সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কলেজ জীবনের প্রথম বন্ধুত্ব

সব অপরিচিত মুখ। একে অন্যকে আপনি করে বলা। ক্লাসের শেষের বেঞ্চের দিকে গিয়ে গুটিসুটি মেরে বসলাম। পাশেই মেয়েদের বেঞ্চ। মেয়েরা খুব হাসাহাসি করছিল। মনে হচ্ছিলো আমাকে নিয়েই হাসছে। লজ্জায় ওদের দিকে তাকাতে পারি না।

মনের মধ্যে গুমোট ভাবের মধ্যে ক্লাস শেষ হলো। ঐটাই বিশ্ববিদ্যালয় ( বিশ্ববিদ্যালয় বলার স্পর্ধা ক্ষমা করবেন, চট্টগ্রাম কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত কলেজগুলো স্পষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয় না) জীবনের প্রথম ক্লাস। অনেকের কাছে অনেক আনন্দের হয়েছে। কিন্তু আমার তেমন কিছু মনে হয়নি। অন্তত লেখার জন্যতো নয়ই। আমার মতো মুখচোরা স্বভাবের ছেলেরা সহজে মিশতে না পেরে অনেক আনন্দদায়ক উপলক্ষ্যতে নিজেদের জড়াতে পারে না। মনে অন্যরা কি ভাববে এরকম একটা ভয় কাজ করে।

এবার বাড়ী ফিরার পালা। সবাই ক্লাস থেকে বের হচ্ছে। আমিও কারো গায়ে যাতে ধাক্কা না লাগে এরকম সতর্কতার সাথে বের হই। গেটের বাইরে দেখি চার জনের একটা দল যাচ্ছে। আমি তাদের পিছে। হঠাৎ একটা ছেলে পিছে তাকিয়ে বলে, আপনিও না আমাদের সাথে ক্লাস করেছেন? আমি সুমন।


নাম বলি। আহাদ, ইকবাল ও পারভেজও হাসিমুখে নাম বলে। ওরা আজই পরিচিত হয়েছে। গল্প করতে থাকে। ক্লাস কেমন লাগল তা নিয়ে। একজনতো একটা মেয়েকে পছন্দ করে ফেলছে। আমি চুপচাপ শুনি। পথিমধ্যে একটা হোটেলে ঢুকে। আমাকেও ঢুকতে বলে। ইতস্তত করি। এক সময় জোর করে ঢুকায়। সেখানে মিক্সচারের (চানা, মুড়ি, পিয়াজুর একসাথে) অর্ডার দেওয়া হয়। গল্প চলতে থাকি। কে কোথায় থাকি বলা হয়।

পরের দিন ক্লাসে দেখা যায় আমরা ঐই পাঁচ জনই একসাথে বসেছি। এভাবে নিয়মিত। আপনি থেকে তুমি। তুমি থেকে তুই হতে সময় লাগে না। ওদের কারণেই গুমোট ক্লাসগুলো মজার হয়ে উঠে। একসাথে থাকার জন্য ক্লাস না থাকলেও ক্যাম্পাসে ঢু মারি।

আহাদ অনেক সহজ সরল, সুমন অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবী , পারভেজ একটু মেয়ে ষেঁষা যদিও খুব সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখে, ইকবাল এত মজা করে যে কৌতুক বলে হাসতে হাসতে পেট ব্য থা হয়ে যায়। আর আমিতো সারাজীবন বোকাই।
আমাদের গ্রুপ তৈরি হয়ে যায়। সবার নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে। নাম ইপসাম গ্রুপ। বন্ধুরা তোরা ভাল থাকিস ঠিক যেরকম চাস।