তানিয়া একটা সময় খুব চঞ্চল ছিল। মুখে হাসি লেগেই থাকতো। বান্ধবীদের সাথে
সবচেয়ে বেশি খুনসুটি করতো সে। হঠাৎ সে বদলে গেলো। বদলে যেতে হয়েছে তাকে।
এখন পুরাই উল্টা স্বভাবের তানিয়া। হাসতে সে ভুলে গেছে। কথা বলে না। গম্ভীর
হয়ে বসে থাকে।
যখন বেশি খারাপ লাগে তখন বারান্দায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর ভাবে আচ্ছা মারা গেলে কি ওই আকাশে চলে যাওয়া যাবে। রাতে আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে ভাবে সে মরলে কি তারার সংখ্যা একটি বাড়বে!
এমনতো না যে তানিয়ার অনেক বয়স হয়ে গেছে। ১৬ চলছে। বাবা মায়ের মধ্যে ঝগড়া হতো প্রায়ই। আবার মীমাংষাও হয়ে যেতো।
একদিন সকালে উঠে বাবাকে খুঁজে। বাবা তাকে স্কুলে নিয়ে দিয়ে আসতো। কিন্তু সেদিন বাবাকে দেখে না। মার কাছে যায়।
-মা, বাবা কোথায়? আমার স্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে তো।
-রেডি হয়ে নাও। আমি তোমাকে স্কুলে দিয়ে আসবো। এখন থেকে আমার সাথেই তুমি স্কুলে যাবে।
-কেন? বাবা নেবে না কেন আমায়? বাবা কোথায় গেছে?
- তোমার বাবা চলে গেছে। আর আসবে না।
মায়ের মুখ দেখে আর কোন কথা বলেনি তানিয়া। মন খারাপ করে স্কুলে যায়। তার প্রতিদিন মনে হয় বাবা আসবে। আবার তাকে স্কুলে নিয়ে যাবে। যেতে যেতে গল্প করবে। না বাবা আর আসে না।
একদিন জানতে পারে বাবা দেশের বাহিরে চলে গেছে। সেখানে অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছে।
মা-ও কেমন জানি হয়ে গেছে। আগের মত আপন মনে হয় না। স্কুলে নিয়ে যায় ঠিকই। তবে কোন প্রশ্ন করলেই বিরক্ত হয়। কপাল কুঁচকে বলে, “ত কথা বলো কেন। চুপ থাকো।“
এখন চুপ থাকায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে তানিয়া। কাউকে আর বলে দিতে হয় না ওকে চুপ থাকতে। নিজে নিজেই চুপ থাকে।
ফেসবুকে বসে তানিয়া। মন খারাপের সময়গুলোতে সে গল্প পড়ে। বিভিন্ন পেইজে সুন্দর সুন্দর গল্প পোস্ট হয়। কখনো ভালো লাগলে কমেন্ট করে। একটা কমেন্ট করলেই অনেক রিকুয়েস্ট আসে। কাউকে এক্সেপ্ট করে না তানিয়া। ভালো লাগে না। যার বাস্তবে ফ্রেন্ড নেই তার ভার্চুয়ালে ফ্রেন্ড থেকে কি হবে!
বাবার নাম দিয়ে সার্চ দেয় ফেসবুকে। পেয়ে যায়। হা তার বাবারই তো ছবি।
বাবা ছবি পোস্ট দেয়। নতুন মায়ের ছবি। তানিয়ার ইচ্ছা করে ওই ছবিতে কিছু লিখতে। কঠিন কিছু। কিন্তু পারে না। কেন লিখবে বাবা তো আর ওকে আপন ভাবে না। ভাবলে নিশ্চয় একবার ফোন দিতো। কই ফোন তো দেয় না।
একদিন একটা ছবি দেখে। বাবার কোলে পিচ্চি একটা মেয়ে। বাবা ওই মেয়ের কপালে চুমু খাচ্ছে।
তানিয়ার জোরে জোরে কাঁদতে ইচ্ছা করে। একদিন তো এমন আদর বাবা তাকেও করতো। ওরও তো ইচ্ছা করে বাবার সাথে ঘুরতে। বাবার কাছ থেকে গল্প শুনতে। কিন্তু আর কখনো তো তা হবে না।
ল্যাপটপ থেকে উঠে তানিয়া ছাদে গিয়ে আকাশের দিকে তাকায়। তারাগুলো আকাশে ছড়িয়ে আছে। একবার আকাশের দিকে তাকায় আরেকবার নিচের দিকে তাকায়। বাবার চলে যাওয়া আর মায়ের অবহেলা আর ভালো লাগে না তানিয়ার। তার মনে হয় এরচেয়ে আকাশের তারা হয়ে যাওয়াটাই তো ভালো। সেখানেই ভালো থাকা যাবে!
ছাদের চারপাশে নিরাপত্তার জন্য দেড় হাত উচ্চতার দেয়াল আছে। সেটা পার হয়ে তানিয়া ছাদের কিনারায় দাঁড়ায়। দেড় ইঞ্চি বাদেই শূন্যতা। শূন্যতার মাঝে কি মুক্তি?
# ফেসবুকে লিংক
যখন বেশি খারাপ লাগে তখন বারান্দায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর ভাবে আচ্ছা মারা গেলে কি ওই আকাশে চলে যাওয়া যাবে। রাতে আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে ভাবে সে মরলে কি তারার সংখ্যা একটি বাড়বে!
এমনতো না যে তানিয়ার অনেক বয়স হয়ে গেছে। ১৬ চলছে। বাবা মায়ের মধ্যে ঝগড়া হতো প্রায়ই। আবার মীমাংষাও হয়ে যেতো।
একদিন সকালে উঠে বাবাকে খুঁজে। বাবা তাকে স্কুলে নিয়ে দিয়ে আসতো। কিন্তু সেদিন বাবাকে দেখে না। মার কাছে যায়।
-মা, বাবা কোথায়? আমার স্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে তো।
-রেডি হয়ে নাও। আমি তোমাকে স্কুলে দিয়ে আসবো। এখন থেকে আমার সাথেই তুমি স্কুলে যাবে।
-কেন? বাবা নেবে না কেন আমায়? বাবা কোথায় গেছে?
- তোমার বাবা চলে গেছে। আর আসবে না।
মায়ের মুখ দেখে আর কোন কথা বলেনি তানিয়া। মন খারাপ করে স্কুলে যায়। তার প্রতিদিন মনে হয় বাবা আসবে। আবার তাকে স্কুলে নিয়ে যাবে। যেতে যেতে গল্প করবে। না বাবা আর আসে না।
একদিন জানতে পারে বাবা দেশের বাহিরে চলে গেছে। সেখানে অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেছে।
মা-ও কেমন জানি হয়ে গেছে। আগের মত আপন মনে হয় না। স্কুলে নিয়ে যায় ঠিকই। তবে কোন প্রশ্ন করলেই বিরক্ত হয়। কপাল কুঁচকে বলে, “ত কথা বলো কেন। চুপ থাকো।“
এখন চুপ থাকায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে তানিয়া। কাউকে আর বলে দিতে হয় না ওকে চুপ থাকতে। নিজে নিজেই চুপ থাকে।
ফেসবুকে বসে তানিয়া। মন খারাপের সময়গুলোতে সে গল্প পড়ে। বিভিন্ন পেইজে সুন্দর সুন্দর গল্প পোস্ট হয়। কখনো ভালো লাগলে কমেন্ট করে। একটা কমেন্ট করলেই অনেক রিকুয়েস্ট আসে। কাউকে এক্সেপ্ট করে না তানিয়া। ভালো লাগে না। যার বাস্তবে ফ্রেন্ড নেই তার ভার্চুয়ালে ফ্রেন্ড থেকে কি হবে!
বাবার নাম দিয়ে সার্চ দেয় ফেসবুকে। পেয়ে যায়। হা তার বাবারই তো ছবি।
বাবা ছবি পোস্ট দেয়। নতুন মায়ের ছবি। তানিয়ার ইচ্ছা করে ওই ছবিতে কিছু লিখতে। কঠিন কিছু। কিন্তু পারে না। কেন লিখবে বাবা তো আর ওকে আপন ভাবে না। ভাবলে নিশ্চয় একবার ফোন দিতো। কই ফোন তো দেয় না।
একদিন একটা ছবি দেখে। বাবার কোলে পিচ্চি একটা মেয়ে। বাবা ওই মেয়ের কপালে চুমু খাচ্ছে।
তানিয়ার জোরে জোরে কাঁদতে ইচ্ছা করে। একদিন তো এমন আদর বাবা তাকেও করতো। ওরও তো ইচ্ছা করে বাবার সাথে ঘুরতে। বাবার কাছ থেকে গল্প শুনতে। কিন্তু আর কখনো তো তা হবে না।
ল্যাপটপ থেকে উঠে তানিয়া ছাদে গিয়ে আকাশের দিকে তাকায়। তারাগুলো আকাশে ছড়িয়ে আছে। একবার আকাশের দিকে তাকায় আরেকবার নিচের দিকে তাকায়। বাবার চলে যাওয়া আর মায়ের অবহেলা আর ভালো লাগে না তানিয়ার। তার মনে হয় এরচেয়ে আকাশের তারা হয়ে যাওয়াটাই তো ভালো। সেখানেই ভালো থাকা যাবে!
ছাদের চারপাশে নিরাপত্তার জন্য দেড় হাত উচ্চতার দেয়াল আছে। সেটা পার হয়ে তানিয়া ছাদের কিনারায় দাঁড়ায়। দেড় ইঞ্চি বাদেই শূন্যতা। শূন্যতার মাঝে কি মুক্তি?
# ফেসবুকে লিংক