল এক বাকসো করে ক্রিকেট সরঞ্জাম নিয়ে আসা হলো। সেখানে প্যাড, স্ট্যাম্প, ব্যাট, হেলমেট, গ্রাফস, গার্ড, ডিউস বল সব আছে। কিন্তু আমরা এম্নেই ক্রিকেট খেলি না। তার উপর এখন যদি এগুলো দিয়ে খেলি তাহলে তো অনেকে সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে ঢাকায় যাওয়া যাবে না। এদিকে পাহাড় পুরের আশে পাশে এমন কোন দোকান নেই যেখানে বল পাওয়া যাবে। অনেক দূর বাজারে যেতে হবে।
চিত্র০১- সবাই একসাথে, দুই আম্প্যায়ার সহ।
দূর হলে সমস্যা কি। মোটর সাইকেলে লোক পাঠানো হলো বল আর ট্যাপের জন্য। এদিকে নেমে পড়লাম প্রাকটিসে ব্যাট হাতে। বল দিচ্ছে আর ক্যাচ দিচ্ছি।
চিত্র০২- আমাদের দল।
আমরা যারা প্র্যাকসি করছি তাদের পরিশ্রম হয়ত খেয়াল করলেন রাতের পাখি আর রুবিনা আপা। তারা সকলকে কুলফি আইসক্রীম এনে দিলেন। এক হাতে ব্যাট দিয়ে খেলছি অন্য হাতে কুলফি আইসক্রিম। দেখার মত ব্যাপার। যথেষ্ট মজা লাগছিল।
বল আনা হলো। কিন্তু এই বলটাও ভারী। টেপ লাগানো যাবে না। উপরে টেনিসের বলের মত আবরণ ঠিক আছে। কিন্তু ভিতরে পাথর জাতীয় কিছু আছে। তাই ভারী।

চিত্র ০৩- প্রতিপক্ষ দল।
আবার পাঠানো হলো। এরিমধ্যে চলছে মহাসমারোহে চলছে প্রস্তুতি। বই পাগল একটু বেশি উত্তেজিত। বেশি আবেগ প্রবণ হয়ে গেছে খেলাটা নিয়ে। তাকে অনেক বেশি সিরিয়াস দেখা যাচ্ছে। যদিও খেলার খ ও জানে কিনা সন্দেহ। কিন্তু নাম রক্ষা বলে কথা। কেননা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে দল জিতবে সে দলের প্রত্যেককে দেয়া হবে বই। এই এক অসাধারণ সুযোগ। বই পাগল বইয়ের পিছনে ছুটবে না তা কি হয়?
চার ছয় স্ট্যাম্প বসানোর কাজে লেগে গেছেন অনেকে। দীর্ঘ অনেক দিন পর খেলায় নামছে বলে কথা। খেলাটা আন্তর্জাতিক মানেরই হবে। কমেন্ট্রিতে তখন সরোয়ার ভাই। মজার মজার কথা বলে সবাইকে হাসাচ্ছেন।
এদিকে বল এলো। তবে আগের রকমই। টেপ পড়ানোর মতো বল পুরা বাজার খুঁজেও পাওয়া যায় নি। আমাদের টিমে কারিম ভাই। কিন্তু হঠাৎ দেখি তিনি নাই। কাহিনী কি? মাইকে তখন সরোয়ার ভাইয়ের কন্ঠস্বরের সাথে শোনা যাচ্ছে কারিম ভাইয়ের ক্ষুদ্র কন্ঠ। কারিম ভাই কি খেলা বাদ দিয়ে কমেন্ট্রিতে চলে গেল নাকি? ভয় লাগল। কান খাড়া করে বুঝার চেষ্টার করলাম কারিম ভাই কি বলছেন? কারিম ভাই সরোয়ার ভাইকে বলছে, ভাই আমি আহত হইছি। প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়েছি। সবাইকে জানায় দেন। মধ্যখানে নিজের হাতের ব্যথা সত্য প্রমাণ করার জন্য উহু উহু ও করলেন কয়েকবার। মাইকে শোনা গেল।
তা আমাদের খেলা শুরু হলো দুই দলের খেলোয়াড়দের সম্মিলিত ফটোসেশনের পর। সবার গাঁয়ে একই গেঞ্জি। দুই দলের সাধারণত আলাদা থাকে। আলাদা খেলছে সত্য কিন্তু সবাই একই আশ্রয়ে আছে তা বুঝার জন্যই কি একই গেঞ্জি সবার কাছে?
এদিকে সরোয়ার ভাই মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন, স্কোর লেখার জন্য আব্দুল হান্নান ভাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একটু পরেই ঘোষণা আসল, হান্নান ভাই যেন আঞ্চলিকতায় প্রভাবিত হয়ে দুর্নীতি না করতে পারেন সেজন্য অন্য অঞ্চলের আরেক জন পাঠানো হলো।
মেইন আম্পায়ের দায়িত্বে মুরুব্বী। কঠিন ভাবে দাঁড়ালেন। মনে হচ্ছে অনেক সিরিয়াস আম্পায়ার। কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মত আম্পায়ারিং করবেন। সিরিয়াস মুড। দেখলেই ভয় করে।
কিন্তু মুরুব্বী ভাইয়ের আম্পায়ারিত্ব খেলাটার বিনোদন বাড়িয়ে দিয়েছে আরো কয়েক গুণ।

ছবি ০৪- উত্তেজনা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে।
আউটের জন্য আবেদন করলেই আউট দিয়ে দেন আঙ্গুল উঁচিয়ে। আবার প্রতিপক্ষ যখন এসে প্রতিবাদ শুরু করে তখন আউট বাতিল করে দেন। এরকম ঘটনা কয়েকবার ঘটল।
আমরা টসে জিতলাম। ব্যাট পাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার কবিতা ভাই কেন যেন বোলিং নিলেন আগে। তো খেলা চলছে।
কবির য়াহমদ ভাই সম্ভবত। আউটের আবেদন। এবং সাথে আঙুল উচিয়ে আউট ঘোষণা। স্ট্যাম্পে বল লাগিয়ে দিল উইকেট কিপার নীরব ভাই। তা জিয়া ভাই এগিয়ে আসেন। কেননা তিনি ব্যাটিং দলের অধিনায়ক। এটা আউট না। কেন? খেলার মধ্যেও যুক্তি দেখালেন ব্যাটসম্যান মনে করছেন এলবি ডব্লিউ আউট দিয়েছে। সে তাই আর যায় নাই। কিন্তু এলবি ডব্লিউ খেলায় নেই। সুতরাং এটা আউট হবে না। আম্প্যায়ার সাথে সাথে ঘোষণা দিয়ে দিলেন নট আউট।

খেলা পর্ব এখনো শেষ হয় নাই। ম্যাচের ফলাফল পর্যন্ত এগোবে।

এগারোটার আগ মূহুর্তে লেখাটি শেষ হয়। পোস্ট দিতে যাবো ঠিক এই সময় বিদ্যুত উদাও। দুইঘন্টার বেশি সময় পরে বিদ্যু এলো।

ছবি গুলো নিষাদ ভাইয়ের পোস্ট থেকে নেওয়া। ওনার পোস্টে আরো অনেক ছবি আছে এই খেলার।