বাসায় অনেক অতিথি এসেছেন। প্রবাস জীবনে ব্যস্ততার জন্য অন্যদের সাথে সেভাবে দেখা স্বাক্ষাৎ হয় না। তাই কোন একটা গেট টুগেদার ধরণের কিছু হলে পারতপক্ষে এখানে কেউ মিস করে না। অনুষ্ঠানটা শুধু জন্মদিনের নয়। আংটি বদলের ব্যাপারও থাকছে। এজন্য আগ্রহটা একটু বেশিই সবার।
এ্যানি সাদা রঙের সেলোয়ার পড়েছে। এখানে সাধারণত জিন্স শার্ট কিংবা স্কার্টই বেশি পড়া হয়। অন্যরাই তাই পড়ে বেশি। জিন্স শার্ট পড়ে রাস্তায় বের হলে দেশের মত কেউ তাকিয়ে থাকে না। বরং একটু রক্ষণশীল ধরণের স্কার্ফযুক্ত কাপড় কিংবা শাড়ি পড়ে বের হলে পথচারীরা একটু অবাক হয়ে তাকায়। দেশের উল্টা ব্যাপার স্যাপার।
অনুষ্ঠানে দেশীয় আবহ রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। মিনহাজের জন্মদিন। বিশাল কেক আনা হয়েছে। কেকে লেখা মিনহাজের জন্মদিন। নামকরা ফুড শপের দোকান থেকে কেকটি আনা। তারা সাধারণত জন্মদিনের কেকে ইংরেজিতে লিখে। বাংলায় লিখে আনতে একটু ঝামেলাই করতে হয়েছে।
কেক টেবিলের ওপর রাখা। এ্যানি ও মিনহাজ পাশাপাশি দাঁড়ানো। তাদের ঘিরে সকলে দাঁড়িয়ে আছে। অনুষ্ঠানে মিনহাজের মা-বাবা থাকলেও এ্যানির মা-বাবা নেই। এ্যানির মা-বাবা দেশে থাকে। সম্পর্কে মিনহাজ এ্যানির মামাতো ভাই। উভয় পরিবারের অভিভাবকের ইচ্ছায় এ আংটি বদল।
মিনহাজ কাছে দাঁড়ালেও এ্যানির দিকে তাকাতে পারছে না। অদ্ভূত সুন্দর একটা মুখ। কিন্তু তাকাতে গেলেই মনে হয় সে দেখে ফেলবে। লজ্জা লাগে ওর।
এ্যানি হাসার চেষ্টা করছে। এ জীবনে এতটুকু পথ আসতে অনেক অভিনয় করতে হয়েছে। আরো কত করতে হবে কে জানে। অস্টেলিয়ায় আসার কোন ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু মা-বাবা অনেকটা জোর করেই পাঠালেন। আগে যদি জানা থাকতো এ ধরণের ইচ্ছা ছিল তাদের তাহলে কক্ষণো আসতো না। কিন্তু মানুষের কার মনে কি থাকে তার অনেক কিছু আগে থেকে টের পাওয়া যায় না।
মিনহাজের জন্ম অস্টেলিয়ায়। অস্টেলিয়াতেই সেটেল। মিনহাজের সাথে সম্পর্ক হওয়া মানে সারাটা জীবন এ অস্টেলিয়াবাসী হয়ে যাওয়া। দেশটা অনেক সুন্দর, রাস্তাঘাট গুলো কি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। তিন বছর ধরে আছে এদেশে। তারপরও এ্যানির কাছে একটি বারও আপন মনে হয়নি। যেদেশ আপন মনে হয় না সেদেশে সারাজীবন থাকার মানেই হয় না।
কেক কাটা হলো। সবাই শুভ জন্মদিন বলে উঠলো। দেশে জন্মদিনে হ্যাপি বার্থডে বলা হয়। কিন্তু এখানে থাকা বাংলাদেশিরা কিছুটা সময় পুরা বাংলাদেশি হওয়ার চেষ্টা করে। সেজন্যই শুভ জন্মদিন বলা। ইংরেজী কোন গানের সাহায্য নেওয়া হয় না। সব বাংলা ভাষা। যেন জোর করে আপাদমস্তকে বাঙালি হওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা।
মিনহাজকে ওর মা বলে,তুমি এ্যানিকে কেক খাইয়ে দাও।
মিনহাজ ইতস্তত করে। তা দেখে ওর মা বলে, আরে এত লাজুক হলে হয়! তুমি না খাওয়ালে অন্য ছেলে এ্যানিকে খাইয়ে দিবে। তখন কি করবে? নাও তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও।
মা-ছেলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।
একথা শুনে সবাই হেসে উঠে।
এ্যানিকেও খাইয়ে দিতে হয় মিনহাজকে।
এ্যানির বুকের ভেতর ব্যথা করছে। চরম ব্যথা। কপাল ঘামছে। টিস্যু দিয়ে কপালের ঘাম মুছতে হচ্ছে বার বার। মিনহাজের সাথে এ আংটি বদলে তার সায় নেই। কোনমতেই ওর সাথে বিয়ে মেনে নিতে পারবে না। ও ভালোবাসে আবীরকে। আবীর দেশেই থাকে। কিন্তু এখন কিছু করলে ওর মা-বাবাকে বলে দেওয়া হবে। বাবা অত্যন্ত রাগী। কঠিন সমস্যা হবে। দেখা যাবে সামনের মাসে দেশে যাওয়ার যে পরিকল্পনা তা বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। এ ভয়ে সে বাধাও দিতে পারছে না। যতটুকু পারছে হাসিমুখে মেনে নিচ্ছে সব কিছু। যারা উইশ করছে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু এ ধন্যবাদের আড়ালে যে মনের অন্য কথা তা কি কেউ বুঝছে?
অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত একটা বেজে যায়। নিজের রুমে এসেই আবীরকে ফোন দেয়। চুপ থাকে।
ওই পাশ থেকে আবীরই জিজ্ঞেস করে, চুপ যে, কেমন আছো?
: এইতো ভাল। তুমি?
: আমি ভাল আছি। কিন্তু তোমার গলা এমন শোনাচ্ছে কেন?
: কেমন শোনাচ্ছে?
: খুব কষ্টে আছো মনে হচ্ছে। তুমি কি কেঁদেছো?
: নাহতো। আমি ঠিকই আছি। আমার কিছু হয়নি। ভাত খেয়েছো?
: হা খেয়েছি। তুমি?
: হা অনেক কিছু খেলাম। বাসায় পার্টি ছিল। আজ মিনহাজ ভাইয়ের জন্মদিন গেছে।
: তাই! তাহলে তো অনেক মজা হয়েছে।
এ্যানির বলতে ইচ্ছা করে, তোমার এ্যানিকে সারাজীবনের জন্য অন্যের হাতে দিয়ে দেওয়ার স্টেপ যেখানে নেওয়া হয়েছে, সেখানে মজার কথা বলছো। অদ্ভূত ছেলেতো তুমি।
মুখে তা বলে না ও। এ মুহূর্তে আংটি বদলের ব্যাপারটা আবীরকে বলা ঠিক হবে না। এম্নেই সব সময় দ্বিধায় থাকে। প্রায়ই সময় প্রশ্ন করে, এ সম্পর্ক রাখা সম্ভব কিনা! নিজ পরিবারের, নিজের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আশংকা প্রকাশ করে বলে আসলে আমাদের বিয়ে করাটা ঠিক হবে?
বিয়ের ব্যাপারটা তাকে জানিয়ে দিলে মনে অনেক কষ্ট পাবে। তবে মেনে নেবে। সব সময় একটা ভাবনায় থাকে বিয়ের পর সুখে রাখতে পারবে তো! কিন্তু মানুষের জীবনে অর্থই যে সব না তা তাকে বুঝালেও হয় না। বলে, আমি দেখেছি অর্থের কারণে কত কষ্ট পেতে হয়। তাই কষ্ট পেতে আমার সমস্যা হবে না। কিন্তু তোমার হবে। কষ্ট হবে না জানালেই বলে, ঘোরের সময় অনেক কষ্টকে কষ্ট মনে হয় না। কিন্তু ঘোরটা যখন ভেঙে যাবে তখন!! তর্ক করে ওর সাথে তেমন লাভ হয় না।
আবীর বলে, কথা বলছো না যে!
: হা মজা তো হয়েছেই। আচ্ছা এবার দেশে এলেই কিন্তু আমরা বিয়ে করবো। মনে আছে তো আমি কয় তারিখ আসছি?
: হা মনে আছে।
: তারপরও বলো। তুমি আমার কিছু মনে রেখেছো ভাবতে অনেক ভাল লাগে। এজন্যই মাঝে মাঝে তোমার কাছ থেকে বিশেষ দিনগুলো জিজ্ঞেস করি। জানি তোমার ভুলো মন। তারপরও যে মনে রাখো এজন্যই ভাল লাগাটা বেশি লাগে। এখন বলো আমি কখন আসছি?
: সামনের মাসের ১২ তারিখ।
: আজ ১৫ তারিখ। তার মানে ২৭ দিন পরই আসছি। দিনগুলোকে যে এত বড় হচ্ছে। ডিস্গাস্টিং। আচ্ছা ঠিকঠাক করেছো তো সব?
: কি?
: আরে তুমি দেখি ভুলে বসে আছো। এবার গেলেই আমাদের বিয়ে হবে। বাসা থেকে তো মানবে না। তাই কাজী অফিসেই বিয়ে হবে। কত ইচ্ছা ছিল বাসায় ধূম ধাম করে বিয়ে হবে। কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। তাতে কি। তোমাকে তো পাবো।
আবীরের কেমন জানি লাগে। এত ভাল একটা মেয়ের এ আবেগ শুধুই তার জন্য। আচ্ছা নিজ অবস্থা আরেকটু ভাল হলে প্রকৃতির কি ক্ষতি হতো। কিছুক্ষণ আগে রাতের খাবার খেয়েছে। বাজার করার টাকা হাতে নেই। ছোট বোনের ফরম ফিলাপের জন্য টাকা পাঠাতে হয়েছে। হাত একেবারে খালি। ডিম ভাজি করেই রাতের খাবার সারতে হয়েছে। ঝুল ছাড়া খেলে গলায় আটকে যায় মত লাগে। তাই ভাতে পানি মিশিয়ে নিয়ে তা গিলেছে। এ্যানিকে এত কষ্টের সাথে যুক্ত করার কথা ভাবতে পারে না ও।
এবার এ্যানিই তাড়া দেয়। এবার দেখি তুমি চুপচাপ। কি ভাবো এতো?
ওদের মধ্যে কথা হওয়ার সময় মাঝে মাঝে এ চুপ চাপের ঘটনা ঘটে। উভয়জন মোবাইলে কান পেতে রয়। ভাবনার পাশাপাশি অপর পক্ষের নি:শ্বাস শোনার চেষ্টা।
: নাহ! তেমন কিছু ভাবছি না।
: ভাবলেও সমস্যা নেই। পরে ভাবিও। এখন বলো, স্বাক্ষী ঠিক করেছো তো?
: কিসের স্বাক্ষী?
: আরে তুমি দেখি এ জগতেই নেই। আমাদের বিয়েতে স্বাক্ষী লাগবে। আগে থেকে ঠিক করে রাখতে হবে না? রাস্তায় যাকে তাকে ধরে তো আর স্বাক্ষী বানানো যাবে না।
: আগে দেশে আসো, তারপর দেখা যাবে।
: নাহ কোন দেখাদেখি নেই। অবশ্যই আমি দেশে আসার আগেই ঠিক করতে হবে। বুঝছো?
: হুম বুঝছি।
: ওহ আরেকটা কথা।
: কি?
: ভুলে গিয়েছি। পরে বলবো। এখন একটু আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দাও তো। ঘুম আসছে না।
ওই পক্ষ থেকে কোন কথা না শুনতে পেরে এ্যানি বলে, ঠিক আছে এখন ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে না। বিয়ের পর আমিই তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবো। তোমার ঘুম যাওয়ার পর আমি ঘুমাবে। এখন রাখি। পরে কথা হবে।
হঠাৎ হাতের দিকে তাকায় এ্যনি। আংটিটি দেখে প্রচন্ড রাগ হয়। তা খুলে দেয়ালের দিকে ছুড়ে দেয়।
আসার সাতদিন আগে ফোন দিয়ে এ্যনি বলে,একটা কথা দিতে পারবে কিনা বলো। কথাটা দিলে আমি দেশে আসবো। নাহলে আর কখনো দেশে ফিরবো না।
:বুঝলাম না।
: দেশে আসলে বিয়ে করবে কিনা সে বিষয়ে হা অথবা না বলো।
: এভাবে বলছো কেন? আগে তুমি দেশে আসো।
: নাহ সেটা হবে না। আগেই তো বললাম, বিয়ে করবে বললে আসবো। নয়ত নয়।
: দেশে আসো।
: আমি বেশ কিছু টাকা জমিয়েছি। টাকার সমস্যা হবে না। তুমি এত দুশ্চিন্তা করো না।
: বউয়ের টাকায় আমি বিয়ে করবো?
: নাহ বউয়ের টাকায় না। আমি তোমাকে বন্ধু হিসাবে টাকা ধার দেবো। পরে তুমি শোধ করে দেবে। তাহলেই তো হয়ে গেলো।
: আরে বাবা আগে দেশে আসো তো। তোমাকে অনেক দিন দেখি না। দেখতে ইচ্ছা করছে।
: তাহলে বিয়ে করবে। রাজি হচ্ছো?
: হুম। তারপরও আসো।
: হুম বললে হবে না। হা বলো।
: হা।
: এইতো লক্ষী ছেলে। তোমাকে অনেক কিছু না বলা কথা আছে। আসলে সেগুলোও বলতে হবে। কখন যে আসবো।
আবীরের মাথায় কিছু ঢুকে না। সামনের সপ্তাহে এ্যনি আসবে। গাগলামি স্বভাব আছে। যখন যা বলে তা না করলে কঠিন কিছু করে বসতে পারে। কিন্তু বিয়ে হয়ে গেলে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ থাকবে না। পার্থিব ব্যবধান দূর করা অনেক কঠিন। অল্প ব্যবধান যদি থাকে তা একই মানসিকতা দিয়ে দূর করা সম্ভব। কিন্তু বড় ব্যবধানগুলো মন দীর্ঘস্থায়ী মানতে চায় না। এ ব্যাপারটা এ্যনি বুঝে না কেন। দেশে নিজেদের প্রাইভেট কার ছাড়া অন্য কিছুতে চড়ে নাই। আর তাকে পাবলিক বাসে ঝুলে যাওয়া আসা করতে হয়। আচ্ছা যেসব মেয়ের মন বেশি ভাল হয় তাদের কি এমন পাগলামী থাকে! এ্যনির পাগলামী গুলো অনেক ভাল লাগে আবীরের। কিন্তু যখন বাস্তবে সংসার শুরু হবে তখন কি এসব পাগলামী থাকবে। মেয়েটা যে পাগল টাইপের ভালবাসতে জানে অন্য কোন পরিবারে গেলে অনেক ভাল থাকবে। আবীর সিদ্ধান্ত নেয় এ্যনি দেশে আসার আগেই শহর ছাড়বে। কাউকে জানাবে না কোথায় যাচ্ছে। ফোন বন্ধ করে রাখবে।
মিনহাজ নিজ থেকে কখনো এ্যনিকে সাথে নিয়ে বের হওয়ার কথা বলে না। অনেক বেশি লাজুক ধরণের ছেলে। আংটি বদলের পর দুই একবার বের হওয়া হয়েছে।
এ্যনির দেশ ফেরার সময় ঘনিয়ে আসে। চারদিন আগে মিনহাজের মা মিনহাজকে উদ্দেশ্য করে বলে, কিরে কাজ শেষে এভাবে ঘরে বসে থাকিস কেন। ঘুরতে বের হতে পারিস না। যা এ্যনিকে নিয়ে ঘুরে আয়। ও দেশে যাবে। ওকে সাথে নিয়ে কিছু কেনাকেটা করে আয়।
দুইজনে বের হয়। সামনের সিটে দুইজনই বসা। মিনহাজ গাড়ি চালাচ্ছে। গাড়িতে রোমান্টিক একটা ইংরেজি গান চলছে। হঠাৎ মিনহাজ এ্যনির হাত ধরে। এ্যনি ইতস্তত করে। তা দেখে ভয়ে ছেড়ে দেয় মিনহাজ। এ্যনির খারাপই লাগে। কিন্তু আবীর ছাড়া অন্য কোন ছেলে হাত ধরছে এটা ভাবতে পারে না ও।
এ্যনি বলে, আচ্ছা মিনহাজ ভাই তোমাকে একটা কথা বলার ছিল। যদিও তা শোনার পর তুমি আমাকে খারাপ ভাবতে পারো। তারপরও তোমার শুনতে হবে।
গাড়িতে চলা অডিও ডিভাইসের ভলিউম কমিয়ে দিয়ে মিনহাজ বলে, বলো।
: আমি আবীর নামে একজনকে পছন্দ করি। দেশে থাকে ও। ওকে আমি যে কি পরিমাণ পছন্দ করি প্রকাশ করতে পারবো না।
এটা শুনে মিনহাজে মাথা ঝিম ধরে আসে। এ কি শুনছে। তাহলে আংটি বদলের আগে মানা করলো না কেন এ মেয়ে।
নিজেকে সামলিয়ে শুধু বলে,আচ্ছা এ কথা আগে খুলে বললে কি এমন ক্ষতি হতো? মানুষের তো পছন্দ থাকতেই পারে। তুমি যাকে পছন্দ করো সে হয়ত অনেক যোগ্য। কিন্তু এভাবে আমার স্বপ্ন না ভাঙলেও তো হতো।
এ্যনি উত্তর দেয়, আমি আগেই বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সাহস হয়নি। যদি এটা বলায় আমার বাংলাদেশে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ ভয়ে বলেনি।মিনহাজ গান অফ করে দেয়। বলে, আমাকে অন্তত বলতে পারতে। আর সমস্যা নেই। সে আবীরের সাথেই তোমার বিয়ে হবে। এক্ষেত্রে অন্তত কেউ বাধা দেবে না। আমি তো আছি। আর আমি এটা মানি জোর করে ভালোবাসা হয় না।এসব কথা বলার সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলেও গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলো না মিনহাজ। রাস্তার মোড়ে আসতেই সামনে থেকে একটা বড় ট্রাক তাদের কারটিকে ধাক্কা দেয়। বড় ট্রাকটির ধাক্কা সামলাতে পারে না হালকা কারটি। চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। এম্বুলেন্স করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এ্যনি ও মিনহাজকে। ডাক্তার মিনহাজকে মৃত ঘোষণা করে।
একদিন পর জ্ঞান ফিরে এ্যনির। দেয়ালের দিকে তাকিয়ে কি যেন খুজছিল। খোঁজা শেষ হয়নি। কিছুক্ষণ পরই সাদা চাদরে তার মুখ ঢেকে দেয় সিস্টাররা।
যেদিন এ্যনির আসার কথা সেদিন ভোরেই শহর ছেড়ে আবীর। আবীর
জানেই না এ্যনি আর কখনোই ওর সামনে এসে বলবে না, চলো বিয়ে করে ফেলি। পুরুষ মানুষ এত
ভীত হলে চলে!