সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ঘুরতে গেলে বান্দরবান

যেভাবে যাবেন বান্দরবান :
ঢাকা থেকে ইউনিক, এস আলম, হানিফ,  সৌদিয়া, ঈগল, বিআরটিসি, ডলফিন প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে আসে। বাসগুলো সাধারণত ফকিরাপুল থেকে ছাড়ে।

চট্টগ্রাম থেকে প্রতি আধা ঘন্টা পর পর পর্যায়ক্রমে পূরবী, পূর্বাণী (চেয়ার কোচ) ছাড়ে। বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে বাসগুলো ছাড়ে। ভাড়া : ১১০ টাকা।


আর বান্দরবান শহরটা বাস স্টেশন থেকে বেশি দূরে নয়। স্টেশন থেকে বান্দরবান বাজারে যেতে হলে রিকসা ও টমটম আছে। টমটম ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা। দশ মিনিটের হাঁটা পথের দূরত্ব।


যেখানে যেখানে বেড়াতে পারেন :

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স :
বান্দরবানের সবচেয়ে পুরাতন পর্যটন স্পটের মধ্যে এটি একটি। আগে বান্দরবানের পর্যটন বলতেই সাধারণত মেঘলাকে বুঝাতো। শহর থেকে প্রায় চার কি.মি দূরে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের জেলা পরিষদের বিপরীতেই অবস্থান মেঘলার। প্রকৃত অর্থেই ঝুলন্ত সেতু আছে এখানে। নিচের পানির লেইক এর ওপর দিয়ে সাঁ করে চলে যেতে আছে ক্যাবল কার। আরও আছে চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, সাফারি পার্ক, প্যাডেল বোট, উন্মুক্ত মঞ্চ ও চা বাগান।  এখানে জেলা প্রশাসন পরিচালিত একটি সুন্দর রেস্ট হাউজ রয়েছে, যেখানে রাত্রিযাপন করা যায়। প্রবেশের জন্য প্রতিজনকে গুণতে হবে ৩০ টাকা। মেঘলা রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপনের জন্য চারটি কক্ষ রয়েছে। প্রতিকক্ষের ভাড়া ২০০০/- (প্রতিদিন)। যোগাযোগ : ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মেঘলা ০৩৬১-৬২৫০৬, ০১৭১৭২-৭১৮০৫১, ০১৭১৪-২৩০৩৫৪।

নীলাচল :
অল্প সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বান্দরবান শহরের কাছেই নীলাচল পর্যটন স্পট। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এ স্পটটির দূরত্ব  শহর থেকে পাঁচ কি.মি। বিকেলের সূর্যাস্তটা সবচেয়ে আকর্ষণীয় এখান থেকে দেখা। একদিকে নিচের বান্দরবান শহর অন্যদিকে নীলগিরির দিকে যাওয়া ছবির মত রাস্তা মুগ্ধ করে পর্যটকদের। যেন কোন স্বপ্ন জগতে অবস্থান তার এমনই এক অনুভূতির সৃষ্টি করে নীলাচল। প্রবেশ মূল্য ২৫ টাকা। সেখানে জেলাপ্রশাসনের তত্ত্ববধানে পরিচালিত দুইকক্ষবিশিষ্ট একটি রেস্ট হাউজ আছে।

স্বর্ণ মন্দির :
বান্দরবানের বালাঘাটায় অবস্থিত বৌদ্ধ ধাতু জাদি মন্দিরটিই স্বর্ণ মন্দির নামে সবার কাছে পরিচিত। এই বৌদ্ধ মন্দিরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে এবং এটি বাংলাদেশে সর্বাপেক্ষা বড় হীনযান বৌদ্ধ মন্দির। সু উচ্চ পাহাড়ের ওপর অবস্থিত এ মন্দির দেখতে অনেকগুলো সিঁড়ি পাড়ি দিতে হয়। মন্দিরটি প্রতিদিন সকাল ৮টা ৩০ থেকে বেলা ১১টা ৩০ এবং দুপুর ১২টা ৪৫ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। বর্ণ মন্দির এ আসলে পাশাপাশি সাঙ্গু নদী, বেতার কেন্দ্রসহ বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহজেই উপভোগ করা যায়। মন্দিরের অঙ্গসজ্জা মেরুন আর সোনালী রঙ দিয়ে হওয়াতে দূর থেকে দেখলে মনে হয় পুরো মন্দিরটিই স্বর্ণ দিয়ে মোড়ানো। আর এই বাহ্যিক রূপ থেকেই হয়ত মন্দিরটি ‘স্বর্ণ মন্দির’ নামে খ্যাতি পেয়েছে। বান্দরবান বাজার থেকে এর দূরত্ব তিন কি.মি। 



বান্দরবান ঘুরতে গেলে যেসব হোটেলে উঠতে পারেন :
ঘুরতে গেলে সেখানে থাকার প্রশ্ন আসে। গত কয়েক বছরে শতাধিক হোটেল তৈরি হয়েছে বান্দরবানে। শহরের কাছাকাছি হোটেল যেমন রয়েছে তেমনি শহর থেকে বাহিরে নিরিবিলি পরিবেশে পাহাড় ঘেরা কোন রিসোর্টেও থাকতে পারেন। নিচে কিছু হোটেলের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দেয়া হলো। টিএন্ডটি ফোন নাম্বারের ক্ষেত্রে আগে ০৩৬১ বসাতে হবে। এটা বান্দরবানের কোড।



হোটেল হিল ভিউ :
বাস স্টেশনের সবচেয়ে কাছে এ বিশাল হোটেলটির অবস্থান। যোগাযোগ : ৬২০৩৫, ৬২০৪৫/০১৭১২৯০১৩৪৫।

হোটেল হলিডে ইন রিসোর্ট :
মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের বিপরীতে এ রিসোর্টটি অনেকের কাছে বেশ প্রিয়। যোগাযোগ : ৬২৮৯৬, ০১৫৫৬৯৮০৪৩২।

হোটেল প্লাজা :
বান্দরবানের আর্মি পাড়া এলাকায় অবস্থিত অভিজাত এ হোটেলটি। যোগাযোগ : ৬৩২৫২, ০১৫৫৭২৫৬৮৮০।

হোটেল গ্রীণল্যান্ড :
এ হোটেলটি বান্দরবানের তিন নাম্বার নামন্তি রাস্তা নামে পরিচিত এলাকায় অবস্থিত। পরিবেশ ভালই। যোগাযোগ : ৬৩৬১৩, ০১৮৩৯৯১০৬৪২।


হোটেল ফোর স্টার :
বান্দরবান বাজার এলাকায় অবস্থিত হোটেল ফোর স্টার। যোগাযোগ : ৬২৪৬৬।

হোটেল পূরবী
অনেক পুরানো এক হোটেল, যে কাউকে হোটেল পূরবী কোথায় বললেই দেখিয়ে দেবে। যোগাযোগ : ৬২৫৩১


পার্বত্য এ নগরীতে আশা করি আপনার ভালো লাগবে। তবে আসার আগে কোথায় কোথায় ঘুরবেন প্ল্যান করে আসলে বেশি জায়গায় ঘুরতে পারবেন। আরও বিশেষ কিছু জানার থাকলে এ পোস্টের কমেন্টে জানতে চাইতে পারেন :