বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০১০

ডায়েরী- ১৮ আগস্ট,২০১০......

রোজা চলছে। কয়েকটা রোজা এরি মধ্যে পার হয়ে গেছে। এক এক সময় ভাবি প্রতিদিন ডায়েরী লিখব। দিনের যাই ঘটুক কিছু না কিছু হিন্টস আকারে হলেও লিখে রাখবো। কিন্তু ঐ বলাটাই সায়। লেখা হয় না।
জোর করে লিখতে বসলাম। কিন্তু কি লিখবো। ঘটনার মত কিছুই হয় নি আজ। আর ডায়েরীর লেখার সুন্দর সময় গভীর রাত। তখন মন তরল থাকে। সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। যারা জাগ্রত থাকে তাদের ভাবার সুযোগ থাকে এই পৃথিবীটা এখন শুধু তাদের।

সোমবার, ২ আগস্ট, ২০১০

প্রিয় ব্লগাররা কেমন আছে?

অনেক আগে থেকেই অল্প কিছু লিখতাম। তবে কখনোই তা ধারাবাহিক ভাবে ছিল না। কিন্তু প্রথম আলো ব্লগে আসার পর লেখায় একটা কম শক্তিশালী হলেও ধারাবাহিকতা তৈরি হয়।
কাল বন্ধু দিবস গেল। ব্লগে প্রথম যখন আসি তখন অনেক ব্লগার সক্রিয় ছিলেন যারা এখন ব্লগে আসেন না। কাল তাদের উপস্থিতিতে ব্লগ হয়ে উঠে অনেক প্রিয়। প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠেন ব্লগাররা। মন্তব্য করেন। মাঝে মাঝে করতে পারেন না ব্যস্ততার কারণেও। না করলে খারাপ লাগে।
কিন্তু তাদের বেশ কয়েকজন এখন ব্লগেই আসেন না।

রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০১০

বাসর ---( বড় গল্প )

।।প্রথম পর্ব।।

ফরিদের মাথা ব্যথা করছে। ভীষণ ব্যথা। একটু আগে নাপা ট্যাবলেট খেয়েছে দুইটা এক সাথে। তারপরও কাজ করছে না। অথচ আজ দিনটি জীবনে একবারই আসে। প্রাণ প্রণ চেষ্টা করছে মাথা ব্যথা ভুলতে কিন্তু পারছে না। বাসায় মেহমান ভর্তি। কেউ সোফায়, কেউ মেঝেতে থাকবে রাত্রে। তবে নতুন বউ জামাইয়ের জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা। শত হোক বাসর রাত বলে কথা।

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০১০

একটি লাশ ( গল্প )

খুন হবে। একটা খুন। সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন করাটাই বাকী। অন্ধকার কক্ষ। গিয়াস বসে আছেন। খুনের অর্ডার গুলো সে নেয়। এজেন্ট আছে তার। তবে কখনো প্রকাশ্যে আসে না। যাদেরকে খুনের দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা দেখে না গিয়াসকে। তবে কিভাবে কি করা হবে তা গিয়াস সরাসরি বলে দেয়। মোবাইলে বলা অনিরাপদ। অনেক সময় মোবাইলে কথোপকথন ধরে সূত্র পেয়ে যায়। এজন্য সরাসরি কথা বলে গিয়াস। এক এক খুনে এক এক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।

সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০১০

উপহার

সুমন একটু বিরক্ত। একটু না বলে বেশিই বলা যায়। সামনে ভালোবাসা দিবস। এই দিবসে নতুন একটা রীতি চালু হয়েছে প্রিয় মানুষকে গিফট দেওয়া। দামি জিনিষটি বাহারি ডিজাইনে রেকিঙ পেপারে মুড়ে গিফট তার সাথে একটা দামি কার্ড।

রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০১০

জ্বলা ও নেভা ( গল্প )

আমরা অবাক হতাম। এত তাড়াতাড়ি মেজবাহ অঙ্ক করে কিভাবে? স্যার করতে দিলে সবার আগে ও করে দিয়ে দেয়। অঙ্কগুলো যে সহজ তা না। তারপরও কি তাড়াতাড়ি করে ফেলে। দেখা যায় ও তাড়াতাড়ি করছে সে অবাক হজম করতে করতে আমাদের আর অঙ্ক করা হয় না।

আমাদের ব্যাচে বারো জন পড়ে। অন্য ব্যাচ গুলোতে আরো বেশি। এই ব্যাচটা যেহেতু দুপুরে তাই এখানে কম। আর আমাদের পাঁচজনের বন্ধ গ্রুপটা আছে বিধায় আমরা অনেক মজা করে পড়ি।

শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০১০

বিভ্রান্তি ( গল্প )

আকাশে ঘুড়ি উড়ে। পাখি উড়ে। মাঝে মাঝে কিছু মানব পাখি যা উড়োজাহাজ কিংবা হেলিকপ্টার নামে পরিচিত সেগুলো উড়ে। কিন্তু মনের আকাশে এত কিছু উড়ার সুযোগ নেই। একটা জিনিসই বেশি উড়াউড়ি করে। স্বপ্ন। শাহেদের মনের আকাশে এই স্বপ্নের উড়াউড়ি একটু বেশিই যেন। তবে এখন সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নামবে। নামতেই হবে। কখন থেকে কোন মেয়ের সাথে একসাথে থাকার স্বপ্ন দেখেছে তা মনে পড়ে না। থাকলে ভালোই হতো। যেদিন থেকে প্রথম ভাবা শুরু করছে কোন মেয়ের সঙ্গ সেদিনটা প্রতি বছর স্বপ্ন দিন হিসাবে জাঁকজমক হিসাবে ভাবে করা যেত।

একটু আফছোস বয়ে যায় শাহেদের মনে। ডায়েরী লিখলে ভালই হতো। আগে অনেকে ডায়েরী লিখে রাখত। যুগের পরিবর্তনের সাথে ডায়েরী লেখার অভ্যাস বিলীন হয়ে যাচ্ছে। একটা ডায়েরী কিনেছিল বায়তুল মোকাররম মার্কেট থেকে। চিন্তা করল যা যা ঘটে সব লিখে রাখবে। কিন্তু সমস্যায় পড়ছে লিখতে গিয়ে। হাতের লেখা খুব খারাপ অবস্থা। এত সুন্দর ডায়েরীতে এরকম বিশ্রী হাতের লেখা ঠিক মানায় না। ডায়েরীটার প্রতি মায়া হয়। এত সুন্দর ডায়েরীতে লেখা থাকবে মুক্তাক্ষরের মত জ্বল জ্বল লেখা। বিশ্রী লেখা লিখা হলে তা ডায়েরীটার জন্য অপমান জনক। তাই লেখার সাহস হলো না। তবে ডায়েরীটাতে কিছু অক্ষর আছে। মোহাম্মদ শাহেদ উল্লাহ, গ্রীণরোড, ঢাকা। যদিও সেগুলো হাতের অক্ষরের না। সিল দিয়ে কথাগুলো ডায়েরীতে লেপ্টে দেওয়া হয়েছে।

হঠাৎ ডায়েরীটার কথা মনে পড়ে যাওয়ায় ডায়েরীটা বের করে ডেস্ক থেকে। এখনও একেবারে ঝকঝকে। নতুনের মত। সিদ্ধান্ত নেয় বিয়ে করলে বউকে দিয়ে দেবে ডায়েরীটা লিখতে। বউ তার মনের কথাগুলো লিখবে। আচ্ছা যার সাথে বিয়ে হবে তার হাতের লেখা যদি খারাপ হয়? চিন্তায় পড়ে যায়। নিজের উপর বিরক্ত হয়। সব অলুক্ষণে চিন্তা। মেয়েদের হাতের লেখা গুটানো হয়। অনেক যত্ন করে ওরা লিখে। ছেলেদের মত তাড়াহুড়া করে লিখে না।

তা স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নামার জন্য প্রথমে চিন্তা করে বিয়ে করবে। একটা বিজ্ঞাপন প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ইদানিংকালে, এখুনি সময় দুর্নীতি থামানোর। শাহেদের মনে হয় এখুনি সময় তার বিয়ে করার। বিয়ে করার পেছনে অনেক যুক্তি আছে। প্রথম যুক্তি হচ্ছে ঘনিষ্ট বন্ধুদের মধ্যে তিন জনই বিয়ে করে বিবাহিত হয়ে গেছে। ওদের সাথে গল্প করতে গেলে ওরা শুধু বউয়ের গল্প বলে। নিজেদের যেন কোন গল্প নেই। তবে গল্প গুলো শুনতে ভালোই লাগে। বউরা যে কিরুপ খাতির করে সে বিষয়ের গল্প।

সেদিন ফরহাদ বলল, দোস্ত জানিস আমার তো রাতে ফিরতে দেরি হয় প্রায় প্রতিদিনই। আমি ওকে বলি আগেই খেয়ে ফেলতে। অথচ ও খায় না। একসাথে খায়। সেদিন একটা অফিসিয়াল কাজে ঢাকার বাহিরে যেতে হয়েছিল। ফিরতে রাত তিনটা বাজছে। তখনও দেখি শীলা না খেয়ে বসে আছে। আমার সাথে খাবে বলে।

কথাগুলো শুনলে কেমন জানি লাগে। একটা অন্যরকম ব্যথা অনুভব হয়। ঈর্ষা হয়। কিন্তু ঈর্ষা করে কি হবে? তার যে বউ ই নাই। আফছোসে শাহেদের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়।

আজকাল বিয়েতে অনেক টাকা খরচ হয়। শুধুমাত্র খরচের ভয়ে অনেকে বিয়ে করতে পারে না। সেদিক থেকেও কিছুটা টেনশন মুক্ত শাহেদ। একটা প্রাথমিক হিসাব করে। ব্যাংকে এখন উঠাতে পারবে টাকার পরিমাণ ৪২ লাখ টাকা। আর অফিস থেকে বিয়ের জন্য লোন নেওয়ারও সুবিধা আছে।

শিউলিকে বিয়ের কথা বলতেই আঁতকে উঠে। যেন ও ওর মৃত্যু দন্ড শুনছে।
-তাহলে কি তুমি বিয়ে করবে না? জানতে চায় শাহেদ।
-করবো না কেন? অবশ্যই করবো। মেয়ে হয়েছি তাই বিয়ে তো করতেই হবে।
-তার মানে কি ছেলেদের বিয়ে করতে হয় না?
- করতে হয়। তারপরও চাইলে না করেও থাকতে পারে। এত কথা উঠে না। কিন্তু কোন মেয়ের বিয়ে না হলে তার সম্পর্কে হাজারো কথা বলে সবাই। কথার ভয়ে হলেও বিয়েতে বসে যেতে হয় মেয়েদের।
-তোমার কি নিজ থেকে ইচ্ছা নেই বিয়ে করার?
শিউলি তা শুনে উল্টা প্রশ্ন করে, আমি কি সে কথা বলেছি?

-তাহলে চলো বিয়ে করে ফেলি।
-তুমি হঠাৎ করে বিয়ের জন্য এত পাগল হয়ে গেলে কেন?
-হঠাৎ করে কোথায়? আমি তো আগেও বলেছি। তুমি এড়িয়ে গেছো বার বার।
- হা বলছো। তবে স্পষ্ট ভাবে না। আজ সরাসরি বলছো বিয়ে করে ফেলতে।

এই সময় মোবাইলে রিং বেজে উঠে। শিউলি একটু আড়ালে যায় কথা বলতে। কল করেছে মুশফিক। একসাথে পড়ে। -দোস্ত বিকালের দিকে বাসায় একটু আসবি।
শিউলি জানতে চায় কি হলো? বাসায় কেন?
-দুপুরে বাসায় সবাই চাচার বাসায় যাবে। তা মজা করা যাবে। হেভি আড্ডা দেওয়া যাবে।
-তুই গেলি না কেন?
-তোর সাথে মজা করতে।
শিউলি হেসে উঠে। বলে এত মজা ঠিক না।
-আচ্ছা যা ঠিক না। তুই আসলেই হলো। তা এখন কোথায় তুই?
-শাহেদের সাথে গল্প করছি।
- ঐ ঢিলার সাথে কি গল্প করিস?
- সাবধান ওরে ঢিলা ডাকবি না। ও আমার স্বামী । বুঝছিস।
-ও আবার তোর স্বামী হলো কখন থেকে?
এটাই তো বলছি তোকে। আজ সে বলছে বিয়ে করে ফেলতে। হা হা হা।
-হাসছিস কেন? ভালোইতো করে ফেল, আর কয়দিন একা থাকবি? বিয়ে করে দোকা হয়ে যা।
-গাধা বিয়ে করলে কি আর এত জায়গায় মজা করতে পারবো? বন্দী হয়ে যাবো। বিয়ের কথা এখন চিন্তা করছি না।
-মজা তো কম করছ নাই।
এই কথা শুনে শিউলি রাগ করে। - যাহ তোর লগে আর কথা নেই। বিকালে আসুম না। আজই শাহেদকে বিয়ে করবো। আমি রেখে দিচ্ছি।
-দাঁড়া, দাঁড়া। তোর সাথে একটু দুষ্টামি করলাম। আর রেখে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিস। ঠিক আছে তোর সাথে আর কোনদিন দুষ্টামি করুম না। সরি।
-ঠিক আছে। কানে ধর।
-ডান হাত তো কানে ধরাই আছে। মোবাইল সহ। এইবার বাম হাতও কান স্পর্শ করালাম। খুশীতো?
-হুম খুশী। আচ্ছা রাখি। শাহেদ বেচারা একা দাঁড়িয়ে আছে। যাই।
-ঠিক আছে। বাই বাই। বিকালে দেখা হচ্ছে।

শাহেদ দাঁড়িয়ে আছে একটা গাছের নিচে। গাছে অনেক গুলো পাখি কিচির মিচির করছে। সময় কাটানোর জন্য পাখিগুলো গুণার চেষ্টা করে। যদিও বিভ্রান্ত হচ্ছে। কিছু পাখি কিছু না বলে হঠাৎ উড়ে যায়। আবার কিছু এসে নতুন ভাবে বসে।

-সরি, অনেকক্ষণ একা দাঁড়িয়ে রাখলাম।
শাহেদ পিছে তাকায়। শিউলির মুখ অনেক উজ্জ্বল। আগের চেয়েও। দেখতে ভাল লাগছে। উচ্ছ্বাসের সময় মুখ দেখতে অনেক ভাল লাগে। কিন্তু এই উচ্ছ্বাসের কারণ যদি জানত তাহলে শাহেদের উচ্ছ্বাসের বদলে ঘৃণা তৈরি হতো। অজানার কারণেই অনেক সময় খারাপ জিনিষ অনেক বেশি ভাল লাগে।

-নাহ ঠিক আছে। কথা শেষ হয়েছে।
-হুম হয়েছে। লিসা করছে। অনেক দিন ফোন দিই না, খবরা খবর নিই না ওর। তাই অনেক রাগ করে আছে আমার উপর। রাগ ভাঙলাম।
-পুরাপুরি রাগ ভাঙছে?
-হা। তবে কিছুটা আছে। সামনা সামনি দেখা হলে আশা করি সেটাও থাকবে না।

-আমি বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছিলাম।
-হা আমিও শুনছি।
-এখন তোমার মতামত কি?
-তুমি এত তাড়াহুড়া করছো কেন? তাড়াহুড়া করে কোন কিছু করা ঠিক না। আমার ফাইনাল পরীক্ষাটা অন্তত শেষ হোক।
-সেটা তো আরো দুবছর আছে।
-দেখতে দেখতে চলে যাবে।
শাহেদের মন খারাপ হয়ে যায়। ওর মুখ কালো করছে দেখে শিউলির শাহেদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
এই তুমি চোখ বন্ধ করো।
কেন?
করতে বলছি করো।
শাহেদ চোখ বন্ধ করে।
হা করো এবার।
শাহেদ হা করতেই লজেন্স একটা মুখে ঢুকিয়ে দেয় শিউলি। নাও বাবু এটা চুষে চুষে খাও।

শাহেদের মন ভাল হয়ে যায়। কি সুন্দর করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। আদর করে লজেন্স খেতে বলছে। নিজেকে ফরহাদের মত ভাগ্যবান মনে হয়।

বিভ্রান্তি যতক্ষণ পর্যন্ত শাহেদকে স্পর্শ করতে পারবে না ততক্ষণ পর্যন্ত ওর নিজেকে ভাগ্যবানই মনে হবে।

শনিবার, ১০ জুলাই, ২০১০

বৃষ্টি কখন কান্না থামাবে

বৃষ্টি হচ্ছে। বাহিরে প্রচন্ড বৃষ্টি। মধ্যখানে প্রচন্ড বজ্রপাতের শব্দ। শারমিন একা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে আছে ঐ দূর আকাশের দিকে। বৃষ্টিগুলো যেন আকাশকে আড়াল করতে চায়। কিন্তু পারে না। স্বচ্ছ জিনিষ দিয়ে বুঝি কিছু আড়াল করা যায়? আকাশও আড়াল হয় না। আকাশে মেঘ ভেসে চলছে দুরন্ত গতিতে।

শারমিনের চোখে পানি। শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি শুষে নেওয়ার চেষ্টা করে। যতই নেয় লাভ হয় না। আরো বেশি আসে। এক সময় বিরক্ত হয়ে চোখের পানি মোছার চেষ্টাটাই বাদ দেয়। কেউ তো দেখছে না। বৃষ্টি দেখলেই কেন যে চোখের পানি এভাবে ধেয়ে আসে?

বুধবার, ৭ জুলাই, ২০১০

ইয়া-হু ( গল্প )

“স্বপ্ন দেখতে অনেক সাহস লাগে। আমার আগে সে সাহস ছিলও। কিন্তু হঠাৎ কি থেকে যে কি হয়ে গেল? স্বপ্ন দেখার সাহসটাই হারিয়ে ফেললাম। এক সময় মনে হতো জীবনটাকে রাখছি কেন? শেষ করে দিলেই তো পারি। তাতে তো কারো ক্ষতি হবে না। বরং কেউবা আপদ থেকে বাঁচবে। কিন্তু পারি নাই। বিশ্বাস করেন পারি নাই। তা যদি মহা পাপ না হতো তাহলে ঠিকই করে ফেলতাম। আপনি স্বপ্ন দেখাতে পারেন, আপনার সাথে আর কথা হবে না. এই একাউন্টটা আজই ডি একটিভ করে দিচ্ছি, আর কোন দিন এই মেইল এড্রেস ওপেন করবো না। আপনি কারণ জানতে চাইতে পারেন, বলছি, আপনার সাথে কথা বললে দেখা যাবে আমি দুঃখ গুলো ভুলে যাচ্ছি, আমার দুঃখগুলো আমারই থাক। সেগুলো ভুলতে চাই না, এখন তো সেগুলোই আমার সম্পদ। অনেক বড় সম্পদ। সেগুলো ভুলব কেন? আমি ধন্যবাদ দিতে পারি না, পারলে দিতাম। ”

মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০১০

দীর্ঘশ্বাস ( গল্প )

রেল লাইনের ধারে বস্তিটা। বেশ কয়েকবার উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে প্রভাবশালী মহল। বস্তিবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকায় পারে নি। একবার তো আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় বস্তিবাসী। তারপরও বস্তি ছাড়ে নি। আবার আস্তে আস্তে বাসা বেঁধেছে ওরা। বস্তির দক্ষিণ পাশে একেবারে কোণায় যে বাসাটা তা মনিরের। বাসা বলতে একচিলতে জায়গায় পলিথিনের ছাউনি দিয়ে একটা কাঠামো। পলিথিন যাতে বাতাসে উড়ে যেতে না পারে সেজন্য পলিথিনের উপর বেশ কিছু পাথর আর ইট আছে। ট্রেন যখন যায় তখন বাসাটা কেঁপে উঠে। মাথা নিচু করে ঘরে ঢুকতে হয়। বাসায় ঢুকে দাঁড়ানো যায় না। বসে থাকতে হয় কিংবা শুয়ে।

সোমবার, ২৮ জুন, ২০১০

জুতা ( গল্প )

আমার ছোট বোনকে একদিন জুত আবিষ্কারের গল্প শুনাই। ও যে স্কুলে পড়ে ঐখানে স্কুল ড্রেসের সাথে জুতাও পড়তে হয়। ওর সকল আপত্তি ঐ জুতা নিয়ে। স্কুল জুতা দুই চোখে দেখতে পারে না। আমার গল্প মন দিয়ে শোনে। শেষে বলে, আচ্ছা স্যান্ডেল আবিষ্কার করছে। ঠিক আছে। আবার জুতা আবিষ্কার করতে গেল কেন?

রবিবার, ২৭ জুন, ২০১০

মুসলমানী করার সময়

তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। বেসরকারি স্কুল কোচিং শুরু হয়েছে। বাধ্যতামূলক ভাবে করতে হয়। একদিন অনুপস্থিত থাকার জো নেই। ঠিক এ সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আমাকে মুসলমানী করা হবে। বয়স বেড়ে যাচ্ছে। আর দেরি করা ঠিক হবে না। তা ডাক্তারের সাথে সবকিছু চূড়ান্ত করা হলো। নির্দিষ্ট দিনে ডাক্তারের কাছে গেলাম। আমার সঙ্গী আব্বু, নানা, নানু। আমি ভয়ে অস্থির। কিই না কি করে। তবে দেখলাম আমার চেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে আছেন আমার নানা। হঠাৎ সবার কাছ থেকে আলাদা করে আমাকে অপারেশন রুমে ঢুকানো হলো। দেখি অপারেশন রুমের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো। নানা ঢুকতে উকি ঝুকি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাকে মানা করা হলো।

শনিবার, ২৬ জুন, ২০১০

অনুভা ও নুবাহ ( গল্প )

রাস্তাঘাট এদিকটায় একটু ভাঙা। গাড়ি একটু পর পর ঝাঁকি খাচ্ছে। আর লাফিয়ে উঠছে। কিছু কিছু গর্ত ভয়ংকর। সেখানে আবার বৃষ্টির পানি জমেছে। গাড়ির চাকা যখন ঐ পানির উপর দিয়ে যায় তখন পানি গুলো ছিটিয়ে পড়ে। পাশে কোন পথচারী থাকলে তাকে ঐ নোংরা পানি জলসিক্ত করে দেয়।

গাড়ি যে দুলছে এতে বড়রা একটু বিরক্ত হলেও বেশ মজা পাচ্ছে ছোট দুই সদস্য। অনুভা আর নুবাহ। গাড়ি লাফায় আর তা দেখে অনুভাও লাফিয়ে উঠে। গাড়ির চেয়ে ওর লম্ফজম্পটা একটু বেশিই হয়। অনুভার মা মানা করে। অনুভা ব্যথা পাবে, এভাবে সিটের মধ্যে লাফালাফি করো না।

রবিবার, ২০ জুন, ২০১০

পঞ্চ তারা (গল্প)

বনভোজন ব্যাপারটা নভেম্বর থেকে শুরু হয়। প্রায়ই দেখা যায় প্রতিদিনই কোন না কোন স্কুল থেকে পিকনিকে যাচ্ছে। তাসনিম দের স্কুল থেকেও পিকনিকে যাওয়ার নোটিশ এসেছে। নোটিশ পড়া শেষে স্যার জিজ্ঞেস করলেন, কে কে যেতে চাও? নাম জমা দাও।

বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে নাম বলল। স্যার নাম আর রোল নম্বার লিখে নিচ্ছেন। তাসনিমের খুব ইচ্ছা করছে দাঁড়াতে। নাম দিবে। কিন্তু বাসায় মানা করতে পারে। নাম দিয়ে শেষে না গেলে বিশ্রী অবস্থা হবে। যারা নাম দিচ্ছে কি ভাগ্যবান। তাসনিমের পাশে বসা দোলন। সেও নাম দিয়েছে। তাসনিমকে বলল, আরে তুই দাড়াচ্ছিস না কেন? তাড়াতাড়ি নাম দেয়। অনেক মজা করা যাবে। কুমিল্লার ময়নামতি আগে একবার গিয়েছি। অনেক সুন্দর। যে বিশাল শাল বন আছে। ঐ বনের মধ্যে অল্প দূর গেলেই আর পথ খুঁজে পাবি না। সব দিক মনে হবে একই। এত্ত গাছ। যেদিকে দেখবি সেদিকে গাছ। নাম দিয়ে দেয়।

শনিবার, ১৯ জুন, ২০১০

ইয়া-হু ( গল্প )

“স্বপ্ন দেখতে অনেক সাহস লাগে। আমার আগে সে সাহস ছিলও। কিন্তু হঠাৎ কি থেকে যে কি হয়ে গেল? স্বপ্ন দেখার সাহসটাই হারিয়ে ফেললাম। এক সময় মনে হতো জীবনটাকে রাখছি কেন? শেষ করে দিলেই তো পারি। তাতে তো কারো ক্ষতি হবে না। বরং কেউবা আপদ থেকে বাঁচবে। কিন্তু পারি নাই। বিশ্বাস করেন পারি নাই। তা যদি মহা পাপ না হতো তাহলে ঠিকই করে ফেলতাম। আপনি স্বপ্ন দেখাতে পারেন, আপনার সাথে আর কথা হবে না. এই একাউন্টটা আজই ডি একটিভ করে দিচ্ছি, আর কোন দিন এই মেইল এড্রেস ওপেন করবো না। আপনি কারণ জানতে চাইতে পারেন, বলছি, আপনার সাথে কথা বললে দেখা যাবে আমি দুঃখ গুলো ভুলে যাচ্ছি, আমার দুঃখগুলো আমারই থাক। সেগুলো ভুলতে চাই না, এখন তো সেগুলোই আমার সম্পদ। অনেক বড় সম্পদ। সেগুলো ভুলব কেন? আমি ধন্যবাদ দিতে পারি না, পারলে দিতাম। ”