বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০১০

ডায়েরী- ১৮ আগস্ট,২০১০......

রোজা চলছে। কয়েকটা রোজা এরি মধ্যে পার হয়ে গেছে। এক এক সময় ভাবি প্রতিদিন ডায়েরী লিখব। দিনের যাই ঘটুক কিছু না কিছু হিন্টস আকারে হলেও লিখে রাখবো। কিন্তু ঐ বলাটাই সায়। লেখা হয় না।
জোর করে লিখতে বসলাম। কিন্তু কি লিখবো। ঘটনার মত কিছুই হয় নি আজ। আর ডায়েরীর লেখার সুন্দর সময় গভীর রাত। তখন মন তরল থাকে। সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। যারা জাগ্রত থাকে তাদের ভাবার সুযোগ থাকে এই পৃথিবীটা এখন শুধু তাদের।


এখন ভর দুপুর। যদিও বাহিরে তেমন রোদ নেই। মেঘের আবেশ। তার মধ্যে বৃষ্টির ফোঁটা। পাবলিক লাইব্রেরী গিয়েছিলাম। বিভিন্ন পত্রিকায় চোখ বুলালাম। মজা লেগেছে জনকন্ঠের একটা রিপোর্ট পড়ে। কাল রাজনীতিবিদদের সম্মানে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে খালেদা জিয়া ইফতার করেছেন। সেখানে হঠাৎ একটা মুজিবকে নিয়ে গাওয়া একটা গান মাইকে বেজে উঠে। যদিও সাথে সাথে বন্ধ করা হয়। তারপরও সবাই একটু ব্রিবত হয়।

যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম খুন হয়েছে। যারা এ ঘটনায় যুক্ত তারা দাবি করছে এটা অপঘাতে মামলা। এই গল্পটাও মজার। পিস্তল নিয়ে নড়াচড়া করছিল। সেটা চোয়ালে আঘাত হানে। ঘটনাস্থল সংসদ ভবন। কিন্তু এখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানে কোন আওয়াজ হয়নি। কর্তব্যরত পুলিশরা ঐ সময় সে এলাকায় কোন গুলির শব্দ পান নি। সাংসদের পিস্তলে গুলি বর্ষণে আওয়াজ হয় না তো হয়ত। এজন্যই?

মজার এক দেশে বাস করি। অদ্ভূত সব নিয়ম। সাংসদ হলে তার দল যদি ক্ষমতায় থাকে তবে সে যতবড় অন্যায় করুক তার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। নেয় না। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের অপেক্ষা করতে হয়।

লিখতে হলে পড়তে হয়। গল্প খুব লিখতে ইচ্ছা হয়। এজন্য অনেক গল্প পড়া দরকার। অথচ পাবলিক লাইব্রেরীতে গিয়ে পত্রিকার খবর গুলো পড়তেই সময় চলে যায়। জাতীয় সব পত্রিকায় চোখ বুলানো হয়। চোখ বুলাতে বুলাতে দেখি সময় শেষ। তখন ভাবি এগুলো কি কম গল্প? পত্রিকায় অনেক খবর গল্পকে হার মানায়। এমন এমন ঘটনাও ঘটে যে একজন শ্রেষ্ঠ্য গল্পকারও কল্পনায় অতটুকু ভাবার ক্ষমতা রাখেন না।

এই সরকার সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে নারীকে পুরুষ, পুরুষকে নারী ছাড়া সব করতে পারে। বলেছেন খন্দকার দেলোয়ার। বিএনপির মহাসচিব। দেখতে অসুস্থ মনে হয় এই ব্যাক্তিকে। এরকম নিয়মিত অসুস্থ ব্যক্তি এত বড় একটা দলের মহাসচিব হিসাবে কেমনে থেকে গেছেন তা এক কঠিন প্রশ্ন বটে।

ইতি বীথির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। অনেকে হয়ত ভুলে গেছেন। আমিও ভুলে গিয়েছিলাম। আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা সহজে ভুলে যায়। দিনের ঘটনা পরদিনই ভুলে যাই। এ বছরই মার্চ মাসে রুবেল নামে একজন যাকে পছন্দ করত তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে খুন করে।

সেটা পত্রিকায় হেডনিউজ হয়েছিল বেশ কিছুদিন। অনেক রিপোর্ট আসছে। কিন্তু এরপর আগের ঘটনার মত এটাও থেমে যায়। জানা হয় না বিচার কি হয়েছে।

তবে এবার জানা গেল একটা রিটের কারণে। জনস্বার্থে রিটটি করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে আসামিরা জামিন পেয়ে এখন ইতি বীথি, তাদের আত্মীয়, আইনজীবিকে হুমকি ধুমকি দিচ্ছে।

কি সর্বনাশ এদেশের। খুনের আসামী যে খুন একেবারে প্রকাশ্যে ঘটছে সেও জামিন পায়? এদেশের বিচার ব্যবস্থা এমন কেন? খুনী জামিন পাবে কেন?

হাইকোর্টকে ধন্যবাদ তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলছে। এবং জামিনের ব্যাপারটা আবার দেখতে বলছে। খুনীরা যদি বিচার কার্য থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ পায় তবে দেশে এরকম ঘটনা ঘটেই চলবে।

কিছুদিন আগে পুরান ঢাকায় রীতা নিজে দুই সন্তান নিয়ে আত্মহত্যা করে। কালের কন্ঠ রিতার ডায়েরী প্রকাশ করে সিরিজ আকারে। সব পর্বই পড়ছি। ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায় রীতার শুশুর বাড়ীর অন্যদেরও হাত আছে এতে।

কিন্তু সেদিন এটিন নিউজে একটা প্রতিবেদন দেখে হতবাক। ভুল ধারায় মামলার সুযোগে রীতার শ্বশুর সহ আরো কয়েকজনের জামিন হয়েছে। অন্যরাও নাকি জামিনের পথে। এক্ষেত্রে প্রতিবেদক সংশ্লিষ্ট পুলিশের সাথে কথা বলতে চায়। কিন্তু পাওয়া যায় না। মোবাইল বন্ধ বলে।

এভাবে আর কত ? পুলিশের লুকোচুরি থাকবে কেন??

আরে এই কি আজকে জীবন ডায়েরী লিখতে গিয়ে এসব কি লিখছি। ধূর!! এগুলো কি ডায়েরী হয় নাকি? লিখে ফেলছি মুছতে ইচ্ছা করছে না। যদিও কম্পিউটারে মুছা অনেক সহজ। কেটে দিতে হয় না। ঘন কালির আবরণে কাটা তো আরো কষ্ট সাধ্য। অনেকে করে। এমন ভাবে কাটে যাতে অন্য কেউ বুঝতে না পারে হাজারো চেষ্টাতেই। কম্পিউারে লেখাটুকু সিলেক্ট করে মুছে দিলেই কাজ শেষ। অনেক সহজ। আর কাগজ হলে ছেড়ার ঝামেলা থাকে। টুকরা টুকরা করে ফেলা। কম্পিউটারে সে সমস্যাও নেই। ডিলিট মারলে হাজার পৃষ্ঠাও সেকেন্ডের মধ্যে ছিড়ে যায়।

আচ্ছা সকাল থেকে কি করলাম মনে করার চেষ্টা করি। হুম কিছু কিছু মনে পড়ছে। সকালে ঘুম থেকে উঠছি। আরে আশ্চর্য ঘুম থেকে না উঠলে এগুলো লিখছি কেমনে? অযথা কথা বাড়ানো। ১০.২৬ এ দিন শুরু হলো। যদি সূর্য অনেক আগেই দিন শুরু করে দিয়েছে।

তা হাত মুখ ধুয়ে এসে বসলাম কম্পিউটারে। কাল একজন রেজিস্টেশন করতে চাইল ব্লগে। বিভিন্ন ঝামেলার পর রেজিস্টেশন হলো। কিন্তু সিন ইন হতে পারে না। সকালে দেখি অফলাইনে মেসেজ। আলো ব্লগ থেকে ইমেইল পেয়েছে। কিন্তু লগ ইন করতে পারছে না।

আমি আশ্বস্ত করলাম। হবে হবে। আশা করি পারবা। ইয়াহুতে আমাকে থ্রেট দেয় নাহলে কিন্তু খবর আছে।

আরে সাহায্য করতে গেলে দেখি বিপদ।

বিদ্যুত অফিস থেকে লোক আসছে। পুরানো বিল দেখতে চাইল। দিলাম। বিদ্যুত অফিসের লোক গুলোকে কেন যেন সন্দেহের চোখে তাকাই। আমাদের এখানে যে বিল বানায় সে দেখি রিভলিং চেয়ারে বসে। টিভি ফ্রিজ সব আছে। রাস্তায় যখন যায় দেখা যায় ঐ সেন্টের গন্ধ ঘরে চলে আসছে। দামি সেন্ট ব্যবহার করে। অথচ অফিসে এক কাজে গিয়ে জানতে পারি ওনার চাকরিটা নাকি এখনও স্থায়ীই না। মাস্টার রোলে বেতন নেন। তাতেই এতসব।
এদেশের দুর্নীতির আড়ালে আলাউদ্দীনের চেরাগ পাওয়া খুব সচারচর ঘটনা। দুর্নীতি বিরুদ্ধে যারা কথা বলি তারাই দেখা যায় সুযোগ পেলে দুর্নীতিতে গা এলিয়ে দিই। আর মুখে চেঁচাই দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই।

আরে আশ্চর্য ডায়েরীতে এসব কি লিখছি। কিছু লিখতে শুরু করলে দেখি অন্য দিকে চলে যায়। ওহ আজ আরেকটু গল্প শুরু করছি। হল জীবন নিয়ে লিখব। যদিও প্রথম পর্ব অতি বাজে ভাবে শুরু হয়েছে। পরের পর্ব কম বাজে করার চেষ্টা করবো।


যা কোন ডায়েরী লেখাই হলো না। আসলে আমি ডায়েরী লিখতেই পারি না। :(